• বর্তমানে স্মার্টওয়াচ ও ফিটনেস ট্র্যাকার ব্যান্ড আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অংশ হয়ে উঠেছে। কিন্তু এই ব্যান্ডে ব্যবহৃত কিছু মেটেরিয়ালে রয়েছে PFAS অর্থাৎ Per- and Polyfluoroalkyl Substances ।

    এটি এক ধরনের বিষাক্ত চিরস্থায়ী রাসায়নিক, যা ত্বক থেকে শোষিত হয়ে শরীরে ক্যানসার, লিভার ও কিডনির রোগের ঝুঁকি তৈরি করতে পারে, এমনটাই বলছে যুক্তরাষ্ট্রের নটর ডেম বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণা।

    এই রাসায়নিক সাধারণত ব্যান্ড, কেসিং বা স্ক্রিন কোটিংয়ে ব্যবহৃত হয়, কারণ এটি পানি, তেল ও ঘাম প্রতিরোধ করে এবং পণ্যকে টেকসই ও মসৃণ রাখে। তবে PFAS খুবই স্থিতিশীল, সহজে ভাঙে না—বরং শরীরে ও পরিবেশে দীর্ঘদিন ধরে সক্রিয় থাকে। ঘাম এর শোষণ ক্ষমতা আরও বাড়িয়ে তোলে।

    গবেষণায় Nike, Apple, Fitbit, Google সহ ২২টি জনপ্রিয় ব্র্যান্ডের ব্যান্ড পরীক্ষা করে ১৫ টিতেই PFAS শনাক্ত হয়েছে, অনেক ক্ষেত্রেই মাত্রা ছিল বিপজ্জনকভাবে বেশি। যদিও কোন ব্যান্ডগুলোতে পাওয়া যায় সেটা উল্লেখ করা হয়নি।

    তাছাড়া গবেষণায় PFHxA-এর মতো কিছু রাসায়নিকও পাওয়া গেছে, যা সাধারণত কীটনাশক বা কার্পেটে ব্যবহৃত হয় এবং সরাসরি লিভার ক্ষতির সঙ্গে জড়িত। যুক্তরাষ্ট্রের পরিবেশ সংস্থা (EPA) বলেছে, এসব রাসায়নিকের কোনো মাত্রাই শরীরের জন্য নিরাপদ নয়। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ইতোমধ্যেই নিষেধাজ্ঞার পথে হাঁটছে।

    তাই স্মার্টওয়াচ বা ব্যান্ড কেনার সময় সচেতন হোন। PFAS-মুক্ত কি না, দেখে নিন। নিরাপদ বিকল্প হিসেবে সিলিকন ব্যান্ড বেছে নেওয়াই উত্তম।

    Compiled by: বিজ্ঞান্বেষী
    Source: American Chemical Society (ACS)
    #Bigganneshi
    বর্তমানে স্মার্টওয়াচ ও ফিটনেস ট্র্যাকার ব্যান্ড আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অংশ হয়ে উঠেছে। কিন্তু এই ব্যান্ডে ব্যবহৃত কিছু মেটেরিয়ালে রয়েছে PFAS অর্থাৎ Per- and Polyfluoroalkyl Substances । এটি এক ধরনের বিষাক্ত চিরস্থায়ী রাসায়নিক, যা ত্বক থেকে শোষিত হয়ে শরীরে ক্যানসার, লিভার ও কিডনির রোগের ঝুঁকি তৈরি করতে পারে, এমনটাই বলছে যুক্তরাষ্ট্রের নটর ডেম বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণা। এই রাসায়নিক সাধারণত ব্যান্ড, কেসিং বা স্ক্রিন কোটিংয়ে ব্যবহৃত হয়, কারণ এটি পানি, তেল ও ঘাম প্রতিরোধ করে এবং পণ্যকে টেকসই ও মসৃণ রাখে। তবে PFAS খুবই স্থিতিশীল, সহজে ভাঙে না—বরং শরীরে ও পরিবেশে দীর্ঘদিন ধরে সক্রিয় থাকে। ঘাম এর শোষণ ক্ষমতা আরও বাড়িয়ে তোলে। গবেষণায় Nike, Apple, Fitbit, Google সহ ২২টি জনপ্রিয় ব্র্যান্ডের ব্যান্ড পরীক্ষা করে ১৫ টিতেই PFAS শনাক্ত হয়েছে, অনেক ক্ষেত্রেই মাত্রা ছিল বিপজ্জনকভাবে বেশি। যদিও কোন ব্যান্ডগুলোতে পাওয়া যায় সেটা উল্লেখ করা হয়নি। তাছাড়া গবেষণায় PFHxA-এর মতো কিছু রাসায়নিকও পাওয়া গেছে, যা সাধারণত কীটনাশক বা কার্পেটে ব্যবহৃত হয় এবং সরাসরি লিভার ক্ষতির সঙ্গে জড়িত। যুক্তরাষ্ট্রের পরিবেশ সংস্থা (EPA) বলেছে, এসব রাসায়নিকের কোনো মাত্রাই শরীরের জন্য নিরাপদ নয়। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ইতোমধ্যেই নিষেধাজ্ঞার পথে হাঁটছে। তাই স্মার্টওয়াচ বা ব্যান্ড কেনার সময় সচেতন হোন। PFAS-মুক্ত কি না, দেখে নিন। নিরাপদ বিকল্প হিসেবে সিলিকন ব্যান্ড বেছে নেওয়াই উত্তম। Compiled by: বিজ্ঞান্বেষী Source: American Chemical Society (ACS) #Bigganneshi
    0 Commentarios 0 Acciones 6 Views
  • ডিসেম্বর ২০২৪ সালের একটি গবেষণায় বলা হয়েছে, প্রতিদিন পাঁচ কাপের বেশি কফি পান করলে মস্তিষ্কের বয়স ৬.৭ বছর পর্যন্ত কমতে পারে।

    গবেষণায় অংশগ্রহণকারীরা যারা বেশি কফি পান করেন, তারা মনোযোগ, প্রসেসিং স্পিড, এবং ভিজুয়োমোটর কো-অর্ডিনেশন সম্পর্কিত বিভিন্ন পরীক্ষায় ভালো স্কোর করেছেন। এমনকি বয়স, লিঙ্গ এবং ধূমপানের বিষয়টি হিসাব করেও দেখা গেছে, তাদের শরীরে প্রদাহজনিত চিহ্ন তুলনামূলকভাবে কম।

    গবেষকরা মনে করছেন, এই উপকারের পেছনে রয়েছে কফিতে থাকা ক্যাফেইন, ম্যাগনেশিয়াম, ভিটামিন বি৩, এবং প্রদাহ হ্রাসকারী যৌগ। বিশেষ করে অ্যাট্রিয়াল ফিব্রিলেশন (AFib) রোগীদের জন্য কফি উপকারী হতে পারে, যারা মানসিক অবনতির ঝুঁকিতে থাকেন – কফি এই ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করতে পারে।

    আরও গবেষণায় দেখা গেছে, বেশি কফি পান করলে মস্তিষ্কে অ্যামিলয়েড-বিটা (Aβ) প্রোটিন জমা হওয়ার হার কমে, যা আলঝেইমার এবং ডিমেনশিয়া রোগের ঝুঁকি কমায়। যারা দিনে মাত্র এক বা দুই কাপ কফি পান করেন, তাদের মধ্যে এই রোগের প্রবণতা বেশি দেখা গেছে।

    কফি মস্তিষ্কে বিষাক্ত অ্যামিলয়েড প্ল্যাক তৈরি কমিয়ে দিতে পারে, কারণ এটি Aβ প্রোটিন তৈরি এবং এর বিষক্রিয়া কমিয়ে দেয়। কফির বিভিন্ন উপাদান ক্যাফেইনের সঙ্গে মিলিত হয়ে আরও কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।
    ডিসেম্বর ২০২৪ সালের একটি গবেষণায় বলা হয়েছে, প্রতিদিন পাঁচ কাপের বেশি কফি পান করলে মস্তিষ্কের বয়স ৬.৭ বছর পর্যন্ত কমতে পারে। গবেষণায় অংশগ্রহণকারীরা যারা বেশি কফি পান করেন, তারা মনোযোগ, প্রসেসিং স্পিড, এবং ভিজুয়োমোটর কো-অর্ডিনেশন সম্পর্কিত বিভিন্ন পরীক্ষায় ভালো স্কোর করেছেন। এমনকি বয়স, লিঙ্গ এবং ধূমপানের বিষয়টি হিসাব করেও দেখা গেছে, তাদের শরীরে প্রদাহজনিত চিহ্ন তুলনামূলকভাবে কম। গবেষকরা মনে করছেন, এই উপকারের পেছনে রয়েছে কফিতে থাকা ক্যাফেইন, ম্যাগনেশিয়াম, ভিটামিন বি৩, এবং প্রদাহ হ্রাসকারী যৌগ। বিশেষ করে অ্যাট্রিয়াল ফিব্রিলেশন (AFib) রোগীদের জন্য কফি উপকারী হতে পারে, যারা মানসিক অবনতির ঝুঁকিতে থাকেন – কফি এই ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করতে পারে। আরও গবেষণায় দেখা গেছে, বেশি কফি পান করলে মস্তিষ্কে অ্যামিলয়েড-বিটা (Aβ) প্রোটিন জমা হওয়ার হার কমে, যা আলঝেইমার এবং ডিমেনশিয়া রোগের ঝুঁকি কমায়। যারা দিনে মাত্র এক বা দুই কাপ কফি পান করেন, তাদের মধ্যে এই রোগের প্রবণতা বেশি দেখা গেছে। কফি মস্তিষ্কে বিষাক্ত অ্যামিলয়েড প্ল্যাক তৈরি কমিয়ে দিতে পারে, কারণ এটি Aβ প্রোটিন তৈরি এবং এর বিষক্রিয়া কমিয়ে দেয়। কফির বিভিন্ন উপাদান ক্যাফেইনের সঙ্গে মিলিত হয়ে আরও কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।
    0 Commentarios 0 Acciones 4 Views
  • নিজের শেকড় ভুলে যাওয়া অধম!
    মানুষ যত দূরই এগিয়ে যাক না কেন, যত বড় নাম বা সাফল্যই অর্জন করুক না কেন, তার ভিতরে এক অদৃশ্য শক্তি থাকে—সেটি হলো তার শেকড়। জন্মস্থান, পরিবার, পূর্বপুরুষদের জীবনসংগ্রাম, ভাষা, সংস্কৃতি, বিশ্বাস—এসব মিলেই তৈরি হয় একেকটি মানুষের পরিচয় ও আত্মা।

    শুধু প্রবাসী নয়, শেকড়ে যুক্ত থাকা দরকার সবার!
    শুধু প্রবাসী নয়, দেশে থাকা মানুষও যখন নিজের শেকড়কে অবহেলা করে, তখন সে ধীরে ধীরে আত্মবিস্মৃত হয়। এমন অনেকে আছেন, যারা নিজের আদি নিবাস, পারিবারিক ইতিহাস, স্থানীয় সংস্কৃতি বা মাটির গন্ধকে তুচ্ছ ভাবে; নিজেদের অতীতকে “অপ্রয়োজনীয়” মনে করে সামনে এগিয়ে যেতে চায়। কিন্তু প্রশ্ন হলো—যে নিজের পেছনের ইতিহাস জানে না, সে সামনের পথ ঠিক কীভাবে চিনবে?

    শেকড়হীন মানুষ, গাছ থেকে ছেঁড়া পাতার মতো!
    একটি গাছ মাটি ছেড়ে বাঁচতে পারে না। শেকড় ছাড়া গাছ যেমন শুকিয়ে যায়, মানুষও তেমনি ভিতর থেকে শূন্য হয়ে পড়ে যদি সে নিজের শেকড় ভুলে যায়। আত্মপরিচয় শুধু বর্তমানের নয়—তা গঠিত হয় অতীতের ভাঙাগড়ার ভেতর দিয়ে।
    আধুনিকতা মানেই শেকড়বিচ্ছিন্নতা নয়
    বিশ্বায়ন, আধুনিকতা, নাগরিক জীবন—এসবের ভিড়ে অনেকেই ভাবে নিজের পুরোনো গল্প, ঐতিহ্য বা স্থানীয় সংস্কৃতির চর্চা "পিছিয়ে পড়া"র লক্ষণ। অথচ সত্যটা হলো, যারা শেকড় জানে না, তারা ভবিষ্যৎ গড়ার মাটি পায় না। যারা নিজেদের ছোটবেলার স্কুল, গ্রামীণ রীতি, পরিবারের গল্প ভুলে যায়, তারাই জীবনের গভীর সম্পর্কগুলো হারিয়ে ফেলে।
    শেকড় মানে কেবল জন্মস্থান নয়, আত্মার সংযোগ!
    নিজ শেকড় মানে শুধু কোথায় জন্মেছি তা নয়—মানে আমি কার ইতিহাস বহন করছি, কার ভাষায় প্রথম হাসতে শিখেছি, কোন গন্ধে মন নরম হয়েছে, কোন মায়ার মধ্যে বেড়ে উঠেছি। এই শেকড় জানলে মানুষ আত্মবিশ্বাসী হয়, মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে শেখে।
    মধুসূদনের পথ ভুলে, শেষতক শেকড়েই ফেরা!
    এই প্রসঙ্গে মাইকেল মধুসূদন দত্তের কথা না বললেই নয়।
    যিনি ইংরেজি সাহিত্যকে হৃদয়ে ধারণ করেছিলেন, ইউরোপীয় সংস্কৃতিতে মগ্ন ছিলেন, এবং ভাবতেন—"এ দেশ, এই ভাষা, এই সংস্কৃতি আমার নয়।" তিনি বিদেশে গিয়ে বুঝেছিলেন, নিজের মাতৃভাষা, মাটি আর মা—এদের ছাড়া মানুষ কেবল দেহ বয়ে বেড়ায়, আত্মা নয়। তাই তিনি ফিরে এলেন, বাংলায় লিখলেন, আর সেই শেকড়েই গেঁথে গেলেন চিরতরে।
    শেষজীবনে অভাব, অপমান, হতাশা সব সয়েও বলেছিলেন—"আহা, বাংলায় যদি লিখতে পারতাম আরও আগে!"

    শেকড় ভুলে যাওয়া মানে আত্মা হারিয়ে ফেলা!
    যে নিজের শেকড় ভুলে যায়, তার চেয়ে অধম আর কেউ নেই। নিজেকে জানতে হলে, ভালোবাসতে হলে, আগে জানতে হয়—আমি কে, কোথা থেকে এসেছি। শুধু ব্যক্তিগত নয়, জাতিগতভাবে, সাংস্কৃতিকভাবেও এই চেতনা মানুষকে বাঁচিয়ে রাখে।
    🌱 নিজের শেকড় ভুলে যাওয়া অধম! মানুষ যত দূরই এগিয়ে যাক না কেন, যত বড় নাম বা সাফল্যই অর্জন করুক না কেন, তার ভিতরে এক অদৃশ্য শক্তি থাকে—সেটি হলো তার শেকড়। জন্মস্থান, পরিবার, পূর্বপুরুষদের জীবনসংগ্রাম, ভাষা, সংস্কৃতি, বিশ্বাস—এসব মিলেই তৈরি হয় একেকটি মানুষের পরিচয় ও আত্মা। 🏠 শুধু প্রবাসী নয়, শেকড়ে যুক্ত থাকা দরকার সবার! শুধু প্রবাসী নয়, দেশে থাকা মানুষও যখন নিজের শেকড়কে অবহেলা করে, তখন সে ধীরে ধীরে আত্মবিস্মৃত হয়। এমন অনেকে আছেন, যারা নিজের আদি নিবাস, পারিবারিক ইতিহাস, স্থানীয় সংস্কৃতি বা মাটির গন্ধকে তুচ্ছ ভাবে; নিজেদের অতীতকে “অপ্রয়োজনীয়” মনে করে সামনে এগিয়ে যেতে চায়। কিন্তু প্রশ্ন হলো—যে নিজের পেছনের ইতিহাস জানে না, সে সামনের পথ ঠিক কীভাবে চিনবে? 🌳 শেকড়হীন মানুষ, গাছ থেকে ছেঁড়া পাতার মতো! একটি গাছ মাটি ছেড়ে বাঁচতে পারে না। শেকড় ছাড়া গাছ যেমন শুকিয়ে যায়, মানুষও তেমনি ভিতর থেকে শূন্য হয়ে পড়ে যদি সে নিজের শেকড় ভুলে যায়। আত্মপরিচয় শুধু বর্তমানের নয়—তা গঠিত হয় অতীতের ভাঙাগড়ার ভেতর দিয়ে। 🌍 আধুনিকতা মানেই শেকড়বিচ্ছিন্নতা নয় বিশ্বায়ন, আধুনিকতা, নাগরিক জীবন—এসবের ভিড়ে অনেকেই ভাবে নিজের পুরোনো গল্প, ঐতিহ্য বা স্থানীয় সংস্কৃতির চর্চা "পিছিয়ে পড়া"র লক্ষণ। অথচ সত্যটা হলো, যারা শেকড় জানে না, তারা ভবিষ্যৎ গড়ার মাটি পায় না। যারা নিজেদের ছোটবেলার স্কুল, গ্রামীণ রীতি, পরিবারের গল্প ভুলে যায়, তারাই জীবনের গভীর সম্পর্কগুলো হারিয়ে ফেলে। 🧬 শেকড় মানে কেবল জন্মস্থান নয়, আত্মার সংযোগ! নিজ শেকড় মানে শুধু কোথায় জন্মেছি তা নয়—মানে আমি কার ইতিহাস বহন করছি, কার ভাষায় প্রথম হাসতে শিখেছি, কোন গন্ধে মন নরম হয়েছে, কোন মায়ার মধ্যে বেড়ে উঠেছি। এই শেকড় জানলে মানুষ আত্মবিশ্বাসী হয়, মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে শেখে। 📖 মধুসূদনের পথ ভুলে, শেষতক শেকড়েই ফেরা! এই প্রসঙ্গে মাইকেল মধুসূদন দত্তের কথা না বললেই নয়। যিনি ইংরেজি সাহিত্যকে হৃদয়ে ধারণ করেছিলেন, ইউরোপীয় সংস্কৃতিতে মগ্ন ছিলেন, এবং ভাবতেন—"এ দেশ, এই ভাষা, এই সংস্কৃতি আমার নয়।" তিনি বিদেশে গিয়ে বুঝেছিলেন, নিজের মাতৃভাষা, মাটি আর মা—এদের ছাড়া মানুষ কেবল দেহ বয়ে বেড়ায়, আত্মা নয়। তাই তিনি ফিরে এলেন, বাংলায় লিখলেন, আর সেই শেকড়েই গেঁথে গেলেন চিরতরে। শেষজীবনে অভাব, অপমান, হতাশা সব সয়েও বলেছিলেন—"আহা, বাংলায় যদি লিখতে পারতাম আরও আগে!" 🕯️ শেকড় ভুলে যাওয়া মানে আত্মা হারিয়ে ফেলা! যে নিজের শেকড় ভুলে যায়, তার চেয়ে অধম আর কেউ নেই। নিজেকে জানতে হলে, ভালোবাসতে হলে, আগে জানতে হয়—আমি কে, কোথা থেকে এসেছি। শুধু ব্যক্তিগত নয়, জাতিগতভাবে, সাংস্কৃতিকভাবেও এই চেতনা মানুষকে বাঁচিয়ে রাখে। ❤️✍️
    0 Commentarios 0 Acciones 5 Views
  • TSMC (Taiwan Semiconductor Manufacturing Company) — নামটি শুনে সাধারণ অনেকেই ভাবেন, এটি বোধহয় আরেকটি প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান।
    কিন্তু বাস্তবে, এই কোম্পানিটি পুরো আধুনিক প্রযুক্তি বিশ্বের প্রাণকেন্দ্র।
    আপনি যেই স্মার্টফোনটা হাতে ধরেছেন, ল্যাপটপ, গাড়ি, ড্রোন, এআই চিপ—সবকিছুর মস্তিষ্ক অর্থাৎ ‘চিপ’ তৈরি করে এই প্রতিষ্ঠানই।
    TSMC ছাড়া আজকের প্রযুক্তির গতি যেন অক্সিজেন ছাড়াই দৌড়ানোর চেষ্টা।

    বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান?

    TSMC শুধুমাত্র তাইওয়ান নয়, বরং সারা বিশ্বের ৫০% এর বেশি অ্যাডভান্সড চিপ একা তৈরি করে।
    বিশেষ করে Apple, AMD, Nvidia, Qualcomm, Intel-এর মতো জায়ান্ট কোম্পানিগুলো তাদের চিপ ডিজাইন TSMC-কে দেয় এবং TSMC সেই ডিজাইন অনুযায়ী ন্যানো-স্কেলে চিপ বানায়।
    এটাই বলা হয়, “Apple হয়তো চিপ ডিজাইন করে, কিন্তু তা প্রাণ পায় TSMC-র স্পর্শে।”

    এআই যুগে TSMC-এর গুরুত্ব

    বর্তমানে AI (Artificial Intelligence) ভিত্তিক যেসব সুপার কম্পিউটার, ডেটা সেন্টার, এবং স্মার্ট ডিভাইস চলছে—তাদের চিপের ৭০% এর বেশি বানিয়েছে TSMC।
    বিশ্বজুড়ে AI-চালিত ভবিষ্যতের যত সম্ভাবনা, তার প্রায় সবই TSMC-এর সিলিকন জাদুর উপর নির্ভর করে।

    কেন পশ্চিমা বিশ্ব TSMC-এর নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত?

    TSMC-এর প্রধান কারখানাগুলো তাইওয়ানে অবস্থিত।
    আর তাইওয়ান-চীন উত্তেজনার কারণে বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে—যদি যুদ্ধ হয়, তাহলে পুরো পৃথিবীর চিপ সাপ্লাই থমকে যাবে।
    এই আশঙ্কায় আমেরিকা, জাপান, জার্মানি সহ বিভিন্ন দেশ TSMC-কে নিজেদের দেশে কারখানা তৈরির জন্য বিলিয়ন ডলারের প্রণোদনা দিচ্ছে।

    বাজারমূল্যে রেকর্ড

    TSMC-এর বাজারমূল্য প্রায় ৬০০ বিলিয়ন ডলার, যা একে পৃথিবীর সবচেয়ে মূল্যবান কিছু কোম্পানির কাতারে এনে দাঁড় করিয়েছে।
    এটি এমন একটি কোম্পানি, যা অদৃশ্যভাবে সারা বিশ্বের ডিজিটাল ভবিষ্যৎ নিয়ন্ত্রণ করছে।

    TSMC কোনো সাধারণ কোম্পানি নয়।
    এটি এমন একটি প্রতিষ্ঠান, যা আধুনিক বিশ্বের প্রতিটি ইলেকট্রনিক ডিভাইসের অন্তরালে নিরব but অপরিহার্য ভূমিকা রাখছে।
    যদি একদিন TSMC থেমে যায়, তাহলে থেমে যাবে আপনার ফোন, আপনার ল্যাপটপ, এমনকি আপনার গাড়িও!

