-
-
Explore Our Features
-
-
-
-
-
-
-
-
-
Ai and Tools
-
-
-
-
-
আমি তো আগে একজন মানুষ, তারপর ফুটবলার।

"কেউ যখন আপনার মা-বোনকে নিয়ে অপমানজনক কথা বলবে, আপনি একবার-দুবার না শোনার ভান করে থাকতে পারেন।
কিন্তু তৃতীয়বার কেউ যদি একই কাজ করে, তখন প্রতিক্রিয়া দেখানোটাই স্বাভাবিক।
আর কিছু কথা এমন, যা যেকোনো মানুষের পক্ষে হজম করা কঠিন।
কিছু কথা আছে, যা মানুষকে ভীষণ আঘাত করতে পারে।
এমন সব কথা যেটা শুনলে মনে হবে, ওর মুখে ঘুষি মেরে দিই।"
ঐ ঘটনার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে এভাবেই বলেছিলেন জিনেদিন জিদান।
ঘুষি মারেন নি বটে, তবে 'ঢুঁস'টা ঠিকই মেরেছিলেন জিদান।তারিখটা ৯ জুলাই, ২০০৬।
ফুটবল বিশ্বকাপের ফাইনালে মুখোমুখি ইতালি ও ফ্রান্স।
বিশ্বকাপ মানেই একটা আবেগ। বিশ্বকাপ বললেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে কত আনন্দ-বেদনার ছবি।
তেমনি একটি ছবি চিরদিনের জন্য ঠাঁই পেয়ে গেছে ফুটবল ইতিহাসের অ্যালবামে।
২০০৬ বিশ্বকাপ ফাইনালের দুই গোলদাতা যে ছবির দুটি চরিত্র। জিনেদিন জিদান ও মার্কো মাতেরাজ্জি।
না, গোলের কারণে নয়, ছবিটা বিখ্যাত বা কুখ্যাত হয়ে আছে বিশ্বকাপে অভূতপূর্ব ও অভাবনীয় একটা ঘটনার কারণে।
মাতেরাজ্জিকে ঢুস মারছেন জিদান!
বার্লিনে ৯ জুলাই ২০০৬ বিশ্বকাপ ফাইনালে জিদানের এই পাগুলে কাণ্ড নিয়ে কতজন কত কী লিখেছেন!
রচিত হয়েছে গল্প-কবিতা, গড়া হয়েছে ভাস্কর্যও।
অনেকের মতে, সেই ঢুসেই শেষ হয়ে গিয়েছিল ফ্রান্সের দ্বিতীয়বারের মতো বিশ্বকাপ জেতার আশাও।
পরে জিদান আরও বলেছিলেন যে, "যা করেছি তার জন্য আমি গর্বিত নই, কিন্তু একই সঙ্গে ওই আচরণের জন্য আমি অনুতপ্তও নই।
কারণ, অনুতপ্ত হওয়া মানে স্বীকার করা যে মাতেরাজ্জি যেটা করেছিল, সেটা ঠিক।
আমার পক্ষে সেটা মেনে নেওয়া সম্ভব নয়।"
উল্টোদিকে মাতেরাজ্জির ভাষ্য ছিল এমন, "জিদানের ঢুস? ওটা আমি একদমই কল্পনা করিনি।
পুরো ঘটনাটা এত হঠাৎ ঘটেছিল যে আমি কিছুই বুঝে উঠতে পারিনি।
ভাগ্য ভালো।
কারণ, যদি আগে থেকে আঁচ করতে পারতাম, তাহলে হয়তো দুজনেই লাল কার্ড খেতাম।
ম্যাচের মধ্যে বক্সের ভেতর তৃতীয়বার ধাক্কাধাক্কির সময় আমি ভ্রু কুঁচকে তাকালাম।
জিদান আমাকে বলল, ‘তোমার যদি আমার জার্সি দরকার হয়, ম্যাচের পরে এসো, দিয়ে দেব।’
আমি বললাম, ‘জার্সির চেয়ে তোমার বোনকেই আমার বেশি পছন্দ।
কথাটা আসলেই নির্বোধের মতো হয়ে গিয়েছিল।
কিন্তু এমন প্রতিক্রিয়া পাওয়ার মতো ছিল না।
রোম, নেপলস, তুরিন, মিলান বা প্যারিসের যেকোনো পাড়ায় এর চেয়ে অনেক বাজে কথা রোজ শুনি।
অনেক পত্রিকায় লেখা হয়েছে আমি নাকি ওর মাকে নিয়ে বাজে কথা বলেছিলাম।
আমি ওর মাকে নিয়ে কিছুই বলিনি।
আমি যখন খুব ছোট, তখনই আমার মা মারা গিয়েছিলেন।
আমি কোনো দিন কারও মাকে নিয়ে বাজে কথা বলিনি, বলব না।"
