• বর্তমানে স্মার্টওয়াচ ও ফিটনেস ট্র্যাকার ব্যান্ড আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অংশ হয়ে উঠেছে। কিন্তু এই ব্যান্ডে ব্যবহৃত কিছু মেটেরিয়ালে রয়েছে PFAS অর্থাৎ Per- and Polyfluoroalkyl Substances ।

    এটি এক ধরনের বিষাক্ত চিরস্থায়ী রাসায়নিক, যা ত্বক থেকে শোষিত হয়ে শরীরে ক্যানসার, লিভার ও কিডনির রোগের ঝুঁকি তৈরি করতে পারে, এমনটাই বলছে যুক্তরাষ্ট্রের নটর ডেম বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণা।

    এই রাসায়নিক সাধারণত ব্যান্ড, কেসিং বা স্ক্রিন কোটিংয়ে ব্যবহৃত হয়, কারণ এটি পানি, তেল ও ঘাম প্রতিরোধ করে এবং পণ্যকে টেকসই ও মসৃণ রাখে। তবে PFAS খুবই স্থিতিশীল, সহজে ভাঙে না—বরং শরীরে ও পরিবেশে দীর্ঘদিন ধরে সক্রিয় থাকে। ঘাম এর শোষণ ক্ষমতা আরও বাড়িয়ে তোলে।

    গবেষণায় Nike, Apple, Fitbit, Google সহ ২২টি জনপ্রিয় ব্র্যান্ডের ব্যান্ড পরীক্ষা করে ১৫ টিতেই PFAS শনাক্ত হয়েছে, অনেক ক্ষেত্রেই মাত্রা ছিল বিপজ্জনকভাবে বেশি। যদিও কোন ব্যান্ডগুলোতে পাওয়া যায় সেটা উল্লেখ করা হয়নি।

    তাছাড়া গবেষণায় PFHxA-এর মতো কিছু রাসায়নিকও পাওয়া গেছে, যা সাধারণত কীটনাশক বা কার্পেটে ব্যবহৃত হয় এবং সরাসরি লিভার ক্ষতির সঙ্গে জড়িত। যুক্তরাষ্ট্রের পরিবেশ সংস্থা (EPA) বলেছে, এসব রাসায়নিকের কোনো মাত্রাই শরীরের জন্য নিরাপদ নয়। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ইতোমধ্যেই নিষেধাজ্ঞার পথে হাঁটছে।

    তাই স্মার্টওয়াচ বা ব্যান্ড কেনার সময় সচেতন হোন। PFAS-মুক্ত কি না, দেখে নিন। নিরাপদ বিকল্প হিসেবে সিলিকন ব্যান্ড বেছে নেওয়াই উত্তম।

    Compiled by: বিজ্ঞান্বেষী
    Source: American Chemical Society (ACS)
    #Bigganneshi
    বর্তমানে স্মার্টওয়াচ ও ফিটনেস ট্র্যাকার ব্যান্ড আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অংশ হয়ে উঠেছে। কিন্তু এই ব্যান্ডে ব্যবহৃত কিছু মেটেরিয়ালে রয়েছে PFAS অর্থাৎ Per- and Polyfluoroalkyl Substances । এটি এক ধরনের বিষাক্ত চিরস্থায়ী রাসায়নিক, যা ত্বক থেকে শোষিত হয়ে শরীরে ক্যানসার, লিভার ও কিডনির রোগের ঝুঁকি তৈরি করতে পারে, এমনটাই বলছে যুক্তরাষ্ট্রের নটর ডেম বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণা। এই রাসায়নিক সাধারণত ব্যান্ড, কেসিং বা স্ক্রিন কোটিংয়ে ব্যবহৃত হয়, কারণ এটি পানি, তেল ও ঘাম প্রতিরোধ করে এবং পণ্যকে টেকসই ও মসৃণ রাখে। তবে PFAS খুবই স্থিতিশীল, সহজে ভাঙে না—বরং শরীরে ও পরিবেশে দীর্ঘদিন ধরে সক্রিয় থাকে। ঘাম এর শোষণ ক্ষমতা আরও বাড়িয়ে তোলে। গবেষণায় Nike, Apple, Fitbit, Google সহ ২২টি জনপ্রিয় ব্র্যান্ডের ব্যান্ড পরীক্ষা করে ১৫ টিতেই PFAS শনাক্ত হয়েছে, অনেক ক্ষেত্রেই মাত্রা ছিল বিপজ্জনকভাবে বেশি। যদিও কোন ব্যান্ডগুলোতে পাওয়া যায় সেটা উল্লেখ করা হয়নি। তাছাড়া গবেষণায় PFHxA-এর মতো কিছু রাসায়নিকও পাওয়া গেছে, যা সাধারণত কীটনাশক বা কার্পেটে ব্যবহৃত হয় এবং সরাসরি লিভার ক্ষতির সঙ্গে জড়িত। যুক্তরাষ্ট্রের পরিবেশ সংস্থা (EPA) বলেছে, এসব রাসায়নিকের কোনো মাত্রাই শরীরের জন্য নিরাপদ নয়। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ইতোমধ্যেই নিষেধাজ্ঞার পথে হাঁটছে। তাই স্মার্টওয়াচ বা ব্যান্ড কেনার সময় সচেতন হোন। PFAS-মুক্ত কি না, দেখে নিন। নিরাপদ বিকল্প হিসেবে সিলিকন ব্যান্ড বেছে নেওয়াই উত্তম। Compiled by: বিজ্ঞান্বেষী Source: American Chemical Society (ACS) #Bigganneshi
    0 Commentarios 0 Acciones 5 Views
  • নিজের শেকড় ভুলে যাওয়া অধম!
    মানুষ যত দূরই এগিয়ে যাক না কেন, যত বড় নাম বা সাফল্যই অর্জন করুক না কেন, তার ভিতরে এক অদৃশ্য শক্তি থাকে—সেটি হলো তার শেকড়। জন্মস্থান, পরিবার, পূর্বপুরুষদের জীবনসংগ্রাম, ভাষা, সংস্কৃতি, বিশ্বাস—এসব মিলেই তৈরি হয় একেকটি মানুষের পরিচয় ও আত্মা।

    শুধু প্রবাসী নয়, শেকড়ে যুক্ত থাকা দরকার সবার!
    শুধু প্রবাসী নয়, দেশে থাকা মানুষও যখন নিজের শেকড়কে অবহেলা করে, তখন সে ধীরে ধীরে আত্মবিস্মৃত হয়। এমন অনেকে আছেন, যারা নিজের আদি নিবাস, পারিবারিক ইতিহাস, স্থানীয় সংস্কৃতি বা মাটির গন্ধকে তুচ্ছ ভাবে; নিজেদের অতীতকে “অপ্রয়োজনীয়” মনে করে সামনে এগিয়ে যেতে চায়। কিন্তু প্রশ্ন হলো—যে নিজের পেছনের ইতিহাস জানে না, সে সামনের পথ ঠিক কীভাবে চিনবে?

    শেকড়হীন মানুষ, গাছ থেকে ছেঁড়া পাতার মতো!
    একটি গাছ মাটি ছেড়ে বাঁচতে পারে না। শেকড় ছাড়া গাছ যেমন শুকিয়ে যায়, মানুষও তেমনি ভিতর থেকে শূন্য হয়ে পড়ে যদি সে নিজের শেকড় ভুলে যায়। আত্মপরিচয় শুধু বর্তমানের নয়—তা গঠিত হয় অতীতের ভাঙাগড়ার ভেতর দিয়ে।
    আধুনিকতা মানেই শেকড়বিচ্ছিন্নতা নয়
    বিশ্বায়ন, আধুনিকতা, নাগরিক জীবন—এসবের ভিড়ে অনেকেই ভাবে নিজের পুরোনো গল্প, ঐতিহ্য বা স্থানীয় সংস্কৃতির চর্চা "পিছিয়ে পড়া"র লক্ষণ। অথচ সত্যটা হলো, যারা শেকড় জানে না, তারা ভবিষ্যৎ গড়ার মাটি পায় না। যারা নিজেদের ছোটবেলার স্কুল, গ্রামীণ রীতি, পরিবারের গল্প ভুলে যায়, তারাই জীবনের গভীর সম্পর্কগুলো হারিয়ে ফেলে।
    শেকড় মানে কেবল জন্মস্থান নয়, আত্মার সংযোগ!
    নিজ শেকড় মানে শুধু কোথায় জন্মেছি তা নয়—মানে আমি কার ইতিহাস বহন করছি, কার ভাষায় প্রথম হাসতে শিখেছি, কোন গন্ধে মন নরম হয়েছে, কোন মায়ার মধ্যে বেড়ে উঠেছি। এই শেকড় জানলে মানুষ আত্মবিশ্বাসী হয়, মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে শেখে।
    মধুসূদনের পথ ভুলে, শেষতক শেকড়েই ফেরা!
    এই প্রসঙ্গে মাইকেল মধুসূদন দত্তের কথা না বললেই নয়।
    যিনি ইংরেজি সাহিত্যকে হৃদয়ে ধারণ করেছিলেন, ইউরোপীয় সংস্কৃতিতে মগ্ন ছিলেন, এবং ভাবতেন—"এ দেশ, এই ভাষা, এই সংস্কৃতি আমার নয়।" তিনি বিদেশে গিয়ে বুঝেছিলেন, নিজের মাতৃভাষা, মাটি আর মা—এদের ছাড়া মানুষ কেবল দেহ বয়ে বেড়ায়, আত্মা নয়। তাই তিনি ফিরে এলেন, বাংলায় লিখলেন, আর সেই শেকড়েই গেঁথে গেলেন চিরতরে।
    শেষজীবনে অভাব, অপমান, হতাশা সব সয়েও বলেছিলেন—"আহা, বাংলায় যদি লিখতে পারতাম আরও আগে!"

    শেকড় ভুলে যাওয়া মানে আত্মা হারিয়ে ফেলা!
    যে নিজের শেকড় ভুলে যায়, তার চেয়ে অধম আর কেউ নেই। নিজেকে জানতে হলে, ভালোবাসতে হলে, আগে জানতে হয়—আমি কে, কোথা থেকে এসেছি। শুধু ব্যক্তিগত নয়, জাতিগতভাবে, সাংস্কৃতিকভাবেও এই চেতনা মানুষকে বাঁচিয়ে রাখে।
    🌱 নিজের শেকড় ভুলে যাওয়া অধম! মানুষ যত দূরই এগিয়ে যাক না কেন, যত বড় নাম বা সাফল্যই অর্জন করুক না কেন, তার ভিতরে এক অদৃশ্য শক্তি থাকে—সেটি হলো তার শেকড়। জন্মস্থান, পরিবার, পূর্বপুরুষদের জীবনসংগ্রাম, ভাষা, সংস্কৃতি, বিশ্বাস—এসব মিলেই তৈরি হয় একেকটি মানুষের পরিচয় ও আত্মা। 🏠 শুধু প্রবাসী নয়, শেকড়ে যুক্ত থাকা দরকার সবার! শুধু প্রবাসী নয়, দেশে থাকা মানুষও যখন নিজের শেকড়কে অবহেলা করে, তখন সে ধীরে ধীরে আত্মবিস্মৃত হয়। এমন অনেকে আছেন, যারা নিজের আদি নিবাস, পারিবারিক ইতিহাস, স্থানীয় সংস্কৃতি বা মাটির গন্ধকে তুচ্ছ ভাবে; নিজেদের অতীতকে “অপ্রয়োজনীয়” মনে করে সামনে এগিয়ে যেতে চায়। কিন্তু প্রশ্ন হলো—যে নিজের পেছনের ইতিহাস জানে না, সে সামনের পথ ঠিক কীভাবে চিনবে? 🌳 শেকড়হীন মানুষ, গাছ থেকে ছেঁড়া পাতার মতো! একটি গাছ মাটি ছেড়ে বাঁচতে পারে না। শেকড় ছাড়া গাছ যেমন শুকিয়ে যায়, মানুষও তেমনি ভিতর থেকে শূন্য হয়ে পড়ে যদি সে নিজের শেকড় ভুলে যায়। আত্মপরিচয় শুধু বর্তমানের নয়—তা গঠিত হয় অতীতের ভাঙাগড়ার ভেতর দিয়ে। 🌍 আধুনিকতা মানেই শেকড়বিচ্ছিন্নতা নয় বিশ্বায়ন, আধুনিকতা, নাগরিক জীবন—এসবের ভিড়ে অনেকেই ভাবে নিজের পুরোনো গল্প, ঐতিহ্য বা স্থানীয় সংস্কৃতির চর্চা "পিছিয়ে পড়া"র লক্ষণ। অথচ সত্যটা হলো, যারা শেকড় জানে না, তারা ভবিষ্যৎ গড়ার মাটি পায় না। যারা নিজেদের ছোটবেলার স্কুল, গ্রামীণ রীতি, পরিবারের গল্প ভুলে যায়, তারাই জীবনের গভীর সম্পর্কগুলো হারিয়ে ফেলে। 🧬 শেকড় মানে কেবল জন্মস্থান নয়, আত্মার সংযোগ! নিজ শেকড় মানে শুধু কোথায় জন্মেছি তা নয়—মানে আমি কার ইতিহাস বহন করছি, কার ভাষায় প্রথম হাসতে শিখেছি, কোন গন্ধে মন নরম হয়েছে, কোন মায়ার মধ্যে বেড়ে উঠেছি। এই শেকড় জানলে মানুষ আত্মবিশ্বাসী হয়, মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে শেখে। 📖 মধুসূদনের পথ ভুলে, শেষতক শেকড়েই ফেরা! এই প্রসঙ্গে মাইকেল মধুসূদন দত্তের কথা না বললেই নয়। যিনি ইংরেজি সাহিত্যকে হৃদয়ে ধারণ করেছিলেন, ইউরোপীয় সংস্কৃতিতে মগ্ন ছিলেন, এবং ভাবতেন—"এ দেশ, এই ভাষা, এই সংস্কৃতি আমার নয়।" তিনি বিদেশে গিয়ে বুঝেছিলেন, নিজের মাতৃভাষা, মাটি আর মা—এদের ছাড়া মানুষ কেবল দেহ বয়ে বেড়ায়, আত্মা নয়। তাই তিনি ফিরে এলেন, বাংলায় লিখলেন, আর সেই শেকড়েই গেঁথে গেলেন চিরতরে। শেষজীবনে অভাব, অপমান, হতাশা সব সয়েও বলেছিলেন—"আহা, বাংলায় যদি লিখতে পারতাম আরও আগে!" 🕯️ শেকড় ভুলে যাওয়া মানে আত্মা হারিয়ে ফেলা! যে নিজের শেকড় ভুলে যায়, তার চেয়ে অধম আর কেউ নেই। নিজেকে জানতে হলে, ভালোবাসতে হলে, আগে জানতে হয়—আমি কে, কোথা থেকে এসেছি। শুধু ব্যক্তিগত নয়, জাতিগতভাবে, সাংস্কৃতিকভাবেও এই চেতনা মানুষকে বাঁচিয়ে রাখে। ❤️✍️
    0 Commentarios 0 Acciones 4 Views
  • পুরান ঢাকার অলিগলি, শুধু ইতিহাস আর হালুয়া-রুটি নয়—এখানে বাস করে বহু প্রজন্ম ধরে বয়ে আসা কাহিনি, লোকবিশ্বাস আর গা ছমছমে মিথ। এর মধ্যে অন্যতম হলো—‘অন্ধকারে আসা মিষ্টির ক্রেতা’র গল্প।

    বলা হয়, পুরান ঢাকার কিছু নির্দিষ্ট মিষ্টির দোকানে প্রতি কয়েকদিন পরপর রাত ৮টার দিকে হাজির হন একদল অদ্ভুত মানুষ।
    তারা ঢোকার আগে দোকানের মালিককে বলেন—

    “লাইট নিভিয়ে দিন।”
    আর তারপর?
    দোকান অন্ধকার হয়ে যায়।
    আর সেই অন্ধকারেই তারা নিয়ে যান ১০–১২ কেজি মিষ্টি।
    নগদ টাকাও দেন, কিন্তু কেউ সে টাকা ভালো করে দেখতে পায় না।
    সবকিছু হয় যেন নিঃশব্দ, নিঃছায়া, নিখুঁত।

    এদের গড়ন খুব লম্বা, চলাফেরা নিরব ও অস্বাভাবিক।
    তারা মাথা নিচু করে হাঁটে, কারো সঙ্গে কথা বলে না, কারো চোখে চোখ রাখে না।
    দোকানদারেরা বলে—

    “এদের মুখ আজ পর্যন্ত কেউ ভালো করে দেখে নাই।”
    কিছু দোকানদার স্বীকার করেন—

    “হ্যাঁ, তারা আসে। কিন্তু আমরা কিছু জিজ্ঞেস করি না। সবকিছু ঠিকঠাক করে চলে যায়।”
    আবার কেউ কেউ সরাসরি অস্বীকার করেন—

    “এসব কিছুই না। মিষ্টির বিক্রির গল্প বানিয়ে গুজব ছড়ানো হচ্ছে।”
    তবে আশ্চর্যের বিষয় হলো, প্রায় সব পুরান ঢাকার মিষ্টির দোকানে এই গল্প কোনো না কোনোভাবে ঘুরে ফিরে আসে।
    পুরান ঢাকার অলিগলি, শুধু ইতিহাস আর হালুয়া-রুটি নয়—এখানে বাস করে বহু প্রজন্ম ধরে বয়ে আসা কাহিনি, লোকবিশ্বাস আর গা ছমছমে মিথ। এর মধ্যে অন্যতম হলো—‘অন্ধকারে আসা মিষ্টির ক্রেতা’র গল্প। বলা হয়, পুরান ঢাকার কিছু নির্দিষ্ট মিষ্টির দোকানে প্রতি কয়েকদিন পরপর রাত ৮টার দিকে হাজির হন একদল অদ্ভুত মানুষ। তারা ঢোকার আগে দোকানের মালিককে বলেন— “লাইট নিভিয়ে দিন।” আর তারপর? দোকান অন্ধকার হয়ে যায়। আর সেই অন্ধকারেই তারা নিয়ে যান ১০–১২ কেজি মিষ্টি। নগদ টাকাও দেন, কিন্তু কেউ সে টাকা ভালো করে দেখতে পায় না। সবকিছু হয় যেন নিঃশব্দ, নিঃছায়া, নিখুঁত। এদের গড়ন খুব লম্বা, চলাফেরা নিরব ও অস্বাভাবিক। তারা মাথা নিচু করে হাঁটে, কারো সঙ্গে কথা বলে না, কারো চোখে চোখ রাখে না। দোকানদারেরা বলে— “এদের মুখ আজ পর্যন্ত কেউ ভালো করে দেখে নাই।” কিছু দোকানদার স্বীকার করেন— “হ্যাঁ, তারা আসে। কিন্তু আমরা কিছু জিজ্ঞেস করি না। সবকিছু ঠিকঠাক করে চলে যায়।” আবার কেউ কেউ সরাসরি অস্বীকার করেন— “এসব কিছুই না। মিষ্টির বিক্রির গল্প বানিয়ে গুজব ছড়ানো হচ্ছে।” তবে আশ্চর্যের বিষয় হলো, প্রায় সব পুরান ঢাকার মিষ্টির দোকানে এই গল্প কোনো না কোনোভাবে ঘুরে ফিরে আসে।
    0 Commentarios 0 Acciones 4 Views
  • দক্ষিণ ভারতের লাল বালির মরুভূমি: থেরি কাড়ু....

