• বাংলা ভাষার প্রাচীনতম নিদর্শন চর্যাপদ দেখতে কেমন এবং চর্যাপদ এর ঐতিহাসিক গুরুত্ব।

    চর্যাপদ ১৯১৬ সালে প্রকাশিত হাজার বছরের পুরাণ বাঙ্গালা ভাষায় রচিত বৌদ্ধ গান ও দোঁহা নামক গ্রন্থের সাড়ে ছেচল্লিশটি গান। চর্যাপদে বৌদ্ধধর্মের সাধনপ্রণালী ও দর্শনতত্ত্ব নানা প্রকার রূপকের মাধ্যমে আভাসে ইঙ্গিতে ব্যক্ত হয়েছে। বাংলা সাহিত্যের আদি নিদর্শন চর্যাপদ। তাই বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস চর্যাপদ থেকেই শুরু।

    মূলত ১৮৮২সালে রাজা রাজেন্দ্র লাল মিত্র নেপালে সংস্কৃত বৌদ্ধ সাহিত্য গ্রন্থে চর্যাপদের অস্তিত্বের কথা বলেন। ১৯০৭ সালে হরপ্রসাদ শাস্ত্রী তৃতীয়বার নেপাল ভ্রমণকালে চর্যাচর্যবিনিশ্চয় নামক একটি পুঁথি নেপাল রাজদরবারের অভিলিপিশালায় আবিষ্কার করেন। হরপ্রসাদ শাস্ত্রী মোট ৪৬টি পূর্ণাঙ্গ ও একটি খণ্ডিত পদ পেয়েছিলেন। পুঁথির কয়েকটি পাতা ছেঁড়া ছিল। মূলপুঁথির পদের সংখ্যা ৫১। এর নাম চর্যাগীতিকোষ যাতে ১০০টি পদ ছিল।

    চর্যাপদের ভাষা প্রতীকী প্রকৃতির। অনেক ক্ষেত্রে কিছু শব্দের আভিধানিক অর্থের কোনো মানে হয় না। অনেকে বিশ্বাস করেন, এটি ছিল অপ্রশিক্ষিতদের কাছ থেকে পবিত্র জ্ঞান গোপন করার জন্য, অন্যরা মনে করে যে এটি ধর্মীয় নিপীড়ন এড়াতে করা হয়েছে। চর্যাপদের ভাষা নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছিল পরবর্তীকালে যার অবসান হয়েছে। চর্যাপদের রচয়িতাগণ সংস্কৃতে পারদর্শী হলেও তৎকালীন অপরিণত বাংলাতেই পদগুলি রচনা করেছিলেন। প্রাচীন কবিদের মতে এতে সন্ধ্যা বা আলোআঁধারি ভাষা ব্যবহার করা হয়।

    কাব্যকলা কালোত্তীর্ণ হলেও তা সমকালীন সমাজ ও জীবনের প্রতিচ্ছবি। সেই দৃষ্টিতে চর্যাপদ বাংলা সাহিত্যের প্রাচীনতম ঐতিহাসিক নিদর্শন। পাল ও সেন রাজাদের দীর্ঘ রাজনৈতিক উত্থান পতনের অস্থিরতায় বাংলার সমাজ জীবনে যে ভাঙা-গড়া, চর্যাপদে তারই প্রতিফলন ঘটেছে।

    চর্যাযুগের বাংলাদেশে বিভিন্ন আদর্শ সমন্বয়ের আত্মব্যাপ্তি ও আত্মস্বাতন্ত্র রক্ষার প্রবল সচেতনা প্রচলিত ছিল। চর্যার ধর্মমতের মধ্যে ব্রাহ্মণ্যতান্ত্রিক দেহবাদের ধারা অনেকটাই প্রবেশ করেছিল। নীহাররঞ্জন রায়ের মতে এই মিলন পাল পর্বের শেষের দিকে শুরু হয়েছিল। বৌদ্ধ সাধনার সঙ্গে বাংলার এই তান্ত্রিক সহজ সাধনার যোগবন্ধন একটি ঐতিহাসিক ঘটনা।

    ভিন্ন ধর্মের সাধন পদ্ধতির সমন্বয় ঘটলেও আর্য ব্রাহ্মণ্য সংস্কৃতি স্বাতন্ত্রপ্রিয় বাংলায় সাদর অভ্যর্থনা লাভ করেনি। কিন্তু বৌদ্ধ তান্ত্রিক সাধনা খুব সহজেই স্বাতন্ত্রপ্রিয় বাঙালির হৃদয় জয় করেছিল।