    তাই বলা হয়—TSMC মানেই আধুনিক বিশ্বের ‘সিলিকন হৃদয়’।
    এটি কেবল একটি কোম্পানি নয়, বরং ভবিষ্যতের চালিকাশক্তি।

    লেখায়-ফ্লোরা
    TSMC (Taiwan Semiconductor Manufacturing Company) — নামটি শুনে সাধারণ অনেকেই ভাবেন, এটি বোধহয় আরেকটি প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান। কিন্তু বাস্তবে, এই কোম্পানিটি পুরো আধুনিক প্রযুক্তি বিশ্বের প্রাণকেন্দ্র। আপনি যেই স্মার্টফোনটা হাতে ধরেছেন, ল্যাপটপ, গাড়ি, ড্রোন, এআই চিপ—সবকিছুর মস্তিষ্ক অর্থাৎ ‘চিপ’ তৈরি করে এই প্রতিষ্ঠানই। TSMC ছাড়া আজকের প্রযুক্তির গতি যেন অক্সিজেন ছাড়াই দৌড়ানোর চেষ্টা। বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান? TSMC শুধুমাত্র তাইওয়ান নয়, বরং সারা বিশ্বের ৫০% এর বেশি অ্যাডভান্সড চিপ একা তৈরি করে। বিশেষ করে Apple, AMD, Nvidia, Qualcomm, Intel-এর মতো জায়ান্ট কোম্পানিগুলো তাদের চিপ ডিজাইন TSMC-কে দেয় এবং TSMC সেই ডিজাইন অনুযায়ী ন্যানো-স্কেলে চিপ বানায়। এটাই বলা হয়, “Apple হয়তো চিপ ডিজাইন করে, কিন্তু তা প্রাণ পায় TSMC-র স্পর্শে।” এআই যুগে TSMC-এর গুরুত্ব বর্তমানে AI (Artificial Intelligence) ভিত্তিক যেসব সুপার কম্পিউটার, ডেটা সেন্টার, এবং স্মার্ট ডিভাইস চলছে—তাদের চিপের ৭০% এর বেশি বানিয়েছে TSMC। বিশ্বজুড়ে AI-চালিত ভবিষ্যতের যত সম্ভাবনা, তার প্রায় সবই TSMC-এর সিলিকন জাদুর উপর নির্ভর করে। কেন পশ্চিমা বিশ্ব TSMC-এর নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত? TSMC-এর প্রধান কারখানাগুলো তাইওয়ানে অবস্থিত। আর তাইওয়ান-চীন উত্তেজনার কারণে বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে—যদি যুদ্ধ হয়, তাহলে পুরো পৃথিবীর চিপ সাপ্লাই থমকে যাবে। এই আশঙ্কায় আমেরিকা, জাপান, জার্মানি সহ বিভিন্ন দেশ TSMC-কে নিজেদের দেশে কারখানা তৈরির জন্য বিলিয়ন ডলারের প্রণোদনা দিচ্ছে। বাজারমূল্যে রেকর্ড TSMC-এর বাজারমূল্য প্রায় ৬০০ বিলিয়ন ডলার, যা একে পৃথিবীর সবচেয়ে মূল্যবান কিছু কোম্পানির কাতারে এনে দাঁড় করিয়েছে। এটি এমন একটি কোম্পানি, যা অদৃশ্যভাবে সারা বিশ্বের ডিজিটাল ভবিষ্যৎ নিয়ন্ত্রণ করছে। TSMC কোনো সাধারণ কোম্পানি নয়। এটি এমন একটি প্রতিষ্ঠান, যা আধুনিক বিশ্বের প্রতিটি ইলেকট্রনিক ডিভাইসের অন্তরালে নিরব but অপরিহার্য ভূমিকা রাখছে। যদি একদিন TSMC থেমে যায়, তাহলে থেমে যাবে আপনার ফোন, আপনার ল্যাপটপ, এমনকি আপনার গাড়িও! তাই বলা হয়—TSMC মানেই আধুনিক বিশ্বের ‘সিলিকন হৃদয়’। এটি কেবল একটি কোম্পানি নয়, বরং ভবিষ্যতের চালিকাশক্তি। লেখায়-ফ্লোরা
    0 Commentarios 0 Acciones 1 Views
  • হরিতকি পাতার ও ফলের ৫০টি গুণাগুণ ও ব্যাখ্যা

    শরীরের ভিতরের যত্নে (Internal Health Benefits):

    1. কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে: হরিতকি গুঁড়া রাতে খেলে পেট পরিষ্কার হয়।

    2. হজমশক্তি বাড়ায়: খাওয়ার পরে হরিতকি খেলে খাবার সহজে হজম হয়।

    3. গ্যাস্ট্রিক ও অম্বল কমায়: পেটের এসিড ব্যালান্স করে।

    4. লিভার সুস্থ রাখে: লিভারের বিষাক্ত পদার্থ পরিষ্কার করে।

    5. রক্ত পরিশোধন করে: শরীরের টক্সিন দূর করে রক্ত বিশুদ্ধ করে।

    6. ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়ক: রক্তে শর্করার মাত্রা কমায়।

    7. কোলেস্টেরল কমায়: খারাপ কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে।

    8. ওজন কমাতে সাহায্য করে: বিপাকক্রিয়া বাড়ায়, ফলে মেদ ঝরে।

    9. বমি ভাব কমায়: পেট ঠান্ডা করে বমি বমি ভাব দূর করে।

    10. শরীরে শক্তি জোগায়: নিয়মিত খাওয়ার ফলে ক্লান্তি দূর হয়।

    রোগ প্রতিরোধে (Immunity & Infection):

    11. ইমিউনিটি বাড়ায়: সংক্রমণের বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষা গড়ে তোলে।

    12. কাশি ও সর্দি কমায়: গলায় কফ কমায় ও স্বস্তি দেয়।

    13. ঠান্ডা ও ইনফ্লুয়েঞ্জায় উপকারী: পাতার রস বা বাটা কণ্ঠনালীকে প্রশমিত করে।

    14. গলার ব্যথা উপশম করে: গরম জলে পাতার রস মিশিয়ে গার্গল করুন।

    15. জ্বর কমায়: শরীর ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে।

    16. অ্যালার্জি রোধ করে: অ্যালার্জির উপসর্গ হ্রাস করে।

    17. ফুসফুসের যত্ন নেয়: শ্বাসপ্রশ্বাস সহজ করে তোলে।

    18. হাঁপানিতে উপকারী: শ্বাসকষ্ট দূর করতে সহায়তা করে।

    19. পাইলস ও ফিস্টুলা উপকারী: বাওয়েল মুভমেন্ট সহজ করে।

    20. ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়ক: অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান রয়েছে।

    মানসিক স্বাস্থ্যে (Mind & Nerve):

    21. স্মৃতিশক্তি বাড়ায়: স্নায়ু সতেজ রাখে ও মনোযোগ বাড়ায়।

    22. ঘুমের সমস্যা দূর করে: রাতে খেলে ঘুম ভালো হয়।

    23. স্ট্রেস কমায়: মানসিক প্রশান্তি আনে।

    24. মস্তিষ্ক ঠান্ডা রাখে: অতিরিক্ত উত্তেজনা কমায়।

    25. মাইগ্রেন উপশমে কার্যকর: মাথা ব্যথা কমায় নিয়মিত খেলে।

    চুল ও ত্বকের যত্নে (Beauty & Hair):

    26. চুল পড়া কমায়: চুলের গোড়া মজবুত করে।

    27. খুশকি দূর করে: স্ক্যাল্প পরিষ্কার রাখে।

    28. চুল ঘন করে: প্যাক হিসেবে ব্যবহারে উপকার পাওয়া যায়।

    29. ব্রণ কমায়: অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল গুণ রয়েছে।

    30. ত্বকে উজ্জ্বলতা আনে: ফেসপ্যাকে ব্যবহার করলে ত্বক উজ্জ্বল হয়।

    31. চুলের আগা ফাটা কমায়: তেলে মিশিয়ে ব্যবহার করুন।

    32. ফোড়া ঘা শুকায়: পাতার পেস্ট ঘায়ের উপর লাগান।

    33. চুল কালো করে: নিয়মিত ব্যবহারে স্বাভাবিক রঙ বজায় থাকে।

    34. চুলে চকমক ভাব আনে: হরিতকি প্যাক দিয়ে মাথা ধুলে চুল ঝলমলে হয়।

    35. ত্বকের জ্বালা-পোড়া কমায়: আক্রান্ত স্থানে পাতা বাটা লাগান।

    মুখ ও দাঁতের যত্নে (Oral Care):

    36. মাড়ির রক্ত পড়া কমায়: হরিতকি গুঁড়া দিয়ে কুলকুচি করুন।

    37. দাঁতের ব্যথা উপশম করে: গুঁড়া দিয়ে ব্রাশ করুন হালকা করে।

    38. মুখের দুর্গন্ধ দূর করে: পাতা সিদ্ধ করে কুলকুচি করুন।

    39. ক্যানকার সোর কমায়: পাতার রস তুলোয় নিয়ে লাগান।

    40. দাঁতের ফাঁকে খাবার আটকে থাকা দূর করে: হরিতকি গুঁড়ার কুলকুচি সাহায্য করে।

    পেট ও হজমতন্ত্রের যত্নে (Digestive Health):

    41. বদহজম দূর করে: খাওয়ার পর অল্প হরিতকি খেলে উপকার মেলে।

    42. গ্যাস কমায়: পেট ফাঁপা হলে হরিতকি উপকারী।

    43. ডায়রিয়ায় উপকারী: পাতার রস সামান্য হালকা করে খাওয়ানো যেতে পারে।

    44. পেট ব্যথা উপশম করে: সেদ্ধ পানি পান করলে আরাম মেলে।

    45. অজীর্ণতা দূর করে: অতিরিক্ত খাওয়ার পর হরিতকি খেলে হজম সহজ হয়।

    বিভিন্ন সাধারণ উপকারিতা (General Benefits):

    46. বয়সের ছাপ কমায়: অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকার কারণে।

    47. রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে: পটাশিয়াম থাকার কারণে।

    48. জীবনীশক্তি বাড়ায়: দুর্বল শরীরে প্রাণশক্তি ফিরিয়ে আনে।

    49. মাংসপেশি শক্ত করে: শারীরিক কর্মক্ষমতা বাড়ায়।

    50. প্রাকৃতিক টনিক: প্রতিদিন খেলে পুরো শরীর সতেজ থাকে।

    ব্যবহার ও খাওয়ার ফর্মুলা (Usage Formula):

    পাতা:

    1. পাতার রস: ৫–৬টি পাতা ব্লেন্ড করে রস বের করে পানিতে মিশিয়ে খালি পেটে খান।

    2. পাতা সেদ্ধ: ঠান্ডা/গলা ব্যথায় পানির সঙ্গে সেদ্ধ করে গার্গল করুন।

    3. চর্মরোগে: পাতা বেটে আক্রান্ত স্থানে লাগান দিনে ২ বার।

    4. মুখের যত্নে: পাতার রস কুলকুচি হিসেবে ব্যবহার করুন।

    ফল/গুঁড়া:

    1. কোষ্ঠকাঠিন্য/পেট: ১ চা চামচ হরিতকি গুঁড়া রাতে গরম পানির সাথে।

    2. ডায়াবেটিস: সকালে খালি পেটে আধা চা চামচ হরিতকি গুঁড়া।

    3. ত্বকের জন্য: মধু + হরিতকি গুঁড়া + গোলাপ জল = ফেসপ্যাক

    4. চুলের যত্নে: নারকেল তেলে হরিতকি গুঁড়া মিশিয়ে স্ক্যাল্পে লাগান।

    Haritaki - Nature’s Secret for Total Wellness!
    প্রতিদিন ১ চামচ হরিতকি = পেট, চুল, ত্বক, মন ও শক্তির যত্ন একসাথে!
    এখনই শুরু করুন আপনার হেলদি লাইফের যাত্রা!

    #HaritakiBenefits #HerbalPower #NaturalWellness #HolisticHealing #DetoxNaturally #AyurvedicRemedy #HealthyFromWithin #PlantBasedHealing #AncientMedicine #RashidasRemedies #GreenHealthTips #DailyDetox #ImmunityBoost #SkincareNaturally #HairCareWithNature
    🌿 হরিতকি পাতার ও ফলের ৫০টি গুণাগুণ ও ব্যাখ্যা 🩺 শরীরের ভিতরের যত্নে (Internal Health Benefits): 1. কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে: হরিতকি গুঁড়া রাতে খেলে পেট পরিষ্কার হয়। 2. হজমশক্তি বাড়ায়: খাওয়ার পরে হরিতকি খেলে খাবার সহজে হজম হয়। 3. গ্যাস্ট্রিক ও অম্বল কমায়: পেটের এসিড ব্যালান্স করে। 4. লিভার সুস্থ রাখে: লিভারের বিষাক্ত পদার্থ পরিষ্কার করে। 5. রক্ত পরিশোধন করে: শরীরের টক্সিন দূর করে রক্ত বিশুদ্ধ করে। 6. ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়ক: রক্তে শর্করার মাত্রা কমায়। 7. কোলেস্টেরল কমায়: খারাপ কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। 8. ওজন কমাতে সাহায্য করে: বিপাকক্রিয়া বাড়ায়, ফলে মেদ ঝরে। 9. বমি ভাব কমায়: পেট ঠান্ডা করে বমি বমি ভাব দূর করে। 10. শরীরে শক্তি জোগায়: নিয়মিত খাওয়ার ফলে ক্লান্তি দূর হয়। 😷 রোগ প্রতিরোধে (Immunity & Infection): 11. ইমিউনিটি বাড়ায়: সংক্রমণের বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষা গড়ে তোলে। 12. কাশি ও সর্দি কমায়: গলায় কফ কমায় ও স্বস্তি দেয়। 13. ঠান্ডা ও ইনফ্লুয়েঞ্জায় উপকারী: পাতার রস বা বাটা কণ্ঠনালীকে প্রশমিত করে। 14. গলার ব্যথা উপশম করে: গরম জলে পাতার রস মিশিয়ে গার্গল করুন। 15. জ্বর কমায়: শরীর ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে। 16. অ্যালার্জি রোধ করে: অ্যালার্জির উপসর্গ হ্রাস করে। 17. ফুসফুসের যত্ন নেয়: শ্বাসপ্রশ্বাস সহজ করে তোলে। 18. হাঁপানিতে উপকারী: শ্বাসকষ্ট দূর করতে সহায়তা করে। 19. পাইলস ও ফিস্টুলা উপকারী: বাওয়েল মুভমেন্ট সহজ করে। 20. ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়ক: অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান রয়েছে। 🧠 মানসিক স্বাস্থ্যে (Mind & Nerve): 21. স্মৃতিশক্তি বাড়ায়: স্নায়ু সতেজ রাখে ও মনোযোগ বাড়ায়। 22. ঘুমের সমস্যা দূর করে: রাতে খেলে ঘুম ভালো হয়। 23. স্ট্রেস কমায়: মানসিক প্রশান্তি আনে। 24. মস্তিষ্ক ঠান্ডা রাখে: অতিরিক্ত উত্তেজনা কমায়। 25. মাইগ্রেন উপশমে কার্যকর: মাথা ব্যথা কমায় নিয়মিত খেলে। 💇‍♀️ চুল ও ত্বকের যত্নে (Beauty & Hair): 26. চুল পড়া কমায়: চুলের গোড়া মজবুত করে। 27. খুশকি দূর করে: স্ক্যাল্প পরিষ্কার রাখে। 28. চুল ঘন করে: প্যাক হিসেবে ব্যবহারে উপকার পাওয়া যায়। 29. ব্রণ কমায়: অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল গুণ রয়েছে। 30. ত্বকে উজ্জ্বলতা আনে: ফেসপ্যাকে ব্যবহার করলে ত্বক উজ্জ্বল হয়। 31. চুলের আগা ফাটা কমায়: তেলে মিশিয়ে ব্যবহার করুন। 32. ফোড়া ঘা শুকায়: পাতার পেস্ট ঘায়ের উপর লাগান। 33. চুল কালো করে: নিয়মিত ব্যবহারে স্বাভাবিক রঙ বজায় থাকে। 34. চুলে চকমক ভাব আনে: হরিতকি প্যাক দিয়ে মাথা ধুলে চুল ঝলমলে হয়। 35. ত্বকের জ্বালা-পোড়া কমায়: আক্রান্ত স্থানে পাতা বাটা লাগান। 🦷 মুখ ও দাঁতের যত্নে (Oral Care): 36. মাড়ির রক্ত পড়া কমায়: হরিতকি গুঁড়া দিয়ে কুলকুচি করুন। 37. দাঁতের ব্যথা উপশম করে: গুঁড়া দিয়ে ব্রাশ করুন হালকা করে। 38. মুখের দুর্গন্ধ দূর করে: পাতা সিদ্ধ করে কুলকুচি করুন। 39. ক্যানকার সোর কমায়: পাতার রস তুলোয় নিয়ে লাগান। 40. দাঁতের ফাঁকে খাবার আটকে থাকা দূর করে: হরিতকি গুঁড়ার কুলকুচি সাহায্য করে। 🍽️ পেট ও হজমতন্ত্রের যত্নে (Digestive Health): 41. বদহজম দূর করে: খাওয়ার পর অল্প হরিতকি খেলে উপকার মেলে। 42. গ্যাস কমায়: পেট ফাঁপা হলে হরিতকি উপকারী। 43. ডায়রিয়ায় উপকারী: পাতার রস সামান্য হালকা করে খাওয়ানো যেতে পারে। 44. পেট ব্যথা উপশম করে: সেদ্ধ পানি পান করলে আরাম মেলে। 45. অজীর্ণতা দূর করে: অতিরিক্ত খাওয়ার পর হরিতকি খেলে হজম সহজ হয়। 🌿 বিভিন্ন সাধারণ উপকারিতা (General Benefits): 46. বয়সের ছাপ কমায়: অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকার কারণে। 47. রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে: পটাশিয়াম থাকার কারণে। 48. জীবনীশক্তি বাড়ায়: দুর্বল শরীরে প্রাণশক্তি ফিরিয়ে আনে। 49. মাংসপেশি শক্ত করে: শারীরিক কর্মক্ষমতা বাড়ায়। 50. প্রাকৃতিক টনিক: প্রতিদিন খেলে পুরো শরীর সতেজ থাকে। 🥄 ব্যবহার ও খাওয়ার ফর্মুলা (Usage Formula): 🟩 পাতা: 1. পাতার রস: ৫–৬টি পাতা ব্লেন্ড করে রস বের করে পানিতে মিশিয়ে খালি পেটে খান। 2. পাতা সেদ্ধ: ঠান্ডা/গলা ব্যথায় পানির সঙ্গে সেদ্ধ করে গার্গল করুন। 3. চর্মরোগে: পাতা বেটে আক্রান্ত স্থানে লাগান দিনে ২ বার। 4. মুখের যত্নে: পাতার রস কুলকুচি হিসেবে ব্যবহার করুন। 🟨 ফল/গুঁড়া: 1. কোষ্ঠকাঠিন্য/পেট: ১ চা চামচ হরিতকি গুঁড়া রাতে গরম পানির সাথে। 2. ডায়াবেটিস: সকালে খালি পেটে আধা চা চামচ হরিতকি গুঁড়া। 3. ত্বকের জন্য: মধু + হরিতকি গুঁড়া + গোলাপ জল = ফেসপ্যাক 4. চুলের যত্নে: নারকেল তেলে হরিতকি গুঁড়া মিশিয়ে স্ক্যাল্পে লাগান। 🌿 Haritaki - Nature’s Secret for Total Wellness! প্রতিদিন ১ চামচ হরিতকি = পেট, চুল, ত্বক, মন ও শক্তির যত্ন একসাথে! 🧠💪 এখনই শুরু করুন আপনার হেলদি লাইফের যাত্রা! 🍀 #HaritakiBenefits #HerbalPower #NaturalWellness #HolisticHealing #DetoxNaturally #AyurvedicRemedy #HealthyFromWithin #PlantBasedHealing #AncientMedicine #RashidasRemedies #GreenHealthTips #DailyDetox #ImmunityBoost #SkincareNaturally #HairCareWithNature
    0 Commentarios 0 Acciones 11 Views
  • দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ তখন তুঙ্গে। বার্মার ঘন জঙ্গলে চলাফেরার জন্য ভারতীয় সেনাদের ট্রেনিং দেওয়া হচ্ছে মধ্য ভারতের মাউয়ের সামরিক ছাউনিতে। সেই সেনাবিভাগে এক ভারতীয় রাজ্যের যুবরাজ ছিলেন। ছাউনির সবাই তাঁকে ‘প্রিন্স’ বলে ডাকত। প্রিন্স নিজে শিকারি, আর তা নিয়ে প্রায়ই মহা আস্ফালন করতেন। কিছু পেটোয়া চ্যালাচামুণ্ডা ছিল তাঁর। সবাইকে নিয়ে বিকেলে ক্লাবঘরে বসে নরক গুলজার হতো। বক্তা মূলত প্রিন্স, বাকিরা মুগ্ধ শ্রোতা। একদিন প্রসঙ্গ উঠল শিকারে অব্যর্থ হতে হলে কী দরকার? নিমেষে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা, তীক্ষ্ণ দৃষ্টি, নাকি অব্যর্থ নিশানা? এক একজন এক একরকম মত দিলেন। কেউ বললেন তিনটি অথবা দু’টির যোগফল। প্রিন্স নিজে বললেন, ‘ওসব বাজে গল্প। অব্যর্থ নিশানাই শেষ কথা নয়।’ ঠিক তখনই ছাউনির ভারপ্রাপ্ত ব্রিটিশ অফিসার বলে উঠলেন, ‘আরে! আজ দেখি আমাদের মধ্যে এক এক্সপার্ট রয়েছেন। শোনাই যাক না উনি কী বলেন?’