    যখন আমরা ভারতের মরুভূমির কথা ভাবি, তখন চোখে ভেসে ওঠে রাজস্থানের সোনালি বালিয়াড়ি। কিন্তু ভারতের দক্ষিণ প্রান্তে তামিলনাড়ুর বুকেও রয়েছে এক আশ্চর্যজনক প্রাকৃতিক বিস্ময়—থেরি কাড়ু, এক লাল বালুর মরুভূমি, যা তার অনন্য রঙ, ভূতাত্ত্বিক ইতিহাস এবং চলমান গঠনের জন্য বিশেষভাবে পরিচিত।

    অবস্থান ও বিস্তৃতি:-

    থেরি কাড়ু অবস্থিত তামিলনাড়ুর তুতিকোরিন এবং তিরুনেলভেলি জেলায়। এটি প্রায় ৫০০ বর্গকিলোমিটার জায়গা জুড়ে বিস্তৃত এক বিস্ময়কর লাল বালির মরুভূমি, যা সাধারণ মরুভূমির তুলনায় সম্পূর্ণ আলাদা।

    বালুর রঙের রহস্য:-

    থেরি কাড়ুর বালু যে গভীর লাল রঙের, তার পেছনে রয়েছে ভূতাত্ত্বিক কারণ। এই বালিতে রয়েছে উচ্চমাত্রায় লৌহ অক্সাইড, যা সূর্যালোকে প্রতিফলিত হয়ে এক গাঢ় লাল আভা সৃষ্টি করে। এই রঙই একে ভারতের অন্যান্য মরুভূমি থেকে আলাদা করে তুলেছে।

    গঠনের ইতিহাস:-

    থেরি কাড়ুর উৎপত্তি হাজার হাজার বছর আগে, Quaternary যুগে, যখন পৃথিবীতে চলছিল শেষ বরফ যুগ বা Last Glacial Maximum। সে সময় সমুদ্রের জলস্তর ছিল অনেক নিচে, এবং উপকূল অঞ্চলের অনেকটাই ছিল উন্মুক্ত। এই উন্মুক্ত সমুদ্রপৃষ্ঠ এবং পশ্চিমঘাটের লৌহসমৃদ্ধ শিলা থেকে বাতাসের মাধ্যমে বালুকণাগুলি এখানে এসে জমা হতে থাকে। এই দীর্ঘমেয়াদি বায়ুপ্রবাহজনিত (aeolian) প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই গড়ে ওঠে থেরি কাড়ুর বর্তমান ভূচিত্র।

    ভূবিজ্ঞানীদের মতে, এই অঞ্চল একসময় সমুদ্রের নিচে ছিল। সময়ের প্রবাহে বালির স্তর জমে জমে এখানে সৃষ্টি হয়েছে এক অনন্য ভূমিরূপ, যা শুধু প্রাকৃতিক নয়, ভূতাত্ত্বিকভাবেও অমূল্য।

    চলমান বালির বিস্ময়:-

    থেরি কাড়ুর সবচেয়ে আকর্ষণীয় বৈশিষ্ট্য হল এর চলমান বালিয়াড়ি। এখানে বালু এক জায়গায় স্থির থাকে না, বরং প্রতিনিয়ত বাতাসের প্রভাবে স্থান পরিবর্তন করে। এই গুণ একে পরিণত করেছে এক জীবন্ত ভূপ্রাকৃতিক গবেষণাগারে, যা এখনও সম্পূর্ণরূপে ক্ষয়প্রাপ্ত নয়।

    ড. ক্রিস্টি নির্মলা মেরি, মাদুরাইয়ের কৃষি কলেজের মাটির ও পরিবেশ বিভাগের প্রধান বলেন, “থেরি কাড়ু কোনো ঐতিহ্যবাহী মরুভূমি নয়, বরং এটি একটি নতুন গঠিত, চলমান লাল বালুর ভূমি, যা আমাদের ভূগোল ও পরিবেশচর্চায় অমূল্য অবদান রাখছে।”

    প্রকৃতির লুকানো রত্ন:-

    যদিও তামিলনাড়ু মূলত পরিচিত সবুজ ধানক্ষেত, প্রাচীন মন্দির এবং উপকূলীয় সৌন্দর্যের জন্য, থেরি কাড়ু এই রাজ্যের এক ব্যতিক্রমী ও রহস্যময় ভূমি। এটি পর্যটক, গবেষক, ভূবিজ্ঞানী ও প্রকৃতিপ্রেমীদের জন্য এক অনন্য গন্তব্য।

    রাজস্থানের মরুভূমির রূপ আপনাকে মুগ্ধ করলেও, থেরি কাড়ুর লাল বালুর মরুভূমি আপনাকে ভাবাবে, বিস্মিত করবে এবং প্রকৃতির অসাধারণ ক্ষমতা সম্পর্কে নতুন করে জানাবে।

    এটি শুধুই একটি প্রাকৃতিক দৃশ্য নয়—এ এক প্রাকৃতিক ঐতিহ্য, ভূতাত্ত্বিক ইতিহাসের জীবন্ত দলিল। তাই দক্ষিণ ভারতে ভ্রমণের সময় এই লুকিয়ে থাকা লাল মরুভূমিকে বাদ দেবেন না—কারণ প্রকৃতি এখানে নিজেই লিখেছে এক অনন্য কবিতা, লাল বালুর অক্ষরে।

    এই ধরনের নতুন নতুন তথ্যপূর্ণ পোস্ট পেতে হলে আমাদের পেজটিকে ফলো করবেন।।।

    Geography zone- ভূগোল বলয় #everyonefollowers #everyoneシ#india #facts #follower #like #unknown #geography #ad #desert #Tamilnadu
    🏞️ দক্ষিণ ভারতের লাল বালির মরুভূমি: থেরি কাড়ু....😲😲😲 🔸যখন আমরা ভারতের মরুভূমির কথা ভাবি, তখন চোখে ভেসে ওঠে রাজস্থানের সোনালি বালিয়াড়ি। কিন্তু ভারতের দক্ষিণ প্রান্তে তামিলনাড়ুর বুকেও রয়েছে এক আশ্চর্যজনক প্রাকৃতিক বিস্ময়—থেরি কাড়ু, এক লাল বালুর মরুভূমি, যা তার অনন্য রঙ, ভূতাত্ত্বিক ইতিহাস এবং চলমান গঠনের জন্য বিশেষভাবে পরিচিত। 📍 অবস্থান ও বিস্তৃতি:- ▪️ থেরি কাড়ু অবস্থিত তামিলনাড়ুর তুতিকোরিন এবং তিরুনেলভেলি জেলায়। এটি প্রায় ৫০০ বর্গকিলোমিটার জায়গা জুড়ে বিস্তৃত এক বিস্ময়কর লাল বালির মরুভূমি, যা সাধারণ মরুভূমির তুলনায় সম্পূর্ণ আলাদা। 🔴 বালুর রঙের রহস্য:- ▪️ থেরি কাড়ুর বালু যে গভীর লাল রঙের, তার পেছনে রয়েছে ভূতাত্ত্বিক কারণ। এই বালিতে রয়েছে উচ্চমাত্রায় লৌহ অক্সাইড, যা সূর্যালোকে প্রতিফলিত হয়ে এক গাঢ় লাল আভা সৃষ্টি করে। এই রঙই একে ভারতের অন্যান্য মরুভূমি থেকে আলাদা করে তুলেছে। 🌍 গঠনের ইতিহাস:- ▪️ থেরি কাড়ুর উৎপত্তি হাজার হাজার বছর আগে, Quaternary যুগে, যখন পৃথিবীতে চলছিল শেষ বরফ যুগ বা Last Glacial Maximum। সে সময় সমুদ্রের জলস্তর ছিল অনেক নিচে, এবং উপকূল অঞ্চলের অনেকটাই ছিল উন্মুক্ত। এই উন্মুক্ত সমুদ্রপৃষ্ঠ এবং পশ্চিমঘাটের লৌহসমৃদ্ধ শিলা থেকে বাতাসের মাধ্যমে বালুকণাগুলি এখানে এসে জমা হতে থাকে। এই দীর্ঘমেয়াদি বায়ুপ্রবাহজনিত (aeolian) প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই গড়ে ওঠে থেরি কাড়ুর বর্তমান ভূচিত্র। ▪️ ভূবিজ্ঞানীদের মতে, এই অঞ্চল একসময় সমুদ্রের নিচে ছিল। সময়ের প্রবাহে বালির স্তর জমে জমে এখানে সৃষ্টি হয়েছে এক অনন্য ভূমিরূপ, যা শুধু প্রাকৃতিক নয়, ভূতাত্ত্বিকভাবেও অমূল্য। 🌬️ চলমান বালির বিস্ময়:- ▪️ থেরি কাড়ুর সবচেয়ে আকর্ষণীয় বৈশিষ্ট্য হল এর চলমান বালিয়াড়ি। এখানে বালু এক জায়গায় স্থির থাকে না, বরং প্রতিনিয়ত বাতাসের প্রভাবে স্থান পরিবর্তন করে। এই গুণ একে পরিণত করেছে এক জীবন্ত ভূপ্রাকৃতিক গবেষণাগারে, যা এখনও সম্পূর্ণরূপে ক্ষয়প্রাপ্ত নয়। ▪️ ড. ক্রিস্টি নির্মলা মেরি, মাদুরাইয়ের কৃষি কলেজের মাটির ও পরিবেশ বিভাগের প্রধান বলেন, “থেরি কাড়ু কোনো ঐতিহ্যবাহী মরুভূমি নয়, বরং এটি একটি নতুন গঠিত, চলমান লাল বালুর ভূমি, যা আমাদের ভূগোল ও পরিবেশচর্চায় অমূল্য অবদান রাখছে।” 🌿 প্রকৃতির লুকানো রত্ন:- ▪️ যদিও তামিলনাড়ু মূলত পরিচিত সবুজ ধানক্ষেত, প্রাচীন মন্দির এবং উপকূলীয় সৌন্দর্যের জন্য, থেরি কাড়ু এই রাজ্যের এক ব্যতিক্রমী ও রহস্যময় ভূমি। এটি পর্যটক, গবেষক, ভূবিজ্ঞানী ও প্রকৃতিপ্রেমীদের জন্য এক অনন্য গন্তব্য। 🔸 রাজস্থানের মরুভূমির রূপ আপনাকে মুগ্ধ করলেও, থেরি কাড়ুর লাল বালুর মরুভূমি আপনাকে ভাবাবে, বিস্মিত করবে এবং প্রকৃতির অসাধারণ ক্ষমতা সম্পর্কে নতুন করে জানাবে। 🔸 এটি শুধুই একটি প্রাকৃতিক দৃশ্য নয়—এ এক প্রাকৃতিক ঐতিহ্য, ভূতাত্ত্বিক ইতিহাসের জীবন্ত দলিল। তাই দক্ষিণ ভারতে ভ্রমণের সময় এই লুকিয়ে থাকা লাল মরুভূমিকে বাদ দেবেন না—কারণ প্রকৃতি এখানে নিজেই লিখেছে এক অনন্য কবিতা, লাল বালুর অক্ষরে। 💠 এই ধরনের নতুন নতুন তথ্যপূর্ণ পোস্ট পেতে হলে আমাদের পেজটিকে ফলো করবেন।।। Geography zone- ভূগোল বলয় #everyonefollowers #everyoneシ゚ #india #facts #follower #like #unknown #geography #ad #desert #Tamilnadu
    0 Commentarios 0 Acciones 8 Views
  • দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ তখন তুঙ্গে। বার্মার ঘন জঙ্গলে চলাফেরার জন্য ভারতীয় সেনাদের ট্রেনিং দেওয়া হচ্ছে মধ্য ভারতের মাউয়ের সামরিক ছাউনিতে। সেই সেনাবিভাগে এক ভারতীয় রাজ্যের যুবরাজ ছিলেন। ছাউনির সবাই তাঁকে ‘প্রিন্স’ বলে ডাকত। প্রিন্স নিজে শিকারি, আর তা নিয়ে প্রায়ই মহা আস্ফালন করতেন। কিছু পেটোয়া চ্যালাচামুণ্ডা ছিল তাঁর। সবাইকে নিয়ে বিকেলে ক্লাবঘরে বসে নরক গুলজার হতো। বক্তা মূলত প্রিন্স, বাকিরা মুগ্ধ শ্রোতা। একদিন প্রসঙ্গ উঠল শিকারে অব্যর্থ হতে হলে কী দরকার? নিমেষে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা, তীক্ষ্ণ দৃষ্টি, নাকি অব্যর্থ নিশানা? এক একজন এক একরকম মত দিলেন। কেউ বললেন তিনটি অথবা দু’টির যোগফল। প্রিন্স নিজে বললেন, ‘ওসব বাজে গল্প। অব্যর্থ নিশানাই শেষ কথা নয়।’ ঠিক তখনই ছাউনির ভারপ্রাপ্ত ব্রিটিশ অফিসার বলে উঠলেন, ‘আরে! আজ দেখি আমাদের মধ্যে এক এক্সপার্ট রয়েছেন। শোনাই যাক না উনি কী বলেন?’

    সবাই তাকিয়ে দেখল এককোণে চুপচাপ বসে এতক্ষণ নির্বাক রোদে-পোড়া, শক্ত চেহারার বলিষ্ঠ এক প্রৌঢ় তাঁদের তর্ক শুনে মিটিমিটি হাসছেন। তাঁর উদ্দেশ্যেই প্রশ্ন করায় এককথায় উত্তর দিলেন, ‘অব্যর্থ নিশানা। আর কিচ্ছু না!’ এই প্রথম প্রিন্সের কথাকে কেউ চ্যালেঞ্জ করলেন। যথারীতি তিনি ভয়ানক রেগে গেলেন। কে এই বৃদ্ধ! এত সাহসই বা তাঁর হয় কী করে? কোনওমতে রাগ চেপে প্রিন্স বললেন ‘আপনি প্রমাণ করতে পারবেন?’

    প্রৌঢ় আঙুল তুলে দেখালেন, ‘আচ্ছা, ওই দূরের গাছটা দেখ। একটা ওয়াই Y আকারের সরু ডালের মাঝের খাঁজে ছোট্ট একখানা পাখি বসে আছে। ডাল ভাঙবে না, কিন্তু পাখিটাকে মারতে হবে। পারবে?’ বিকেলের আলো পড়ে আসছে। চারিদিক ধোঁয়াটে ধূসর। প্রিন্স বললেন, ‘অসম্ভব! এই আলোতে নজরই চলে না, পাখি মারব কি করে?’

    উত্তরে প্রৌঢ় হাত বাড়িয়ে গাড়োয়ালী অনুচরের কাছ থেকে হেলায় একটা রাইফেল নিলেন, তুললেন, গুলি ছুঁড়লেন, বললেন, ‘কেন, এমনি করে?’ সবাই ছুটে গেলেন সেখানে। গিয়ে দেখা গেল ডালটি অভগ্ন, পাখিটি মৃত। কারও মুখে কথাটি সরে না। শেষে প্রিন্স কোনমতে তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘এ কেমন করে সম্ভব?’ প্রৌঢ় মুচকি হেসে উত্তর দিলেন ‘শোন তবে, যখন রুদ্রপ্রয়াগের চিতাটাকে মারি..’ এইটুকু শুনেই প্রিন্স যা বোঝার বুঝে গিয়েছেন ‘বলেন কী!! আপনিই তবে...’