    চর্যাপদ আবিষ্কারের পূর্বে বাংলা সাহিত্যের প্রাচীনতম যুগ সীমানা ছিল মনসামঙ্গল। কিন্তু চর্যাপদ আবিষ্কৃত হওয়ায় তা প্রায় আড়াইশো বছর অতীতে সম্প্রসারিত হয়। বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা।

    তৎকালীন বঙ্গালদেশ বা পূর্ববঙ্গেও বৌদ্ধ ধর্ম প্রচার লাভ করেছিল- এ ঐতিহাসিক ঘটনার সাক্ষ্য বহন করে - "আদি ভুসুক বঙ্গালি ভইলী" পদটি। তখনকার উচ্চ- নীচ, স্পৃশ্য, অস্পৃশ্য, ভেদাভেদ বিদীর্ণ সমাজের কলঙ্কিত মুখচ্ছবি প্রকাশিত হয়েছে চর্চার কোনো কোনো পদে। অস্পৃশ্য বলে একঘরে করে রাখার প্রথাও প্রচলিত ছিল। "টালতো ঘর মোর নাহি পড়বেষী"- পদটিতে তার প্রমাণ মেলে।

    সমকালীন জীবনচিত্রও ইতিহাসের একটি অংশ। নদীমাতৃক বাংলার খেয়া ও সাঁকো পারাপারের দৃশ্য, নৌকার বিভিন্ন অংশের বর্ণনা, মানুষের আমোদ-প্রমোদ, পোশাক-পরিচ্ছদ, নৃত্যগীত, অভাব-অনটন এমনকি শুঁড়িখানার মদ্যপানের চিত্রও অংকিত হয়েছে। এ সকল খণ্ডচিত্রে তৎকালীন যুগ, সমাজ ও জীবনচিত্র আমাদের সামনে উজ্জ্বল হয়ে ওঠে।