    সবাই তাকিয়ে দেখল এককোণে চুপচাপ বসে এতক্ষণ নির্বাক রোদে-পোড়া, শক্ত চেহারার বলিষ্ঠ এক প্রৌঢ় তাঁদের তর্ক শুনে মিটিমিটি হাসছেন। তাঁর উদ্দেশ্যেই প্রশ্ন করায় এককথায় উত্তর দিলেন, ‘অব্যর্থ নিশানা। আর কিচ্ছু না!’ এই প্রথম প্রিন্সের কথাকে কেউ চ্যালেঞ্জ করলেন। যথারীতি তিনি ভয়ানক রেগে গেলেন। কে এই বৃদ্ধ! এত সাহসই বা তাঁর হয় কী করে? কোনওমতে রাগ চেপে প্রিন্স বললেন ‘আপনি প্রমাণ করতে পারবেন?’

    প্রৌঢ় আঙুল তুলে দেখালেন, ‘আচ্ছা, ওই দূরের গাছটা দেখ। একটা ওয়াই Y আকারের সরু ডালের মাঝের খাঁজে ছোট্ট একখানা পাখি বসে আছে। ডাল ভাঙবে না, কিন্তু পাখিটাকে মারতে হবে। পারবে?’ বিকেলের আলো পড়ে আসছে। চারিদিক ধোঁয়াটে ধূসর। প্রিন্স বললেন, ‘অসম্ভব! এই আলোতে নজরই চলে না, পাখি মারব কি করে?’

    উত্তরে প্রৌঢ় হাত বাড়িয়ে গাড়োয়ালী অনুচরের কাছ থেকে হেলায় একটা রাইফেল নিলেন, তুললেন, গুলি ছুঁড়লেন, বললেন, ‘কেন, এমনি করে?’ সবাই ছুটে গেলেন সেখানে। গিয়ে দেখা গেল ডালটি অভগ্ন, পাখিটি মৃত। কারও মুখে কথাটি সরে না। শেষে প্রিন্স কোনমতে তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘এ কেমন করে সম্ভব?’ প্রৌঢ় মুচকি হেসে উত্তর দিলেন ‘শোন তবে, যখন রুদ্রপ্রয়াগের চিতাটাকে মারি..’ এইটুকু শুনেই প্রিন্স যা বোঝার বুঝে গিয়েছেন ‘বলেন কী!! আপনিই তবে...’

    ‘হ্যাঁ, এই অধমের নামই এডোয়ার্ড জেমস করবেট। সবাই ভালবেসে জিম নামে ডাকে।’

    জিম করবেট জন্মেছিলেন পাহাড়ঘেরা নৈনিতালে। আজ থেকে দেড়শো বছর আগে। এই জুলাই মাসেরই ২৫ তারিখ। বাবা নৈনিতালের পোস্টমাস্টার। হ্রদ, নৈনিদেবীর মন্দির আর তার চারপাশের বন জঙ্গলে ঘুরে ঘুরেই করবেটের প্রথম প্রকৃতি প্রেম। তিনি লিখছেন, ‘দেবীর মন্দিরের চার মাইল ব্যাসার্ধের মধ্যে অন্যান্য জীবজন্তু ছাড়াও আমি বাঘ, চিতা, ভালুক আর সম্বর হরিণ দেখেছি, এবং একশো আটাশ জাতের পাখি চিনতে পেরেছি।’ করবেট জাতে সাহেব হলেও ছিলেন নিম্নবিত্ত ঘরের। পড়া স্কুলেই শেষ। আর বাল্যকাল কেটেছে নৈনিতালের তরাই অঞ্চলের সাধারণ, দরিদ্র কুমায়ুনীদের সঙ্গে—যাদের জন্য শেষজীবন পর্যন্ত অন্তরের টান বজায় ছিল তাঁর ।

    ১৮৯৫ সালে মাত্র কুড়ি বছর বয়সে করবেট বেঙ্গল অ্যান্ড নর্থ ওয়েস্টার্ন রেলওয়েতে শর্তাধীন কাজে ঢুকে পড়েন। এই করবেট লাজুক, স্বল্পভাষী আর কঠোর পরিশ্রমী। সঙ্গে শিকারের অদম্য নেশা। যাকে বলে ইন্ট্রোভার্ট, তার আদর্শ উদাহরণ। ভবিষ্যতের যে করবেট শত শত মাইল হেঁটে রুদ্রপ্রয়াগের চিতাকে একটি গুলিতে মারেন, অথবা অরণ্য ও অরণ্যপ্রাণী বাঁচাতে প্রাণ দিয়ে চেষ্টা করেন, কিংবা গ্রামের বাংলোর বারান্দায় বসে গ্রামীণ মানুষদের ওষুধ-পথ্য-সুশ্রুষার ব্যবস্থা করেন কিন্তু বিন্দুমাত্র যশপ্রার্থী হন না, তাঁর শুরু কিন্তু এখান থেকেই।
    বিশ শতকের শুরুর দিকে চম্পাবতের এক বাঘিনি গোটা উত্তরাঞ্চলে ভয়ানক ত্রাসের সৃষ্টি করল। প্রায় এক দশক ধরে পুলিস, গুপ্ত শিকারি, এমনকী নেপালি গোর্খা রেজিমেন্ট পর্যন্ত সেটিকে ধাওয়া করেও ধরতে পারেনি। অনেকে বিশ্বাস করত এ কোন পশু নয়, কোন অতৃপ্ত আত্মা। ওই বাঘিনির আক্রমণে শুধুমাত্র নথিভূক্ত মৃতের সংখ্যা ৪৩৬। গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ড অনুযায়ী আজ অবধি সর্বোচ্চ। যখন সবাই হাল ছেড়ে দিয়েছেন তখন একেবারে নবিশ শিকারী তরুণ জিম করবেট চ্যালেঞ্জটা নিয়েই নিলেন। তাঁর হাতেই খতম হল চম্পাবতের মানুষখাকী। ‘কুমায়ুনের মানুষখেকো’ (ম্যান-ইটার্স অব কুমায়ুন) বইতে একেবারে ছবির মত বর্ণনা আছে সেই হাড়হিম করা ঘটনার।

    ‘নদীর কাছে এগলাম যখন, ঝোপ ছেড়ে বাঘিনীনিটি সেই উঁচানে পাথরের উপর, আমি যে দিকে আছি সে দিকে বেরিয়ে এল। যখন ও বিশ ফুটের মধ্যে, বন্দুকটি তুললাম এবং আতঙ্কে দেখলাম যে নল দু’টি এবং ব্রিচ-ব্লকের মাঝখানে এক ইঞ্চির আট-তৃতীয়াংশ এক ফাঁক আছে। যখন দু’টি নলে ফায়ার করা হয় তখন বন্দুক ফাটেনি, সম্ভবত এখনও ফাটবে না, কিন্তু পিছু ধাক্কা খেয়ে কানা হয়ে যাবার বিপদ আছে। যাই হক, সে ঝুঁকি নিতেই হচ্ছে এবং যে পেল্লায় পুঁতিটি সাইটের কাজ করছিল, সেটি বাঘিনির হাঁ-করা মুখের দিকে নিশানা করে বসিয়ে আমি গুলি ছুঁড়লাম। হয়তো আমি উপর-নীচে নড়ে গিয়েছিলাম কিংবা হয়তো বেলনাকার বুলেটটি বিশ ফুট নির্ভুল পাঠাবার ক্ষমতা বন্দুকটির ছিল না। যাই হোক গুলিটি বাঘিনির মুখ ফসকাল এবং বিঁধল ওর ডান থাবায়, সেখান থেকে পরে আমি আঙুলের নখ দিয়ে সেটি সরিয়েছিলাম। সৌভাগ্যক্রমে ও তখন শেষ অবস্থায় পৌঁছেছিল এবং পায়ের উপর আঘাতটি ওঁকে সমুখপানে টলিয়ে ফেলে দেবার কাজ যথেষ্টই করল। পাথরটার এক ধার দিয়ে মাথাটি ঝুঁকিয়ে ও মৃত্যুতে শান্ত হল।’

    রাতারাতি জিম করবেট এক কিংবদন্তিতে পরিণত হলেন। সেই শুরু। তারপর যেখানেই মানুষখেকো বাঘের অত্যাচার শুরু হতো, জিমকে ডেকে পাঠাতেন সেখানকার শাসক। কিংবা জিম নিজেই চলে যেতেন। ১৯০৭ থেকে ১৯৩৮’এর মধ্যে তিনি মোট ৩৩টি মানুষখেকোর শিকার করেন, যারা সব মিলিয়ে প্রায় ১২০০ মানুষ মেরেছিল। এদের মধ্যে দু’খানি মানুষখেকো চিতাবাঘ। রুদ্রপ্রয়াগের মানুষখেকো চিতাবাঘ ভারতের ইতিহাসে প্রায় অমর হয়ে গেছে।

    ১২৬ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করা চিতাটিকে নিয়ে করবেট নিজে লিখেছেন, ‘বাঘেরা যে-কারণে নরখাদক হয়, চিতারা সে-কারণে হয় না। আমাদের জঙ্গলের সকল জন্তুর মধ্যে চিতা সবচেয়ে সুন্দর, সাবলীল। জখম হলে, বা কোণঠাসা হলে সাহসে সে কারও চেয়ে কম যায় না। তবে এরা এমন মড়াখেকো, যে খিদের জ্বালায় জঙ্গলে যে মড়া পায়, তা-ই খায়। ঠিক আফ্রিকার জঙ্গলের সিংহদের মতো... ১৯১৮ সালে দেশ জুড়ে ইনফ্লুয়েঞ্জার মড়ক দেখা দেয়। ভারতে দশ লক্ষেরও বেশি মানুষ মারা পড়ে। এ মড়কের কঠিন মূল্য দিতে হয় গাড়োয়ালকে। মহামারীর শেষে গাড়োয়ালের নরখাদক আত্মপ্রকাশ করে। ১৯১৮ সালের ৯ই জুন, বৈঁজি গ্রামে রুদ্রপ্রয়াগের নরখাদক চিতা প্রথম মানুষ মারে, নথিতে লেখা আছে। সর্বশেষ যে মৃত্যুর জন্য নরখাদকটি দায়ী, তা ১৯২৬ সালের ১৪ই এপ্রিল ভৈঁসোয়ারা গ্রামে ঘটে। সরকারি নথিতে লেখা আছে। এই দু’টি তারিখের মধ্যে ১২৫ জন মানুষ মারা পড়ে।’

    মাইলের পর মাইল হেঁটে প্রায় হতাশ হয়ে যখন ভাবছেন শিকারই ছেড়ে দেবেন, প্রায় দৈবক্রমে তিনি চিতাটিকে শিকার করলেন। কিন্তু আশ্চর্যের ব্যাপার, ঠিক তারপরেই যা লিখলেন তা কোন দক্ষ শিকারীর দম্ভের আস্ফালন না, বরং পড়লে আজও মন ভিজে ওঠে।

    ‘এখানে পড়ে আছে একটি বুড়ো চিতা, অন্য চিতাদের সঙ্গে ওর এইমাত্র তফাত, যে ওর মুখটা ধূসর, ঠোঁটের উপর গোঁফ নেই। ভারতবর্ষে সবার চেয়ে ঘৃণ্য এবং সন্ত্রাসকারী জন্তু, যার একমাত্র অপরাধ—প্রকৃতির নিয়মের বিরুদ্ধে নয়, কিন্তু মানুষের নিয়মের বিরুদ্ধে—সে মানুষের রক্তপাত করেছে। মানুষকে আতঙ্কিত করার জন্য নয়, শুধু নিজের প্রাণ রক্ষার জন্য। সে এখন গর্তের ধারে থুতনি রেখে শুয়ে আছে, চোখদু’টি আধবোজা, তার শেষ ঘুমে শান্তি মগ্ন।’ অন্য আর দশটা শিকারীর থেকে এক মূহূর্তে জিম করবেট আলাদা হয়ে যান এখানেই। তাঁর শিকার নিতান্ত অভিযান, অ্যাডভেঞ্চার কিংবা স্পোর্টের জন্য নয়। মনেপ্রাণে তিনি বিশ্বাস করতেন, ‘বাঘ উদারহৃদয় ভদ্রলোক। সীমাহীন তার সাহস। যে দিন বাঘকে বিলোপ করে দেওয়া হবে, যদি বাঘের সপক্ষে জনমত গড়ে না ওঠে বাঘ লোপ পাবেই, তা হলে ভারতের শ্রেষ্ঠতম প্রাণীর বিলোপে ভারত দরিদ্রতরই হবে।’ একমাত্র যখনই কোন বাঘ সাধারণ, নিরপরাধ মানুষের জন্য বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে, একমাত্র তখনই ঝলসে উঠেছে তাঁর রাইফেল। ১৯৩৮ সালের ৩০ নভেম্বর থাক-এর মানুষখেকো বাঘিনিকে হত্যার পর অফিসিয়ালি শিকার ত্যাগ করলেন। তারপর মেতে উঠলেন বাঘেদের অভয়াশ্রম তৈরির কাজে। বহু ভারতীয়কে নিঃস্বার্থ ভাবে সাহায্য করেছেন শুধু এই বিশ্বাসে, ‘ভারতীয়রা বেইমানি করে না।’

    ১৯৪৪ সালে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস থেকে প্রকাশ পায় রেমন্ড শেপার্ডের ছবিতে সাজানো তাঁর লেখা বই ‘Man-Eaters of Kumaon’। প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গেই বেস্ট সেলার। এক বছরের মধ্যে হু-হু করে বিক্রি হয়ে যায় প্রায় লাখ পাঁচেক বই। এই বইয়েরই বাংলা অনুবাদের অদ্ভুত সুন্দর এক মলাট করেছিলেন সত্যজিৎ রায়। ১৯৫৩-এ প্রকাশিত প্রচ্ছদে দু’-মলাট জোড়া কালো আর হলদে বাঘের ছাল যেন ছড়িয়ে রাখা হয়েছে। নীচের দিকে গুলির গর্ত যা পিছনের দিকে ফুঁড়ে চলে গেছে। গুলি ঢোকার সময় ফুটো ছোটো হয়। ফুঁড়ে বেরোবার সময় চ্যাপ্টা ও বড়ো হয়। সেটাও প্রচ্ছদ তৈরির সময় মাথায় রেখেছেন সত্যজিৎ। লেখক হলেও বেস্ট সেলার হতেন জিম। কিন্তু বই লিখলেন মাত্র ছ’টি।

    ১৯৪৭ সালে ভারত স্বাধীন হল। নভেম্বরে বোন ম্যাগিকে সঙ্গে নিয়ে এস. এস. অ্যারোন্দা জাহাজে মোম্বাসা আর সেখান থেকে নাইরোবি হয়ে নায়েরি শহরে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করলেন জিম। ১৯৫৫ সালে আচমকা না ফেরার দেশে চলে যাওয়ার আগে পর্যন্ত ওখানেই ছিলেন। আসলে জিমের ভয় ছিল স্বাধীন ভারতে হয়তো তাঁর উপরে অত্যাচার নেমে আসবে । জন্মসূত্রে ইংরেজ হওয়ায় তিনি হয়তো সুবিচার পাবেন না। তাঁর প্রিয় ভারতভূমি ছেড়ে যাবার আগে নৈনিতালের বাড়ি বিক্রি করে বহুদিনের বিশ্বস্ত সঙ্গী রাইফেল ও বন্দুকগুলো গভীর জঙ্গলে ‘সমাধিস্থ’ করে এসেছিলেন ভারতের সেরা শিকারী, যিনি মনেপ্রাণে চিরকাল এক ভারতীয় হয়েই থেকে গিয়েছেন। তা না হলে কে এমন করে লিখতে পারে-
    ‘আমার ভারত, যে ভারতকে আমি জানি, সেই ভারতে যে চল্লিশ কোটি মানুষের বাস, তার মধ্যে শতকরা নব্বই জনই সরল, সৎ, সাহসী, আর কঠোর পরিশ্রমী। ... সত্যিই এরা বড় গরিব। এদের প্রায়শই ‘ভারতের বুভুক্ষু কোটি-কোটি মানুষ’ বলে বর্ণনা করা হয়ে থাকে। এদের মধ্যেই আমি বাস করেছি এবং এদের আমি ভালোবাসি। এই নরনারীদের কথাই এই বইয়ের পাতায় বলার চেষ্টা করেছি। আমার বন্ধু, ভারতের সেই গরিবদের উদ্দেশে আমি আমার এই বইখানি শ্রদ্ধাভরে উৎসর্গ করলাম।’