    ‘হ্যাঁ, এই অধমের নামই এডোয়ার্ড জেমস করবেট। সবাই ভালবেসে জিম নামে ডাকে।’

    জিম করবেট জন্মেছিলেন পাহাড়ঘেরা নৈনিতালে। আজ থেকে দেড়শো বছর আগে। এই জুলাই মাসেরই ২৫ তারিখ। বাবা নৈনিতালের পোস্টমাস্টার। হ্রদ, নৈনিদেবীর মন্দির আর তার চারপাশের বন জঙ্গলে ঘুরে ঘুরেই করবেটের প্রথম প্রকৃতি প্রেম। তিনি লিখছেন, ‘দেবীর মন্দিরের চার মাইল ব্যাসার্ধের মধ্যে অন্যান্য জীবজন্তু ছাড়াও আমি বাঘ, চিতা, ভালুক আর সম্বর হরিণ দেখেছি, এবং একশো আটাশ জাতের পাখি চিনতে পেরেছি।’ করবেট জাতে সাহেব হলেও ছিলেন নিম্নবিত্ত ঘরের। পড়া স্কুলেই শেষ। আর বাল্যকাল কেটেছে নৈনিতালের তরাই অঞ্চলের সাধারণ, দরিদ্র কুমায়ুনীদের সঙ্গে—যাদের জন্য শেষজীবন পর্যন্ত অন্তরের টান বজায় ছিল তাঁর ।

    ১৮৯৫ সালে মাত্র কুড়ি বছর বয়সে করবেট বেঙ্গল অ্যান্ড নর্থ ওয়েস্টার্ন রেলওয়েতে শর্তাধীন কাজে ঢুকে পড়েন। এই করবেট লাজুক, স্বল্পভাষী আর কঠোর পরিশ্রমী। সঙ্গে শিকারের অদম্য নেশা। যাকে বলে ইন্ট্রোভার্ট, তার আদর্শ উদাহরণ। ভবিষ্যতের যে করবেট শত শত মাইল হেঁটে রুদ্রপ্রয়াগের চিতাকে একটি গুলিতে মারেন, অথবা অরণ্য ও অরণ্যপ্রাণী বাঁচাতে প্রাণ দিয়ে চেষ্টা করেন, কিংবা গ্রামের বাংলোর বারান্দায় বসে গ্রামীণ মানুষদের ওষুধ-পথ্য-সুশ্রুষার ব্যবস্থা করেন কিন্তু বিন্দুমাত্র যশপ্রার্থী হন না, তাঁর শুরু কিন্তু এখান থেকেই।
    বিশ শতকের শুরুর দিকে চম্পাবতের এক বাঘিনি গোটা উত্তরাঞ্চলে ভয়ানক ত্রাসের সৃষ্টি করল। প্রায় এক দশক ধরে পুলিস, গুপ্ত শিকারি, এমনকী নেপালি গোর্খা রেজিমেন্ট পর্যন্ত সেটিকে ধাওয়া করেও ধরতে পারেনি। অনেকে বিশ্বাস করত এ কোন পশু নয়, কোন অতৃপ্ত আত্মা। ওই বাঘিনির আক্রমণে শুধুমাত্র নথিভূক্ত মৃতের সংখ্যা ৪৩৬। গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ড অনুযায়ী আজ অবধি সর্বোচ্চ। যখন সবাই হাল ছেড়ে দিয়েছেন তখন একেবারে নবিশ শিকারী তরুণ জিম করবেট চ্যালেঞ্জটা নিয়েই নিলেন। তাঁর হাতেই খতম হল চম্পাবতের মানুষখাকী। ‘কুমায়ুনের মানুষখেকো’ (ম্যান-ইটার্স অব কুমায়ুন) বইতে একেবারে ছবির মত বর্ণনা আছে সেই হাড়হিম করা ঘটনার।

    ‘নদীর কাছে এগলাম যখন, ঝোপ ছেড়ে বাঘিনীনিটি সেই উঁচানে পাথরের উপর, আমি যে দিকে আছি সে দিকে বেরিয়ে এল। যখন ও বিশ ফুটের মধ্যে, বন্দুকটি তুললাম এবং আতঙ্কে দেখলাম যে নল দু’টি এবং ব্রিচ-ব্লকের মাঝখানে এক ইঞ্চির আট-তৃতীয়াংশ এক ফাঁক আছে। যখন দু’টি নলে ফায়ার করা হয় তখন বন্দুক ফাটেনি, সম্ভবত এখনও ফাটবে না, কিন্তু পিছু ধাক্কা খেয়ে কানা হয়ে যাবার বিপদ আছে। যাই হক, সে ঝুঁকি নিতেই হচ্ছে এবং যে পেল্লায় পুঁতিটি সাইটের কাজ করছিল, সেটি বাঘিনির হাঁ-করা মুখের দিকে নিশানা করে বসিয়ে আমি গুলি ছুঁড়লাম। হয়তো আমি উপর-নীচে নড়ে গিয়েছিলাম কিংবা হয়তো বেলনাকার বুলেটটি বিশ ফুট নির্ভুল পাঠাবার ক্ষমতা বন্দুকটির ছিল না। যাই হোক গুলিটি বাঘিনির মুখ ফসকাল এবং বিঁধল ওর ডান থাবায়, সেখান থেকে পরে আমি আঙুলের নখ দিয়ে সেটি সরিয়েছিলাম। সৌভাগ্যক্রমে ও তখন শেষ অবস্থায় পৌঁছেছিল এবং পায়ের উপর আঘাতটি ওঁকে সমুখপানে টলিয়ে ফেলে দেবার কাজ যথেষ্টই করল। পাথরটার এক ধার দিয়ে মাথাটি ঝুঁকিয়ে ও মৃত্যুতে শান্ত হল।’

    রাতারাতি জিম করবেট এক কিংবদন্তিতে পরিণত হলেন। সেই শুরু। তারপর যেখানেই মানুষখেকো বাঘের অত্যাচার শুরু হতো, জিমকে ডেকে পাঠাতেন সেখানকার শাসক। কিংবা জিম নিজেই চলে যেতেন। ১৯০৭ থেকে ১৯৩৮’এর মধ্যে তিনি মোট ৩৩টি মানুষখেকোর শিকার করেন, যারা সব মিলিয়ে প্রায় ১২০০ মানুষ মেরেছিল। এদের মধ্যে দু’খানি মানুষখেকো চিতাবাঘ। রুদ্রপ্রয়াগের মানুষখেকো চিতাবাঘ ভারতের ইতিহাসে প্রায় অমর হয়ে গেছে।

    ১২৬ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করা চিতাটিকে নিয়ে করবেট নিজে লিখেছেন, ‘বাঘেরা যে-কারণে নরখাদক হয়, চিতারা সে-কারণে হয় না। আমাদের জঙ্গলের সকল জন্তুর মধ্যে চিতা সবচেয়ে সুন্দর, সাবলীল। জখম হলে, বা কোণঠাসা হলে সাহসে সে কারও চেয়ে কম যায় না। তবে এরা এমন মড়াখেকো, যে খিদের জ্বালায় জঙ্গলে যে মড়া পায়, তা-ই খায়। ঠিক আফ্রিকার জঙ্গলের সিংহদের মতো... ১৯১৮ সালে দেশ জুড়ে ইনফ্লুয়েঞ্জার মড়ক দেখা দেয়। ভারতে দশ লক্ষেরও বেশি মানুষ মারা পড়ে। এ মড়কের কঠিন মূল্য দিতে হয় গাড়োয়ালকে। মহামারীর শেষে গাড়োয়ালের নরখাদক আত্মপ্রকাশ করে। ১৯১৮ সালের ৯ই জুন, বৈঁজি গ্রামে রুদ্রপ্রয়াগের নরখাদক চিতা প্রথম মানুষ মারে, নথিতে লেখা আছে। সর্বশেষ যে মৃত্যুর জন্য নরখাদকটি দায়ী, তা ১৯২৬ সালের ১৪ই এপ্রিল ভৈঁসোয়ারা গ্রামে ঘটে। সরকারি নথিতে লেখা আছে। এই দু’টি তারিখের মধ্যে ১২৫ জন মানুষ মারা পড়ে।’

    মাইলের পর মাইল হেঁটে প্রায় হতাশ হয়ে যখন ভাবছেন শিকারই ছেড়ে দেবেন, প্রায় দৈবক্রমে তিনি চিতাটিকে শিকার করলেন। কিন্তু আশ্চর্যের ব্যাপার, ঠিক তারপরেই যা লিখলেন তা কোন দক্ষ শিকারীর দম্ভের আস্ফালন না, বরং পড়লে আজও মন ভিজে ওঠে।

    ‘এখানে পড়ে আছে একটি বুড়ো চিতা, অন্য চিতাদের সঙ্গে ওর এইমাত্র তফাত, যে ওর মুখটা ধূসর, ঠোঁটের উপর গোঁফ নেই। ভারতবর্ষে সবার চেয়ে ঘৃণ্য এবং সন্ত্রাসকারী জন্তু, যার একমাত্র অপরাধ—প্রকৃতির নিয়মের বিরুদ্ধে নয়, কিন্তু মানুষের নিয়মের বিরুদ্ধে—সে মানুষের রক্তপাত করেছে। মানুষকে আতঙ্কিত করার জন্য নয়, শুধু নিজের প্রাণ রক্ষার জন্য। সে এখন গর্তের ধারে থুতনি রেখে শুয়ে আছে, চোখদু’টি আধবোজা, তার শেষ ঘুমে শান্তি মগ্ন।’ অন্য আর দশটা শিকারীর থেকে এক মূহূর্তে জিম করবেট আলাদা হয়ে যান এখানেই। তাঁর শিকার নিতান্ত অভিযান, অ্যাডভেঞ্চার কিংবা স্পোর্টের জন্য নয়। মনেপ্রাণে তিনি বিশ্বাস করতেন, ‘বাঘ উদারহৃদয় ভদ্রলোক। সীমাহীন তার সাহস। যে দিন বাঘকে বিলোপ করে দেওয়া হবে, যদি বাঘের সপক্ষে জনমত গড়ে না ওঠে বাঘ লোপ পাবেই, তা হলে ভারতের শ্রেষ্ঠতম প্রাণীর বিলোপে ভারত দরিদ্রতরই হবে।’ একমাত্র যখনই কোন বাঘ সাধারণ, নিরপরাধ মানুষের জন্য বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে, একমাত্র তখনই ঝলসে উঠেছে তাঁর রাইফেল। ১৯৩৮ সালের ৩০ নভেম্বর থাক-এর মানুষখেকো বাঘিনিকে হত্যার পর অফিসিয়ালি শিকার ত্যাগ করলেন। তারপর মেতে উঠলেন বাঘেদের অভয়াশ্রম তৈরির কাজে। বহু ভারতীয়কে নিঃস্বার্থ ভাবে সাহায্য করেছেন শুধু এই বিশ্বাসে, ‘ভারতীয়রা বেইমানি করে না।’

    ১৯৪৪ সালে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস থেকে প্রকাশ পায় রেমন্ড শেপার্ডের ছবিতে সাজানো তাঁর লেখা বই ‘Man-Eaters of Kumaon’। প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গেই বেস্ট সেলার। এক বছরের মধ্যে হু-হু করে বিক্রি হয়ে যায় প্রায় লাখ পাঁচেক বই। এই বইয়েরই বাংলা অনুবাদের অদ্ভুত সুন্দর এক মলাট করেছিলেন সত্যজিৎ রায়। ১৯৫৩-এ প্রকাশিত প্রচ্ছদে দু’-মলাট জোড়া কালো আর হলদে বাঘের ছাল যেন ছড়িয়ে রাখা হয়েছে। নীচের দিকে গুলির গর্ত যা পিছনের দিকে ফুঁড়ে চলে গেছে। গুলি ঢোকার সময় ফুটো ছোটো হয়। ফুঁড়ে বেরোবার সময় চ্যাপ্টা ও বড়ো হয়। সেটাও প্রচ্ছদ তৈরির সময় মাথায় রেখেছেন সত্যজিৎ। লেখক হলেও বেস্ট সেলার হতেন জিম। কিন্তু বই লিখলেন মাত্র ছ’টি।

    ১৯৪৭ সালে ভারত স্বাধীন হল। নভেম্বরে বোন ম্যাগিকে সঙ্গে নিয়ে এস. এস. অ্যারোন্দা জাহাজে মোম্বাসা আর সেখান থেকে নাইরোবি হয়ে নায়েরি শহরে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করলেন জিম। ১৯৫৫ সালে আচমকা না ফেরার দেশে চলে যাওয়ার আগে পর্যন্ত ওখানেই ছিলেন। আসলে জিমের ভয় ছিল স্বাধীন ভারতে হয়তো তাঁর উপরে অত্যাচার নেমে আসবে । জন্মসূত্রে ইংরেজ হওয়ায় তিনি হয়তো সুবিচার পাবেন না। তাঁর প্রিয় ভারতভূমি ছেড়ে যাবার আগে নৈনিতালের বাড়ি বিক্রি করে বহুদিনের বিশ্বস্ত সঙ্গী রাইফেল ও বন্দুকগুলো গভীর জঙ্গলে ‘সমাধিস্থ’ করে এসেছিলেন ভারতের সেরা শিকারী, যিনি মনেপ্রাণে চিরকাল এক ভারতীয় হয়েই থেকে গিয়েছেন। তা না হলে কে এমন করে লিখতে পারে-
    ‘আমার ভারত, যে ভারতকে আমি জানি, সেই ভারতে যে চল্লিশ কোটি মানুষের বাস, তার মধ্যে শতকরা নব্বই জনই সরল, সৎ, সাহসী, আর কঠোর পরিশ্রমী। ... সত্যিই এরা বড় গরিব। এদের প্রায়শই ‘ভারতের বুভুক্ষু কোটি-কোটি মানুষ’ বলে বর্ণনা করা হয়ে থাকে। এদের মধ্যেই আমি বাস করেছি এবং এদের আমি ভালোবাসি। এই নরনারীদের কথাই এই বইয়ের পাতায় বলার চেষ্টা করেছি। আমার বন্ধু, ভারতের সেই গরিবদের উদ্দেশে আমি আমার এই বইখানি শ্রদ্ধাভরে উৎসর্গ করলাম।’

