আগ্নেয়গিরিতে কেন ফেলা হয় না পৃথিবীর সব আবর্জনা?
অনেকের মনে প্রশ্ন জাগে—পৃথিবীর বিপুল পরিমাণ আবর্জনা যদি সক্রিয় আগ্নেয়গিরিতে ফেলে দেওয়া যায়, তবে তো সহজেই তা গলে বা পুড়ে ধ্বংস হয়ে যাবে। তবে বাস্তবতা হলো, আগ্নেয়গিরির উচ্চ তাপমাত্রা সত্ত্বেও অনেক ধরণের আবর্জনা (বিশেষ করে প্লাস্টিক ও রাসায়নিক বর্জ্য) পুরোপুরি ভাঙে না, বরং এগুলো থেকে তৈরি হয় বিষাক্ত গ্যাস যা পরিবেশে মারাত্মক প্রভাব ফেলে। এই গ্যাসগুলো বাতাসে ছড়িয়ে গিয়ে মানুষের স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি বাড়ায়।
অন্যদিকে, পৃথিবীতে সক্রিয় আগ্নেয়গিরির সংখ্যা খুবই সীমিত এবং সেগুলোর বেশিরভাগই দুর্গম অঞ্চলে অবস্থিত। এত বিপুল পরিমাণ আবর্জনা সেসব স্থানে নিয়ে যাওয়া বাস্তবিক ও অর্থনৈতিকভাবে অসম্ভব। তদ্ব্যতীত, আগ্নেয়গিরির অভ্যন্তরে চাপ ও গ্যাসের ভারসাম্য থাকে অত্যন্ত সংবেদনশীল। সেখানে যেকোনো রাসায়নিকভাবে প্রতিক্রিয়াশীল বস্তু ফেলা হলে, তা তাপ, গ্যাস ও চাপের একটি চেইন বিক্রিয়া শুরু করতে পারে। এর ফলে হঠাৎ করে অগ্ন্যুৎপাত ঘটতে পারে, এমনকি আশপাশের ভূস্তরে চাপ পরিবর্তনের মাধ্যমে আরও বিস্তৃত ভূকম্পন বা আগ্নেয়গিরি সক্রিয় হওয়ার ঝুঁকি দেখা দিতে পারে।
বিজ্ঞান বলছে, পৃথিবীর আবর্জনা ব্যবস্থাপনার টেকসই উপায় হলো—আবর্জনা কমানো, পুনর্ব্যবহার বাড়ানো এবং পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তির ব্যবহার। Waste-to-energy, রিসাইক্লিং, বায়োডিগ্রেডেবল পণ্য ব্যবহারের মাধ্যমে আমরা পরিবেশ রক্ষা করতে পারি। আগ্নেয়গিরি কোনো জাদুর ডাস্টবিন নয়—বরং এটি এক জটিল ভূবৈজ্ঞানিক ব্যবস্থা, যার সঙ্গে আমাদের আচরণ হওয়া উচিত সাবধানী ও বিজ্ঞানসম্মত।