    জন্মের সার্ধশতবর্ষে এই মনীষীকে প্রণাম।

    জিম করবেট ১৫০। বর্তমান পত্রিকায় গত ২০ জুলাই প্রকাশিত।

    লেখক - কৌশিক মজুমদার
    দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ তখন তুঙ্গে। বার্মার ঘন জঙ্গলে চলাফেরার জন্য ভারতীয় সেনাদের ট্রেনিং দেওয়া হচ্ছে মধ্য ভারতের মাউয়ের সামরিক ছাউনিতে। সেই সেনাবিভাগে এক ভারতীয় রাজ্যের যুবরাজ ছিলেন। ছাউনির সবাই তাঁকে ‘প্রিন্স’ বলে ডাকত। প্রিন্স নিজে শিকারি, আর তা নিয়ে প্রায়ই মহা আস্ফালন করতেন। কিছু পেটোয়া চ্যালাচামুণ্ডা ছিল তাঁর। সবাইকে নিয়ে বিকেলে ক্লাবঘরে বসে নরক গুলজার হতো। বক্তা মূলত প্রিন্স, বাকিরা মুগ্ধ শ্রোতা। একদিন প্রসঙ্গ উঠল শিকারে অব্যর্থ হতে হলে কী দরকার? নিমেষে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা, তীক্ষ্ণ দৃষ্টি, নাকি অব্যর্থ নিশানা? এক একজন এক একরকম মত দিলেন। কেউ বললেন তিনটি অথবা দু’টির যোগফল। প্রিন্স নিজে বললেন, ‘ওসব বাজে গল্প। অব্যর্থ নিশানাই শেষ কথা নয়।’ ঠিক তখনই ছাউনির ভারপ্রাপ্ত ব্রিটিশ অফিসার বলে উঠলেন, ‘আরে! আজ দেখি আমাদের মধ্যে এক এক্সপার্ট রয়েছেন। শোনাই যাক না উনি কী বলেন?’ সবাই তাকিয়ে দেখল এককোণে চুপচাপ বসে এতক্ষণ নির্বাক রোদে-পোড়া, শক্ত চেহারার বলিষ্ঠ এক প্রৌঢ় তাঁদের তর্ক শুনে মিটিমিটি হাসছেন। তাঁর উদ্দেশ্যেই প্রশ্ন করায় এককথায় উত্তর দিলেন, ‘অব্যর্থ নিশানা। আর কিচ্ছু না!’ এই প্রথম প্রিন্সের কথাকে কেউ চ্যালেঞ্জ করলেন। যথারীতি তিনি ভয়ানক রেগে গেলেন। কে এই বৃদ্ধ! এত সাহসই বা তাঁর হয় কী করে? কোনওমতে রাগ চেপে প্রিন্স বললেন ‘আপনি প্রমাণ করতে পারবেন?’ প্রৌঢ় আঙুল তুলে দেখালেন, ‘আচ্ছা, ওই দূরের গাছটা দেখ। একটা ওয়াই Y আকারের সরু ডালের মাঝের খাঁজে ছোট্ট একখানা পাখি বসে আছে। ডাল ভাঙবে না, কিন্তু পাখিটাকে মারতে হবে। পারবে?’ বিকেলের আলো পড়ে আসছে। চারিদিক ধোঁয়াটে ধূসর। প্রিন্স বললেন, ‘অসম্ভব! এই আলোতে নজরই চলে না, পাখি মারব কি করে?’ উত্তরে প্রৌঢ় হাত বাড়িয়ে গাড়োয়ালী অনুচরের কাছ থেকে হেলায় একটা রাইফেল নিলেন, তুললেন, গুলি ছুঁড়লেন, বললেন, ‘কেন, এমনি করে?’ সবাই ছুটে গেলেন সেখানে। গিয়ে দেখা গেল ডালটি অভগ্ন, পাখিটি মৃত। কারও মুখে কথাটি সরে না। শেষে প্রিন্স কোনমতে তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘এ কেমন করে সম্ভব?’ প্রৌঢ় মুচকি হেসে উত্তর দিলেন ‘শোন তবে, যখন রুদ্রপ্রয়াগের চিতাটাকে মারি..’ এইটুকু শুনেই প্রিন্স যা বোঝার বুঝে গিয়েছেন ‘বলেন কী!! আপনিই তবে...’ ‘হ্যাঁ, এই অধমের নামই এডোয়ার্ড জেমস করবেট। সবাই ভালবেসে জিম নামে ডাকে।’ জিম করবেট জন্মেছিলেন পাহাড়ঘেরা নৈনিতালে। আজ থেকে দেড়শো বছর আগে। এই জুলাই মাসেরই ২৫ তারিখ। বাবা নৈনিতালের পোস্টমাস্টার। হ্রদ, নৈনিদেবীর মন্দির আর তার চারপাশের বন জঙ্গলে ঘুরে ঘুরেই করবেটের প্রথম প্রকৃতি প্রেম। তিনি লিখছেন, ‘দেবীর মন্দিরের চার মাইল ব্যাসার্ধের মধ্যে অন্যান্য জীবজন্তু ছাড়াও আমি বাঘ, চিতা, ভালুক আর সম্বর হরিণ দেখেছি, এবং একশো আটাশ জাতের পাখি চিনতে পেরেছি।’ করবেট জাতে সাহেব হলেও ছিলেন নিম্নবিত্ত ঘরের। পড়া স্কুলেই শেষ। আর বাল্যকাল কেটেছে নৈনিতালের তরাই অঞ্চলের সাধারণ, দরিদ্র কুমায়ুনীদের সঙ্গে—যাদের জন্য শেষজীবন পর্যন্ত অন্তরের টান বজায় ছিল তাঁর । ১৮৯৫ সালে মাত্র কুড়ি বছর বয়সে করবেট বেঙ্গল অ্যান্ড নর্থ ওয়েস্টার্ন রেলওয়েতে শর্তাধীন কাজে ঢুকে পড়েন। এই করবেট লাজুক, স্বল্পভাষী আর কঠোর পরিশ্রমী। সঙ্গে শিকারের অদম্য নেশা। যাকে বলে ইন্ট্রোভার্ট, তার আদর্শ উদাহরণ। ভবিষ্যতের যে করবেট শত শত মাইল হেঁটে রুদ্রপ্রয়াগের চিতাকে একটি গুলিতে মারেন, অথবা অরণ্য ও অরণ্যপ্রাণী বাঁচাতে প্রাণ দিয়ে চেষ্টা করেন, কিংবা গ্রামের বাংলোর বারান্দায় বসে গ্রামীণ মানুষদের ওষুধ-পথ্য-সুশ্রুষার ব্যবস্থা করেন কিন্তু বিন্দুমাত্র যশপ্রার্থী হন না, তাঁর শুরু কিন্তু এখান থেকেই। বিশ শতকের শুরুর দিকে চম্পাবতের এক বাঘিনি গোটা উত্তরাঞ্চলে ভয়ানক ত্রাসের সৃষ্টি করল। প্রায় এক দশক ধরে পুলিস, গুপ্ত শিকারি, এমনকী নেপালি গোর্খা রেজিমেন্ট পর্যন্ত সেটিকে ধাওয়া করেও ধরতে পারেনি। অনেকে বিশ্বাস করত এ কোন পশু নয়, কোন অতৃপ্ত আত্মা। ওই বাঘিনির আক্রমণে শুধুমাত্র নথিভূক্ত মৃতের সংখ্যা ৪৩৬। গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ড অনুযায়ী আজ অবধি সর্বোচ্চ। যখন সবাই হাল ছেড়ে দিয়েছেন তখন একেবারে নবিশ শিকারী তরুণ জিম করবেট চ্যালেঞ্জটা নিয়েই নিলেন। তাঁর হাতেই খতম হল চম্পাবতের মানুষখাকী। ‘কুমায়ুনের মানুষখেকো’ (ম্যান-ইটার্স অব কুমায়ুন) বইতে একেবারে ছবির মত বর্ণনা আছে সেই হাড়হিম করা ঘটনার। ‘নদীর কাছে এগলাম যখন, ঝোপ ছেড়ে বাঘিনীনিটি সেই উঁচানে পাথরের উপর, আমি যে দিকে আছি সে দিকে বেরিয়ে এল। যখন ও বিশ ফুটের মধ্যে, বন্দুকটি তুললাম এবং আতঙ্কে দেখলাম যে নল দু’টি এবং ব্রিচ-ব্লকের মাঝখানে এক ইঞ্চির আট-তৃতীয়াংশ এক ফাঁক আছে। যখন দু’টি নলে ফায়ার করা হয় তখন বন্দুক ফাটেনি, সম্ভবত এখনও ফাটবে না, কিন্তু পিছু ধাক্কা খেয়ে কানা হয়ে যাবার বিপদ আছে। যাই হক, সে ঝুঁকি নিতেই হচ্ছে এবং যে পেল্লায় পুঁতিটি সাইটের কাজ করছিল, সেটি বাঘিনির হাঁ-করা মুখের দিকে নিশানা করে বসিয়ে আমি গুলি ছুঁড়লাম। হয়তো আমি উপর-নীচে নড়ে গিয়েছিলাম কিংবা হয়তো বেলনাকার বুলেটটি বিশ ফুট নির্ভুল পাঠাবার ক্ষমতা বন্দুকটির ছিল না। যাই হোক গুলিটি বাঘিনির মুখ ফসকাল এবং বিঁধল ওর ডান থাবায়, সেখান থেকে পরে আমি আঙুলের নখ দিয়ে সেটি সরিয়েছিলাম। সৌভাগ্যক্রমে ও তখন শেষ অবস্থায় পৌঁছেছিল এবং পায়ের উপর আঘাতটি ওঁকে সমুখপানে টলিয়ে ফেলে দেবার কাজ যথেষ্টই করল। পাথরটার এক ধার দিয়ে মাথাটি ঝুঁকিয়ে ও মৃত্যুতে শান্ত হল।’ রাতারাতি জিম করবেট এক কিংবদন্তিতে পরিণত হলেন। সেই শুরু। তারপর যেখানেই মানুষখেকো বাঘের অত্যাচার শুরু হতো, জিমকে ডেকে পাঠাতেন সেখানকার শাসক। কিংবা জিম নিজেই চলে যেতেন। ১৯০৭ থেকে ১৯৩৮’এর মধ্যে তিনি মোট ৩৩টি মানুষখেকোর শিকার করেন, যারা সব মিলিয়ে প্রায় ১২০০ মানুষ মেরেছিল। এদের মধ্যে দু’খানি মানুষখেকো চিতাবাঘ। রুদ্রপ্রয়াগের মানুষখেকো চিতাবাঘ ভারতের ইতিহাসে প্রায় অমর হয়ে গেছে। ১২৬ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করা চিতাটিকে নিয়ে করবেট নিজে লিখেছেন, ‘বাঘেরা যে-কারণে নরখাদক হয়, চিতারা সে-কারণে হয় না। আমাদের জঙ্গলের সকল জন্তুর মধ্যে চিতা সবচেয়ে সুন্দর, সাবলীল। জখম হলে, বা কোণঠাসা হলে সাহসে সে কারও চেয়ে কম যায় না। তবে এরা এমন মড়াখেকো, যে খিদের জ্বালায় জঙ্গলে যে মড়া পায়, তা-ই খায়। ঠিক আফ্রিকার জঙ্গলের সিংহদের মতো... ১৯১৮ সালে দেশ জুড়ে ইনফ্লুয়েঞ্জার মড়ক দেখা দেয়। ভারতে দশ লক্ষেরও বেশি মানুষ মারা পড়ে। এ মড়কের কঠিন মূল্য দিতে হয় গাড়োয়ালকে। মহামারীর শেষে গাড়োয়ালের নরখাদক আত্মপ্রকাশ করে। ১৯১৮ সালের ৯ই জুন, বৈঁজি গ্রামে রুদ্রপ্রয়াগের নরখাদক চিতা প্রথম মানুষ মারে, নথিতে লেখা আছে। সর্বশেষ যে মৃত্যুর জন্য নরখাদকটি দায়ী, তা ১৯২৬ সালের ১৪ই এপ্রিল ভৈঁসোয়ারা গ্রামে ঘটে। সরকারি নথিতে লেখা আছে। এই দু’টি তারিখের মধ্যে ১২৫ জন মানুষ মারা পড়ে।’ মাইলের পর মাইল হেঁটে প্রায় হতাশ হয়ে যখন ভাবছেন শিকারই ছেড়ে দেবেন, প্রায় দৈবক্রমে তিনি চিতাটিকে শিকার করলেন। কিন্তু আশ্চর্যের ব্যাপার, ঠিক তারপরেই যা লিখলেন তা কোন দক্ষ শিকারীর দম্ভের আস্ফালন না, বরং পড়লে আজও মন ভিজে ওঠে। ‘এখানে পড়ে আছে একটি বুড়ো চিতা, অন্য চিতাদের সঙ্গে ওর এইমাত্র তফাত, যে ওর মুখটা ধূসর, ঠোঁটের উপর গোঁফ নেই। ভারতবর্ষে সবার চেয়ে ঘৃণ্য এবং সন্ত্রাসকারী জন্তু, যার একমাত্র অপরাধ—প্রকৃতির নিয়মের বিরুদ্ধে নয়, কিন্তু মানুষের নিয়মের বিরুদ্ধে—সে মানুষের রক্তপাত করেছে। মানুষকে আতঙ্কিত করার জন্য নয়, শুধু নিজের প্রাণ রক্ষার জন্য। সে এখন গর্তের ধারে থুতনি রেখে শুয়ে আছে, চোখদু’টি আধবোজা, তার শেষ ঘুমে শান্তি মগ্ন।’ অন্য আর দশটা শিকারীর থেকে এক মূহূর্তে জিম করবেট আলাদা হয়ে যান এখানেই। তাঁর শিকার নিতান্ত অভিযান, অ্যাডভেঞ্চার কিংবা স্পোর্টের জন্য নয়। মনেপ্রাণে তিনি বিশ্বাস করতেন, ‘বাঘ উদারহৃদয় ভদ্রলোক। সীমাহীন তার সাহস। যে দিন বাঘকে বিলোপ করে দেওয়া হবে, যদি বাঘের সপক্ষে জনমত গড়ে না ওঠে বাঘ লোপ পাবেই, তা হলে ভারতের শ্রেষ্ঠতম প্রাণীর বিলোপে ভারত দরিদ্রতরই হবে।’ একমাত্র যখনই কোন বাঘ সাধারণ, নিরপরাধ মানুষের জন্য বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে, একমাত্র তখনই ঝলসে উঠেছে তাঁর রাইফেল। ১৯৩৮ সালের ৩০ নভেম্বর থাক-এর মানুষখেকো বাঘিনিকে হত্যার পর অফিসিয়ালি শিকার ত্যাগ করলেন। তারপর মেতে উঠলেন বাঘেদের অভয়াশ্রম তৈরির কাজে। বহু ভারতীয়কে নিঃস্বার্থ ভাবে সাহায্য করেছেন শুধু এই বিশ্বাসে, ‘ভারতীয়রা বেইমানি করে না।’ ১৯৪৪ সালে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস থেকে প্রকাশ পায় রেমন্ড শেপার্ডের ছবিতে সাজানো তাঁর লেখা বই ‘Man-Eaters of Kumaon’। প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গেই বেস্ট সেলার। এক বছরের মধ্যে হু-হু করে বিক্রি হয়ে যায় প্রায় লাখ পাঁচেক বই। এই বইয়েরই বাংলা অনুবাদের অদ্ভুত সুন্দর এক মলাট করেছিলেন সত্যজিৎ রায়। ১৯৫৩-এ প্রকাশিত প্রচ্ছদে দু’-মলাট জোড়া কালো আর হলদে বাঘের ছাল যেন ছড়িয়ে রাখা হয়েছে। নীচের দিকে গুলির গর্ত যা পিছনের দিকে ফুঁড়ে চলে গেছে। গুলি ঢোকার সময় ফুটো ছোটো হয়। ফুঁড়ে বেরোবার সময় চ্যাপ্টা ও বড়ো হয়। সেটাও প্রচ্ছদ তৈরির সময় মাথায় রেখেছেন সত্যজিৎ। লেখক হলেও বেস্ট সেলার হতেন জিম। কিন্তু বই লিখলেন মাত্র ছ’টি। ১৯৪৭ সালে ভারত স্বাধীন হল। নভেম্বরে বোন ম্যাগিকে সঙ্গে নিয়ে এস. এস. অ্যারোন্দা জাহাজে মোম্বাসা আর সেখান থেকে নাইরোবি হয়ে নায়েরি শহরে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করলেন জিম। ১৯৫৫ সালে আচমকা না ফেরার দেশে চলে যাওয়ার আগে পর্যন্ত ওখানেই ছিলেন। আসলে জিমের ভয় ছিল স্বাধীন ভারতে হয়তো তাঁর উপরে অত্যাচার নেমে আসবে । জন্মসূত্রে ইংরেজ হওয়ায় তিনি হয়তো সুবিচার পাবেন না। তাঁর প্রিয় ভারতভূমি ছেড়ে যাবার আগে নৈনিতালের বাড়ি বিক্রি করে বহুদিনের বিশ্বস্ত সঙ্গী রাইফেল ও বন্দুকগুলো গভীর জঙ্গলে ‘সমাধিস্থ’ করে এসেছিলেন ভারতের সেরা শিকারী, যিনি মনেপ্রাণে চিরকাল এক ভারতীয় হয়েই থেকে গিয়েছেন। তা না হলে কে এমন করে লিখতে পারে- ‘আমার ভারত, যে ভারতকে আমি জানি, সেই ভারতে যে চল্লিশ কোটি মানুষের বাস, তার মধ্যে শতকরা নব্বই জনই সরল, সৎ, সাহসী, আর কঠোর পরিশ্রমী। ... সত্যিই এরা বড় গরিব। এদের প্রায়শই ‘ভারতের বুভুক্ষু কোটি-কোটি মানুষ’ বলে বর্ণনা করা হয়ে থাকে। এদের মধ্যেই আমি বাস করেছি এবং এদের আমি ভালোবাসি। এই নরনারীদের কথাই এই বইয়ের পাতায় বলার চেষ্টা করেছি। আমার বন্ধু, ভারতের সেই গরিবদের উদ্দেশে আমি আমার এই বইখানি শ্রদ্ধাভরে উৎসর্গ করলাম।’ জন্মের সার্ধশতবর্ষে এই মনীষীকে প্রণাম। জিম করবেট ১৫০। বর্তমান পত্রিকায় গত ২০ জুলাই প্রকাশিত। লেখক - কৌশিক মজুমদার
    0 Commentarios 0 Acciones 8 Views
  • বাংলাদেশি মেরিন ক্যাডেটদের চাকরির সংকট বাস্তবতা ও কারণসমূহ

    ১. প্রতিবছর শত শত তরুণ ক্যাডেট দেশের Marine Academy গুলো থেকে পাস করে জীবনের প্রথম জাহাজে ওঠার স্বপ্ন নিয়ে অপেক্ষায় থাকে। কিন্তু বাস্তবতা হলো, প্রথম বছরেই তাদের মধ্যে ৫০ শতাংশেরও কম চাকরি পায়। বাকিরা বছরের পর বছর Sea Time-এর জন্য অপেক্ষা করে। অনেকেই হতাশ হয়ে ক্যারিয়ার ছেড়ে দেয়। এই তরুণরা কিন্তু একটি বিশেষায়িত ট্রেনিং সম্পন্ন করে শুধুমাত্র মেরিটাইম ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করার উপযোগী হয়েছে। অন্য কোনো সেক্টরে তাদের প্রতিষ্ঠিত হওয়া প্রায় অসম্ভব। আরও দুর্ভাগ্যের বিষয় হলো, চার বছরের অনার্স কোর্সে মাত্র দুই বছর একাডেমিক ট্রেনিং করিয়ে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। বাকি এক বছর জাহাজে ইন্টার্নশিপ (Cadetship) এবং শেষের এক বছর একাডেমিতে ফিরে দুইটি সেমিস্টার কমপ্লিট করে তবেই তারা অনার্স ডিগ্রি সম্পন্ন করতে পারে। ফলে এই পড়াশোনা সম্পূর্ণ না হওয়ার কারণে তারা বিসিএস কিংবা মাস্টার্সে পর্যন্ত আবেদন করতে পারে না। এটি নিঃসন্দেহে তাদের জন্য এক করুণ বাস্তবতা।
    ২. সরকারি ও বেসরকারি Marine Academy গুলোর Intake সংখ্যা প্রতিবছরই বাড়ছে, অথচ আন্তর্জাতিক চাকরির বাজারে সেই পরিমাণ চাহিদা নেই। Supply & Demand এর ভারসাম্য না থাকায় পরিস্থিতি দিন দিন জটিল হচ্ছে। অথচ এই বিষয়টি নিয়ন্ত্রণে দেশের একমাত্র কর্তৃপক্ষ DG Shipping কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারছে না।
    ৩. বাংলাদেশের পতাকাবাহী (BD Flag) জাহাজের সংখ্যা যেমন কম, তার চেয়েও বড় সমস্যা হলো, এগুলোর অনেক মালিকই নিয়ম অনুযায়ী ক্যাডেট নিতে চান না। আবার ক্যাডেট নিয়োগ দিলে তাঁদের জন্য কোনো সরকারি প্রণোদনাও নেই, ফলে মালিকরা একে বোঝা হিসেবে দেখেন।
    ৪. অনেক বিদেশি কোম্পানির জাহাজ বাংলাদেশে আসে, কিন্তু আমাদের ক্যাডেটরা সেখানে সুযোগ পায় না। যদি সরকার প্রণোদনা ঘোষণা করে, তাহলে বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশি শিপিং কোম্পানির ম্যানেজার, ক্যাপ্টেন ও চিফ ইঞ্জিনিয়ারদের মাধ্যমে এসব কোম্পানিকে রাজি করানো সম্ভব।
    ৫. চাকরির আশায় অনেক ক্যাডেট ম্যানিং এজেন্সিগুলোর শরণাপন্ন হচ্ছে। কিন্তু যথাযথ মনিটরিং-এর অভাবে অনেকেই প্রতারণার শিকার হচ্ছে। সার্ভিস চার্জের নামে লাখ লাখ টাকা আদায় করা হচ্ছে, অথচ চাকরির কোনো নিশ্চয়তা নেই। একাডেমি কিংবা DG Shipping এর এই বিষয়ে কোনো নিয়ন্ত্রণ বা দায়বদ্ধতা নেই। ফলে ক্যাডেটরা অসহায়। যারা সামর্থ্যবান তারা বিশাল অঙ্কের টাকা খরচ করে জাহাজে ওঠার চেষ্টা করছে।
    ৬. Marine Academy গুলোর কারিকুলাম অনেকটাই পুরনো এবং নিয়মিত আপডেট হচ্ছে না। Maritime English, Soft Skills, Interview Preparation ও বাস্তবভিত্তিক ট্রেনিংয়ের যথাযথ ব্যবস্থা নেই। যার কারণে তারা আন্তর্জাতিক কোম্পানিগুলোর ইন্টারভিউতে ভালো করতে পারছে না। যেমন, এই বছর Oldendorff, OSM Thome, Hafnia এর মত কোম্পানিগুলোর ইন্টারভিউতে সাকসেস রেট ছিল ৫০ শতাংশেরও কম। কোম্পানিগুলো আশানুরূপ জ্ঞান ও দক্ষতা না পেয়ে হতাশ হয়েছে।
    ৭. সিঙ্গাপুর, ইউএই, ওমান, কাতারসহ গুরুত্বপূর্ণ Sign-on/Sign-off পোর্টগুলোতে Seafarer Visa পাওয়া দিন দিন কঠিন হয়ে পড়ছে। এই ভিসা জটিলতা চাকরি পাওয়ার পথে বড় বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে, যার দ্রুত সমাধানে সরকারের পক্ষ থেকে কূটনৈতিক পদক্ষেপ প্রয়োজন।
    ৮. দেশে এমন অনেক সরকারি-বেসরকারি Maritime Academy গড়ে উঠেছে যাদের মান নিয়ন্ত্রণ নেই। অনুমোদন পেলেই তারা Intake শুরু করে দেয়, অথচ নেই যথাযথ ট্রেনিং ফ্যাসিলিটি, ল্যাব, লাইব্রেরি বা অভিজ্ঞ শিক্ষক। এর ফলে প্রশিক্ষণের মান পড়ে যাচ্ছে, এবং দুর্বল প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ক্যাডেটদের কারণে চাকরির বাজারেও নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।
    ৯. Institute of Marine Technology (IMT) মূলত Inland Shipping ও Shipbuilding সেক্টরের জন্য শিক্ষার্থী তৈরি করে। কিন্তু বর্তমানে এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরাও রাজনৈতিক চাপ সৃষ্টি করে CDC সংগ্রহ এবং সমুদ্রগামী জাহাজে চাকরি পাওয়ার চেষ্টা করছে। এতে মূল Marine Cadet দের চাকরি হরণ হওয়ার পাশাপাশি চাকরির বাজারে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হচ্ছে। তার চেয়েও বড় আশঙ্কার বিষয় হলো, STCW রিকোয়ারমেন্ট অনুযায়ী আন্তর্জাতিক ট্রেনিং ব্যতীত কাউকে Sea-going Vessel-এ জয়েন করালে IMO কর্তৃক বাংলাদেশ ব্ল্যাকলিস্টেড হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হতে পারে। এর ফলে ভালো শিপিং কোম্পানিগুলো বাংলাদেশি Seafarer নেওয়া বন্ধ করে দিতে পারে।