    জন্মের সার্ধশতবর্ষে এই মনীষীকে প্রণাম।

    জিম করবেট ১৫০। বর্তমান পত্রিকায় গত ২০ জুলাই প্রকাশিত।

    লেখক - কৌশিক মজুমদার
    দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ তখন তুঙ্গে। বার্মার ঘন জঙ্গলে চলাফেরার জন্য ভারতীয় সেনাদের ট্রেনিং দেওয়া হচ্ছে মধ্য ভারতের মাউয়ের সামরিক ছাউনিতে। সেই সেনাবিভাগে এক ভারতীয় রাজ্যের যুবরাজ ছিলেন। ছাউনির সবাই তাঁকে ‘প্রিন্স’ বলে ডাকত। প্রিন্স নিজে শিকারি, আর তা নিয়ে প্রায়ই মহা আস্ফালন করতেন। কিছু পেটোয়া চ্যালাচামুণ্ডা ছিল তাঁর। সবাইকে নিয়ে বিকেলে ক্লাবঘরে বসে নরক গুলজার হতো। বক্তা মূলত প্রিন্স, বাকিরা মুগ্ধ শ্রোতা। একদিন প্রসঙ্গ উঠল শিকারে অব্যর্থ হতে হলে কী দরকার? নিমেষে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা, তীক্ষ্ণ দৃষ্টি, নাকি অব্যর্থ নিশানা? এক একজন এক একরকম মত দিলেন। কেউ বললেন তিনটি অথবা দু’টির যোগফল। প্রিন্স নিজে বললেন, ‘ওসব বাজে গল্প। অব্যর্থ নিশানাই শেষ কথা নয়।’ ঠিক তখনই ছাউনির ভারপ্রাপ্ত ব্রিটিশ অফিসার বলে উঠলেন, ‘আরে! আজ দেখি আমাদের মধ্যে এক এক্সপার্ট রয়েছেন। শোনাই যাক না উনি কী বলেন?’ সবাই তাকিয়ে দেখল এককোণে চুপচাপ বসে এতক্ষণ নির্বাক রোদে-পোড়া, শক্ত চেহারার বলিষ্ঠ এক প্রৌঢ় তাঁদের তর্ক শুনে মিটিমিটি হাসছেন। তাঁর উদ্দেশ্যেই প্রশ্ন করায় এককথায় উত্তর দিলেন, ‘অব্যর্থ নিশানা। আর কিচ্ছু না!’ এই প্রথম প্রিন্সের কথাকে কেউ চ্যালেঞ্জ করলেন। যথারীতি তিনি ভয়ানক রেগে গেলেন। কে এই বৃদ্ধ! এত সাহসই বা তাঁর হয় কী করে? কোনওমতে রাগ চেপে প্রিন্স বললেন ‘আপনি প্রমাণ করতে পারবেন?’ প্রৌঢ় আঙুল তুলে দেখালেন, ‘আচ্ছা, ওই দূরের গাছটা দেখ। একটা ওয়াই Y আকারের সরু ডালের মাঝের খাঁজে ছোট্ট একখানা পাখি বসে আছে। ডাল ভাঙবে না, কিন্তু পাখিটাকে মারতে হবে। পারবে?’ বিকেলের আলো পড়ে আসছে। চারিদিক ধোঁয়াটে ধূসর। প্রিন্স বললেন, ‘অসম্ভব! এই আলোতে নজরই চলে না, পাখি মারব কি করে?’ উত্তরে প্রৌঢ় হাত বাড়িয়ে গাড়োয়ালী অনুচরের কাছ থেকে হেলায় একটা রাইফেল নিলেন, তুললেন, গুলি ছুঁড়লেন, বললেন, ‘কেন, এমনি করে?’ সবাই ছুটে গেলেন সেখানে। গিয়ে দেখা গেল ডালটি অভগ্ন, পাখিটি মৃত। কারও মুখে কথাটি সরে না। শেষে প্রিন্স কোনমতে তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘এ কেমন করে সম্ভব?’ প্রৌঢ় মুচকি হেসে উত্তর দিলেন ‘শোন তবে, যখন রুদ্রপ্রয়াগের চিতাটাকে মারি..’ এইটুকু শুনেই প্রিন্স যা বোঝার বুঝে গিয়েছেন ‘বলেন কী!! আপনিই তবে...’ ‘হ্যাঁ, এই অধমের নামই এডোয়ার্ড জেমস করবেট। সবাই ভালবেসে জিম নামে ডাকে।’ জিম করবেট জন্মেছিলেন পাহাড়ঘেরা নৈনিতালে। আজ থেকে দেড়শো বছর আগে। এই জুলাই মাসেরই ২৫ তারিখ। বাবা নৈনিতালের পোস্টমাস্টার। হ্রদ, নৈনিদেবীর মন্দির আর তার চারপাশের বন জঙ্গলে ঘুরে ঘুরেই করবেটের প্রথম প্রকৃতি প্রেম। তিনি লিখছেন, ‘দেবীর মন্দিরের চার মাইল ব্যাসার্ধের মধ্যে অন্যান্য জীবজন্তু ছাড়াও আমি বাঘ, চিতা, ভালুক আর সম্বর হরিণ দেখেছি, এবং একশো আটাশ জাতের পাখি চিনতে পেরেছি।’ করবেট জাতে সাহেব হলেও ছিলেন নিম্নবিত্ত ঘরের। পড়া স্কুলেই শেষ। আর বাল্যকাল কেটেছে নৈনিতালের তরাই অঞ্চলের সাধারণ, দরিদ্র কুমায়ুনীদের সঙ্গে—যাদের জন্য শেষজীবন পর্যন্ত অন্তরের টান বজায় ছিল তাঁর । ১৮৯৫ সালে মাত্র কুড়ি বছর বয়সে করবেট বেঙ্গল অ্যান্ড নর্থ ওয়েস্টার্ন রেলওয়েতে শর্তাধীন কাজে ঢুকে পড়েন। এই করবেট লাজুক, স্বল্পভাষী আর কঠোর পরিশ্রমী। সঙ্গে শিকারের অদম্য নেশা। যাকে বলে ইন্ট্রোভার্ট, তার আদর্শ উদাহরণ। ভবিষ্যতের যে করবেট শত শত মাইল হেঁটে রুদ্রপ্রয়াগের চিতাকে একটি গুলিতে মারেন, অথবা অরণ্য ও অরণ্যপ্রাণী বাঁচাতে প্রাণ দিয়ে চেষ্টা করেন, কিংবা গ্রামের বাংলোর বারান্দায় বসে গ্রামীণ মানুষদের ওষুধ-পথ্য-সুশ্রুষার ব্যবস্থা করেন কিন্তু বিন্দুমাত্র যশপ্রার্থী হন না, তাঁর শুরু কিন্তু এখান থেকেই। বিশ শতকের শুরুর দিকে চম্পাবতের এক বাঘিনি গোটা উত্তরাঞ্চলে ভয়ানক ত্রাসের সৃষ্টি করল। প্রায় এক দশক ধরে পুলিস, গুপ্ত শিকারি, এমনকী নেপালি গোর্খা রেজিমেন্ট পর্যন্ত সেটিকে ধাওয়া করেও ধরতে পারেনি। অনেকে বিশ্বাস করত এ কোন পশু নয়, কোন অতৃপ্ত আত্মা। ওই বাঘিনির আক্রমণে শুধুমাত্র নথিভূক্ত মৃতের সংখ্যা ৪৩৬। গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ড অনুযায়ী আজ অবধি সর্বোচ্চ। যখন সবাই হাল ছেড়ে দিয়েছেন তখন একেবারে নবিশ শিকারী তরুণ জিম করবেট চ্যালেঞ্জটা নিয়েই নিলেন। তাঁর হাতেই খতম হল চম্পাবতের মানুষখাকী। ‘কুমায়ুনের মানুষখেকো’ (ম্যান-ইটার্স অব কুমায়ুন) বইতে একেবারে ছবির মত বর্ণনা আছে সেই হাড়হিম করা ঘটনার। ‘নদীর কাছে এগলাম যখন, ঝোপ ছেড়ে বাঘিনীনিটি সেই উঁচানে পাথরের উপর, আমি যে দিকে আছি সে দিকে বেরিয়ে এল। যখন ও বিশ ফুটের মধ্যে, বন্দুকটি তুললাম এবং আতঙ্কে দেখলাম যে নল দু’টি এবং ব্রিচ-ব্লকের মাঝখানে এক ইঞ্চির আট-তৃতীয়াংশ এক ফাঁক আছে। যখন দু’টি নলে ফায়ার করা হয় তখন বন্দুক ফাটেনি, সম্ভবত এখনও ফাটবে না, কিন্তু পিছু ধাক্কা খেয়ে কানা হয়ে যাবার বিপদ আছে। যাই হক, সে ঝুঁকি নিতেই হচ্ছে এবং যে পেল্লায় পুঁতিটি সাইটের কাজ করছিল, সেটি বাঘিনির হাঁ-করা মুখের দিকে নিশানা করে বসিয়ে আমি গুলি ছুঁড়লাম। হয়তো আমি উপর-নীচে নড়ে গিয়েছিলাম কিংবা হয়তো বেলনাকার বুলেটটি বিশ ফুট নির্ভুল পাঠাবার ক্ষমতা বন্দুকটির ছিল না। যাই হোক গুলিটি বাঘিনির মুখ ফসকাল এবং বিঁধল ওর ডান থাবায়, সেখান থেকে পরে আমি আঙুলের নখ দিয়ে সেটি সরিয়েছিলাম। সৌভাগ্যক্রমে ও তখন শেষ অবস্থায় পৌঁছেছিল এবং পায়ের উপর আঘাতটি ওঁকে সমুখপানে টলিয়ে ফেলে দেবার কাজ যথেষ্টই করল। পাথরটার এক ধার দিয়ে মাথাটি ঝুঁকিয়ে ও মৃত্যুতে শান্ত হল।’ রাতারাতি জিম করবেট এক কিংবদন্তিতে পরিণত হলেন। সেই শুরু। তারপর যেখানেই মানুষখেকো বাঘের অত্যাচার শুরু হতো, জিমকে ডেকে পাঠাতেন সেখানকার শাসক। কিংবা জিম নিজেই চলে যেতেন। ১৯০৭ থেকে ১৯৩৮’এর মধ্যে তিনি মোট ৩৩টি মানুষখেকোর শিকার করেন, যারা সব মিলিয়ে প্রায় ১২০০ মানুষ মেরেছিল। এদের মধ্যে দু’খানি মানুষখেকো চিতাবাঘ। রুদ্রপ্রয়াগের মানুষখেকো চিতাবাঘ ভারতের ইতিহাসে প্রায় অমর হয়ে গেছে। ১২৬ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করা চিতাটিকে নিয়ে করবেট নিজে লিখেছেন, ‘বাঘেরা যে-কারণে নরখাদক হয়, চিতারা সে-কারণে হয় না। আমাদের জঙ্গলের সকল জন্তুর মধ্যে চিতা সবচেয়ে সুন্দর, সাবলীল। জখম হলে, বা কোণঠাসা হলে সাহসে সে কারও চেয়ে কম যায় না। তবে এরা এমন মড়াখেকো, যে খিদের জ্বালায় জঙ্গলে যে মড়া পায়, তা-ই খায়। ঠিক আফ্রিকার জঙ্গলের সিংহদের মতো... ১৯১৮ সালে দেশ জুড়ে ইনফ্লুয়েঞ্জার মড়ক দেখা দেয়। ভারতে দশ লক্ষেরও বেশি মানুষ মারা পড়ে। এ মড়কের কঠিন মূল্য দিতে হয় গাড়োয়ালকে। মহামারীর শেষে গাড়োয়ালের নরখাদক আত্মপ্রকাশ করে। ১৯১৮ সালের ৯ই জুন, বৈঁজি গ্রামে রুদ্রপ্রয়াগের নরখাদক চিতা প্রথম মানুষ মারে, নথিতে লেখা আছে। সর্বশেষ যে মৃত্যুর জন্য নরখাদকটি দায়ী, তা ১৯২৬ সালের ১৪ই এপ্রিল ভৈঁসোয়ারা গ্রামে ঘটে। সরকারি নথিতে লেখা আছে। এই দু’টি তারিখের মধ্যে ১২৫ জন মানুষ মারা পড়ে।’ মাইলের পর মাইল হেঁটে প্রায় হতাশ হয়ে যখন ভাবছেন শিকারই ছেড়ে দেবেন, প্রায় দৈবক্রমে তিনি চিতাটিকে শিকার করলেন। কিন্তু আশ্চর্যের ব্যাপার, ঠিক তারপরেই যা লিখলেন তা কোন দক্ষ শিকারীর দম্ভের আস্ফালন না, বরং পড়লে আজও মন ভিজে ওঠে। ‘এখানে পড়ে আছে একটি বুড়ো চিতা, অন্য চিতাদের সঙ্গে ওর এইমাত্র তফাত, যে ওর মুখটা ধূসর, ঠোঁটের উপর গোঁফ নেই। ভারতবর্ষে সবার চেয়ে ঘৃণ্য এবং সন্ত্রাসকারী জন্তু, যার একমাত্র অপরাধ—প্রকৃতির নিয়মের বিরুদ্ধে নয়, কিন্তু মানুষের নিয়মের বিরুদ্ধে—সে মানুষের রক্তপাত করেছে। মানুষকে আতঙ্কিত করার জন্য নয়, শুধু নিজের প্রাণ রক্ষার জন্য। সে এখন গর্তের ধারে থুতনি রেখে শুয়ে আছে, চোখদু’টি আধবোজা, তার শেষ ঘুমে শান্তি মগ্ন।’ অন্য আর দশটা শিকারীর থেকে এক মূহূর্তে জিম করবেট আলাদা হয়ে যান এখানেই। তাঁর শিকার নিতান্ত অভিযান, অ্যাডভেঞ্চার কিংবা স্পোর্টের জন্য নয়। মনেপ্রাণে তিনি বিশ্বাস করতেন, ‘বাঘ উদারহৃদয় ভদ্রলোক। সীমাহীন তার সাহস। যে দিন বাঘকে বিলোপ করে দেওয়া হবে, যদি বাঘের সপক্ষে জনমত গড়ে না ওঠে বাঘ লোপ পাবেই, তা হলে ভারতের শ্রেষ্ঠতম প্রাণীর বিলোপে ভারত দরিদ্রতরই হবে।’ একমাত্র যখনই কোন বাঘ সাধারণ, নিরপরাধ মানুষের জন্য বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে, একমাত্র তখনই ঝলসে উঠেছে তাঁর রাইফেল। ১৯৩৮ সালের ৩০ নভেম্বর থাক-এর মানুষখেকো বাঘিনিকে হত্যার পর অফিসিয়ালি শিকার ত্যাগ করলেন। তারপর মেতে উঠলেন বাঘেদের অভয়াশ্রম তৈরির কাজে। বহু ভারতীয়কে নিঃস্বার্থ ভাবে সাহায্য করেছেন শুধু এই বিশ্বাসে, ‘ভারতীয়রা বেইমানি করে না।’ ১৯৪৪ সালে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস থেকে প্রকাশ পায় রেমন্ড শেপার্ডের ছবিতে সাজানো তাঁর লেখা বই ‘Man-Eaters of Kumaon’। প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গেই বেস্ট সেলার। এক বছরের মধ্যে হু-হু করে বিক্রি হয়ে যায় প্রায় লাখ পাঁচেক বই। এই বইয়েরই বাংলা অনুবাদের অদ্ভুত সুন্দর এক মলাট করেছিলেন সত্যজিৎ রায়। ১৯৫৩-এ প্রকাশিত প্রচ্ছদে দু’-মলাট জোড়া কালো আর হলদে বাঘের ছাল যেন ছড়িয়ে রাখা হয়েছে। নীচের দিকে গুলির গর্ত যা পিছনের দিকে ফুঁড়ে চলে গেছে। গুলি ঢোকার সময় ফুটো ছোটো হয়। ফুঁড়ে বেরোবার সময় চ্যাপ্টা ও বড়ো হয়। সেটাও প্রচ্ছদ তৈরির সময় মাথায় রেখেছেন সত্যজিৎ। লেখক হলেও বেস্ট সেলার হতেন জিম। কিন্তু বই লিখলেন মাত্র ছ’টি। ১৯৪৭ সালে ভারত স্বাধীন হল। নভেম্বরে বোন ম্যাগিকে সঙ্গে নিয়ে এস. এস. অ্যারোন্দা জাহাজে মোম্বাসা আর সেখান থেকে নাইরোবি হয়ে নায়েরি শহরে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করলেন জিম। ১৯৫৫ সালে আচমকা না ফেরার দেশে চলে যাওয়ার আগে পর্যন্ত ওখানেই ছিলেন। আসলে জিমের ভয় ছিল স্বাধীন ভারতে হয়তো তাঁর উপরে অত্যাচার নেমে আসবে । জন্মসূত্রে ইংরেজ হওয়ায় তিনি হয়তো সুবিচার পাবেন না। তাঁর প্রিয় ভারতভূমি ছেড়ে যাবার আগে নৈনিতালের বাড়ি বিক্রি করে বহুদিনের বিশ্বস্ত সঙ্গী রাইফেল ও বন্দুকগুলো গভীর জঙ্গলে ‘সমাধিস্থ’ করে এসেছিলেন ভারতের সেরা শিকারী, যিনি মনেপ্রাণে চিরকাল এক ভারতীয় হয়েই থেকে গিয়েছেন। তা না হলে কে এমন করে লিখতে পারে- ‘আমার ভারত, যে ভারতকে আমি জানি, সেই ভারতে যে চল্লিশ কোটি মানুষের বাস, তার মধ্যে শতকরা নব্বই জনই সরল, সৎ, সাহসী, আর কঠোর পরিশ্রমী। ... সত্যিই এরা বড় গরিব। এদের প্রায়শই ‘ভারতের বুভুক্ষু কোটি-কোটি মানুষ’ বলে বর্ণনা করা হয়ে থাকে। এদের মধ্যেই আমি বাস করেছি এবং এদের আমি ভালোবাসি। এই নরনারীদের কথাই এই বইয়ের পাতায় বলার চেষ্টা করেছি। আমার বন্ধু, ভারতের সেই গরিবদের উদ্দেশে আমি আমার এই বইখানি শ্রদ্ধাভরে উৎসর্গ করলাম।’ জন্মের সার্ধশতবর্ষে এই মনীষীকে প্রণাম। জিম করবেট ১৫০। বর্তমান পত্রিকায় গত ২০ জুলাই প্রকাশিত। লেখক - কৌশিক মজুমদার
    0 Commentarios 0 Acciones 7 Views
  • মাইলস্টোন স্কুলের যে ক্লাসরুম গুলো পু!ড়ে গিয়েছে সেগুলো ঠিকঠাক করার জন্যে মিস্ত্রী আনা হয়েছে, কিছু কিছু রুম ঘষেমেজে পরিষ্কার করা হচ্ছে।
    র! ক্তের দাগ, মেঝেতে লেগে থাকা পো**ড়া শরীরের ঝল*সানো মাং-স, হা-ড়গোড় সবকিছুই পরিষ্কার করে সরানো হচ্ছে।
    রবিবার থেকে স্কুল খোলার নির্দেশও দেয়া হয়েছে।
    বাচ্চারা আবারও সেই চিরচেনা ক্লাসরুমে যাবে।
    স্কাই সেকশন, ক্লাউড সেকশনের বাচ্চারা দেখবে তাদের পরিচিত অনেক বন্ধুরাই নেই, শুধু বেঞ্চে লেগে থাকা ঝল*সানো মাংস আর স্মৃতিগুলো আছে।
    এই ক্লাসরুমে বসেই তো একসাথে ক্লাস করতো, খেলতো, গান গাইতো ওরা। অথচ অনেকেই আর ক্লাসে আসবে না।
    স্কুলের মাঠ দেখে বাকি স্টুডেন্টদেরও মনে পড়বে সেদিনের কথা।
    কিন্তু বছর ঘুরলেই বাচ্চারাও হয়তো চিরায়ত নিয়ম মেনে আবারও ক্লাস করবে, গান গাইবে, খেলবে, ভু*লে যাবে অনেককিছু।
    পৃথিবী কারো জন্যেই থেমে থাকে না। ঝলসানো শরীরে মা**রা যাওয়া নিষ্পাপ বাচ্চাদের জন্যেও হয়তো থেমে থাকবে না।
    এক টপিকের পর আরেক টপিক আসবে, নতুন কনটেক্সটের ভিড়ে আমরাও হয়তো ভু**লে যাব সবকিছু।
    কিন্তু যেই মা তার সন্তানের পোড়া লা**শ ছুঁয়েছে সে-ই মা কি আর কোনদিনও ভুলতে পারবে.?
    মাইলস্টোন স্কুলের যে ক্লাসরুম গুলো পু!ড়ে গিয়েছে সেগুলো ঠিকঠাক করার জন্যে মিস্ত্রী আনা হয়েছে, কিছু কিছু রুম ঘষেমেজে পরিষ্কার করা হচ্ছে। র! ক্তের দাগ, মেঝেতে লেগে থাকা পো**ড়া শরীরের ঝল*সানো মাং-স, হা-ড়গোড় সবকিছুই পরিষ্কার করে সরানো হচ্ছে। রবিবার থেকে স্কুল খোলার নির্দেশও দেয়া হয়েছে। বাচ্চারা আবারও সেই চিরচেনা ক্লাসরুমে যাবে। স্কাই সেকশন, ক্লাউড সেকশনের বাচ্চারা দেখবে তাদের পরিচিত অনেক বন্ধুরাই নেই, শুধু বেঞ্চে লেগে থাকা ঝল*সানো মাংস আর স্মৃতিগুলো আছে। এই ক্লাসরুমে বসেই তো একসাথে ক্লাস করতো, খেলতো, গান গাইতো ওরা। অথচ অনেকেই আর ক্লাসে আসবে না। স্কুলের মাঠ দেখে বাকি স্টুডেন্টদেরও মনে পড়বে সেদিনের কথা। কিন্তু বছর ঘুরলেই বাচ্চারাও হয়তো চিরায়ত নিয়ম মেনে আবারও ক্লাস করবে, গান গাইবে, খেলবে, ভু*লে যাবে অনেককিছু। পৃথিবী কারো জন্যেই থেমে থাকে না। ঝলসানো শরীরে মা**রা যাওয়া নিষ্পাপ বাচ্চাদের জন্যেও হয়তো থেমে থাকবে না। এক টপিকের পর আরেক টপিক আসবে, নতুন কনটেক্সটের ভিড়ে আমরাও হয়তো ভু**লে যাব সবকিছু। কিন্তু যেই মা তার সন্তানের পোড়া লা**শ ছুঁয়েছে সে-ই মা কি আর কোনদিনও ভুলতে পারবে.?
    0 Commentarios 0 Acciones 8 Views
  • বাংলাদেশি মেরিন ক্যাডেটদের চাকরির সংকট বাস্তবতা ও কারণসমূহ