    চর্যাপদ যদিও বৌদ্ধ সাধন সঙ্গীত তা সত্বেও তা সমকালীন ইতিহাসের জীবন্ত দলিল।

    #viewers #highlight #virals #everyone #followers
    #প্রত্নতত্ত্ব #ইতিহাস #archaeology #সাহিত্য #virals
    বাংলা ভাষার প্রাচীনতম নিদর্শন চর্যাপদ দেখতে কেমন এবং চর্যাপদ এর ঐতিহাসিক গুরুত্ব। চর্যাপদ ১৯১৬ সালে প্রকাশিত হাজার বছরের পুরাণ বাঙ্গালা ভাষায় রচিত বৌদ্ধ গান ও দোঁহা নামক গ্রন্থের সাড়ে ছেচল্লিশটি গান। চর্যাপদে বৌদ্ধধর্মের সাধনপ্রণালী ও দর্শনতত্ত্ব নানা প্রকার রূপকের মাধ্যমে আভাসে ইঙ্গিতে ব্যক্ত হয়েছে। বাংলা সাহিত্যের আদি নিদর্শন চর্যাপদ। তাই বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস চর্যাপদ থেকেই শুরু। মূলত ১৮৮২সালে রাজা রাজেন্দ্র লাল মিত্র নেপালে সংস্কৃত বৌদ্ধ সাহিত্য গ্রন্থে চর্যাপদের অস্তিত্বের কথা বলেন। ১৯০৭ সালে হরপ্রসাদ শাস্ত্রী তৃতীয়বার নেপাল ভ্রমণকালে চর্যাচর্যবিনিশ্চয় নামক একটি পুঁথি নেপাল রাজদরবারের অভিলিপিশালায় আবিষ্কার করেন। হরপ্রসাদ শাস্ত্রী মোট ৪৬টি পূর্ণাঙ্গ ও একটি খণ্ডিত পদ পেয়েছিলেন। পুঁথির কয়েকটি পাতা ছেঁড়া ছিল। মূলপুঁথির পদের সংখ্যা ৫১। এর নাম চর্যাগীতিকোষ যাতে ১০০টি পদ ছিল। চর্যাপদের ভাষা প্রতীকী প্রকৃতির। অনেক ক্ষেত্রে কিছু শব্দের আভিধানিক অর্থের কোনো মানে হয় না। অনেকে বিশ্বাস করেন, এটি ছিল অপ্রশিক্ষিতদের কাছ থেকে পবিত্র জ্ঞান গোপন করার জন্য, অন্যরা মনে করে যে এটি ধর্মীয় নিপীড়ন এড়াতে করা হয়েছে। চর্যাপদের ভাষা নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছিল পরবর্তীকালে যার অবসান হয়েছে। চর্যাপদের রচয়িতাগণ সংস্কৃতে পারদর্শী হলেও তৎকালীন অপরিণত বাংলাতেই পদগুলি রচনা করেছিলেন। প্রাচীন কবিদের মতে এতে সন্ধ্যা বা আলোআঁধারি ভাষা ব্যবহার করা হয়। কাব্যকলা কালোত্তীর্ণ হলেও তা সমকালীন সমাজ ও জীবনের প্রতিচ্ছবি। সেই দৃষ্টিতে চর্যাপদ বাংলা সাহিত্যের প্রাচীনতম ঐতিহাসিক নিদর্শন। পাল ও সেন রাজাদের দীর্ঘ রাজনৈতিক উত্থান পতনের অস্থিরতায় বাংলার সমাজ জীবনে যে ভাঙা-গড়া, চর্যাপদে তারই প্রতিফলন ঘটেছে। চর্যাযুগের বাংলাদেশে বিভিন্ন আদর্শ সমন্বয়ের আত্মব্যাপ্তি ও আত্মস্বাতন্ত্র রক্ষার প্রবল সচেতনা প্রচলিত ছিল। চর্যার ধর্মমতের মধ্যে ব্রাহ্মণ্যতান্ত্রিক দেহবাদের ধারা অনেকটাই প্রবেশ করেছিল। নীহাররঞ্জন রায়ের মতে এই মিলন পাল পর্বের শেষের দিকে শুরু হয়েছিল। বৌদ্ধ সাধনার সঙ্গে বাংলার এই তান্ত্রিক সহজ সাধনার যোগবন্ধন একটি ঐতিহাসিক ঘটনা। ভিন্ন ধর্মের সাধন পদ্ধতির সমন্বয় ঘটলেও আর্য ব্রাহ্মণ্য সংস্কৃতি স্বাতন্ত্রপ্রিয় বাংলায় সাদর অভ্যর্থনা লাভ করেনি। কিন্তু বৌদ্ধ তান্ত্রিক সাধনা খুব সহজেই স্বাতন্ত্রপ্রিয় বাঙালির হৃদয় জয় করেছিল। চর্যাপদ আবিষ্কারের পূর্বে বাংলা সাহিত্যের প্রাচীনতম যুগ সীমানা ছিল মনসামঙ্গল। কিন্তু চর্যাপদ আবিষ্কৃত হওয়ায় তা প্রায় আড়াইশো বছর অতীতে সম্প্রসারিত হয়। বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। তৎকালীন বঙ্গালদেশ বা পূর্ববঙ্গেও বৌদ্ধ ধর্ম প্রচার লাভ করেছিল- এ ঐতিহাসিক ঘটনার সাক্ষ্য বহন করে - "আদি ভুসুক বঙ্গালি ভইলী" পদটি। তখনকার উচ্চ- নীচ, স্পৃশ্য, অস্পৃশ্য, ভেদাভেদ বিদীর্ণ সমাজের কলঙ্কিত মুখচ্ছবি প্রকাশিত হয়েছে চর্চার কোনো কোনো পদে। অস্পৃশ্য বলে একঘরে করে রাখার প্রথাও প্রচলিত ছিল। "টালতো ঘর মোর নাহি পড়বেষী"- পদটিতে তার প্রমাণ মেলে। সমকালীন জীবনচিত্রও ইতিহাসের একটি অংশ। নদীমাতৃক বাংলার খেয়া ও সাঁকো পারাপারের দৃশ্য, নৌকার বিভিন্ন অংশের বর্ণনা, মানুষের আমোদ-প্রমোদ, পোশাক-পরিচ্ছদ, নৃত্যগীত, অভাব-অনটন এমনকি শুঁড়িখানার মদ্যপানের চিত্রও অংকিত হয়েছে। এ সকল খণ্ডচিত্রে তৎকালীন যুগ, সমাজ ও জীবনচিত্র আমাদের সামনে উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। চর্যাপদ যদিও বৌদ্ধ সাধন সঙ্গীত তা সত্বেও তা সমকালীন ইতিহাসের জীবন্ত দলিল। #viewers #highlight #virals #everyone #followers #প্রত্নতত্ত্ব #ইতিহাস #archaeology #সাহিত্য #virals
    0 Comments 0 Shares 24 Views
  • ইতালি— বেইলর বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্যঅনুযায়ী সান জুলিয়ানো আর্কিওলজিক্যাল রিসার্চ প্রজেক্টের প্রত্নতত্ত্ববিদরা একটা বিরল ইট্রাসকান কবর আবিষ্কার করে ফেলেছেন। বলা যেতে পারে বর্তমান সময়ের সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কারগুলোর মধ্যে এটি একটি।