    সমস্যা সমাধানে ৯টি বাস্তবসম্মত সুপারিশঃ
    ১. দেশের Marine Academy গুলোর Intake সংখ্যা চাকরির বাজার বিশ্লেষণ করে প্রতি বছর DG Shipping কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত হতে হবে। প্রতিবছর নভেম্বর-ডিসেম্বরে সব একাডেমির সঙ্গে বৈঠক করে unemployed ক্যাডেটদের তালিকা করে পরবর্তী বছরের Intake নির্ধারণ করতে হবে। এই ক্ষেত্রে ডিজি শিপিং প্রত্যেকটা একাডেমি কে তাদের জন্য ম্যাক্সিমাম ক্যাডেট intake নির্দিষ্ট করে দিতে পারে। সরকারি বেসরকারি কোন একাডেমীর উচিত হবে না সেই ম্যাক্সিমাম ক্যাডেট Intake এর বাইরে ক্যাডেট নেওয়া করা!
    ২. BD Flag জাহাজে ৪ জন করে ক্যাডেট রাখা বাধ্যতামূলক করতে হবে এবং নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানকে সরকার পোর্ট ডিউস ছাড়, অগ্রাধিকার ভিত্তিক বার্থিং ইত্যাদি প্রণোদনা দিতে পারে।
    ৩. বাংলাদেশে আসা বিদেশি জাহাজগুলোতে আমাদের ক্যাডেট নিয়োগে উৎসাহ দিতে Incentive Program চালু করতে হবে। এ ক্ষেত্রে বিদেশে কর্মরত আমাদের সিনিয়র অফিসারদেরও সম্পৃক্ত করতে হবে।
    ৪. Marine Academy-এর মেধা তালিকা অনুযায়ী স্বচ্ছ একটি Central Cadet Placement Portal গঠন করে Sea Time-এর সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে। একাডেমিগুলো কোম্পানিগুলোর কাছে আবেদনপত্র পাঠাতে পারে বা Manning Agent দের তালিকা দিতে পারে। ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, একাডেমিগুলির কমান্ড্যান্টগণ তাদের তত্ত্বাবধানে একটা টিম গঠন করতে পারে যারা বিভিন্ন কোম্পানির সাথে যোগাযোগ করে ক্যাডেটদের জন্য চাকরির চেষ্টা করতে পারে। এটা বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই কাজে দেয়। একাডেমী গুলি বিভিন্ন কোম্পানিতে কে তাদের একাডেমি ভিজিট এবং ক্যাডেট নেওয়ার জন্য MoU সাইন করার ব্যবস্থা করতে পারে। অনেক বড় বড় কোম্পানি বিভিন্ন দেশের একাডেমি গুলির সাথে Collanoration এর চুক্তি করে।
    ৫. MLC 2006 অনুযায়ী কোনো ম্যানিং এজেন্ট ক্যাডেট বা সিফেয়ারারদের কাছ থেকে সার্ভিস চার্জ নিতে পারবে না। সব ম্যানিং এজেন্সিকে সরকারি নিবন্ধনের আওতায় আনতে হবে। টাকা নেওয়ার অভিযোগ পেলে দ্রুত তদন্ত করে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।
    ৬. Maritime Education কারিকুলাম STCW কনভেনশন অনুসারে নিয়মিত আপডেট করতে হবে। Maritime English, Interview Skills, CBT, এবং সিমুলেটর ট্রেনিং বাধ্যতামূলক করতে হবে।
    ৭. Seafarer Visa সমস্যার সমাধানে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে সক্রিয় কূটনৈতিক উদ্যোগ নিতে হবে। G2G, G2B এবং B2B আলোচনার মাধ্যমে Seafarer Visa সহজীকরণে কাজ করতে হবে। বিশেষ করে OK to Board ভিসাসহ সিঙ্গাপুর, দুবাই, সৌদি আরব, USA এবং শেঙ্গেন ভিসার বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।
    ৮. নতুন Maritime Academy অনুমোদনের আগে অভিজ্ঞ প্যানেলের মাধ্যমে Infrastructure, কোর্স, শিক্ষক, চাকরির বাজার ও চাহিদা যাচাই করে অনুমোদন দিতে হবে।
    ৯. IMT এবং Shipbuilding & Inland Shipping সংক্রান্ত ডিপ্লোমা ইনস্টিটিউটের ছাত্ররা Sea-going Vessel-এ চাকরির চেষ্টা করলে তা প্রাতিষ্ঠানিক ও আইনিভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। তাদের জন্য আলাদা চাকরির ক্ষেত্র নির্ধারণ করতে হবে। তাদেরকে সার্টিফাইড ওয়েল্ডিং এন্ড শিপ বিল্ডিং প্রফেশনাল হিসেবে উত্তম ভাবে trained up করে সিঙ্গাপুর, সাউথ কোরিয়া এবং জাপান সহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে চাকরির ব্যবস্থা করা যেতে পারে। এছাড়াও তাদেরকে জাহাজের দক্ষ ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এর ডিপ্লোমা প্রোগ্রাম পড়িয়ে দক্ষ ETO হিসাবে Trained up করে জাহাজে চাকরির জন্য CDC প্রদান করা যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে তাদের STCW 2010 রিকোয়ারমেন্ট অনুসারে ট্রেনিং নিশ্চিত করতে হবে। এরপরও যদি তারা ইন্টারন্যাশনাল শিপিং এ ডেক এবং ইঞ্জিন ক্যাডেট হিসাবে চাকরির জন্য CDC পাওয়ার দাবি করে তবে তাদের কে ডিজি শিপিং এর মার্চেন্ডশিপিং অর্ডিন্যান্স ১৯৮৩ এবং STCW 2010 ম্যানিলা আমেনমেন্ট অনুসারে Pre-sea training সম্পন্ন করে ডিপার্টমেন্ট অফ শিপিং থেকে তাদের ইনস্টিটিউটের মাধ্যমে CDC এর জন্য আবেদন করতে হবে। শিপিং মিনিস্টারের আওতাধীন ডিপার্টমেন্ট অফ শিপিং ছাড়া অন্য কোন অথরিটির Seaman Book বা CDC ইস্যু করার এখতিয়ার নাই।
    পরিশেষে এটাই বলতে চাই, এখনই যদি কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ না করা হয়, তাহলে আগামী কয়েক বছরে দেশের মেরিটাইম ক্যারিয়ার এক চরম হতাশার মধ্যে পড়বে। পরিকল্পিত নিয়ন্ত্রণ, স্বচ্ছতা এবং আন্তঃমন্ত্রণালয় সমন্বয় ছাড়া এই সংকট থেকে উত্তরণ সম্ভব নয়। তাই এখনই সময় দায়িত্বশীল সিদ্ধান্ত নেওয়ার।
    বাংলাদেশি মেরিন ক্যাডেটদের চাকরির সংকট বাস্তবতা ও কারণসমূহ ১. প্রতিবছর শত শত তরুণ ক্যাডেট দেশের Marine Academy গুলো থেকে পাস করে জীবনের প্রথম জাহাজে ওঠার স্বপ্ন নিয়ে অপেক্ষায় থাকে। কিন্তু বাস্তবতা হলো, প্রথম বছরেই তাদের মধ্যে ৫০ শতাংশেরও কম চাকরি পায়। বাকিরা বছরের পর বছর Sea Time-এর জন্য অপেক্ষা করে। অনেকেই হতাশ হয়ে ক্যারিয়ার ছেড়ে দেয়। এই তরুণরা কিন্তু একটি বিশেষায়িত ট্রেনিং সম্পন্ন করে শুধুমাত্র মেরিটাইম ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করার উপযোগী হয়েছে। অন্য কোনো সেক্টরে তাদের প্রতিষ্ঠিত হওয়া প্রায় অসম্ভব। আরও দুর্ভাগ্যের বিষয় হলো, চার বছরের অনার্স কোর্সে মাত্র দুই বছর একাডেমিক ট্রেনিং করিয়ে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। বাকি এক বছর জাহাজে ইন্টার্নশিপ (Cadetship) এবং শেষের এক বছর একাডেমিতে ফিরে দুইটি সেমিস্টার কমপ্লিট করে তবেই তারা অনার্স ডিগ্রি সম্পন্ন করতে পারে। ফলে এই পড়াশোনা সম্পূর্ণ না হওয়ার কারণে তারা বিসিএস কিংবা মাস্টার্সে পর্যন্ত আবেদন করতে পারে না। এটি নিঃসন্দেহে তাদের জন্য এক করুণ বাস্তবতা। ২. সরকারি ও বেসরকারি Marine Academy গুলোর Intake সংখ্যা প্রতিবছরই বাড়ছে, অথচ আন্তর্জাতিক চাকরির বাজারে সেই পরিমাণ চাহিদা নেই। Supply & Demand এর ভারসাম্য না থাকায় পরিস্থিতি দিন দিন জটিল হচ্ছে। অথচ এই বিষয়টি নিয়ন্ত্রণে দেশের একমাত্র কর্তৃপক্ষ DG Shipping কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারছে না। ৩. বাংলাদেশের পতাকাবাহী (BD Flag) জাহাজের সংখ্যা যেমন কম, তার চেয়েও বড় সমস্যা হলো, এগুলোর অনেক মালিকই নিয়ম অনুযায়ী ক্যাডেট নিতে চান না। আবার ক্যাডেট নিয়োগ দিলে তাঁদের জন্য কোনো সরকারি প্রণোদনাও নেই, ফলে মালিকরা একে বোঝা হিসেবে দেখেন। ৪. অনেক বিদেশি কোম্পানির জাহাজ বাংলাদেশে আসে, কিন্তু আমাদের ক্যাডেটরা সেখানে সুযোগ পায় না। যদি সরকার প্রণোদনা ঘোষণা করে, তাহলে বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশি শিপিং কোম্পানির ম্যানেজার, ক্যাপ্টেন ও চিফ ইঞ্জিনিয়ারদের মাধ্যমে এসব কোম্পানিকে রাজি করানো সম্ভব। ৫. চাকরির আশায় অনেক ক্যাডেট ম্যানিং এজেন্সিগুলোর শরণাপন্ন হচ্ছে। কিন্তু যথাযথ মনিটরিং-এর অভাবে অনেকেই প্রতারণার শিকার হচ্ছে। সার্ভিস চার্জের নামে লাখ লাখ টাকা আদায় করা হচ্ছে, অথচ চাকরির কোনো নিশ্চয়তা নেই। একাডেমি কিংবা DG Shipping এর এই বিষয়ে কোনো নিয়ন্ত্রণ বা দায়বদ্ধতা নেই। ফলে ক্যাডেটরা অসহায়। যারা সামর্থ্যবান তারা বিশাল অঙ্কের টাকা খরচ করে জাহাজে ওঠার চেষ্টা করছে। ৬. Marine Academy গুলোর কারিকুলাম অনেকটাই পুরনো এবং নিয়মিত আপডেট হচ্ছে না। Maritime English, Soft Skills, Interview Preparation ও বাস্তবভিত্তিক ট্রেনিংয়ের যথাযথ ব্যবস্থা নেই। যার কারণে তারা আন্তর্জাতিক কোম্পানিগুলোর ইন্টারভিউতে ভালো করতে পারছে না। যেমন, এই বছর Oldendorff, OSM Thome, Hafnia এর মত কোম্পানিগুলোর ইন্টারভিউতে সাকসেস রেট ছিল ৫০ শতাংশেরও কম। কোম্পানিগুলো আশানুরূপ জ্ঞান ও দক্ষতা না পেয়ে হতাশ হয়েছে। ৭. সিঙ্গাপুর, ইউএই, ওমান, কাতারসহ গুরুত্বপূর্ণ Sign-on/Sign-off পোর্টগুলোতে Seafarer Visa পাওয়া দিন দিন কঠিন হয়ে পড়ছে। এই ভিসা জটিলতা চাকরি পাওয়ার পথে বড় বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে, যার দ্রুত সমাধানে সরকারের পক্ষ থেকে কূটনৈতিক পদক্ষেপ প্রয়োজন। ৮. দেশে এমন অনেক সরকারি-বেসরকারি Maritime Academy গড়ে উঠেছে যাদের মান নিয়ন্ত্রণ নেই। অনুমোদন পেলেই তারা Intake শুরু করে দেয়, অথচ নেই যথাযথ ট্রেনিং ফ্যাসিলিটি, ল্যাব, লাইব্রেরি বা অভিজ্ঞ শিক্ষক। এর ফলে প্রশিক্ষণের মান পড়ে যাচ্ছে, এবং দুর্বল প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ক্যাডেটদের কারণে চাকরির বাজারেও নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। ৯. Institute of Marine Technology (IMT) মূলত Inland Shipping ও Shipbuilding সেক্টরের জন্য শিক্ষার্থী তৈরি করে। কিন্তু বর্তমানে এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরাও রাজনৈতিক চাপ সৃষ্টি করে CDC সংগ্রহ এবং সমুদ্রগামী জাহাজে চাকরি পাওয়ার চেষ্টা করছে। এতে মূল Marine Cadet দের চাকরি হরণ হওয়ার পাশাপাশি চাকরির বাজারে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হচ্ছে। তার চেয়েও বড় আশঙ্কার বিষয় হলো, STCW রিকোয়ারমেন্ট অনুযায়ী আন্তর্জাতিক ট্রেনিং ব্যতীত কাউকে Sea-going Vessel-এ জয়েন করালে IMO কর্তৃক বাংলাদেশ ব্ল্যাকলিস্টেড হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হতে পারে। এর ফলে ভালো শিপিং কোম্পানিগুলো বাংলাদেশি Seafarer নেওয়া বন্ধ করে দিতে পারে। সমস্যা সমাধানে ৯টি বাস্তবসম্মত সুপারিশঃ ১. দেশের Marine Academy গুলোর Intake সংখ্যা চাকরির বাজার বিশ্লেষণ করে প্রতি বছর DG Shipping কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত হতে হবে। প্রতিবছর নভেম্বর-ডিসেম্বরে সব একাডেমির সঙ্গে বৈঠক করে unemployed ক্যাডেটদের তালিকা করে পরবর্তী বছরের Intake নির্ধারণ করতে হবে। এই ক্ষেত্রে ডিজি শিপিং প্রত্যেকটা একাডেমি কে তাদের জন্য ম্যাক্সিমাম ক্যাডেট intake নির্দিষ্ট করে দিতে পারে। সরকারি বেসরকারি কোন একাডেমীর উচিত হবে না সেই ম্যাক্সিমাম ক্যাডেট Intake এর বাইরে ক্যাডেট নেওয়া করা! ২. BD Flag জাহাজে ৪ জন করে ক্যাডেট রাখা বাধ্যতামূলক করতে হবে এবং নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানকে সরকার পোর্ট ডিউস ছাড়, অগ্রাধিকার ভিত্তিক বার্থিং ইত্যাদি প্রণোদনা দিতে পারে। ৩. বাংলাদেশে আসা বিদেশি জাহাজগুলোতে আমাদের ক্যাডেট নিয়োগে উৎসাহ দিতে Incentive Program চালু করতে হবে। এ ক্ষেত্রে বিদেশে কর্মরত আমাদের সিনিয়র অফিসারদেরও সম্পৃক্ত করতে হবে। ৪. Marine Academy-এর মেধা তালিকা অনুযায়ী স্বচ্ছ একটি Central Cadet Placement Portal গঠন করে Sea Time-এর সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে। একাডেমিগুলো কোম্পানিগুলোর কাছে আবেদনপত্র পাঠাতে পারে বা Manning Agent দের তালিকা দিতে পারে। ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, একাডেমিগুলির কমান্ড্যান্টগণ তাদের তত্ত্বাবধানে একটা টিম গঠন করতে পারে যারা বিভিন্ন কোম্পানির সাথে যোগাযোগ করে ক্যাডেটদের জন্য চাকরির চেষ্টা করতে পারে। এটা বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই কাজে দেয়। একাডেমী গুলি বিভিন্ন কোম্পানিতে কে তাদের একাডেমি ভিজিট এবং ক্যাডেট নেওয়ার জন্য MoU সাইন করার ব্যবস্থা করতে পারে। অনেক বড় বড় কোম্পানি বিভিন্ন দেশের একাডেমি গুলির সাথে Collanoration এর চুক্তি করে। ৫. MLC 2006 অনুযায়ী কোনো ম্যানিং এজেন্ট ক্যাডেট বা সিফেয়ারারদের কাছ থেকে সার্ভিস চার্জ নিতে পারবে না। সব ম্যানিং এজেন্সিকে সরকারি নিবন্ধনের আওতায় আনতে হবে। টাকা নেওয়ার অভিযোগ পেলে দ্রুত তদন্ত করে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। ৬. Maritime Education কারিকুলাম STCW কনভেনশন অনুসারে নিয়মিত আপডেট করতে হবে। Maritime English, Interview Skills, CBT, এবং সিমুলেটর ট্রেনিং বাধ্যতামূলক করতে হবে। ৭. Seafarer Visa সমস্যার সমাধানে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে সক্রিয় কূটনৈতিক উদ্যোগ নিতে হবে। G2G, G2B এবং B2B আলোচনার মাধ্যমে Seafarer Visa সহজীকরণে কাজ করতে হবে। বিশেষ করে OK to Board ভিসাসহ সিঙ্গাপুর, দুবাই, সৌদি আরব, USA এবং শেঙ্গেন ভিসার বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। ৮. নতুন Maritime Academy অনুমোদনের আগে অভিজ্ঞ প্যানেলের মাধ্যমে Infrastructure, কোর্স, শিক্ষক, চাকরির বাজার ও চাহিদা যাচাই করে অনুমোদন দিতে হবে। ৯. IMT এবং Shipbuilding & Inland Shipping সংক্রান্ত ডিপ্লোমা ইনস্টিটিউটের ছাত্ররা Sea-going Vessel-এ চাকরির চেষ্টা করলে তা প্রাতিষ্ঠানিক ও আইনিভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। তাদের জন্য আলাদা চাকরির ক্ষেত্র নির্ধারণ করতে হবে। তাদেরকে সার্টিফাইড ওয়েল্ডিং এন্ড শিপ বিল্ডিং প্রফেশনাল হিসেবে উত্তম ভাবে trained up করে সিঙ্গাপুর, সাউথ কোরিয়া এবং জাপান সহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে চাকরির ব্যবস্থা করা যেতে পারে। এছাড়াও তাদেরকে জাহাজের দক্ষ ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এর ডিপ্লোমা প্রোগ্রাম পড়িয়ে দক্ষ ETO হিসাবে Trained up করে জাহাজে চাকরির জন্য CDC প্রদান করা যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে তাদের STCW 2010 রিকোয়ারমেন্ট অনুসারে ট্রেনিং নিশ্চিত করতে হবে। এরপরও যদি তারা ইন্টারন্যাশনাল শিপিং এ ডেক এবং ইঞ্জিন ক্যাডেট হিসাবে চাকরির জন্য CDC পাওয়ার দাবি করে তবে তাদের কে ডিজি শিপিং এর মার্চেন্ডশিপিং অর্ডিন্যান্স ১৯৮৩ এবং STCW 2010 ম্যানিলা আমেনমেন্ট অনুসারে Pre-sea training সম্পন্ন করে ডিপার্টমেন্ট অফ শিপিং থেকে তাদের ইনস্টিটিউটের মাধ্যমে CDC এর জন্য আবেদন করতে হবে। শিপিং মিনিস্টারের আওতাধীন ডিপার্টমেন্ট অফ শিপিং ছাড়া অন্য কোন অথরিটির Seaman Book বা CDC ইস্যু করার এখতিয়ার নাই। পরিশেষে এটাই বলতে চাই, এখনই যদি কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ না করা হয়, তাহলে আগামী কয়েক বছরে দেশের মেরিটাইম ক্যারিয়ার এক চরম হতাশার মধ্যে পড়বে। পরিকল্পিত নিয়ন্ত্রণ, স্বচ্ছতা এবং আন্তঃমন্ত্রণালয় সমন্বয় ছাড়া এই সংকট থেকে উত্তরণ সম্ভব নয়। তাই এখনই সময় দায়িত্বশীল সিদ্ধান্ত নেওয়ার।
    0 Commentarios 0 Acciones 19 Views
  • নিজেকে ভুলতে পারি, তোকে যাবেনা ভোলা
    এই হলো আরেক জিনিস। মেডিকেলে পড়তে এসেছেন যখন, ইহাকে ভুলিয়া থাকা যাইবে না। সে প্যাথলজি হোক, ফার্মাকোলজি হোক কিংবা মেডিসিনই হোক।
    রোগী ব্যথা নিয়ে এলেই তাকে যে মনমতো একটা পেইনকিলার ধরায়ে দেয়া যাবে না, সেটা বোঝার জন্যেও এই চার্টের গুরুত্ব সীমাহীন।
    Lets start
    এটাই কোয়াকের সাথে এমবিবিএসের পার্থক্য গড়ে দেবে!
    তো, শুরু করা যাক °°° Cyclooxygenase°°° এর সহজ পাঠ।
    পোস্টের শুরুতেই দেখে নেই Robbin's এর সেই বিখ্যাত চার্টটা...
    √ Cyclooxygenase (COX) কী?
    ইহা হল একটা এনজাইম যা arachidonic acid থেকে prostanoids ( prostaglandin, prostacyclin, thromboxane) তৈরি করে।
    সত্যিকার অর্থে COX সরাসরি prostanoids তৈরি করেনা। COX শুধু arachidonic acid(AA) থেকে prostaglandin H2 তৈরি করে। এখন এই PGH2 থেকে বিভিন্ন এনজাইম দিয়ে বিভিন্ন PG তৈরি হয়।
    যেমন, platelet এ thromboxane synthase থাকে, যা দিয়ে PGH2 থেকে TXA2 (thromboxane A2) তৈরি হয়।
    বা, microvascular endothelium এ PGI2 synthase থাকে, যা দিয়ে PGH2 থেকে PGI2(prostacyclin) তৈরি হয়।
    √ COX কয় ধরনের?
    COX-1 & COX-2
    COX-1 এমনিতেই দেহের অধিকাংশ কোষে থাকে। এরা হাউজ-কিপিং রোল প্লে করে। যেমন, GIT তে cryoprotective বা, কিডনিতে fluid, electrolyte balance মেইনটেইন করে বা, platelet এর aggregation বন্ধ রাখে।
    অপরদিকে, COX-2 এনজাইম ইনফ্ল্যামেশন বা ক্যান্সারের স্টিমুলেশন পেলেই তবে তৈরি হয়।(সামান্য পরিমাণে কিছু কোষে নরম্যালি থাকে। যেমন, কিডনি।)
    এই দুই প্রকার এনজাইমকেই inhibit করে non-selective cox inhibitors যেমন, Diclofenac, Ketorolac, Indomethacin, Ibuprofen...
    আর শুধু COX-2 কে inhibit করে cox-2 selective inhibitors বা coxib. যেমন, Celecoxib, Etoricoxib...
    √ COX-2 inhibitors(coxib) ব্যবহারের সুবিধা, অসুবিধা কী?
    উপরের আলোচনা থেকেই বোঝা যাচ্ছে, COX-2 এমন সব prostaglandins তৈরি করে যেগুলো সাধারণত inflammation এ কাজ করে। তাই COX-2 কে ইনহিবিট করলে anti-inflammatory action পাওয়া যায়, কিন্ত COX-1 এর হাউজ-কিপিং ফাংশন এর উপর কোন প্রভাব পড়েনা।
    তাই, সাধারণ NSAIDs এর মত gastric ulcer এর সম্ভাবনা coxib এর ক্ষেত্রে কম।
    ঠিক এই কারণেই একটা সমস্যাও হয়,,, COXIB ব্যবহারে cardiovascular/cerebrovascular disease যেমন thrombosis, hypertension, stroke হতে পারে।
    কারণ, COXIB, ইনহিবিট করে PGI2 synthesis কে। আর unaffected থাকে TXA2 synthesis.
    আর, ছবিতে দেখুন, PGI2 এর কাজ হল, vasodilation করা আর inhibit platet aggregation করা। তাহলে, এটাকে ইনহিবিট করলে vasoconstriction আর platelet aggregation হবে।
    আবার, TXA2 কে ইনহিবিট করেনা বলে, TXA2 তার কাজ vasoconstriction আর platelet aggregation করে
    নিজেকে ভুলতে পারি, তোকে যাবেনা ভোলা এই হলো আরেক জিনিস। মেডিকেলে পড়তে এসেছেন যখন, ইহাকে ভুলিয়া থাকা যাইবে না। সে প্যাথলজি হোক, ফার্মাকোলজি হোক কিংবা মেডিসিনই হোক। রোগী ব্যথা নিয়ে এলেই তাকে যে মনমতো একটা পেইনকিলার ধরায়ে দেয়া যাবে না, সেটা বোঝার জন্যেও এই চার্টের গুরুত্ব সীমাহীন। Lets start এটাই কোয়াকের সাথে এমবিবিএসের পার্থক্য গড়ে দেবে! তো, শুরু করা যাক °°° Cyclooxygenase°°° এর সহজ পাঠ। পোস্টের শুরুতেই দেখে নেই Robbin's এর সেই বিখ্যাত চার্টটা... √ Cyclooxygenase (COX) কী? ইহা হল একটা এনজাইম যা arachidonic acid থেকে prostanoids ( prostaglandin, prostacyclin, thromboxane) তৈরি করে। সত্যিকার অর্থে COX সরাসরি prostanoids তৈরি করেনা। COX শুধু arachidonic acid(AA) থেকে prostaglandin H2 তৈরি করে। এখন এই PGH2 থেকে বিভিন্ন এনজাইম দিয়ে বিভিন্ন PG তৈরি হয়। যেমন, platelet এ thromboxane synthase থাকে, যা দিয়ে PGH2 থেকে TXA2 (thromboxane A2) তৈরি হয়। বা, microvascular endothelium এ PGI2 synthase থাকে, যা দিয়ে PGH2 থেকে PGI2(prostacyclin) তৈরি হয়। √ COX কয় ধরনের? COX-1 & COX-2 COX-1 এমনিতেই দেহের অধিকাংশ কোষে থাকে। এরা হাউজ-কিপিং রোল প্লে করে। যেমন, GIT তে cryoprotective বা, কিডনিতে fluid, electrolyte balance মেইনটেইন করে বা, platelet এর aggregation বন্ধ রাখে। অপরদিকে, COX-2 এনজাইম ইনফ্ল্যামেশন বা ক্যান্সারের স্টিমুলেশন পেলেই তবে তৈরি হয়।(সামান্য পরিমাণে কিছু কোষে নরম্যালি থাকে। যেমন, কিডনি।) এই দুই প্রকার এনজাইমকেই inhibit করে non-selective cox inhibitors যেমন, Diclofenac, Ketorolac, Indomethacin, Ibuprofen... আর শুধু COX-2 কে inhibit করে cox-2 selective inhibitors বা coxib. যেমন, Celecoxib, Etoricoxib... √ COX-2 inhibitors(coxib) ব্যবহারের সুবিধা, অসুবিধা কী? উপরের আলোচনা থেকেই বোঝা যাচ্ছে, COX-2 এমন সব prostaglandins তৈরি করে যেগুলো সাধারণত inflammation এ কাজ করে। তাই COX-2 কে ইনহিবিট করলে anti-inflammatory action পাওয়া যায়, কিন্ত COX-1 এর হাউজ-কিপিং ফাংশন এর উপর কোন প্রভাব পড়েনা। তাই, সাধারণ NSAIDs এর মত gastric ulcer এর সম্ভাবনা coxib এর ক্ষেত্রে কম। ঠিক এই কারণেই একটা সমস্যাও হয়,,, COXIB ব্যবহারে cardiovascular/cerebrovascular disease যেমন thrombosis, hypertension, stroke হতে পারে। কারণ, COXIB, ইনহিবিট করে PGI2 synthesis কে। আর unaffected থাকে TXA2 synthesis. আর, ছবিতে দেখুন, PGI2 এর কাজ হল, vasodilation করা আর inhibit platet aggregation করা। তাহলে, এটাকে ইনহিবিট করলে vasoconstriction আর platelet aggregation হবে। আবার, TXA2 কে ইনহিবিট করেনা বলে, TXA2 তার কাজ vasoconstriction আর platelet aggregation করে
    0 Commentarios 0 Acciones 24 Views
  • 𝙇𝙪𝙭𝙪𝙧𝙮 𝙏𝙧𝙖𝙥-এ ঢুইকো না জীবনে শান্তি চাইলে!