    ১. প্রতিবছর শত শত তরুণ ক্যাডেট দেশের Marine Academy গুলো থেকে পাস করে জীবনের প্রথম জাহাজে ওঠার স্বপ্ন নিয়ে অপেক্ষায় থাকে। কিন্তু বাস্তবতা হলো, প্রথম বছরেই তাদের মধ্যে ৫০ শতাংশেরও কম চাকরি পায়। বাকিরা বছরের পর বছর Sea Time-এর জন্য অপেক্ষা করে। অনেকেই হতাশ হয়ে ক্যারিয়ার ছেড়ে দেয়। এই তরুণরা কিন্তু একটি বিশেষায়িত ট্রেনিং সম্পন্ন করে শুধুমাত্র মেরিটাইম ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করার উপযোগী হয়েছে। অন্য কোনো সেক্টরে তাদের প্রতিষ্ঠিত হওয়া প্রায় অসম্ভব। আরও দুর্ভাগ্যের বিষয় হলো, চার বছরের অনার্স কোর্সে মাত্র দুই বছর একাডেমিক ট্রেনিং করিয়ে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। বাকি এক বছর জাহাজে ইন্টার্নশিপ (Cadetship) এবং শেষের এক বছর একাডেমিতে ফিরে দুইটি সেমিস্টার কমপ্লিট করে তবেই তারা অনার্স ডিগ্রি সম্পন্ন করতে পারে। ফলে এই পড়াশোনা সম্পূর্ণ না হওয়ার কারণে তারা বিসিএস কিংবা মাস্টার্সে পর্যন্ত আবেদন করতে পারে না। এটি নিঃসন্দেহে তাদের জন্য এক করুণ বাস্তবতা।
    ২. সরকারি ও বেসরকারি Marine Academy গুলোর Intake সংখ্যা প্রতিবছরই বাড়ছে, অথচ আন্তর্জাতিক চাকরির বাজারে সেই পরিমাণ চাহিদা নেই। Supply & Demand এর ভারসাম্য না থাকায় পরিস্থিতি দিন দিন জটিল হচ্ছে। অথচ এই বিষয়টি নিয়ন্ত্রণে দেশের একমাত্র কর্তৃপক্ষ DG Shipping কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারছে না।
    ৩. বাংলাদেশের পতাকাবাহী (BD Flag) জাহাজের সংখ্যা যেমন কম, তার চেয়েও বড় সমস্যা হলো, এগুলোর অনেক মালিকই নিয়ম অনুযায়ী ক্যাডেট নিতে চান না। আবার ক্যাডেট নিয়োগ দিলে তাঁদের জন্য কোনো সরকারি প্রণোদনাও নেই, ফলে মালিকরা একে বোঝা হিসেবে দেখেন।
    ৪. অনেক বিদেশি কোম্পানির জাহাজ বাংলাদেশে আসে, কিন্তু আমাদের ক্যাডেটরা সেখানে সুযোগ পায় না। যদি সরকার প্রণোদনা ঘোষণা করে, তাহলে বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশি শিপিং কোম্পানির ম্যানেজার, ক্যাপ্টেন ও চিফ ইঞ্জিনিয়ারদের মাধ্যমে এসব কোম্পানিকে রাজি করানো সম্ভব।
    ৫. চাকরির আশায় অনেক ক্যাডেট ম্যানিং এজেন্সিগুলোর শরণাপন্ন হচ্ছে। কিন্তু যথাযথ মনিটরিং-এর অভাবে অনেকেই প্রতারণার শিকার হচ্ছে। সার্ভিস চার্জের নামে লাখ লাখ টাকা আদায় করা হচ্ছে, অথচ চাকরির কোনো নিশ্চয়তা নেই। একাডেমি কিংবা DG Shipping এর এই বিষয়ে কোনো নিয়ন্ত্রণ বা দায়বদ্ধতা নেই। ফলে ক্যাডেটরা অসহায়। যারা সামর্থ্যবান তারা বিশাল অঙ্কের টাকা খরচ করে জাহাজে ওঠার চেষ্টা করছে।
    ৬. Marine Academy গুলোর কারিকুলাম অনেকটাই পুরনো এবং নিয়মিত আপডেট হচ্ছে না। Maritime English, Soft Skills, Interview Preparation ও বাস্তবভিত্তিক ট্রেনিংয়ের যথাযথ ব্যবস্থা নেই। যার কারণে তারা আন্তর্জাতিক কোম্পানিগুলোর ইন্টারভিউতে ভালো করতে পারছে না। যেমন, এই বছর Oldendorff, OSM Thome, Hafnia এর মত কোম্পানিগুলোর ইন্টারভিউতে সাকসেস রেট ছিল ৫০ শতাংশেরও কম। কোম্পানিগুলো আশানুরূপ জ্ঞান ও দক্ষতা না পেয়ে হতাশ হয়েছে।
    ৭. সিঙ্গাপুর, ইউএই, ওমান, কাতারসহ গুরুত্বপূর্ণ Sign-on/Sign-off পোর্টগুলোতে Seafarer Visa পাওয়া দিন দিন কঠিন হয়ে পড়ছে। এই ভিসা জটিলতা চাকরি পাওয়ার পথে বড় বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে, যার দ্রুত সমাধানে সরকারের পক্ষ থেকে কূটনৈতিক পদক্ষেপ প্রয়োজন।
    ৮. দেশে এমন অনেক সরকারি-বেসরকারি Maritime Academy গড়ে উঠেছে যাদের মান নিয়ন্ত্রণ নেই। অনুমোদন পেলেই তারা Intake শুরু করে দেয়, অথচ নেই যথাযথ ট্রেনিং ফ্যাসিলিটি, ল্যাব, লাইব্রেরি বা অভিজ্ঞ শিক্ষক। এর ফলে প্রশিক্ষণের মান পড়ে যাচ্ছে, এবং দুর্বল প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ক্যাডেটদের কারণে চাকরির বাজারেও নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।
    ৯. Institute of Marine Technology (IMT) মূলত Inland Shipping ও Shipbuilding সেক্টরের জন্য শিক্ষার্থী তৈরি করে। কিন্তু বর্তমানে এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরাও রাজনৈতিক চাপ সৃষ্টি করে CDC সংগ্রহ এবং সমুদ্রগামী জাহাজে চাকরি পাওয়ার চেষ্টা করছে। এতে মূল Marine Cadet দের চাকরি হরণ হওয়ার পাশাপাশি চাকরির বাজারে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হচ্ছে। তার চেয়েও বড় আশঙ্কার বিষয় হলো, STCW রিকোয়ারমেন্ট অনুযায়ী আন্তর্জাতিক ট্রেনিং ব্যতীত কাউকে Sea-going Vessel-এ জয়েন করালে IMO কর্তৃক বাংলাদেশ ব্ল্যাকলিস্টেড হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হতে পারে। এর ফলে ভালো শিপিং কোম্পানিগুলো বাংলাদেশি Seafarer নেওয়া বন্ধ করে দিতে পারে।


    সমস্যা সমাধানে ৯টি বাস্তবসম্মত সুপারিশঃ
    ১. দেশের Marine Academy গুলোর Intake সংখ্যা চাকরির বাজার বিশ্লেষণ করে প্রতি বছর DG Shipping কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত হতে হবে। প্রতিবছর নভেম্বর-ডিসেম্বরে সব একাডেমির সঙ্গে বৈঠক করে unemployed ক্যাডেটদের তালিকা করে পরবর্তী বছরের Intake নির্ধারণ করতে হবে। এই ক্ষেত্রে ডিজি শিপিং প্রত্যেকটা একাডেমি কে তাদের জন্য ম্যাক্সিমাম ক্যাডেট intake নির্দিষ্ট করে দিতে পারে। সরকারি বেসরকারি কোন একাডেমীর উচিত হবে না সেই ম্যাক্সিমাম ক্যাডেট Intake এর বাইরে ক্যাডেট নেওয়া করা!
    ২. BD Flag জাহাজে ৪ জন করে ক্যাডেট রাখা বাধ্যতামূলক করতে হবে এবং নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানকে সরকার পোর্ট ডিউস ছাড়, অগ্রাধিকার ভিত্তিক বার্থিং ইত্যাদি প্রণোদনা দিতে পারে।
    ৩. বাংলাদেশে আসা বিদেশি জাহাজগুলোতে আমাদের ক্যাডেট নিয়োগে উৎসাহ দিতে Incentive Program চালু করতে হবে। এ ক্ষেত্রে বিদেশে কর্মরত আমাদের সিনিয়র অফিসারদেরও সম্পৃক্ত করতে হবে।
    ৪. Marine Academy-এর মেধা তালিকা অনুযায়ী স্বচ্ছ একটি Central Cadet Placement Portal গঠন করে Sea Time-এর সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে। একাডেমিগুলো কোম্পানিগুলোর কাছে আবেদনপত্র পাঠাতে পারে বা Manning Agent দের তালিকা দিতে পারে। ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, একাডেমিগুলির কমান্ড্যান্টগণ তাদের তত্ত্বাবধানে একটা টিম গঠন করতে পারে যারা বিভিন্ন কোম্পানির সাথে যোগাযোগ করে ক্যাডেটদের জন্য চাকরির চেষ্টা করতে পারে। এটা বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই কাজে দেয়। একাডেমী গুলি বিভিন্ন কোম্পানিতে কে তাদের একাডেমি ভিজিট এবং ক্যাডেট নেওয়ার জন্য MoU সাইন করার ব্যবস্থা করতে পারে। অনেক বড় বড় কোম্পানি বিভিন্ন দেশের একাডেমি গুলির সাথে Collanoration এর চুক্তি করে।
    ৫. MLC 2006 অনুযায়ী কোনো ম্যানিং এজেন্ট ক্যাডেট বা সিফেয়ারারদের কাছ থেকে সার্ভিস চার্জ নিতে পারবে না। সব ম্যানিং এজেন্সিকে সরকারি নিবন্ধনের আওতায় আনতে হবে। টাকা নেওয়ার অভিযোগ পেলে দ্রুত তদন্ত করে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।
    ৬. Maritime Education কারিকুলাম STCW কনভেনশন অনুসারে নিয়মিত আপডেট করতে হবে। Maritime English, Interview Skills, CBT, এবং সিমুলেটর ট্রেনিং বাধ্যতামূলক করতে হবে।
    ৭. Seafarer Visa সমস্যার সমাধানে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে সক্রিয় কূটনৈতিক উদ্যোগ নিতে হবে। G2G, G2B এবং B2B আলোচনার মাধ্যমে Seafarer Visa সহজীকরণে কাজ করতে হবে। বিশেষ করে OK to Board ভিসাসহ সিঙ্গাপুর, দুবাই, সৌদি আরব, USA এবং শেঙ্গেন ভিসার বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।
    ৮. নতুন Maritime Academy অনুমোদনের আগে অভিজ্ঞ প্যানেলের মাধ্যমে Infrastructure, কোর্স, শিক্ষক, চাকরির বাজার ও চাহিদা যাচাই করে অনুমোদন দিতে হবে।
    ৯. IMT এবং Shipbuilding & Inland Shipping সংক্রান্ত ডিপ্লোমা ইনস্টিটিউটের ছাত্ররা Sea-going Vessel-এ চাকরির চেষ্টা করলে তা প্রাতিষ্ঠানিক ও আইনিভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। তাদের জন্য আলাদা চাকরির ক্ষেত্র নির্ধারণ করতে হবে। তাদেরকে সার্টিফাইড ওয়েল্ডিং এন্ড শিপ বিল্ডিং প্রফেশনাল হিসেবে উত্তম ভাবে trained up করে সিঙ্গাপুর, সাউথ কোরিয়া এবং জাপান সহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে চাকরির ব্যবস্থা করা যেতে পারে। এছাড়াও তাদেরকে জাহাজের দক্ষ ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এর ডিপ্লোমা প্রোগ্রাম পড়িয়ে দক্ষ ETO হিসাবে Trained up করে জাহাজে চাকরির জন্য CDC প্রদান করা যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে তাদের STCW 2010 রিকোয়ারমেন্ট অনুসারে ট্রেনিং নিশ্চিত করতে হবে। এরপরও যদি তারা ইন্টারন্যাশনাল শিপিং এ ডেক এবং ইঞ্জিন ক্যাডেট হিসাবে চাকরির জন্য CDC পাওয়ার দাবি করে তবে তাদের কে ডিজি শিপিং এর মার্চেন্ডশিপিং অর্ডিন্যান্স ১৯৮৩ এবং STCW 2010 ম্যানিলা আমেনমেন্ট অনুসারে Pre-sea training সম্পন্ন করে ডিপার্টমেন্ট অফ শিপিং থেকে তাদের ইনস্টিটিউটের মাধ্যমে CDC এর জন্য আবেদন করতে হবে। শিপিং মিনিস্টারের আওতাধীন ডিপার্টমেন্ট অফ শিপিং ছাড়া অন্য কোন অথরিটির Seaman Book বা CDC ইস্যু করার এখতিয়ার নাই।
    পরিশেষে এটাই বলতে চাই, এখনই যদি কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ না করা হয়, তাহলে আগামী কয়েক বছরে দেশের মেরিটাইম ক্যারিয়ার এক চরম হতাশার মধ্যে পড়বে। পরিকল্পিত নিয়ন্ত্রণ, স্বচ্ছতা এবং আন্তঃমন্ত্রণালয় সমন্বয় ছাড়া এই সংকট থেকে উত্তরণ সম্ভব নয়। তাই এখনই সময় দায়িত্বশীল সিদ্ধান্ত নেওয়ার।
    বাংলাদেশি মেরিন ক্যাডেটদের চাকরির সংকট বাস্তবতা ও কারণসমূহ ১. প্রতিবছর শত শত তরুণ ক্যাডেট দেশের Marine Academy গুলো থেকে পাস করে জীবনের প্রথম জাহাজে ওঠার স্বপ্ন নিয়ে অপেক্ষায় থাকে। কিন্তু বাস্তবতা হলো, প্রথম বছরেই তাদের মধ্যে ৫০ শতাংশেরও কম চাকরি পায়। বাকিরা বছরের পর বছর Sea Time-এর জন্য অপেক্ষা করে। অনেকেই হতাশ হয়ে ক্যারিয়ার ছেড়ে দেয়। এই তরুণরা কিন্তু একটি বিশেষায়িত ট্রেনিং সম্পন্ন করে শুধুমাত্র মেরিটাইম ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করার উপযোগী হয়েছে। অন্য কোনো সেক্টরে তাদের প্রতিষ্ঠিত হওয়া প্রায় অসম্ভব। আরও দুর্ভাগ্যের বিষয় হলো, চার বছরের অনার্স কোর্সে মাত্র দুই বছর একাডেমিক ট্রেনিং করিয়ে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। বাকি এক বছর জাহাজে ইন্টার্নশিপ (Cadetship) এবং শেষের এক বছর একাডেমিতে ফিরে দুইটি সেমিস্টার কমপ্লিট করে তবেই তারা অনার্স ডিগ্রি সম্পন্ন করতে পারে। ফলে এই পড়াশোনা সম্পূর্ণ না হওয়ার কারণে তারা বিসিএস কিংবা মাস্টার্সে পর্যন্ত আবেদন করতে পারে না। এটি নিঃসন্দেহে তাদের জন্য এক করুণ বাস্তবতা। ২. সরকারি ও বেসরকারি Marine Academy গুলোর Intake সংখ্যা প্রতিবছরই বাড়ছে, অথচ আন্তর্জাতিক চাকরির বাজারে সেই পরিমাণ চাহিদা নেই। Supply & Demand এর ভারসাম্য না থাকায় পরিস্থিতি দিন দিন জটিল হচ্ছে। অথচ এই বিষয়টি নিয়ন্ত্রণে দেশের একমাত্র কর্তৃপক্ষ DG Shipping কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারছে না। ৩. বাংলাদেশের পতাকাবাহী (BD Flag) জাহাজের সংখ্যা যেমন কম, তার চেয়েও বড় সমস্যা হলো, এগুলোর অনেক মালিকই নিয়ম অনুযায়ী ক্যাডেট নিতে চান না। আবার ক্যাডেট নিয়োগ দিলে তাঁদের জন্য কোনো সরকারি প্রণোদনাও নেই, ফলে মালিকরা একে বোঝা হিসেবে দেখেন। ৪. অনেক বিদেশি কোম্পানির জাহাজ বাংলাদেশে আসে, কিন্তু আমাদের ক্যাডেটরা সেখানে সুযোগ পায় না। যদি সরকার প্রণোদনা ঘোষণা করে, তাহলে বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশি শিপিং কোম্পানির ম্যানেজার, ক্যাপ্টেন ও চিফ ইঞ্জিনিয়ারদের মাধ্যমে এসব কোম্পানিকে রাজি করানো সম্ভব। ৫. চাকরির আশায় অনেক ক্যাডেট ম্যানিং এজেন্সিগুলোর শরণাপন্ন হচ্ছে। কিন্তু যথাযথ মনিটরিং-এর অভাবে অনেকেই প্রতারণার শিকার হচ্ছে। সার্ভিস চার্জের নামে লাখ লাখ টাকা আদায় করা হচ্ছে, অথচ চাকরির কোনো নিশ্চয়তা নেই। একাডেমি কিংবা DG Shipping এর এই বিষয়ে কোনো নিয়ন্ত্রণ বা দায়বদ্ধতা নেই। ফলে ক্যাডেটরা অসহায়। যারা সামর্থ্যবান তারা বিশাল অঙ্কের টাকা খরচ করে জাহাজে ওঠার চেষ্টা করছে। ৬. Marine Academy গুলোর কারিকুলাম অনেকটাই পুরনো এবং নিয়মিত আপডেট হচ্ছে না। Maritime English, Soft Skills, Interview Preparation ও বাস্তবভিত্তিক ট্রেনিংয়ের যথাযথ ব্যবস্থা নেই। যার কারণে তারা আন্তর্জাতিক কোম্পানিগুলোর ইন্টারভিউতে ভালো করতে পারছে না। যেমন, এই বছর Oldendorff, OSM Thome, Hafnia এর মত কোম্পানিগুলোর ইন্টারভিউতে সাকসেস রেট ছিল ৫০ শতাংশেরও কম। কোম্পানিগুলো আশানুরূপ জ্ঞান ও দক্ষতা না পেয়ে হতাশ হয়েছে। ৭. সিঙ্গাপুর, ইউএই, ওমান, কাতারসহ গুরুত্বপূর্ণ Sign-on/Sign-off পোর্টগুলোতে Seafarer Visa পাওয়া দিন দিন কঠিন হয়ে পড়ছে। এই ভিসা জটিলতা চাকরি পাওয়ার পথে বড় বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে, যার দ্রুত সমাধানে সরকারের পক্ষ থেকে কূটনৈতিক পদক্ষেপ প্রয়োজন। ৮. দেশে এমন অনেক সরকারি-বেসরকারি Maritime Academy গড়ে উঠেছে যাদের মান নিয়ন্ত্রণ নেই। অনুমোদন পেলেই তারা Intake শুরু করে দেয়, অথচ নেই যথাযথ ট্রেনিং ফ্যাসিলিটি, ল্যাব, লাইব্রেরি বা অভিজ্ঞ শিক্ষক। এর ফলে প্রশিক্ষণের মান পড়ে যাচ্ছে, এবং দুর্বল প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ক্যাডেটদের কারণে চাকরির বাজারেও নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। ৯. Institute of Marine Technology (IMT) মূলত Inland Shipping ও Shipbuilding সেক্টরের জন্য শিক্ষার্থী তৈরি করে। কিন্তু বর্তমানে এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরাও রাজনৈতিক চাপ সৃষ্টি করে CDC সংগ্রহ এবং সমুদ্রগামী জাহাজে চাকরি পাওয়ার চেষ্টা করছে। এতে মূল Marine Cadet দের চাকরি হরণ হওয়ার পাশাপাশি চাকরির বাজারে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হচ্ছে। তার চেয়েও বড় আশঙ্কার বিষয় হলো, STCW রিকোয়ারমেন্ট অনুযায়ী আন্তর্জাতিক ট্রেনিং ব্যতীত কাউকে Sea-going Vessel-এ জয়েন করালে IMO কর্তৃক বাংলাদেশ ব্ল্যাকলিস্টেড হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হতে পারে। এর ফলে ভালো শিপিং কোম্পানিগুলো বাংলাদেশি Seafarer নেওয়া বন্ধ করে দিতে পারে। সমস্যা সমাধানে ৯টি বাস্তবসম্মত সুপারিশঃ ১. দেশের Marine Academy গুলোর Intake সংখ্যা চাকরির বাজার বিশ্লেষণ করে প্রতি বছর DG Shipping কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত হতে হবে। প্রতিবছর নভেম্বর-ডিসেম্বরে সব একাডেমির সঙ্গে বৈঠক করে unemployed ক্যাডেটদের তালিকা করে পরবর্তী বছরের Intake নির্ধারণ করতে হবে। এই ক্ষেত্রে ডিজি শিপিং প্রত্যেকটা একাডেমি কে তাদের জন্য ম্যাক্সিমাম ক্যাডেট intake নির্দিষ্ট করে দিতে পারে। সরকারি বেসরকারি কোন একাডেমীর উচিত হবে না সেই ম্যাক্সিমাম ক্যাডেট Intake এর বাইরে ক্যাডেট নেওয়া করা! ২. BD Flag জাহাজে ৪ জন করে ক্যাডেট রাখা বাধ্যতামূলক করতে হবে এবং নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানকে সরকার পোর্ট ডিউস ছাড়, অগ্রাধিকার ভিত্তিক বার্থিং ইত্যাদি প্রণোদনা দিতে পারে। ৩. বাংলাদেশে আসা বিদেশি জাহাজগুলোতে আমাদের ক্যাডেট নিয়োগে উৎসাহ দিতে Incentive Program চালু করতে হবে। এ ক্ষেত্রে বিদেশে কর্মরত আমাদের সিনিয়র অফিসারদেরও সম্পৃক্ত করতে হবে। ৪. Marine Academy-এর মেধা তালিকা অনুযায়ী স্বচ্ছ একটি Central Cadet Placement Portal গঠন করে Sea Time-এর সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে। একাডেমিগুলো কোম্পানিগুলোর কাছে আবেদনপত্র পাঠাতে পারে বা Manning Agent দের তালিকা দিতে পারে। ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, একাডেমিগুলির কমান্ড্যান্টগণ তাদের তত্ত্বাবধানে একটা টিম গঠন করতে পারে যারা বিভিন্ন কোম্পানির সাথে যোগাযোগ করে ক্যাডেটদের জন্য চাকরির চেষ্টা করতে পারে। এটা বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই কাজে দেয়। একাডেমী গুলি বিভিন্ন কোম্পানিতে কে তাদের একাডেমি ভিজিট এবং ক্যাডেট নেওয়ার জন্য MoU সাইন করার ব্যবস্থা করতে পারে। অনেক বড় বড় কোম্পানি বিভিন্ন দেশের একাডেমি গুলির সাথে Collanoration এর চুক্তি করে। ৫. MLC 2006 অনুযায়ী কোনো ম্যানিং এজেন্ট ক্যাডেট বা সিফেয়ারারদের কাছ থেকে সার্ভিস চার্জ নিতে পারবে না। সব ম্যানিং এজেন্সিকে সরকারি নিবন্ধনের আওতায় আনতে হবে। টাকা নেওয়ার অভিযোগ পেলে দ্রুত তদন্ত করে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। ৬. Maritime Education কারিকুলাম STCW কনভেনশন অনুসারে নিয়মিত আপডেট করতে হবে। Maritime English, Interview Skills, CBT, এবং সিমুলেটর ট্রেনিং বাধ্যতামূলক করতে হবে। ৭. Seafarer Visa সমস্যার সমাধানে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে সক্রিয় কূটনৈতিক উদ্যোগ নিতে হবে। G2G, G2B এবং B2B আলোচনার মাধ্যমে Seafarer Visa সহজীকরণে কাজ করতে হবে। বিশেষ করে OK to Board ভিসাসহ সিঙ্গাপুর, দুবাই, সৌদি আরব, USA এবং শেঙ্গেন ভিসার বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। ৮. নতুন Maritime Academy অনুমোদনের আগে অভিজ্ঞ প্যানেলের মাধ্যমে Infrastructure, কোর্স, শিক্ষক, চাকরির বাজার ও চাহিদা যাচাই করে অনুমোদন দিতে হবে। ৯. IMT এবং Shipbuilding & Inland Shipping সংক্রান্ত ডিপ্লোমা ইনস্টিটিউটের ছাত্ররা Sea-going Vessel-এ চাকরির চেষ্টা করলে তা প্রাতিষ্ঠানিক ও আইনিভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। তাদের জন্য আলাদা চাকরির ক্ষেত্র নির্ধারণ করতে হবে। তাদেরকে সার্টিফাইড ওয়েল্ডিং এন্ড শিপ বিল্ডিং প্রফেশনাল হিসেবে উত্তম ভাবে trained up করে সিঙ্গাপুর, সাউথ কোরিয়া এবং জাপান সহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে চাকরির ব্যবস্থা করা যেতে পারে। এছাড়াও তাদেরকে জাহাজের দক্ষ ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এর ডিপ্লোমা প্রোগ্রাম পড়িয়ে দক্ষ ETO হিসাবে Trained up করে জাহাজে চাকরির জন্য CDC প্রদান করা যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে তাদের STCW 2010 রিকোয়ারমেন্ট অনুসারে ট্রেনিং নিশ্চিত করতে হবে। এরপরও যদি তারা ইন্টারন্যাশনাল শিপিং এ ডেক এবং ইঞ্জিন ক্যাডেট হিসাবে চাকরির জন্য CDC পাওয়ার দাবি করে তবে তাদের কে ডিজি শিপিং এর মার্চেন্ডশিপিং অর্ডিন্যান্স ১৯৮৩ এবং STCW 2010 ম্যানিলা আমেনমেন্ট অনুসারে Pre-sea training সম্পন্ন করে ডিপার্টমেন্ট অফ শিপিং থেকে তাদের ইনস্টিটিউটের মাধ্যমে CDC এর জন্য আবেদন করতে হবে। শিপিং মিনিস্টারের আওতাধীন ডিপার্টমেন্ট অফ শিপিং ছাড়া অন্য কোন অথরিটির Seaman Book বা CDC ইস্যু করার এখতিয়ার নাই। পরিশেষে এটাই বলতে চাই, এখনই যদি কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ না করা হয়, তাহলে আগামী কয়েক বছরে দেশের মেরিটাইম ক্যারিয়ার এক চরম হতাশার মধ্যে পড়বে। পরিকল্পিত নিয়ন্ত্রণ, স্বচ্ছতা এবং আন্তঃমন্ত্রণালয় সমন্বয় ছাড়া এই সংকট থেকে উত্তরণ সম্ভব নয়। তাই এখনই সময় দায়িত্বশীল সিদ্ধান্ত নেওয়ার।
    0 Commentarios 0 Acciones 18 Views
  • শার্ক ট্যাংক ইন্ডিয়া'র সিজন ওয়ানের শার্ক আশনীর গ্রোভার একটা পডকাস্টে খুব ইন্টারেস্টিং একটা ফ্যাক্ট বলেছিলো। তার কথার সারমর্ম ছিলো :

    আমি যখন BharatPe শুরু করেছি তখন আমার বয়স ৩৬। অর্থাৎ, বেশ দেরিতে শুরু করেছি। আমার কো-ফাউন্ডারের বয়স তখন মাত্র ২০। এবং এখন এই বয়সের অনেকেই ভালো করতেছে।

    তো এতে যে জিনিসটা হয়, আগে মানুষ ৫০/৬০ বছর বয়সে গিয়ে ভাবতো, 'লাইফে কিছুই করতে পারলাম না'। কিন্তু, সোশ্যাল মিডিয়ায় এখন ২০/২২ বছর বয়সীদের সফলতাকে এমনভাবে গ্লোরিফাই করা হচ্ছে যে, তা দেখে মানুষ যেটা ৫০/৬০ বছর বয়সে গিয়ে স্ট্রেস নিতো, ভাবতো আমি কিছু করতে পারলাম না,

    সেটা ইয়াং জেনারেশন এখনই নেওয়া শুরু করেছে এই বলে যে, "আমি তো পিছিয়ে গেলাম! কী করছি জীবনে!"

    আশনীরের বলা এই ফ্যাক্টটা চরম বাস্তবতা। সোশ্যাল মিডিয়ায় আমরা শুধু সফলতার গল্প দেখি৷ কেউ অল্প বয়সে মান্থলি ১০ লাখ টাকা আয় করছে, কেউ কোটি টাকার ব্যবসা দাঁড় করিয়ে ফেলেছে। অবচেতন মনে এসব গল্প অনুপ্রেরণার চাইতে আমাদের হতাশার কারণ বেশি হয়ে দাঁড়ায়।

    অথচ, প্রত্যেকের জার্নিটা একরকম না। দুনিয়াতে সবার পক্ষে ২০/২২ বছর বয়সে মিলিয়নিয়ার, বিলিয়নিয়ার হওয়া সম্ভব না। ৩৫-৪০ বছর বয়স-ই নরমাল। বাকিগুলো এক্সেপশনাল।

    ইভেন, প্রোগ্রামিং হিরো'র অনেক স্টুডেন্টও নিজের এজেন্সি দাঁড় করিয়ে বেশ ভালো অবস্থানে আছে৷ এটাও এক্সেপশনাল।

    তরুণদের 'আর্লি সাকসেস' এর পেছনে ছুটার যে প্রতিযোগিতা তা থেকে বেরিয়ে আসা উচিৎ। এতে স্ট্রেস বাড়ে। এর মানে কি সময় নষ্ট করবেন? উত্তর হচ্ছে, "না"।

    আমাদের উচিৎ নিজেকে প্রোডাক্টিভ বানানো। নিজেকে স্কিলড করা। ২০/২২ বছর বয়সটা নিজেদের প্রস্তুত করার সবচাইতে ভালো সময়।

    এই সময়টাতে এসে :
    - স্কিল ডেভেলপ করুন
    - বই পড়ুন
    - খেলাধুলা করুন

    স্কিল ডেভেলপ করা, বই পড়ে নিজের মধ্যে ইমপ্রুভমেন্ট আনা, ফিজিক্যালি ফিট থাকার চেষ্টা করাটাই এই বয়সে নরমাল। এক্সেপশনাল কিছু গল্প দেখে স্ট্রেস নেওয়ার কোনো মানে নেই।

    হ্যাঁ, আর্লি এইজে সফলতা পাওয়ার চেষ্টা করা অন্যায় না। বরং, ভালো। করা উচিৎ। তবে, সেটাকে নিজের জন্য 'বাধ্যতামূলক' বানিয়ে ফেলে নিজের জীবনের শান্তি নষ্ট করা উচিৎ না। পুঁজিবাদী মানসিকতা শান্তি দিতে পারেনা।

    আবারও বলছি, সময়টা নিজেকে তৈরি করার। তাতে ফোকাস করুন। যা সবার জন্য সহজ, সরল, সম্ভব - তা করতে না পারা ব্যর্থতা হতে পারে। কিন্তু, ২৫ বছর বয়সী বিল গেটস হতে না পারাটা কখনো ব্যর্থতা না।
    শার্ক ট্যাংক ইন্ডিয়া'র সিজন ওয়ানের শার্ক আশনীর গ্রোভার একটা পডকাস্টে খুব ইন্টারেস্টিং একটা ফ্যাক্ট বলেছিলো। তার কথার সারমর্ম ছিলো : আমি যখন BharatPe শুরু করেছি তখন আমার বয়স ৩৬। অর্থাৎ, বেশ দেরিতে শুরু করেছি। আমার কো-ফাউন্ডারের বয়স তখন মাত্র ২০। এবং এখন এই বয়সের অনেকেই ভালো করতেছে। তো এতে যে জিনিসটা হয়, আগে মানুষ ৫০/৬০ বছর বয়সে গিয়ে ভাবতো, 'লাইফে কিছুই করতে পারলাম না'। কিন্তু, সোশ্যাল মিডিয়ায় এখন ২০/২২ বছর বয়সীদের সফলতাকে এমনভাবে গ্লোরিফাই করা হচ্ছে যে, তা দেখে মানুষ যেটা ৫০/৬০ বছর বয়সে গিয়ে স্ট্রেস নিতো, ভাবতো আমি কিছু করতে পারলাম না, সেটা ইয়াং জেনারেশন এখনই নেওয়া শুরু করেছে এই বলে যে, "আমি তো পিছিয়ে গেলাম! কী করছি জীবনে!" আশনীরের বলা এই ফ্যাক্টটা চরম বাস্তবতা। সোশ্যাল মিডিয়ায় আমরা শুধু সফলতার গল্প দেখি৷ কেউ অল্প বয়সে মান্থলি ১০ লাখ টাকা আয় করছে, কেউ কোটি টাকার ব্যবসা দাঁড় করিয়ে ফেলেছে। অবচেতন মনে এসব গল্প অনুপ্রেরণার চাইতে আমাদের হতাশার কারণ বেশি হয়ে দাঁড়ায়। অথচ, প্রত্যেকের জার্নিটা একরকম না। দুনিয়াতে সবার পক্ষে ২০/২২ বছর বয়সে মিলিয়নিয়ার, বিলিয়নিয়ার হওয়া সম্ভব না। ৩৫-৪০ বছর বয়স-ই নরমাল। বাকিগুলো এক্সেপশনাল। ইভেন, প্রোগ্রামিং হিরো'র অনেক স্টুডেন্টও নিজের এজেন্সি দাঁড় করিয়ে বেশ ভালো অবস্থানে আছে৷ এটাও এক্সেপশনাল। তরুণদের 'আর্লি সাকসেস' এর পেছনে ছুটার যে প্রতিযোগিতা তা থেকে বেরিয়ে আসা উচিৎ। এতে স্ট্রেস বাড়ে। এর মানে কি সময় নষ্ট করবেন? উত্তর হচ্ছে, "না"। আমাদের উচিৎ নিজেকে প্রোডাক্টিভ বানানো। নিজেকে স্কিলড করা। ২০/২২ বছর বয়সটা নিজেদের প্রস্তুত করার সবচাইতে ভালো সময়। এই সময়টাতে এসে : - স্কিল ডেভেলপ করুন - বই পড়ুন - খেলাধুলা করুন স্কিল ডেভেলপ করা, বই পড়ে নিজের মধ্যে ইমপ্রুভমেন্ট আনা, ফিজিক্যালি ফিট থাকার চেষ্টা করাটাই এই বয়সে নরমাল। এক্সেপশনাল কিছু গল্প দেখে স্ট্রেস নেওয়ার কোনো মানে নেই। হ্যাঁ, আর্লি এইজে সফলতা পাওয়ার চেষ্টা করা অন্যায় না। বরং, ভালো। করা উচিৎ। তবে, সেটাকে নিজের জন্য 'বাধ্যতামূলক' বানিয়ে ফেলে নিজের জীবনের শান্তি নষ্ট করা উচিৎ না। পুঁজিবাদী মানসিকতা শান্তি দিতে পারেনা। আবারও বলছি, সময়টা নিজেকে তৈরি করার। তাতে ফোকাস করুন। যা সবার জন্য সহজ, সরল, সম্ভব - তা করতে না পারা ব্যর্থতা হতে পারে। কিন্তু, ২৫ বছর বয়সী বিল গেটস হতে না পারাটা কখনো ব্যর্থতা না।
    0 Commentarios 0 Acciones 27 Views
  • এবার স্টকহোমের রাস্তাঘাট কিংবা সুইডেনের বন্যা প্রতিরোধ ব্যারিয়ার সবখানেই এখন পরীক্ষামূলকভাবে ব্যবহার হচ্ছে এক ধরনের অত্যাধুনিক কংক্রিট, যেটি কিনা নিজে থেকেই নিজের ফাটল সারিয়ে নিতে পারে। মানে কংক্রিটে কোথাও ফাটল হলে নিজে নিজেই বন্ধ হয়ে যায় সেই ফাটল ! ব্যাকটেরিয়া দিয়ে তৈরি এই ‘হিলিং কংক্রিট’ যেন ভবিষ্যতের অবকাঠামোগত বিপ্লবের এক জীবন্ত নমুনা।

    এই কংক্রিটে সুপ্ত অবস্থায় মিশিয়ে রাখা হয় Bacillus pseudofirmus নামের এক প্রকার ব্যাকটেরিয়া, যেগুলো উচ্চ pH-এর পরিবেশে বেঁচে থাকতে পারে। যখন কংক্রিটে ফাটল ধরে এবং তার ভিতর পানি প্রবেশ করে, তখন ব্যাকটেরিয়াগুলো সক্রিয় হয়ে ওঠে। তারা কংক্রিটে থাকা ক্যালসিয়াম ল্যাকটেট খেয়ে উৎপন্ন করে চুনাপাথর (লিমেস্টোন), যা ফাটলের ভিতর জমা হয়ে অটোমেটিক্যালি ফাটল বন্ধ করে দেয়। এখন হয়তো আপনার মনে হতে পারে এই চুনাপাথর হয়তো অতটা মজবুত না । তবে আসলে এটি এতটাই মজবুত যে আমাদের বাংলাদেশের অধিকাংশ আপনার থেকে অনেক গুণ বেশি শক্তিশালী ও মজবুত ।

    পরীক্ষায় দেখা গেছে, এই জীবন্ত কংক্রিট মাত্র তিন সপ্তাহের মধ্যে ০.৮ মিলিমিটার পর্যন্ত ফাটল পুরোপুরি বন্ধ করতে সক্ষম তাও আবার পানিরোধকভাবে। সাধারণ কংক্রিট যেখানে বারবার রক্ষণাবেক্ষণ ও লেপন প্রয়োজন, সেখানে এই নতুন কংক্রিট প্রাকৃতিকভাবে নিজেই নিজেকে সারিয়ে তোলে।