    তুমি এখনো স্টুডেন্ট, সবে ফ্রেশ গ্র্যাজুয়েট বা ক্যারিয়ারে ঢুকছো এই মুহূর্তে যদি চিন্তা করো "তিন ক্যামেরার ফোন ছাড়া চলবেনা", ব্র্যান্ডেড হেডফোন, এক্সপেন্সিভ রেস্টুরেন্ট, চকচকে শার্ট-প্যান্ট আর ক্যাফেতে ভাইরাল চা খাওয়া ছাড়া লাইফে কিছুই নাই..

    তাহলে ভাই, খবর আছে।

    তুমি LUXURY TRAP–এ ঢুকতেছ!

    বাংলাদেশে ৭৫% তরুণ ফিনান্সিয়াল স্ট্রেসে পড়ে তাদের ‘life-start তখনো properly শুরু হওয়ার আগেই’।

    (সূত্রঃ বাংলাদেশ ব্যাংক, SME Youth Survey 2023)

    মানে, ইনকাম ১০ হাজার, খরচ ১৫ হাজার।

    এইটা সেই ফাঁদ, যেটা বাহির থেকে দেখে মনে হয় Luxury, ভেতরে ঢুকে বুঝবা Necessity নাই!

    এইটা ছাড়া জীবন খুব ভালোভাবে সুন্দরভাবে চলে যাবে।

    তোমার আশপাশে অনেকেই এই ফাঁদে পড়েছে।

    দেখবা

    🛍 স্টুডেন্ট হয়েও EMI দিয়ে ১ লাখ টাকার মোবাইল ইউজার।

    ব্যাকআপ ইনকাম নাই, তবুও কিস্তিতে বাইক কিনসে।

    অনলাইন ইনফ্লুয়েন্সার হবো ভেবে DSLR নিয়ে খবর নাই।

    প্রতি সপ্তাহে টুংটাং হোটেলের রংচং হাইফাই ব্রেকফাস্ট বেদরকারে।

    এইগুলা আসলে লোহার হাতকড়া! এটা পরার পর তুমি আর ইনভেস্ট করতে পারবা না নিজের স্কিলে, নতুন কোর্সে, নিজের গ্রোথে!

    তুমি ইনভেস্ট করবা না সে প্রতিষ্ঠানে যা তোমার ইনকাম বাড়াবে, বরং তুমি খরচ করবা সেই জায়গায় যেখানে তোমাকে বাহির থেকে দেখতে "স্মার্ট" লাগে, কিন্তু ভেতরটা ফাঁকা রাখে।

    এটাই হলো Real Luxury Trap।

    তুমি ভাবতেছো তুমি এই বিলাসিতার মালিক।

    আসলে এসব লাক্সারি গুলাই তোমার মালিক হয়ে যাচ্ছে।

    একটা ছোট উদাহরণ দেই.

    তুমি যদি এখন প্রোগ্রামিং বা ডিজাইন শিখতে ৫-১০ হাজার টাকার একটা কোর্সে সময় দাও, সেটা দিতে পারবে না, কারণ তোমার টাকা নাই। কিন্তু এই মাসেই তুমি রেস্টুরেন্টে একবেলা খেয়ে ২০০০ বিল উড়াইসো।

    তুমি যদি এখন একটু কষ্ট করো, সাময়িক simple life চালাও, দুই বছর পর সেটাই তোমাকে দিয়েছে Skill যদি শিখো। পাবা Stability + Savings।

    আর সেখান থেকেই উঠে আসবে তোমার Real Freedom আর Real Luxury

    আমি বলতেসি না, বিলাসিতা করোনা।

    কিন্তু আগে বিল্ড হও।

    পরে বিলাসিতা করতেও মজা লাগবে, সমস্যাও হবেনা তেমন।
    𝙇𝙪𝙭𝙪𝙧𝙮 𝙏𝙧𝙖𝙥-এ ঢুইকো না জীবনে শান্তি চাইলে! তুমি এখনো স্টুডেন্ট, সবে ফ্রেশ গ্র্যাজুয়েট বা ক্যারিয়ারে ঢুকছো এই মুহূর্তে যদি চিন্তা করো "তিন ক্যামেরার ফোন ছাড়া চলবেনা", ব্র্যান্ডেড হেডফোন, এক্সপেন্সিভ রেস্টুরেন্ট, চকচকে শার্ট-প্যান্ট আর ক্যাফেতে ভাইরাল চা খাওয়া ছাড়া লাইফে কিছুই নাই.. তাহলে ভাই, খবর আছে। তুমি LUXURY TRAP–এ ঢুকতেছ! বাংলাদেশে ৭৫% তরুণ ফিনান্সিয়াল স্ট্রেসে পড়ে তাদের ‘life-start তখনো properly শুরু হওয়ার আগেই’। (সূত্রঃ বাংলাদেশ ব্যাংক, SME Youth Survey 2023) মানে, ইনকাম ১০ হাজার, খরচ ১৫ হাজার। এইটা সেই ফাঁদ, যেটা বাহির থেকে দেখে মনে হয় Luxury, ভেতরে ঢুকে বুঝবা Necessity নাই! এইটা ছাড়া জীবন খুব ভালোভাবে সুন্দরভাবে চলে যাবে। তোমার আশপাশে অনেকেই এই ফাঁদে পড়েছে। দেখবা 🛍 স্টুডেন্ট হয়েও EMI দিয়ে ১ লাখ টাকার মোবাইল ইউজার। 🛵 ব্যাকআপ ইনকাম নাই, তবুও কিস্তিতে বাইক কিনসে। 🎮 অনলাইন ইনফ্লুয়েন্সার হবো ভেবে DSLR নিয়ে খবর নাই। ☕ প্রতি সপ্তাহে টুংটাং হোটেলের রংচং হাইফাই ব্রেকফাস্ট বেদরকারে। এইগুলা আসলে লোহার হাতকড়া! এটা পরার পর তুমি আর ইনভেস্ট করতে পারবা না নিজের স্কিলে, নতুন কোর্সে, নিজের গ্রোথে! তুমি ইনভেস্ট করবা না সে প্রতিষ্ঠানে যা তোমার ইনকাম বাড়াবে, বরং তুমি খরচ করবা সেই জায়গায় যেখানে তোমাকে বাহির থেকে দেখতে "স্মার্ট" লাগে, কিন্তু ভেতরটা ফাঁকা রাখে। এটাই হলো Real Luxury Trap। তুমি ভাবতেছো তুমি এই বিলাসিতার মালিক। আসলে এসব লাক্সারি গুলাই তোমার মালিক হয়ে যাচ্ছে। একটা ছোট উদাহরণ দেই. তুমি যদি এখন প্রোগ্রামিং বা ডিজাইন শিখতে ৫-১০ হাজার টাকার একটা কোর্সে সময় দাও, সেটা দিতে পারবে না, কারণ তোমার টাকা নাই। কিন্তু এই মাসেই তুমি রেস্টুরেন্টে একবেলা খেয়ে ২০০০ বিল উড়াইসো। তুমি যদি এখন একটু কষ্ট করো, সাময়িক simple life চালাও, দুই বছর পর সেটাই তোমাকে দিয়েছে Skill যদি শিখো। পাবা Stability + Savings। আর সেখান থেকেই উঠে আসবে তোমার Real Freedom আর Real Luxury 💎 আমি বলতেসি না, বিলাসিতা করোনা। কিন্তু আগে বিল্ড হও। পরে বিলাসিতা করতেও মজা লাগবে, সমস্যাও হবেনা তেমন।
    0 Commentarios 0 Acciones 28 Views
  • যদি বলা হয়- কঠোর পরিশ্রম ছাড়াও স্বল্প সময়ের ব্যবধানে শূন্য থেকে কোটিপতি হওয়া সম্ভব, অনেকেই সেটা বিশ্বাস করতে চাইবেন না (উল্টো ধান্দাবাজি মনে করলেও করতে পারেন)! আমরা মনে করি সাফল্য মানেই রক্ত-জল করা খাটুনি। কিন্তু আসল খেলাটা পরিশ্রমের নয়, বরং বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে সঠিক সুযোগ খুঁজে বের করার- অর্থনৈতিক স্বাধীনতার দরজা সবার জন্যই উন্মুক্ত, শুধু তালা খোলার সঠিক চাবিটা চিনতে হবে?

    বেশিরভাগ মানুষ কেন অর্থনৈতিক স্বাধীনতা পায় না, জানেন? কারণ ছোটবেলা থেকেই টাকা নিয়ে আমাদের মনে এমন সব নেতিবাচক ধারণা ঢুকিয়ে দেওয়া হয় (যেমন : টাকা সব নষ্টের গোড়া)- যার ফলে আমরা অবচেতন মনে টাকাকে ভয় পাই। এই মনস্তাত্ত্বিক বাধা দূর করতে না পারলে অর্থনৈতিক স্বাধীনতা অর্জন করা অসম্ভব।

    অধিকাংশ মানুষ স্ব-উদ্যোগী হয়ে নিজে কিছু করার চেষ্টা না করে অন্যের অধীনে চাকরি করতেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। চাকরি করতে গিয়ে আমরা মূলত অন্যের স্বপ্ন পূরণে ঝাঁপিয়ে পড়ি এবং অন্যের তৈরি করা নিয়মে বাকি জীবন কাটিয়ে দিয়ে তৃপ্তির ঢেকুর তুলি। অথচ মানুষ চাইলে পরাধীনতার বন্ধন ছিন্ন করে নিজেই নিজের জীবনের স্থপতি হতে পারতো!

    একটি কঠিন সত্য হলো- যারা আপনাকে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসে, তাঁরা প্রায়শ আপনার স্বপ্ন পূরণের পথে সবচেয়ে বড় বাধা হয়ে দাঁড়ায়। কেননা তাঁরা আপনার জন্য সেরাটা চায় না, তাঁরা চায় আপনি নিরাপদ থাকুন। ঝুঁকি বিহীন জীবন মানেই বৃদ্ধিহীন জীবন। সেই কারণে বড় করে স্বপ্ন দেখতে হলে আপনাকে প্রিয়জনদের বেঁধে দেওয়া নিরাপত্তার গণ্ডি ভাঙার সাহস রাখতে হবে।

    আমি যখন কর্পোরেট চাকরির চক্করে আটকা পড়ে ছিলাম, তখনি লোভনীয় চাকরি ছেড়ে মুক্ত বিক্রয় প্রশিক্ষক হওয়ার ঝুঁকি নিতে দ্বিধা করিনি। আমার লক্ষ্য ছিল এক দশকের পেশাগত অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে একটি নিশ্চিত আয়ের উৎস তৈরি করা। এই ছোট্ট কিন্তু সাহসী পদক্ষেপই পরবর্তীতে আমাকে অনেক বড় অর্থনৈতিক স্বাধীনতার পথে এগিয়ে যেতে সহায়তা করেছে..!

    কিভাবে আপনার প্রথম ব্যবসা কিনবেন?

    আপনার দক্ষতা ব্যবহার করুন : আপনি যে ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করছেন, সেই ইন্ডাস্ট্রির কোনো ছোট ব্যবসা ধরার তথা কেনার চেষ্টা করুন। যেমন : আমি একটি মুঠোফোন কোম্পানির বেতন-ভোগী বিক্রয় প্রশিক্ষক ছিলাম। সেটাকেই পরবর্তীতে নিজের স্বাধীন পেশা হিসেবে গ্রহণ করেছি। আপনি যদি content creator হন, তাহলে একটি ছোট প্রোডাকশন স্টুডিও কেনার কথা ভাবতে পারেন। এতে আপনার সংশ্লিষ্ট বিষয়াদি জানা, বোঝা ও শেখার পথ আরো সুগম (smooth) হবে।

    উদ্দেশ্য খুঁজুন : ব্যবসার মালিকের সঙ্গে কথা বলুন। তিনি কেন ব্যবসাটি বিক্রি বা হাতবদল করতে চান? বেশিরভাগ সময় মালিকেরা তাঁদের দাঁড় করানো ব্যবসা থেকে পরিত্রাণ চান; আপনি তাঁদের সেই মুক্তির উপলক্ষ হতে পারেন? মজার ব্যাপার হলো- টাকা ছাড়াও ব্যবসা কেনা সম্ভব!

    এটাই আলোচনার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ যে, ব্যবসা কেনার জন্য আপনার নিজের টাকার প্রয়োজন নেই! বেশিরভাগ ছোট ব্যবসার মালিকরা তাঁদের ব্যবসার জন্য নগদ ক্রেতা খুঁজে পান না? আপনি তাঁদের ব্যবসার ভবিষ্যৎ লাভের একটি অংশ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রায় শূন্য ডাউন পেমেন্টে ব্যবসাটি নিজের নিয়ন্ত্রণে নিতে পারেন (অর্থাৎ ব্যবসার টাকা দিয়েই ব্যবসাকে কেনা যায়)! এবারে বলে দিচ্ছি- কিভাবে প্রথম পদক্ষেপ নেবেন?

    ব্রেক দ্য ফ্রেম : আপনার যদি তিন বছরের কোনো লক্ষ্য থাকে, নিজেকে প্রশ্ন করুন- কিভাবে এটা দুই বছরে অর্জন করতে পারবো? এই প্রশ্নের উত্তর আপনাকে গতানুগতিক চিন্তার বাইরে বের করে আনবে এবং অসাধারণ সব পরিকল্পনার জন্ম দেবে!

    কিভাবে নয়, কে : আপনার প্রশ্ন হওয়া উচিত নয়- আমি কিভাবে এটা করবো, বরং প্রশ্ন করুন- কে আমাকে এটা করতে সাহায্য করতে পারে? সঠিক মানুষ খুঁজে বের করাই সাফল্যের দ্রুততম পথ।

    সফলতার জগতে একটি অদৃশ্য পর্দা আছে, যার আড়ালের খবর সাধারণ মানুষ পায় না? কোটিপতিরা কঠোর পরিশ্রমের চেয়ে মানি গেমস বা টাকার খেলা খেলেই বেশি সম্পদ তৈরি করছেন! আপনার চেয়ে সফল কোনো ব্যক্তির সঙ্গে কাজ করুন, সময় কাটান- এমনকি বিনামূল্যে হলেও। তাঁদের সান্নিধ্যে থেকে আপনি এমন সব কৌশল শিখবেন- যা কোনো বইয়ে লেখা থাকে না বা কোর্সে অংশগ্রহণ করেও জানা সম্ভব নয়। সফল ব্যক্তিদের অনন্য বৈশিষ্ট্য হলো-

    দীর্ঘমেয়াদী চিন্তা : তাঁরা তাৎক্ষণিক লাভের চেয়ে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনাকে বেশি গুরুত্ব দেন।

    বড় মিশন : তাঁদের জীবনের লক্ষ্য এতোটাই বড় হয় যে, পথের ছোট ছোট যন্ত্রণা বা ব্যর্থতা তাঁদেরকে দমাতে পারে না।

    সাহায্যের মানসিকতা : তাঁরা যখন দেখে যে কেউ সত্যিই ক্ষুধার্ত এবং কঠোর পরিশ্রমী, তখন তাঁরা তাঁকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসে।

    কনটেন্ট তৈরি কেন আপনার জন্য জরুরি?

    চুম্বকের মতো আকর্ষণ : কনটেন্ট আপনাকে মানুষের কাছে গিয়ে নিজেকে বিক্রি করতে বাধ্য করে না, বরং সঠিক মানুষকে আপনার দিকে টেনে আনে। এটিই হলো push marketing বনাম pool marketing-এর পার্থক্য।

    নেটওয়ার্কিং-এর সেরা উপায় : কনটেন্ট হলো আধুনিক যুগের নেটওয়ার্কিং। এর মাধ্যমে আপনি আপনার কমিউনিটি খুঁজে পান- যারা আপনার মতো করেই ভাবে এবং আপনাকে সমর্থন করে।

    সাফল্যের পথে এগিয়ে যাওয়ার একটি বেদনাদায়ক কিন্তু জরুরি অংশ হলো- পুরানো বন্ধু বা পুরানো পরিচয়কে পেছনে ফেলে আসা। আপনি যখন দ্রুতগতিতে এগোতে থাকবেন, তখন আপনার চারপাশের অনেকেই আপনাকে টেনে ধরতে চাইবে, কারণ আপনার সাফল্য তাঁদের নিজেদের ব্যর্থতাকে মনে করিয়ে দেয়।

    কীভাবে লক্ষ্য নির্ধারণ করবেন?

    ডেডলাইন দিন : কোনো একদিন করবো বা কিছুদিন পরে করবো- এই ধরনের অস্পষ্ট লক্ষ্যের কোনো মূল্য নেই। আপনার ক্যালেন্ডারে একটি নির্দিষ্ট তারিখ নির্ধারণ করুন। একটি ডেডলাইন আপনার মস্তিষ্ককে কাজ করতে বাধ্য করবে।

    স্বল্পমেয়াদী লক্ষ্য : ৫ বা ১০ বছরের পরিকল্পনা না করে ৩-৬ মাসের ছোট ছোট লক্ষ্যের উপর মনোযোগ দিন। জীবন পরিবর্তনশীল এবং দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা বেশিরভাগ সময়ই অকেজো হয়ে পড়ে।

    টাকা নিয়ে আমাদের দর্শন কী হওয়া উচিত?

     টাকা জমিয়ে কখনোই ধনী হতে পারবেন না, আপনাকে আয় করে ধনী হতে হবে।
     ছোট ছোট খরচ বাঁচিয়ে বড়লোক হওয়ার ধারণাটি একটি মরীচিকা, বরং কিভাবে নিজের আয় বাড়ানো যায়- সেদিকে মনোযোগ দিন।
     ফিন্যান্স হলো টাকার ভাষা। যারা এই ভাষা বোঝে, তাঁরাই এই খেলায় জিততে পারেন!