    এই প্রযুক্তির সবচেয়ে বড় লাভ হলো স্থায়িত্ব। প্রকৌশলীরা বলছেন, এই কংক্রিট ব্যবহার করে নির্মিত ভবনগুলো ২০০ বছর বা তারও বেশি স্থায়ী হতে পারে। যার অর্থ কম মেরামত, কম খরচ, কম বর্জ্য।

    ইতোমধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়ন বিভিন্ন দেশে এই প্রযুক্তির জন্য অর্থায়ন করছে এবং ভবিষ্যতে ব্যবহারের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে ।
    এবার স্টকহোমের রাস্তাঘাট কিংবা সুইডেনের বন্যা প্রতিরোধ ব্যারিয়ার সবখানেই এখন পরীক্ষামূলকভাবে ব্যবহার হচ্ছে এক ধরনের অত্যাধুনিক কংক্রিট, যেটি কিনা নিজে থেকেই নিজের ফাটল সারিয়ে নিতে পারে। মানে কংক্রিটে কোথাও ফাটল হলে নিজে নিজেই বন্ধ হয়ে যায় সেই ফাটল ! ব্যাকটেরিয়া দিয়ে তৈরি এই ‘হিলিং কংক্রিট’ যেন ভবিষ্যতের অবকাঠামোগত বিপ্লবের এক জীবন্ত নমুনা। এই কংক্রিটে সুপ্ত অবস্থায় মিশিয়ে রাখা হয় Bacillus pseudofirmus নামের এক প্রকার ব্যাকটেরিয়া, যেগুলো উচ্চ pH-এর পরিবেশে বেঁচে থাকতে পারে। যখন কংক্রিটে ফাটল ধরে এবং তার ভিতর পানি প্রবেশ করে, তখন ব্যাকটেরিয়াগুলো সক্রিয় হয়ে ওঠে। তারা কংক্রিটে থাকা ক্যালসিয়াম ল্যাকটেট খেয়ে উৎপন্ন করে চুনাপাথর (লিমেস্টোন), যা ফাটলের ভিতর জমা হয়ে অটোমেটিক্যালি ফাটল বন্ধ করে দেয়। এখন হয়তো আপনার মনে হতে পারে এই চুনাপাথর হয়তো অতটা মজবুত না । তবে আসলে এটি এতটাই মজবুত যে আমাদের বাংলাদেশের অধিকাংশ আপনার থেকে অনেক গুণ বেশি শক্তিশালী ও মজবুত । পরীক্ষায় দেখা গেছে, এই জীবন্ত কংক্রিট মাত্র তিন সপ্তাহের মধ্যে ০.৮ মিলিমিটার পর্যন্ত ফাটল পুরোপুরি বন্ধ করতে সক্ষম তাও আবার পানিরোধকভাবে। সাধারণ কংক্রিট যেখানে বারবার রক্ষণাবেক্ষণ ও লেপন প্রয়োজন, সেখানে এই নতুন কংক্রিট প্রাকৃতিকভাবে নিজেই নিজেকে সারিয়ে তোলে। এই প্রযুক্তির সবচেয়ে বড় লাভ হলো স্থায়িত্ব। প্রকৌশলীরা বলছেন, এই কংক্রিট ব্যবহার করে নির্মিত ভবনগুলো ২০০ বছর বা তারও বেশি স্থায়ী হতে পারে। যার অর্থ কম মেরামত, কম খরচ, কম বর্জ্য। ইতোমধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়ন বিভিন্ন দেশে এই প্রযুক্তির জন্য অর্থায়ন করছে এবং ভবিষ্যতে ব্যবহারের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে ।
    0 Commentarios 0 Acciones 28 Views
  • যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ভালো আছে বলে মন্তব্য করেছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। তার মতে, সম্প্রতি মার্কিন কোম্পানিগুলোর বকেয়া পরিশোধ করে দেওয়ায় এই ইতিবাচক মনোভাব তৈরি হয়েছে। এমনকি, ইউএস চেম্বারও বাংলাদেশের প্রতি ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করে তাকে চিঠি লিখেছে।

    বকেয়া পরিশোধ ও সম্পর্কের উন্নতি
    বুধবার (২৩ জুলাই) ঢাকায় সচিবালয়ে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি এবং অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় অর্থ উপদেষ্টা এই মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, “সম্প্রতি আমরা যুক্তরাষ্ট্রের শেভরন, এক্সিলারেট এনার্জি ও মেটলাইফের বকেয়া পরিশোধ করে দিয়েছি।”

    পাল্টা শুল্ক ও আশাবাদ
    যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের পণ্যের ওপর ৩৫ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিলেও, সালেহউদ্দিন আহমেদ আশাবাদী যে, এই হার কিছুটা কমানো হবে। তার আশাবাদী হওয়ার কারণ হিসেবে তিনি বাংলাদেশের মাত্র ৬৫০ কোটি মার্কিন ডলারের বাণিজ্য ঘাটতির কথা উল্লেখ করেন।

    যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্ক কার্যকর হতে আর মাত্র আট দিন বাকি। এর মধ্যে দেশটির সঙ্গে আলোচনা ও দর-কষাকষি করতে বাংলাদেশের প্রস্তুতি কেমন, জানতে চাইলে অর্থ উপদেষ্টা জানান, আগামী ১ আগস্টের আগেই বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের নেতৃত্বাধীন একটি প্রতিনিধিদল যুক্তরাষ্ট্রে যাবে আলোচনার জন্য।

    যুক্তরাষ্ট্র থেকে গম আমদানি
    আজকের বৈঠকেই যুক্তরাষ্ট্র থেকে ২ লাখ ২০ হাজার টন গম আনার জন্য অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। অর্থ উপদেষ্টা বলেন, “আমরা একটু বৈচিত্র্য আনতে চাচ্ছি। অনেক সময় রাশিয়া বা ইউক্রেন থেকে গম আমদানিতে অনিশ্চয়তা দেখা যায়। এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এখন আমাদের আমদানি বৃদ্ধির দর-কষাকষি চলছে। যুক্তরাষ্ট্রের গমের মানও ভালো।”

    যুক্তরাষ্ট্রের গমের দাম তুলনামূলক বেশি হলেও, সালেহউদ্দিন আহমেদ যুক্তি দেন যে, "দাম একটু বেশি হলেও অন্যদিক দিয়ে সুবিধা পাওয়া যাবে। তাদের গমে আমিষ কিছুটা বেশি।"

    লবিস্ট প্রসঙ্গে অর্থ উপদেষ্টার মন্তব্য
    যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষিত পাল্টা শুল্কের হার কমানো নিয়ে দর-কষাকষি করতে ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে লবিস্ট নিয়োগের দাবি জানানো হয়েছিল। এ বিষয়ে অর্থ উপদেষ্টা স্পষ্ট জানিয়ে দেন যে, এখানে লবিস্ট নিয়োগের কোনো প্রশ্নই আসে না। তিনি বলেন, "লম্বা সময় নিয়ে দর-কষাকষির ক্ষেত্রে সাধারণত এ ধরনের লবিস্ট নিয়োগ করা হয়। এখানে যা করতে হবে, জলদি করতে হবে।" লবিস্টদের প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি আরও বলেন, “ওরা তো ঢুকতেই পারবে না, ওই অফিসের কাছাকাছি। দর-কষাকষি তো দূরের কথা।”
    যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ভালো আছে বলে মন্তব্য করেছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। তার মতে, সম্প্রতি মার্কিন কোম্পানিগুলোর বকেয়া পরিশোধ করে দেওয়ায় এই ইতিবাচক মনোভাব তৈরি হয়েছে। এমনকি, ইউএস চেম্বারও বাংলাদেশের প্রতি ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করে তাকে চিঠি লিখেছে। বকেয়া পরিশোধ ও সম্পর্কের উন্নতি বুধবার (২৩ জুলাই) ঢাকায় সচিবালয়ে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি এবং অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় অর্থ উপদেষ্টা এই মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, “সম্প্রতি আমরা যুক্তরাষ্ট্রের শেভরন, এক্সিলারেট এনার্জি ও মেটলাইফের বকেয়া পরিশোধ করে দিয়েছি।” পাল্টা শুল্ক ও আশাবাদ যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের পণ্যের ওপর ৩৫ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিলেও, সালেহউদ্দিন আহমেদ আশাবাদী যে, এই হার কিছুটা কমানো হবে। তার আশাবাদী হওয়ার কারণ হিসেবে তিনি বাংলাদেশের মাত্র ৬৫০ কোটি মার্কিন ডলারের বাণিজ্য ঘাটতির কথা উল্লেখ করেন। যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্ক কার্যকর হতে আর মাত্র আট দিন বাকি। এর মধ্যে দেশটির সঙ্গে আলোচনা ও দর-কষাকষি করতে বাংলাদেশের প্রস্তুতি কেমন, জানতে চাইলে অর্থ উপদেষ্টা জানান, আগামী ১ আগস্টের আগেই বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের নেতৃত্বাধীন একটি প্রতিনিধিদল যুক্তরাষ্ট্রে যাবে আলোচনার জন্য। যুক্তরাষ্ট্র থেকে গম আমদানি আজকের বৈঠকেই যুক্তরাষ্ট্র থেকে ২ লাখ ২০ হাজার টন গম আনার জন্য অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। অর্থ উপদেষ্টা বলেন, “আমরা একটু বৈচিত্র্য আনতে চাচ্ছি। অনেক সময় রাশিয়া বা ইউক্রেন থেকে গম আমদানিতে অনিশ্চয়তা দেখা যায়। এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এখন আমাদের আমদানি বৃদ্ধির দর-কষাকষি চলছে। যুক্তরাষ্ট্রের গমের মানও ভালো।” যুক্তরাষ্ট্রের গমের দাম তুলনামূলক বেশি হলেও, সালেহউদ্দিন আহমেদ যুক্তি দেন যে, "দাম একটু বেশি হলেও অন্যদিক দিয়ে সুবিধা পাওয়া যাবে। তাদের গমে আমিষ কিছুটা বেশি।" লবিস্ট প্রসঙ্গে অর্থ উপদেষ্টার মন্তব্য যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষিত পাল্টা শুল্কের হার কমানো নিয়ে দর-কষাকষি করতে ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে লবিস্ট নিয়োগের দাবি জানানো হয়েছিল। এ বিষয়ে অর্থ উপদেষ্টা স্পষ্ট জানিয়ে দেন যে, এখানে লবিস্ট নিয়োগের কোনো প্রশ্নই আসে না। তিনি বলেন, "লম্বা সময় নিয়ে দর-কষাকষির ক্ষেত্রে সাধারণত এ ধরনের লবিস্ট নিয়োগ করা হয়। এখানে যা করতে হবে, জলদি করতে হবে।" লবিস্টদের প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি আরও বলেন, “ওরা তো ঢুকতেই পারবে না, ওই অফিসের কাছাকাছি। দর-কষাকষি তো দূরের কথা।”
    0 Commentarios 0 Acciones 37 Views
  • রিসার্চ: গবেষণার যে ভয়ংকর দিকগুলো আপনি কখনোই দেখেননি

    ( আমার এই লেখাটি নতুন-পুরাতন, জানা-অজানা, পরিচিত অপরিচিত অথবা ভবিষ্যতের সমস্ত রিসার্চরদের প্রতি উৎসর্গকৃত... )

    আপনার চারপাশে যারা আছেন, তারা হয়তো জানেই না — আপনি যে একটা পেপার পাবলিশ করতে গিয়ে কত রাত নির্ঘুম কাটিয়েছেন। তারা জানে না, আপনি কিভাবে একটা পয়েন্ট প্রুভ করতে করতে নিজের স্বাস্থ্য হুমকির মুখে ফেলেছেন... তারা জানে না, “তোর কাজ কী?” এই প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে আপনি কতটা হিমশিম খান।

    গবেষণা মানেই একাকীত্ব

    Research মানে শুধু publication না, রিসার্চ মানে প্রতিদিন নিজেকে নতুন করে ভাঙা, গড়ার এক ভয়াবহ প্রক্রিয়া। মাস্টার্স বা পিএইচডি স্টুডেন্টদের জন্য গবেষণা মানে:

    একই থিসিসের জন্য ১০ বার রিভিউ পড়া

    শত শত লাইন কোড লেখা — আবার মুছে ফেলা

    এক মাস ধরে ডেটা কালেকশন, অথচ শেষ মুহূর্তে সব অপ্রাসঙ্গিক হয়ে যাওয়া

    supervisor  মুখের একটি “Not enough” শব্দ শুনে ছয় মাসের সমস্ত কাজ ডিলিট করে আবার শুরু করা...

    অথচ এত কিছুর পরও, এক পৃষ্ঠা পেপার পাবলিশ হওয়া যেন একটা অলিম্পিক জেতার মতো অনুভূতি।

    মানসিক চাপ, হতাশা আর অবমূল্যায়নের জগৎ

    WHO-র রিপোর্ট অনুযায়ী, উচ্চশিক্ষা ও রিসার্চ ফিল্ডে ডিপ্রেশন, বার্নআউট, এমনকি আত্ম/হ/ত্যর হার আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে।

    গবেষকরা সৃষ্টিশীল, তারা টাকার পেছনে না ছুটে ভবিষ্যতের পেছনে ছুটে। কিন্তু এর ফল কী?

    1. স্বীকৃতি নেই: গবেষকদের আসল কোন স্বীকৃতি নেই এখানে তৈরি করার রিসার্চ আর্টিকেল বইগুলো অনলাইনে অথবা লাইব্রেরির কোনায় পড়ে থাকে ধুলো জমে যখন দরকার হয় তখন সেগুলো পড়া হয় অথবা দুই তিনটা সাইটেশনও করা হয় তারপরে সবাই চলে যায় কিন্তু এই মানুষগুলোর খোঁজ-খবর কেউ কখনোই রাখে না...

    2. রেসপেক্ট নেই: মানুষগুলো অনেক সাদাসিধা জীবন যাপন করে বেশিরভাগ সময়ই লোকচক্ষু আড়ালে থাকেন আর এদেরকে নিয়ে তেমন কোনো কথা হয় না তেমন কোনো সম্মাননা প্রদান করা হয় না আর যদি দুর্ভাগ্যবশত আপনি বাংলাদেশ বা এখন তৃতীয় বিশ্বের কোন দেশে জন্ম নেন যে দেশে "viral topic" নিয়ে সারাদিন কথা বার্তা হয় তারা আপনাকে কোনদিন বুঝবে না আপনি বড় কিছু করলে হয়তো বা আপনাকে নিয়ে দুই একটা ফেসবুকে পোস্ট হবে ...

    3. পরিবার বুঝে না, সমাজ তো দূরের কথা, সবচেয়ে ভয়াবহতা তখন আসে যখন কোন কারণে আপনার রিসার্চ ফেল হয় এবং আপনি যে ফান্ড বা যে position উপর ডিপেন্ড করে চলতেছেন সেটা বন্ধ হয়ে যায়

    4. যারা বোঝে, তারাও নিজের স্ট্রাগলে ব্যস্ত, একজন রিসার্চররে মানসিক অবস্থা শুধুমাত্র আরেকজনরে অনুধাবন করতে পারবে কিন্তু দুঃখজনক হলো এটা যে অনুধাবন করতেছে সে নিজেও অনেক বেশি সমস্যায় আছে আপনাকে কিভাবে সাহায্য করবে....

    কিছুদিন আগে রাত সাড়ে তিনটায় আমাদের এক পরিচিত ভাই হুট করে ডিপ্রেশন এটাক হয়ে পড়ে গেছেন, জানিনা কেমন ভাবে উনি আমাকে কল দিয়েছিলেন কিন্তু আমি ঘুমিয়ে থাকার কারণে তার সাহায্যে যেতে পারিনি.. সৌভাগ্যবশত এক পাকিস্তানি ছেলে পরবর্তীতে তাকে হসপিটালে ভর্তি করায় রাতে..

    এ ঘটনার পর থেকে আমি আর ইন্টারনেট থেকে বিচ্ছিন্ন করিনা এবং নিচে স্ট্রিটলি বলা হয়েছে যদি ১২ ঘণ্টার উপরে আমাকে কখনোই দেখতে পাওয়া না যায় তাহলে তারা যেন আমার রুমে আসে চেক করে....

    মিলিয়ন ডলারের মাথা, অথচ নামহীন

    বিশ্বের টপ ১%-২% গবেষকরা বছরে মিলিয়ন ডলার পর্যন্ত আয় করেন। কিন্তু আপনি কি জানেন তাদের নাম?

    না, কারণ তারা সেলিব্রেটি না

    তাদের আবিষ্কারেই আমরা কোভিডের ভ্যাকসিন পেয়েছি, আমরা AI ব্যবহার করতে পারি, আমরা স্পেসে যাই।

    তারা যখন একটা সিস্টেম ডিজাইন করেন, তখন আপনি ফেসবুক স্ক্রল করেন। তারা যখন কোড রিভিউ করেন, তখন আপনি শপিং মলে যান। তাদের বুদ্ধিতেই এই পৃথিবী চলছে, কিন্তু তারা থাকে আড়ালে।

    আর টাকার কথা আসলে এমাউন্টটা মিলিয়নের উপরে হয় অনেক সময়.. রিসার্চরা অনেক বুদ্ধিমান তাই শো অফ করে না কিন্তু চালচলনে কিছু না কিছু তো বোঝা যায়...

    আমি কেন টেক জয়েন্ট গুলোর অফার রিজেক্ট করে এখনো এই জায়গায় ঘাপটি মেরে বসে আছি সেটা বুঝতে আপনাদের আরো চার বছর সময় লাগবে

    সম্মান পেতে হলে, ঐ লেভেলেই উঠতে হয়

    রিসার্চারদের কাজ সাধারণ মানুষ বুঝবে না — কারণ এদের কাজ সাধারণ নয়। তাদের সম্মান করতে হলে আপনাকেও সেই গভীরতা ছুঁতে হবে।

    সম্মান দিতে ‘সমঝদার’ হতে হয়....
    পেতে হলে "যোগ্যতাবান" হতে হয়.....

    তাই রিসার্চার ভাই ও বোনেরা, হতাশ হবেন না!