    জীবনের সবচেয়ে বড় সাহসিকতার পরিচয় হলো- যে পর্বত আপনার নয়, সেই পর্বতে আরোহণ না করার সিদ্ধান্ত নেওয়া। অন্যের চাপিয়ে দেওয়া লক্ষ্যের পেছনে না ছুটে নিজের পথ বেছে নেওয়াটাই সত্যিকারের স্বাধীনতা।


    যদি বলা হয়- কঠোর পরিশ্রম ছাড়াও স্বল্প সময়ের ব্যবধানে শূন্য থেকে কোটিপতি হওয়া সম্ভব, অনেকেই সেটা বিশ্বাস করতে চাইবেন না (উল্টো ধান্দাবাজি মনে করলেও করতে পারেন)! আমরা মনে করি সাফল্য মানেই রক্ত-জল করা খাটুনি। কিন্তু আসল খেলাটা পরিশ্রমের নয়, বরং বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে সঠিক সুযোগ খুঁজে বের করার- অর্থনৈতিক স্বাধীনতার দরজা সবার জন্যই উন্মুক্ত, শুধু তালা খোলার সঠিক চাবিটা চিনতে হবে? বেশিরভাগ মানুষ কেন অর্থনৈতিক স্বাধীনতা পায় না, জানেন? কারণ ছোটবেলা থেকেই টাকা নিয়ে আমাদের মনে এমন সব নেতিবাচক ধারণা ঢুকিয়ে দেওয়া হয় (যেমন : টাকা সব নষ্টের গোড়া)- যার ফলে আমরা অবচেতন মনে টাকাকে ভয় পাই। এই মনস্তাত্ত্বিক বাধা দূর করতে না পারলে অর্থনৈতিক স্বাধীনতা অর্জন করা অসম্ভব। অধিকাংশ মানুষ স্ব-উদ্যোগী হয়ে নিজে কিছু করার চেষ্টা না করে অন্যের অধীনে চাকরি করতেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। চাকরি করতে গিয়ে আমরা মূলত অন্যের স্বপ্ন পূরণে ঝাঁপিয়ে পড়ি এবং অন্যের তৈরি করা নিয়মে বাকি জীবন কাটিয়ে দিয়ে তৃপ্তির ঢেকুর তুলি। অথচ মানুষ চাইলে পরাধীনতার বন্ধন ছিন্ন করে নিজেই নিজের জীবনের স্থপতি হতে পারতো! একটি কঠিন সত্য হলো- যারা আপনাকে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসে, তাঁরা প্রায়শ আপনার স্বপ্ন পূরণের পথে সবচেয়ে বড় বাধা হয়ে দাঁড়ায়। কেননা তাঁরা আপনার জন্য সেরাটা চায় না, তাঁরা চায় আপনি নিরাপদ থাকুন। ঝুঁকি বিহীন জীবন মানেই বৃদ্ধিহীন জীবন। সেই কারণে বড় করে স্বপ্ন দেখতে হলে আপনাকে প্রিয়জনদের বেঁধে দেওয়া নিরাপত্তার গণ্ডি ভাঙার সাহস রাখতে হবে। আমি যখন কর্পোরেট চাকরির চক্করে আটকা পড়ে ছিলাম, তখনি লোভনীয় চাকরি ছেড়ে মুক্ত বিক্রয় প্রশিক্ষক হওয়ার ঝুঁকি নিতে দ্বিধা করিনি। আমার লক্ষ্য ছিল এক দশকের পেশাগত অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে একটি নিশ্চিত আয়ের উৎস তৈরি করা। এই ছোট্ট কিন্তু সাহসী পদক্ষেপই পরবর্তীতে আমাকে অনেক বড় অর্থনৈতিক স্বাধীনতার পথে এগিয়ে যেতে সহায়তা করেছে..! কিভাবে আপনার প্রথম ব্যবসা কিনবেন? আপনার দক্ষতা ব্যবহার করুন : আপনি যে ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করছেন, সেই ইন্ডাস্ট্রির কোনো ছোট ব্যবসা ধরার তথা কেনার চেষ্টা করুন। যেমন : আমি একটি মুঠোফোন কোম্পানির বেতন-ভোগী বিক্রয় প্রশিক্ষক ছিলাম। সেটাকেই পরবর্তীতে নিজের স্বাধীন পেশা হিসেবে গ্রহণ করেছি। আপনি যদি content creator হন, তাহলে একটি ছোট প্রোডাকশন স্টুডিও কেনার কথা ভাবতে পারেন। এতে আপনার সংশ্লিষ্ট বিষয়াদি জানা, বোঝা ও শেখার পথ আরো সুগম (smooth) হবে। উদ্দেশ্য খুঁজুন : ব্যবসার মালিকের সঙ্গে কথা বলুন। তিনি কেন ব্যবসাটি বিক্রি বা হাতবদল করতে চান? বেশিরভাগ সময় মালিকেরা তাঁদের দাঁড় করানো ব্যবসা থেকে পরিত্রাণ চান; আপনি তাঁদের সেই মুক্তির উপলক্ষ হতে পারেন? মজার ব্যাপার হলো- টাকা ছাড়াও ব্যবসা কেনা সম্ভব! এটাই আলোচনার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ যে, ব্যবসা কেনার জন্য আপনার নিজের টাকার প্রয়োজন নেই! বেশিরভাগ ছোট ব্যবসার মালিকরা তাঁদের ব্যবসার জন্য নগদ ক্রেতা খুঁজে পান না? আপনি তাঁদের ব্যবসার ভবিষ্যৎ লাভের একটি অংশ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রায় শূন্য ডাউন পেমেন্টে ব্যবসাটি নিজের নিয়ন্ত্রণে নিতে পারেন (অর্থাৎ ব্যবসার টাকা দিয়েই ব্যবসাকে কেনা যায়)! এবারে বলে দিচ্ছি- কিভাবে প্রথম পদক্ষেপ নেবেন? ব্রেক দ্য ফ্রেম : আপনার যদি তিন বছরের কোনো লক্ষ্য থাকে, নিজেকে প্রশ্ন করুন- কিভাবে এটা দুই বছরে অর্জন করতে পারবো? এই প্রশ্নের উত্তর আপনাকে গতানুগতিক চিন্তার বাইরে বের করে আনবে এবং অসাধারণ সব পরিকল্পনার জন্ম দেবে! কিভাবে নয়, কে : আপনার প্রশ্ন হওয়া উচিত নয়- আমি কিভাবে এটা করবো, বরং প্রশ্ন করুন- কে আমাকে এটা করতে সাহায্য করতে পারে? সঠিক মানুষ খুঁজে বের করাই সাফল্যের দ্রুততম পথ। সফলতার জগতে একটি অদৃশ্য পর্দা আছে, যার আড়ালের খবর সাধারণ মানুষ পায় না? কোটিপতিরা কঠোর পরিশ্রমের চেয়ে মানি গেমস বা টাকার খেলা খেলেই বেশি সম্পদ তৈরি করছেন! আপনার চেয়ে সফল কোনো ব্যক্তির সঙ্গে কাজ করুন, সময় কাটান- এমনকি বিনামূল্যে হলেও। তাঁদের সান্নিধ্যে থেকে আপনি এমন সব কৌশল শিখবেন- যা কোনো বইয়ে লেখা থাকে না বা কোর্সে অংশগ্রহণ করেও জানা সম্ভব নয়। সফল ব্যক্তিদের অনন্য বৈশিষ্ট্য হলো- দীর্ঘমেয়াদী চিন্তা : তাঁরা তাৎক্ষণিক লাভের চেয়ে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনাকে বেশি গুরুত্ব দেন। বড় মিশন : তাঁদের জীবনের লক্ষ্য এতোটাই বড় হয় যে, পথের ছোট ছোট যন্ত্রণা বা ব্যর্থতা তাঁদেরকে দমাতে পারে না। সাহায্যের মানসিকতা : তাঁরা যখন দেখে যে কেউ সত্যিই ক্ষুধার্ত এবং কঠোর পরিশ্রমী, তখন তাঁরা তাঁকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসে। কনটেন্ট তৈরি কেন আপনার জন্য জরুরি? চুম্বকের মতো আকর্ষণ : কনটেন্ট আপনাকে মানুষের কাছে গিয়ে নিজেকে বিক্রি করতে বাধ্য করে না, বরং সঠিক মানুষকে আপনার দিকে টেনে আনে। এটিই হলো push marketing বনাম pool marketing-এর পার্থক্য। নেটওয়ার্কিং-এর সেরা উপায় : কনটেন্ট হলো আধুনিক যুগের নেটওয়ার্কিং। এর মাধ্যমে আপনি আপনার কমিউনিটি খুঁজে পান- যারা আপনার মতো করেই ভাবে এবং আপনাকে সমর্থন করে। সাফল্যের পথে এগিয়ে যাওয়ার একটি বেদনাদায়ক কিন্তু জরুরি অংশ হলো- পুরানো বন্ধু বা পুরানো পরিচয়কে পেছনে ফেলে আসা। আপনি যখন দ্রুতগতিতে এগোতে থাকবেন, তখন আপনার চারপাশের অনেকেই আপনাকে টেনে ধরতে চাইবে, কারণ আপনার সাফল্য তাঁদের নিজেদের ব্যর্থতাকে মনে করিয়ে দেয়। কীভাবে লক্ষ্য নির্ধারণ করবেন? ডেডলাইন দিন : কোনো একদিন করবো বা কিছুদিন পরে করবো- এই ধরনের অস্পষ্ট লক্ষ্যের কোনো মূল্য নেই। আপনার ক্যালেন্ডারে একটি নির্দিষ্ট তারিখ নির্ধারণ করুন। একটি ডেডলাইন আপনার মস্তিষ্ককে কাজ করতে বাধ্য করবে। স্বল্পমেয়াদী লক্ষ্য : ৫ বা ১০ বছরের পরিকল্পনা না করে ৩-৬ মাসের ছোট ছোট লক্ষ্যের উপর মনোযোগ দিন। জীবন পরিবর্তনশীল এবং দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা বেশিরভাগ সময়ই অকেজো হয়ে পড়ে। টাকা নিয়ে আমাদের দর্শন কী হওয়া উচিত?  টাকা জমিয়ে কখনোই ধনী হতে পারবেন না, আপনাকে আয় করে ধনী হতে হবে।  ছোট ছোট খরচ বাঁচিয়ে বড়লোক হওয়ার ধারণাটি একটি মরীচিকা, বরং কিভাবে নিজের আয় বাড়ানো যায়- সেদিকে মনোযোগ দিন।  ফিন্যান্স হলো টাকার ভাষা। যারা এই ভাষা বোঝে, তাঁরাই এই খেলায় জিততে পারেন! জীবনের সবচেয়ে বড় সাহসিকতার পরিচয় হলো- যে পর্বত আপনার নয়, সেই পর্বতে আরোহণ না করার সিদ্ধান্ত নেওয়া। অন্যের চাপিয়ে দেওয়া লক্ষ্যের পেছনে না ছুটে নিজের পথ বেছে নেওয়াটাই সত্যিকারের স্বাধীনতা।
    0 Commentarios 0 Acciones 42 Views
  • রিসার্চ: গবেষণার যে ভয়ংকর দিকগুলো আপনি কখনোই দেখেননি

    ( আমার এই লেখাটি নতুন-পুরাতন, জানা-অজানা, পরিচিত অপরিচিত অথবা ভবিষ্যতের সমস্ত রিসার্চরদের প্রতি উৎসর্গকৃত... )

    আপনার চারপাশে যারা আছেন, তারা হয়তো জানেই না — আপনি যে একটা পেপার পাবলিশ করতে গিয়ে কত রাত নির্ঘুম কাটিয়েছেন। তারা জানে না, আপনি কিভাবে একটা পয়েন্ট প্রুভ করতে করতে নিজের স্বাস্থ্য হুমকির মুখে ফেলেছেন... তারা জানে না, “তোর কাজ কী?” এই প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে আপনি কতটা হিমশিম খান।

    গবেষণা মানেই একাকীত্ব

    Research মানে শুধু publication না, রিসার্চ মানে প্রতিদিন নিজেকে নতুন করে ভাঙা, গড়ার এক ভয়াবহ প্রক্রিয়া। মাস্টার্স বা পিএইচডি স্টুডেন্টদের জন্য গবেষণা মানে:

    একই থিসিসের জন্য ১০ বার রিভিউ পড়া

    শত শত লাইন কোড লেখা — আবার মুছে ফেলা

    এক মাস ধরে ডেটা কালেকশন, অথচ শেষ মুহূর্তে সব অপ্রাসঙ্গিক হয়ে যাওয়া

    supervisor  মুখের একটি “Not enough” শব্দ শুনে ছয় মাসের সমস্ত কাজ ডিলিট করে আবার শুরু করা...

    অথচ এত কিছুর পরও, এক পৃষ্ঠা পেপার পাবলিশ হওয়া যেন একটা অলিম্পিক জেতার মতো অনুভূতি।

    মানসিক চাপ, হতাশা আর অবমূল্যায়নের জগৎ

    WHO-র রিপোর্ট অনুযায়ী, উচ্চশিক্ষা ও রিসার্চ ফিল্ডে ডিপ্রেশন, বার্নআউট, এমনকি আত্ম/হ/ত্যর হার আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে।

    গবেষকরা সৃষ্টিশীল, তারা টাকার পেছনে না ছুটে ভবিষ্যতের পেছনে ছুটে। কিন্তু এর ফল কী?

    1. স্বীকৃতি নেই: গবেষকদের আসল কোন স্বীকৃতি নেই এখানে তৈরি করার রিসার্চ আর্টিকেল বইগুলো অনলাইনে অথবা লাইব্রেরির কোনায় পড়ে থাকে ধুলো জমে যখন দরকার হয় তখন সেগুলো পড়া হয় অথবা দুই তিনটা সাইটেশনও করা হয় তারপরে সবাই চলে যায় কিন্তু এই মানুষগুলোর খোঁজ-খবর কেউ কখনোই রাখে না...

    2. রেসপেক্ট নেই: মানুষগুলো অনেক সাদাসিধা জীবন যাপন করে বেশিরভাগ সময়ই লোকচক্ষু আড়ালে থাকেন আর এদেরকে নিয়ে তেমন কোনো কথা হয় না তেমন কোনো সম্মাননা প্রদান করা হয় না আর যদি দুর্ভাগ্যবশত আপনি বাংলাদেশ বা এখন তৃতীয় বিশ্বের কোন দেশে জন্ম নেন যে দেশে "viral topic" নিয়ে সারাদিন কথা বার্তা হয় তারা আপনাকে কোনদিন বুঝবে না আপনি বড় কিছু করলে হয়তো বা আপনাকে নিয়ে দুই একটা ফেসবুকে পোস্ট হবে ...

    3. পরিবার বুঝে না, সমাজ তো দূরের কথা, সবচেয়ে ভয়াবহতা তখন আসে যখন কোন কারণে আপনার রিসার্চ ফেল হয় এবং আপনি যে ফান্ড বা যে position উপর ডিপেন্ড করে চলতেছেন সেটা বন্ধ হয়ে যায়

    4. যারা বোঝে, তারাও নিজের স্ট্রাগলে ব্যস্ত, একজন রিসার্চররে মানসিক অবস্থা শুধুমাত্র আরেকজনরে অনুধাবন করতে পারবে কিন্তু দুঃখজনক হলো এটা যে অনুধাবন করতেছে সে নিজেও অনেক বেশি সমস্যায় আছে আপনাকে কিভাবে সাহায্য করবে....

    কিছুদিন আগে রাত সাড়ে তিনটায় আমাদের এক পরিচিত ভাই হুট করে ডিপ্রেশন এটাক হয়ে পড়ে গেছেন, জানিনা কেমন ভাবে উনি আমাকে কল দিয়েছিলেন কিন্তু আমি ঘুমিয়ে থাকার কারণে তার সাহায্যে যেতে পারিনি.. সৌভাগ্যবশত এক পাকিস্তানি ছেলে পরবর্তীতে তাকে হসপিটালে ভর্তি করায় রাতে..

    এ ঘটনার পর থেকে আমি আর ইন্টারনেট থেকে বিচ্ছিন্ন করিনা এবং নিচে স্ট্রিটলি বলা হয়েছে যদি ১২ ঘণ্টার উপরে আমাকে কখনোই দেখতে পাওয়া না যায় তাহলে তারা যেন আমার রুমে আসে চেক করে....

    মিলিয়ন ডলারের মাথা, অথচ নামহীন

    বিশ্বের টপ ১%-২% গবেষকরা বছরে মিলিয়ন ডলার পর্যন্ত আয় করেন। কিন্তু আপনি কি জানেন তাদের নাম?

    না, কারণ তারা সেলিব্রেটি না

    তাদের আবিষ্কারেই আমরা কোভিডের ভ্যাকসিন পেয়েছি, আমরা AI ব্যবহার করতে পারি, আমরা স্পেসে যাই।

    তারা যখন একটা সিস্টেম ডিজাইন করেন, তখন আপনি ফেসবুক স্ক্রল করেন। তারা যখন কোড রিভিউ করেন, তখন আপনি শপিং মলে যান। তাদের বুদ্ধিতেই এই পৃথিবী চলছে, কিন্তু তারা থাকে আড়ালে।

    আর টাকার কথা আসলে এমাউন্টটা মিলিয়নের উপরে হয় অনেক সময়.. রিসার্চরা অনেক বুদ্ধিমান তাই শো অফ করে না কিন্তু চালচলনে কিছু না কিছু তো বোঝা যায়...

    আমি কেন টেক জয়েন্ট গুলোর অফার রিজেক্ট করে এখনো এই জায়গায় ঘাপটি মেরে বসে আছি সেটা বুঝতে আপনাদের আরো চার বছর সময় লাগবে

    সম্মান পেতে হলে, ঐ লেভেলেই উঠতে হয়

    রিসার্চারদের কাজ সাধারণ মানুষ বুঝবে না — কারণ এদের কাজ সাধারণ নয়। তাদের সম্মান করতে হলে আপনাকেও সেই গভীরতা ছুঁতে হবে।

    সম্মান দিতে ‘সমঝদার’ হতে হয়....
    পেতে হলে "যোগ্যতাবান" হতে হয়.....

    তাই রিসার্চার ভাই ও বোনেরা, হতাশ হবেন না!

    আপনার আইডিয়া কেউ বুঝছে না , হয়তো এই সমাজ আপনাকে বুঝবে না।
    হয়তো পেপার পাবলিশ হলেও কেউ লাইক দেবে না।
    হয়তো বন্ধুদের সাফল্য দেখে আপনি কষ্ট পাবেন।

    কিন্তু মনে রাখুন — আপনি যে লেভেলে চিন্তা করেন, সেখানে সবাই উঠতে পারে না। আপনার স্ট্রাগল একদিন পৃথিবী বদলে দেবে — শুধু এখন নয়, ভবিষ্যতে।

    আপনার গবেষণার প্রতি পৃথিবীর দৃষ্টি না থাকলেও, ভবিষ্যৎ আপনার নাম জানবে।

    আর কেউ না জানলেও, আজ আমি বলছি —

    “Salute to every researcher, scientist, and quiet warrior of knowledge.”