    আপনার আইডিয়া কেউ বুঝছে না , হয়তো এই সমাজ আপনাকে বুঝবে না।
    হয়তো পেপার পাবলিশ হলেও কেউ লাইক দেবে না।
    হয়তো বন্ধুদের সাফল্য দেখে আপনি কষ্ট পাবেন।

    কিন্তু মনে রাখুন — আপনি যে লেভেলে চিন্তা করেন, সেখানে সবাই উঠতে পারে না। আপনার স্ট্রাগল একদিন পৃথিবী বদলে দেবে — শুধু এখন নয়, ভবিষ্যতে।

    আপনার গবেষণার প্রতি পৃথিবীর দৃষ্টি না থাকলেও, ভবিষ্যৎ আপনার নাম জানবে।

    আর কেউ না জানলেও, আজ আমি বলছি —

    “Salute to every researcher, scientist, and quiet warrior of knowledge.”

    আপনার নীরব যুদ্ধই একদিন ইতিহাস লিখবে।

    — লিখেছেন, চেহেরাবিহীন একজন সৈনিক

    Naem Azam Chowdhury
    Security Researcher, China

    #nac_research #ResearchOpportunity #researchanddevelopment#ResearchChallenge #research #bangladesh #naemazam
    🎓 রিসার্চ: গবেষণার যে ভয়ংকর দিকগুলো আপনি কখনোই দেখেননি ( আমার এই লেখাটি নতুন-পুরাতন, জানা-অজানা, পরিচিত অপরিচিত অথবা ভবিষ্যতের সমস্ত রিসার্চরদের প্রতি উৎসর্গকৃত... ) আপনার চারপাশে যারা আছেন, তারা হয়তো জানেই না — আপনি যে একটা পেপার পাবলিশ করতে গিয়ে কত রাত নির্ঘুম কাটিয়েছেন। তারা জানে না, আপনি কিভাবে একটা পয়েন্ট প্রুভ করতে করতে নিজের স্বাস্থ্য হুমকির মুখে ফেলেছেন... তারা জানে না, “তোর কাজ কী?” এই প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে আপনি কতটা হিমশিম খান। 😔 গবেষণা মানেই একাকীত্ব Research মানে শুধু publication না, রিসার্চ মানে প্রতিদিন নিজেকে নতুন করে ভাঙা, গড়ার এক ভয়াবহ প্রক্রিয়া। মাস্টার্স বা পিএইচডি স্টুডেন্টদের জন্য গবেষণা মানে: একই থিসিসের জন্য ১০ বার রিভিউ পড়া শত শত লাইন কোড লেখা — আবার মুছে ফেলা এক মাস ধরে ডেটা কালেকশন, অথচ শেষ মুহূর্তে সব অপ্রাসঙ্গিক হয়ে যাওয়া supervisor  মুখের একটি “Not enough” শব্দ শুনে ছয় মাসের সমস্ত কাজ ডিলিট করে আবার শুরু করা... ❗ অথচ এত কিছুর পরও, এক পৃষ্ঠা পেপার পাবলিশ হওয়া যেন একটা অলিম্পিক জেতার মতো অনুভূতি। মানসিক চাপ, হতাশা আর অবমূল্যায়নের জগৎ 😢 WHO-র রিপোর্ট অনুযায়ী, উচ্চশিক্ষা ও রিসার্চ ফিল্ডে ডিপ্রেশন, বার্নআউট, এমনকি আত্ম/হ/ত্যর হার আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। গবেষকরা সৃষ্টিশীল, তারা টাকার পেছনে না ছুটে ভবিষ্যতের পেছনে ছুটে। কিন্তু এর ফল কী? 1. স্বীকৃতি নেই: গবেষকদের আসল কোন স্বীকৃতি নেই এখানে তৈরি করার রিসার্চ আর্টিকেল বইগুলো অনলাইনে অথবা লাইব্রেরির কোনায় পড়ে থাকে ধুলো জমে যখন দরকার হয় তখন সেগুলো পড়া হয় অথবা দুই তিনটা সাইটেশনও করা হয় তারপরে সবাই চলে যায় কিন্তু এই মানুষগুলোর খোঁজ-খবর কেউ কখনোই রাখে না... 2. রেসপেক্ট নেই: মানুষগুলো অনেক সাদাসিধা জীবন যাপন করে বেশিরভাগ সময়ই লোকচক্ষু আড়ালে থাকেন আর এদেরকে নিয়ে তেমন কোনো কথা হয় না তেমন কোনো সম্মাননা প্রদান করা হয় না আর যদি দুর্ভাগ্যবশত আপনি বাংলাদেশ বা এখন তৃতীয় বিশ্বের কোন দেশে জন্ম নেন যে দেশে "viral topic" নিয়ে সারাদিন কথা বার্তা হয় তারা আপনাকে কোনদিন বুঝবে না আপনি বড় কিছু করলে হয়তো বা আপনাকে নিয়ে দুই একটা ফেসবুকে পোস্ট হবে ... 3. পরিবার বুঝে না, সমাজ তো দূরের কথা, সবচেয়ে ভয়াবহতা তখন আসে যখন কোন কারণে আপনার রিসার্চ ফেল হয় এবং আপনি যে ফান্ড বা যে position উপর ডিপেন্ড করে চলতেছেন সেটা বন্ধ হয়ে যায় 4. যারা বোঝে, তারাও নিজের স্ট্রাগলে ব্যস্ত, একজন রিসার্চররে মানসিক অবস্থা শুধুমাত্র আরেকজনরে অনুধাবন করতে পারবে কিন্তু দুঃখজনক হলো এটা যে অনুধাবন করতেছে সে নিজেও অনেক বেশি সমস্যায় আছে আপনাকে কিভাবে সাহায্য করবে.... কিছুদিন আগে রাত সাড়ে তিনটায় আমাদের এক পরিচিত ভাই হুট করে ডিপ্রেশন এটাক হয়ে পড়ে গেছেন, জানিনা কেমন ভাবে উনি আমাকে কল দিয়েছিলেন কিন্তু আমি ঘুমিয়ে থাকার কারণে তার সাহায্যে যেতে পারিনি.. সৌভাগ্যবশত এক পাকিস্তানি ছেলে পরবর্তীতে তাকে হসপিটালে ভর্তি করায় রাতে.. এ ঘটনার পর থেকে আমি আর ইন্টারনেট থেকে বিচ্ছিন্ন করিনা এবং নিচে স্ট্রিটলি বলা হয়েছে যদি ১২ ঘণ্টার উপরে আমাকে কখনোই দেখতে পাওয়া না যায় তাহলে তারা যেন আমার রুমে আসে চেক করে.... 💸 মিলিয়ন ডলারের মাথা, অথচ নামহীন বিশ্বের টপ ১%-২% গবেষকরা বছরে মিলিয়ন ডলার পর্যন্ত আয় করেন। কিন্তু আপনি কি জানেন তাদের নাম? 🤣 না, কারণ তারা সেলিব্রেটি না তাদের আবিষ্কারেই আমরা কোভিডের ভ্যাকসিন পেয়েছি, আমরা AI ব্যবহার করতে পারি, আমরা স্পেসে যাই। তারা যখন একটা সিস্টেম ডিজাইন করেন, তখন আপনি ফেসবুক স্ক্রল করেন। তারা যখন কোড রিভিউ করেন, তখন আপনি শপিং মলে যান। তাদের বুদ্ধিতেই এই পৃথিবী চলছে, কিন্তু তারা থাকে আড়ালে। আর টাকার কথা আসলে এমাউন্টটা মিলিয়নের উপরে হয় অনেক সময়.. রিসার্চরা অনেক বুদ্ধিমান তাই শো অফ করে না কিন্তু চালচলনে কিছু না কিছু তো বোঝা যায়... আমি কেন টেক জয়েন্ট গুলোর অফার রিজেক্ট করে এখনো এই জায়গায় ঘাপটি মেরে বসে আছি সেটা বুঝতে আপনাদের আরো চার বছর সময় লাগবে👀 💔 সম্মান পেতে হলে, ঐ লেভেলেই উঠতে হয় রিসার্চারদের কাজ সাধারণ মানুষ বুঝবে না — কারণ এদের কাজ সাধারণ নয়। তাদের সম্মান করতে হলে আপনাকেও সেই গভীরতা ছুঁতে হবে। সম্মান দিতে ‘সমঝদার’ হতে হয়.... পেতে হলে "যোগ্যতাবান" হতে হয়..... তাই রিসার্চার ভাই ও বোনেরা, হতাশ হবেন না! ❤️ আপনার আইডিয়া কেউ বুঝছে না , হয়তো এই সমাজ আপনাকে বুঝবে না। হয়তো পেপার পাবলিশ হলেও কেউ লাইক দেবে না। হয়তো বন্ধুদের সাফল্য দেখে আপনি কষ্ট পাবেন। কিন্তু মনে রাখুন — আপনি যে লেভেলে চিন্তা করেন, সেখানে সবাই উঠতে পারে না। আপনার স্ট্রাগল একদিন পৃথিবী বদলে দেবে — শুধু এখন নয়, ভবিষ্যতে। ☠️ 🔥 আপনার গবেষণার প্রতি পৃথিবীর দৃষ্টি না থাকলেও, ভবিষ্যৎ আপনার নাম জানবে। 👉 আর কেউ না জানলেও, আজ আমি বলছি — “Salute to every researcher, scientist, and quiet warrior of knowledge.” আপনার নীরব যুদ্ধই একদিন ইতিহাস লিখবে। ✊ 🖊️ — লিখেছেন, চেহেরাবিহীন একজন সৈনিক Naem Azam Chowdhury Security Researcher, China 🇨🇳 #nac_research #ResearchOpportunity #researchanddevelopment#ResearchChallenge #research #bangladesh #naemazam
    Love
    1
    0 Commentarios 0 Acciones 65 Views
  • গল্প: “স্কারলেট: এক মায়ের নাম”

    সে ছিল স্রেফ এক পথবেড়াল।

    আজ, সে ইতিহাসে বেঁচে আছে এক সাহসী মায়ের প্রতীক হয়ে—
    একজন মা, যে অগ্নিকুণ্ডে ঝাঁপ দিয়েছিল শুধু তার সন্তানদের রক্ষা করার জন্য।

    আমার নাম ক্যারেন ওয়েলেন।
    ১৯৯৬ সালে আমি ব্রুকলিনের এক পশু আশ্রয়কেন্দ্রে কাজ করতাম।
    প্রতিদিনই কিছু না কিছু চ্যালেঞ্জ আসত, কিন্তু সেদিনের ঘটনার জন্য আমি একদমই প্রস্তুত ছিলাম না।

    হঠাৎ খবর এল—ইস্ট নিউইয়র্কের একটি পুরনো গ্যারেজে আগুন লেগেছে।
    আমরা দমকল বাহিনীর সঙ্গে সঙ্গে পৌঁছালাম।
    মেটালের দরজার ফাঁক দিয়ে আগুনের লেলিহান শিখা বেরিয়ে আসছে, বাতাসে পোড়া প্লাস্টিকের কটু গন্ধ আর ধোঁয়ার ঘন আস্তরণ।

    এই বিশৃঙ্খলার মধ্যেই আমি ওকে প্রথম দেখি।

    একটা ছোট, পাতলা, ময়লা মাখা বেড়াল। তার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় লোম নেই—তাপে ঝলসে গেছে। চোখ দুটো প্রায় বন্ধ, পোড়ার জ্বালায় ফুলে উঠেছে। তবুও সে এগিয়ে আসছিল—নির্ভুলভাবে, আস্তে করে মুখে করে একটি ছোট্ট বিড়ালছানা নিয়ে।

    তারপর... সে আবার ভেতরে গেল।
    একবার।
    দু’বার।
    তিন… চার… পাঁচ বার!

    আমরা স্তব্ধ হয়ে তাকিয়ে দেখছিলাম। ধোঁয়ার ভেতর সে বারবার হারিয়ে যাচ্ছিল, আর প্রতিবারই আরও দুর্বল হয়ে বেরিয়ে আসছিল।
    শেষবার ফিরে এসে সে একে একে তার বাচ্চাগুলোকে নাক দিয়ে ছুঁয়ে দেখল, যেন গুনে নিচ্ছে—এক, দুই, তিন, চার, পাঁচ...

    তারপর সে মাটিতে লুটিয়ে পড়ল।

    আমরা ভাবছিলাম, সে হয়তো আর বাঁচবে না। কিন্তু সে বেঁচে ছিল।
    আমরা ওকে ‘স্কারলেট’ নাম দিলাম।

    তার কান পুড়ে গিয়েছিল, পায়ের তলার নরম অংশ ছিঁড়ে গিয়েছিল, মুখের চামড়া ছিল সম্পূর্ণ ঝলসে যাওয়া।
    তবুও সে কাঁদেনি। শুধু ধীরে ধীরে নিঃশ্বাস নিচ্ছিল।

    মনে হচ্ছিল, সে বুঝে গেছে—
    "যতক্ষণ সন্তানরা নিরাপদ, ততক্ষণ সবকিছু সার্থক।"

    আমরা তাকে একটি ভেজা কাপড়ে জড়িয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে এলাম।
    চিকিৎসা চলল অনেক দিন—ড্রেসিং, মলম, ছোট ছোট অস্ত্রোপচার।
    একটি ছানা বাঁচল না, কিন্তু চারটি টিকে গেল। আর স্কারলেটও।

    সে পোষা বিড়াল ছিলো না। রাস্তায় কাটত তার দিন।
    তবুও তার মধ্যে এমন ভালোবাসা আর সাহস ছিল—যা আমাদের অনেক মানুষের মাঝেও দেখা যায় না।

    তার গল্প ছড়িয়ে পড়ল সারা বিশ্বে।
    পত্রিকার প্রথম পাতায় তার ছবি ছাপা হলো।
    একটি ভালোবাসাময় পরিবার তাকে দত্তক নিল।
    আর সে হয়ে উঠল সাহস ও নিঃস্বার্থ ভালোবাসার প্রতীক।

    স্কারলেট আমাদের শিখিয়ে গেল—
    নায়ক হতে ইউনিফর্ম লাগে না, অস্ত্র লাগে না।
    হৃদয় লাগে।।

    গল্প: “স্কারলেট: এক মায়ের নাম” সে ছিল স্রেফ এক পথবেড়াল। আজ, সে ইতিহাসে বেঁচে আছে এক সাহসী মায়ের প্রতীক হয়ে— একজন মা, যে অগ্নিকুণ্ডে ঝাঁপ দিয়েছিল শুধু তার সন্তানদের রক্ষা করার জন্য। আমার নাম ক্যারেন ওয়েলেন। ১৯৯৬ সালে আমি ব্রুকলিনের এক পশু আশ্রয়কেন্দ্রে কাজ করতাম। প্রতিদিনই কিছু না কিছু চ্যালেঞ্জ আসত, কিন্তু সেদিনের ঘটনার জন্য আমি একদমই প্রস্তুত ছিলাম না। হঠাৎ খবর এল—ইস্ট নিউইয়র্কের একটি পুরনো গ্যারেজে আগুন লেগেছে। আমরা দমকল বাহিনীর সঙ্গে সঙ্গে পৌঁছালাম। মেটালের দরজার ফাঁক দিয়ে আগুনের লেলিহান শিখা বেরিয়ে আসছে, বাতাসে পোড়া প্লাস্টিকের কটু গন্ধ আর ধোঁয়ার ঘন আস্তরণ। এই বিশৃঙ্খলার মধ্যেই আমি ওকে প্রথম দেখি। একটা ছোট, পাতলা, ময়লা মাখা বেড়াল। তার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় লোম নেই—তাপে ঝলসে গেছে। চোখ দুটো প্রায় বন্ধ, পোড়ার জ্বালায় ফুলে উঠেছে। তবুও সে এগিয়ে আসছিল—নির্ভুলভাবে, আস্তে করে মুখে করে একটি ছোট্ট বিড়ালছানা নিয়ে। তারপর... সে আবার ভেতরে গেল। একবার। দু’বার। তিন… চার… পাঁচ বার! আমরা স্তব্ধ হয়ে তাকিয়ে দেখছিলাম। ধোঁয়ার ভেতর সে বারবার হারিয়ে যাচ্ছিল, আর প্রতিবারই আরও দুর্বল হয়ে বেরিয়ে আসছিল। শেষবার ফিরে এসে সে একে একে তার বাচ্চাগুলোকে নাক দিয়ে ছুঁয়ে দেখল, যেন গুনে নিচ্ছে—এক, দুই, তিন, চার, পাঁচ... তারপর সে মাটিতে লুটিয়ে পড়ল। আমরা ভাবছিলাম, সে হয়তো আর বাঁচবে না। কিন্তু সে বেঁচে ছিল। আমরা ওকে ‘স্কারলেট’ নাম দিলাম। তার কান পুড়ে গিয়েছিল, পায়ের তলার নরম অংশ ছিঁড়ে গিয়েছিল, মুখের চামড়া ছিল সম্পূর্ণ ঝলসে যাওয়া। তবুও সে কাঁদেনি। শুধু ধীরে ধীরে নিঃশ্বাস নিচ্ছিল। মনে হচ্ছিল, সে বুঝে গেছে— "যতক্ষণ সন্তানরা নিরাপদ, ততক্ষণ সবকিছু সার্থক।" আমরা তাকে একটি ভেজা কাপড়ে জড়িয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে এলাম। চিকিৎসা চলল অনেক দিন—ড্রেসিং, মলম, ছোট ছোট অস্ত্রোপচার। একটি ছানা বাঁচল না, কিন্তু চারটি টিকে গেল। আর স্কারলেটও। সে পোষা বিড়াল ছিলো না। রাস্তায় কাটত তার দিন। তবুও তার মধ্যে এমন ভালোবাসা আর সাহস ছিল—যা আমাদের অনেক মানুষের মাঝেও দেখা যায় না। তার গল্প ছড়িয়ে পড়ল সারা বিশ্বে। পত্রিকার প্রথম পাতায় তার ছবি ছাপা হলো। একটি ভালোবাসাময় পরিবার তাকে দত্তক নিল। আর সে হয়ে উঠল সাহস ও নিঃস্বার্থ ভালোবাসার প্রতীক। স্কারলেট আমাদের শিখিয়ে গেল— নায়ক হতে ইউনিফর্ম লাগে না, অস্ত্র লাগে না। হৃদয় লাগে।।
    Love
    1
    0 Commentarios 0 Acciones 50 Views
Resultados de la búsqueda
BlackBird Ai
https://bbai.shop