    আপনার নীরব যুদ্ধই একদিন ইতিহাস লিখবে।

    — লিখেছেন, চেহেরাবিহীন একজন সৈনিক

    Naem Azam Chowdhury
    Security Researcher, China

    #nac_research #ResearchOpportunity #researchanddevelopment#ResearchChallenge #research #bangladesh #naemazam
    🎓 রিসার্চ: গবেষণার যে ভয়ংকর দিকগুলো আপনি কখনোই দেখেননি ( আমার এই লেখাটি নতুন-পুরাতন, জানা-অজানা, পরিচিত অপরিচিত অথবা ভবিষ্যতের সমস্ত রিসার্চরদের প্রতি উৎসর্গকৃত... ) আপনার চারপাশে যারা আছেন, তারা হয়তো জানেই না — আপনি যে একটা পেপার পাবলিশ করতে গিয়ে কত রাত নির্ঘুম কাটিয়েছেন। তারা জানে না, আপনি কিভাবে একটা পয়েন্ট প্রুভ করতে করতে নিজের স্বাস্থ্য হুমকির মুখে ফেলেছেন... তারা জানে না, “তোর কাজ কী?” এই প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে আপনি কতটা হিমশিম খান। 😔 গবেষণা মানেই একাকীত্ব Research মানে শুধু publication না, রিসার্চ মানে প্রতিদিন নিজেকে নতুন করে ভাঙা, গড়ার এক ভয়াবহ প্রক্রিয়া। মাস্টার্স বা পিএইচডি স্টুডেন্টদের জন্য গবেষণা মানে: একই থিসিসের জন্য ১০ বার রিভিউ পড়া শত শত লাইন কোড লেখা — আবার মুছে ফেলা এক মাস ধরে ডেটা কালেকশন, অথচ শেষ মুহূর্তে সব অপ্রাসঙ্গিক হয়ে যাওয়া supervisor  মুখের একটি “Not enough” শব্দ শুনে ছয় মাসের সমস্ত কাজ ডিলিট করে আবার শুরু করা... ❗ অথচ এত কিছুর পরও, এক পৃষ্ঠা পেপার পাবলিশ হওয়া যেন একটা অলিম্পিক জেতার মতো অনুভূতি। মানসিক চাপ, হতাশা আর অবমূল্যায়নের জগৎ 😢 WHO-র রিপোর্ট অনুযায়ী, উচ্চশিক্ষা ও রিসার্চ ফিল্ডে ডিপ্রেশন, বার্নআউট, এমনকি আত্ম/হ/ত্যর হার আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। গবেষকরা সৃষ্টিশীল, তারা টাকার পেছনে না ছুটে ভবিষ্যতের পেছনে ছুটে। কিন্তু এর ফল কী? 1. স্বীকৃতি নেই: গবেষকদের আসল কোন স্বীকৃতি নেই এখানে তৈরি করার রিসার্চ আর্টিকেল বইগুলো অনলাইনে অথবা লাইব্রেরির কোনায় পড়ে থাকে ধুলো জমে যখন দরকার হয় তখন সেগুলো পড়া হয় অথবা দুই তিনটা সাইটেশনও করা হয় তারপরে সবাই চলে যায় কিন্তু এই মানুষগুলোর খোঁজ-খবর কেউ কখনোই রাখে না... 2. রেসপেক্ট নেই: মানুষগুলো অনেক সাদাসিধা জীবন যাপন করে বেশিরভাগ সময়ই লোকচক্ষু আড়ালে থাকেন আর এদেরকে নিয়ে তেমন কোনো কথা হয় না তেমন কোনো সম্মাননা প্রদান করা হয় না আর যদি দুর্ভাগ্যবশত আপনি বাংলাদেশ বা এখন তৃতীয় বিশ্বের কোন দেশে জন্ম নেন যে দেশে "viral topic" নিয়ে সারাদিন কথা বার্তা হয় তারা আপনাকে কোনদিন বুঝবে না আপনি বড় কিছু করলে হয়তো বা আপনাকে নিয়ে দুই একটা ফেসবুকে পোস্ট হবে ... 3. পরিবার বুঝে না, সমাজ তো দূরের কথা, সবচেয়ে ভয়াবহতা তখন আসে যখন কোন কারণে আপনার রিসার্চ ফেল হয় এবং আপনি যে ফান্ড বা যে position উপর ডিপেন্ড করে চলতেছেন সেটা বন্ধ হয়ে যায় 4. যারা বোঝে, তারাও নিজের স্ট্রাগলে ব্যস্ত, একজন রিসার্চররে মানসিক অবস্থা শুধুমাত্র আরেকজনরে অনুধাবন করতে পারবে কিন্তু দুঃখজনক হলো এটা যে অনুধাবন করতেছে সে নিজেও অনেক বেশি সমস্যায় আছে আপনাকে কিভাবে সাহায্য করবে.... কিছুদিন আগে রাত সাড়ে তিনটায় আমাদের এক পরিচিত ভাই হুট করে ডিপ্রেশন এটাক হয়ে পড়ে গেছেন, জানিনা কেমন ভাবে উনি আমাকে কল দিয়েছিলেন কিন্তু আমি ঘুমিয়ে থাকার কারণে তার সাহায্যে যেতে পারিনি.. সৌভাগ্যবশত এক পাকিস্তানি ছেলে পরবর্তীতে তাকে হসপিটালে ভর্তি করায় রাতে.. এ ঘটনার পর থেকে আমি আর ইন্টারনেট থেকে বিচ্ছিন্ন করিনা এবং নিচে স্ট্রিটলি বলা হয়েছে যদি ১২ ঘণ্টার উপরে আমাকে কখনোই দেখতে পাওয়া না যায় তাহলে তারা যেন আমার রুমে আসে চেক করে.... 💸 মিলিয়ন ডলারের মাথা, অথচ নামহীন বিশ্বের টপ ১%-২% গবেষকরা বছরে মিলিয়ন ডলার পর্যন্ত আয় করেন। কিন্তু আপনি কি জানেন তাদের নাম? 🤣 না, কারণ তারা সেলিব্রেটি না তাদের আবিষ্কারেই আমরা কোভিডের ভ্যাকসিন পেয়েছি, আমরা AI ব্যবহার করতে পারি, আমরা স্পেসে যাই। তারা যখন একটা সিস্টেম ডিজাইন করেন, তখন আপনি ফেসবুক স্ক্রল করেন। তারা যখন কোড রিভিউ করেন, তখন আপনি শপিং মলে যান। তাদের বুদ্ধিতেই এই পৃথিবী চলছে, কিন্তু তারা থাকে আড়ালে। আর টাকার কথা আসলে এমাউন্টটা মিলিয়নের উপরে হয় অনেক সময়.. রিসার্চরা অনেক বুদ্ধিমান তাই শো অফ করে না কিন্তু চালচলনে কিছু না কিছু তো বোঝা যায়... আমি কেন টেক জয়েন্ট গুলোর অফার রিজেক্ট করে এখনো এই জায়গায় ঘাপটি মেরে বসে আছি সেটা বুঝতে আপনাদের আরো চার বছর সময় লাগবে👀 💔 সম্মান পেতে হলে, ঐ লেভেলেই উঠতে হয় রিসার্চারদের কাজ সাধারণ মানুষ বুঝবে না — কারণ এদের কাজ সাধারণ নয়। তাদের সম্মান করতে হলে আপনাকেও সেই গভীরতা ছুঁতে হবে। সম্মান দিতে ‘সমঝদার’ হতে হয়.... পেতে হলে "যোগ্যতাবান" হতে হয়..... তাই রিসার্চার ভাই ও বোনেরা, হতাশ হবেন না! ❤️ আপনার আইডিয়া কেউ বুঝছে না , হয়তো এই সমাজ আপনাকে বুঝবে না। হয়তো পেপার পাবলিশ হলেও কেউ লাইক দেবে না। হয়তো বন্ধুদের সাফল্য দেখে আপনি কষ্ট পাবেন। কিন্তু মনে রাখুন — আপনি যে লেভেলে চিন্তা করেন, সেখানে সবাই উঠতে পারে না। আপনার স্ট্রাগল একদিন পৃথিবী বদলে দেবে — শুধু এখন নয়, ভবিষ্যতে। ☠️ 🔥 আপনার গবেষণার প্রতি পৃথিবীর দৃষ্টি না থাকলেও, ভবিষ্যৎ আপনার নাম জানবে। 👉 আর কেউ না জানলেও, আজ আমি বলছি — “Salute to every researcher, scientist, and quiet warrior of knowledge.” আপনার নীরব যুদ্ধই একদিন ইতিহাস লিখবে। ✊ 🖊️ — লিখেছেন, চেহেরাবিহীন একজন সৈনিক Naem Azam Chowdhury Security Researcher, China 🇨🇳 #nac_research #ResearchOpportunity #researchanddevelopment#ResearchChallenge #research #bangladesh #naemazam
    Love
    1
    0 Commentarios 0 Acciones 66 Views
  • আমরা ভাবি স্ট্রেস মানে বড় কোনো সংকট, চাকরি হারানো বা সম্পর্কে ভাঙন। কিন্তু হার্ভার্ডের একজন চিকিৎসক এবং মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডঃ নেরুরকার বলছেন, আপনার আসল শত্রু আপনার হাতেই ধরা আপনার ফোন, আর যে চেয়ারে আপনি ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকেন।

    আমরা এমন এক যুগে বাস করছি যেখানে স্ট্রেস এবং বার্নআউট শব্দগুলো আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অংশ হয়ে গেছে। কিন্তু এই চাপের পেছনের আসল কারণগুলো কী এবং কীভাবে আমরা এর মোকাবেলা করতে পারি? The Diary of a CEO পডকাস্টে ডঃ অদিতি নেরুরকার আমাদের আধুনিক জীবনের সেই সব অভ্যাস তুলে ধরেছেন, যা নীরবে আমাদের মস্তিষ্ককে ভেতর থেকে ধ্বংস করে দিচ্ছে।

    আমাদের মস্তিষ্ক, শরীর এমনভাবে তৈরি হয়নি যা অবিরাম তথ্য, নোটিফিকেশন এবং কাজের চাপের সাথে খাপ খাওয়াতে পারে। আমরা একটি ফাইট অথবা ফ্লাইট মোডে বাস করছি, যা আমাদের শারীরিক এবং মানসিকভাবে অসুস্থ করে তুলছে।

    বার্নআউট একটি ক্লিনিক্যাল অবস্থা, যার তিনটি প্রধান লক্ষণ হলো:
    ১. কোনো কিছুতেই আর শক্তি বা আগ্রহ খুঁজে না পাওয়া।
    ২. কাজ বা জীবনের প্রতি একটি নেতিবাচক এবং উদাসীন মনোভাব তৈরি হওয়া।
    ৩. মনে হওয়া যে, আপনি যা-ই করছেন, তাতে কোনো লাভ হচ্ছে না বা আপনি যথেষ্ট ভালো নন।

    আমাদের সমাজ শেখায় শক্ত থাকো, এগিয়ে যাও। কিন্তু ডঃ নেরুরকার এটিকে টক্সিক সহনশীলতা হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। ক্রমাগত নিজের আবেগ এবং শারীরিক সংকেতকে উপেক্ষা করে শুধু কাজ করে যাওয়া কোনো শক্তি নয়, বরং এটি আত্ম-ধ্বংসের সামিল। সত্যিকারের সহনশীলতা মানে হলো, কখন থামতে হবে এবং নিজেকে রিচার্জ করতে হবে, তা জানা।

    মানসিক চাপ কমানোর জন্য আপনাকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা মেডিটেশন করতে হবে না। দিনের মধ্যে ছোট ছোট কিছু রিসেট বা বিরতিই যথেষ্ট। যেমন:
    ১. ৫ মিনিট শুধু নিজের শ্বাসের উপর মনোযোগ দিন।
    ২. প্রিয়জনকে ২০ সেকেন্ড জড়িয়ে ধরুন।
    ৩. তিনটি জিনিসের কথা ভাবুন যার জন্য আপনি কৃতজ্ঞ।
    ৪. ২ মিনিটের জন্য ডেস্ক থেকে উঠে একটু হাঁটুন বা স্ট্রেচিং করুন।
    ৫. আপনার পছন্দের একটি গান শুনুন।

    ব্যায়াম শুধু শরীরচর্চা নয়, এটি মস্তিষ্কের জন্য একটি শক্তিশালী ঔষধ। যখন আপনি ব্যায়াম করেন, তখন আপনার শরীর স্ট্রেস হরমোন কর্টিসলের প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করে এমন কেমিক্যাল তৈরি করে। এটি আপনার শরীরকে শেখায় কীভাবে চাপের সাথে আরও ভালোভাবে মোকাবেলা করতে হয়।

    সোশ্যাল মিডিয়া আমাদের মস্তিষ্কের জন্য একটি পারফেক্ট স্ট্রেসের রেসিপি।
    তুলনা: সোশ্যাল মিডিয়ায় অন্যদের লাইফস্টাইল দেখে নিজেদের সাধারণ জীবনের সাথে তুলনা করি।
    FOMO (Fear of Missing Out): সবসময় মনে হয়, অন্যরা আমাদের চেয়ে বেশি আনন্দ করছে বা এগিয়ে যাচ্ছে।
    নেতিবাচকতা: নেতিবাচক খবর এবং কনটেন্ট আমাদের মস্তিষ্কে সরাসরি স্ট্রেসের প্রতিক্রিয়া তৈরি করে।

    খাবার এবং স্ট্রেসের মধ্যে গোপন যোগসূত্র
    আপনার পেট এবং মস্তিষ্ক সরাসরি সংযুক্ত (Gut-Brain Axis)। আপনি যা খান, তা আপনার মানসিক অবস্থাকে গভীরভাবে প্রভাবিত করে।

    খারাপ খাবার: প্রক্রিয়াজাত, চিনিযুক্ত খাবার আপনার শরীরে প্রদাহ (inflammation) তৈরি করে, যা মস্তিষ্কে স্ট্রেসের সংকেত পাঠায়।
    ভালো খাবার: প্রাকৃতিক এবং স্বাস্থ্যকর খাবার এই প্রদাহ কমায় এবং আপনার মনকে শান্ত রাখতে সাহায্য করে।

    ব্রেক নেওয়া অলসতা নয়, এটি উচ্চ পারফরম্যান্সের জন্য অপরিহার্য। আমাদের মস্তিষ্ক একটানা মনোযোগ ধরে রাখতে পারে না। ছোট ছোট বিরতি আপনার ফোকাস এবং সৃজনশীলতাকে রিচার্জ করে।

    যে জিনিসগুলো আপনাকে অজান্তেই স্ট্রেস দিচ্ছে!
    সারাদিন বসে থাকা: এটি শরীরকে একটি নিষ্ক্রিয় অবস্থায় রাখে, যা স্ট্রেস বাড়ায়।
    স্ক্রিন টাইম: ফোনের নীল আলো আমাদের ঘুম এবং মানসিক অবস্থাকে নষ্ট করে দেয়।
    শব্দ দূষণ: শব্দ আমাদের নার্ভাস সিস্টেমকে উত্তেজিত রাখে।

    মাল্টিটাস্কিং একটি মিথ: এটি আপনার ব্রেনকে ধ্বংস করছে
    জনসংখ্যার মাত্র ২% মানুষ সত্যিকারের মাল্টিটাস্কিং করতে পারে। বাকি ৯৮% যা করে, তা হলো টাস্ক-সুইচিং। অর্থাৎ, দ্রুত এক কাজ থেকে অন্য কাজে মনোযোগ সরানো, যা আমাদের মস্তিষ্কের শক্তি ক্ষয় করে, ভুল বাড়ায় এবং স্ট্রেসের মাত্রা বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়।

    একটি সহজ কিন্তু অত্যন্ত কার্যকর কৌশল হলো ফিজিওলজিক্যাল সাই (Physiological Sigh) বা দীর্ঘ শ্বাস ছাড়ার মতো কৌশল। যখন আপনি শ্বাস ছাড়ার সময়টাকে শ্বাস নেওয়ার চেয়ে দীর্ঘ করেন, তখন এটি আপনার প্যারাসিম্প্যাথেটিক নার্ভাস সিস্টেমকে সক্রিয় করে এবং তাৎক্ষণিকভাবে আপনাকে শান্ত করে।

    যখন মাথায় হাজারো চিন্তা ঘুরপাক খায়, তখন তা একটি কাগজে লিখে ফেলুন। এই প্রক্রিয়াটি আপনার মস্তিষ্ক থেকে চিন্তার বোঝা নামিয়ে দেয় এবং আপনাকে পরিস্থিতিকে আরও স্পষ্টভাবে দেখতে সাহায্য করে। এটি ওভারথিংকিং কমানোর অন্যতম সেরা বৈজ্ঞানিক উপায়।

    অটো-পাইলট মোডে জীবন কাটানো বন্ধ করুন
    যখন আমরা প্রতিদিন একই রুটিনে জীবন কাটাই এবং কোনো কিছু নিয়ে সচেতনভাবে চিন্তা করি না, তখন জীবন অর্থহীন মনে হতে শুরু করে। অটো-পাইলট মোড থেকে বেরিয়ে এসে ছোট ছোট বিষয়ে মনোযোগ দিন যেমন, আপনার সকালের কফির স্বাদ বা প্রকৃতির সৌন্দর্য।

    একাকীত্ব শুধু একটি মানসিক অনুভূতি নয়, এটি একটি মারাত্মক শারীরিক স্বাস্থ্য ঝুঁকি। গবেষণায় দেখা গেছে, দীর্ঘস্থায়ী একাকীত্ব দিনে ১৫টি সিগারেট খাওয়ার মতোই ক্ষতিকর। অর্থপূর্ণ মানবিক সংযোগ আমাদের মানসিক এবং শারীরিক স্বাস্থ্যের জন্য অপরিহার্য।
    আমরা ভাবি স্ট্রেস মানে বড় কোনো সংকট, চাকরি হারানো বা সম্পর্কে ভাঙন। কিন্তু হার্ভার্ডের একজন চিকিৎসক এবং মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডঃ নেরুরকার বলছেন, আপনার আসল শত্রু আপনার হাতেই ধরা আপনার ফোন, আর যে চেয়ারে আপনি ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকেন। আমরা এমন এক যুগে বাস করছি যেখানে স্ট্রেস এবং বার্নআউট শব্দগুলো আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অংশ হয়ে গেছে। কিন্তু এই চাপের পেছনের আসল কারণগুলো কী এবং কীভাবে আমরা এর মোকাবেলা করতে পারি? The Diary of a CEO পডকাস্টে ডঃ অদিতি নেরুরকার আমাদের আধুনিক জীবনের সেই সব অভ্যাস তুলে ধরেছেন, যা নীরবে আমাদের মস্তিষ্ককে ভেতর থেকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। আমাদের মস্তিষ্ক, শরীর এমনভাবে তৈরি হয়নি যা অবিরাম তথ্য, নোটিফিকেশন এবং কাজের চাপের সাথে খাপ খাওয়াতে পারে। আমরা একটি ফাইট অথবা ফ্লাইট মোডে বাস করছি, যা আমাদের শারীরিক এবং মানসিকভাবে অসুস্থ করে তুলছে। বার্নআউট একটি ক্লিনিক্যাল অবস্থা, যার তিনটি প্রধান লক্ষণ হলো: ১. কোনো কিছুতেই আর শক্তি বা আগ্রহ খুঁজে না পাওয়া। ২. কাজ বা জীবনের প্রতি একটি নেতিবাচক এবং উদাসীন মনোভাব তৈরি হওয়া। ৩. মনে হওয়া যে, আপনি যা-ই করছেন, তাতে কোনো লাভ হচ্ছে না বা আপনি যথেষ্ট ভালো নন। আমাদের সমাজ শেখায় শক্ত থাকো, এগিয়ে যাও। কিন্তু ডঃ নেরুরকার এটিকে টক্সিক সহনশীলতা হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। ক্রমাগত নিজের আবেগ এবং শারীরিক সংকেতকে উপেক্ষা করে শুধু কাজ করে যাওয়া কোনো শক্তি নয়, বরং এটি আত্ম-ধ্বংসের সামিল। সত্যিকারের সহনশীলতা মানে হলো, কখন থামতে হবে এবং নিজেকে রিচার্জ করতে হবে, তা জানা। মানসিক চাপ কমানোর জন্য আপনাকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা মেডিটেশন করতে হবে না। দিনের মধ্যে ছোট ছোট কিছু রিসেট বা বিরতিই যথেষ্ট। যেমন: ১. ৫ মিনিট শুধু নিজের শ্বাসের উপর মনোযোগ দিন। ২. প্রিয়জনকে ২০ সেকেন্ড জড়িয়ে ধরুন। ৩. তিনটি জিনিসের কথা ভাবুন যার জন্য আপনি কৃতজ্ঞ। ৪. ২ মিনিটের জন্য ডেস্ক থেকে উঠে একটু হাঁটুন বা স্ট্রেচিং করুন। ৫. আপনার পছন্দের একটি গান শুনুন। ব্যায়াম শুধু শরীরচর্চা নয়, এটি মস্তিষ্কের জন্য একটি শক্তিশালী ঔষধ। যখন আপনি ব্যায়াম করেন, তখন আপনার শরীর স্ট্রেস হরমোন কর্টিসলের প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করে এমন কেমিক্যাল তৈরি করে। এটি আপনার শরীরকে শেখায় কীভাবে চাপের সাথে আরও ভালোভাবে মোকাবেলা করতে হয়। সোশ্যাল মিডিয়া আমাদের মস্তিষ্কের জন্য একটি পারফেক্ট স্ট্রেসের রেসিপি। তুলনা: সোশ্যাল মিডিয়ায় অন্যদের লাইফস্টাইল দেখে নিজেদের সাধারণ জীবনের সাথে তুলনা করি। FOMO (Fear of Missing Out): সবসময় মনে হয়, অন্যরা আমাদের চেয়ে বেশি আনন্দ করছে বা এগিয়ে যাচ্ছে। নেতিবাচকতা: নেতিবাচক খবর এবং কনটেন্ট আমাদের মস্তিষ্কে সরাসরি স্ট্রেসের প্রতিক্রিয়া তৈরি করে। খাবার এবং স্ট্রেসের মধ্যে গোপন যোগসূত্র আপনার পেট এবং মস্তিষ্ক সরাসরি সংযুক্ত (Gut-Brain Axis)। আপনি যা খান, তা আপনার মানসিক অবস্থাকে গভীরভাবে প্রভাবিত করে। খারাপ খাবার: প্রক্রিয়াজাত, চিনিযুক্ত খাবার আপনার শরীরে প্রদাহ (inflammation) তৈরি করে, যা মস্তিষ্কে স্ট্রেসের সংকেত পাঠায়। ভালো খাবার: প্রাকৃতিক এবং স্বাস্থ্যকর খাবার এই প্রদাহ কমায় এবং আপনার মনকে শান্ত রাখতে সাহায্য করে। ব্রেক নেওয়া অলসতা নয়, এটি উচ্চ পারফরম্যান্সের জন্য অপরিহার্য। আমাদের মস্তিষ্ক একটানা মনোযোগ ধরে রাখতে পারে না। ছোট ছোট বিরতি আপনার ফোকাস এবং সৃজনশীলতাকে রিচার্জ করে। যে জিনিসগুলো আপনাকে অজান্তেই স্ট্রেস দিচ্ছে! সারাদিন বসে থাকা: এটি শরীরকে একটি নিষ্ক্রিয় অবস্থায় রাখে, যা স্ট্রেস বাড়ায়। স্ক্রিন টাইম: ফোনের নীল আলো আমাদের ঘুম এবং মানসিক অবস্থাকে নষ্ট করে দেয়। শব্দ দূষণ: শব্দ আমাদের নার্ভাস সিস্টেমকে উত্তেজিত রাখে। মাল্টিটাস্কিং একটি মিথ: এটি আপনার ব্রেনকে ধ্বংস করছে জনসংখ্যার মাত্র ২% মানুষ সত্যিকারের মাল্টিটাস্কিং করতে পারে। বাকি ৯৮% যা করে, তা হলো টাস্ক-সুইচিং। অর্থাৎ, দ্রুত এক কাজ থেকে অন্য কাজে মনোযোগ সরানো, যা আমাদের মস্তিষ্কের শক্তি ক্ষয় করে, ভুল বাড়ায় এবং স্ট্রেসের মাত্রা বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়। একটি সহজ কিন্তু অত্যন্ত কার্যকর কৌশল হলো ফিজিওলজিক্যাল সাই (Physiological Sigh) বা দীর্ঘ শ্বাস ছাড়ার মতো কৌশল। যখন আপনি শ্বাস ছাড়ার সময়টাকে শ্বাস নেওয়ার চেয়ে দীর্ঘ করেন, তখন এটি আপনার প্যারাসিম্প্যাথেটিক নার্ভাস সিস্টেমকে সক্রিয় করে এবং তাৎক্ষণিকভাবে আপনাকে শান্ত করে। যখন মাথায় হাজারো চিন্তা ঘুরপাক খায়, তখন তা একটি কাগজে লিখে ফেলুন। এই প্রক্রিয়াটি আপনার মস্তিষ্ক থেকে চিন্তার বোঝা নামিয়ে দেয় এবং আপনাকে পরিস্থিতিকে আরও স্পষ্টভাবে দেখতে সাহায্য করে। এটি ওভারথিংকিং কমানোর অন্যতম সেরা বৈজ্ঞানিক উপায়। অটো-পাইলট মোডে জীবন কাটানো বন্ধ করুন যখন আমরা প্রতিদিন একই রুটিনে জীবন কাটাই এবং কোনো কিছু নিয়ে সচেতনভাবে চিন্তা করি না, তখন জীবন অর্থহীন মনে হতে শুরু করে। অটো-পাইলট মোড থেকে বেরিয়ে এসে ছোট ছোট বিষয়ে মনোযোগ দিন যেমন, আপনার সকালের কফির স্বাদ বা প্রকৃতির সৌন্দর্য। একাকীত্ব শুধু একটি মানসিক অনুভূতি নয়, এটি একটি মারাত্মক শারীরিক স্বাস্থ্য ঝুঁকি। গবেষণায় দেখা গেছে, দীর্ঘস্থায়ী একাকীত্ব দিনে ১৫টি সিগারেট খাওয়ার মতোই ক্ষতিকর। অর্থপূর্ণ মানবিক সংযোগ আমাদের মানসিক এবং শারীরিক স্বাস্থ্যের জন্য অপরিহার্য।
    Love
    1
    0 Commentarios 0 Acciones 42 Views
Resultados de la búsqueda
BlackBird Ai
https://bbai.shop