    ২০১৬ সালে রোম শহর থেকে ৪০ মাইল দূরে সান জুলিয়ানো এলাকায় খনন কাজ চলছিল। খনন কাজ চলার সময় প্রাচীন ইট্রাসকান শহরটির চারপাশে ৬০০-রও বেশি কবর তারা চিহ্নিত করেছিলেন। কিন্তু এই প্রথম তারা সম্পূর্ণ অক্ষত এবং সিল করা একটি কবর তারা খুঁজে পেয়েছেন। সবচাইতে ভাগ্যের বিষয় এটি এর আগে কেউ খুঁড়েও দেখেনি বা এটাকে লুটও করা হয়নি।

    প্রায় খ্রিস্টপূর্ব ৪০০ সালের দিকে ছোট্ট সাদামাটা একটা বাড়ির মতন করে পাথর কেটে এই কবরটি তৈরি করা হয়েছে। করব খুলে চারজন ব্যক্তিকে পাথরের খোদাই করা এক বিছানায় শোয়ানো অবস্থায় পাওয়া গিয়েছে । আর কবরের আশপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে প্রায় ১১০টিরও বেশি নিদর্শন। মাটির তৈরি পাত্র, লোহার অস্ত্র, ব্রোঞ্জের অলংকার এবং রূপার তৈরি সূক্ষ্ম চুলের ক্লিপও সেখানে ছিল।

    প্রত্নতত্ত্ববিদ ডাভিদে জোরি বলেন, ইট্রাসকান সভ্যতা জানার জন্য এটি একটি অত্যন্ত দুর্লভ আবিষ্কার। রোম পূর্ব সময়ে এই ইট্রাসকানরা কিভাবে তাদের জীবন যাপন করতো, কি ধরনের সংস্কৃতির ধারক বাহক তারা ছিল, কেমন ভাবে তাদের কবর দেওয়া হতো তার একটা চাক্ষুষ প্রমাণ তার কাছে ধরা পরলো। প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে ৪ জন মৃতব্যক্তি রয়েছে এই সমাধিতে। তাদের মধ্যে সম্ভবত দুজন নারী এবং পুরুষ জুটি ছিলেন। তবে গবেষণা চলছে। বিস্তারিত আরো তথ্য সামনে পাওয়া যাবে l

    https://www.livescience.com/archaeology/pristine-etruscan-tomb-discovered-in-italy-contains-more-than-100-untouched-artifacts

    Stay Curious SIS
    Siddique’s international school
    🔺 ইতালি— বেইলর বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্যঅনুযায়ী সান জুলিয়ানো আর্কিওলজিক্যাল রিসার্চ প্রজেক্টের প্রত্নতত্ত্ববিদরা একটা বিরল ইট্রাসকান কবর আবিষ্কার করে ফেলেছেন। বলা যেতে পারে বর্তমান সময়ের সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কারগুলোর মধ্যে এটি একটি। ২০১৬ সালে রোম শহর থেকে ৪০ মাইল দূরে সান জুলিয়ানো এলাকায় খনন কাজ চলছিল। খনন কাজ চলার সময় প্রাচীন ইট্রাসকান শহরটির চারপাশে ৬০০-রও বেশি কবর তারা চিহ্নিত করেছিলেন। কিন্তু এই প্রথম তারা সম্পূর্ণ অক্ষত এবং সিল করা একটি কবর তারা খুঁজে পেয়েছেন। সবচাইতে ভাগ্যের বিষয় এটি এর আগে কেউ খুঁড়েও দেখেনি বা এটাকে লুটও করা হয়নি। প্রায় খ্রিস্টপূর্ব ৪০০ সালের দিকে ছোট্ট সাদামাটা একটা বাড়ির মতন করে পাথর কেটে এই কবরটি তৈরি করা হয়েছে। করব খুলে চারজন ব্যক্তিকে পাথরের খোদাই করা এক বিছানায় শোয়ানো অবস্থায় পাওয়া গিয়েছে । আর কবরের আশপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে প্রায় ১১০টিরও বেশি নিদর্শন। মাটির তৈরি পাত্র, লোহার অস্ত্র, ব্রোঞ্জের অলংকার এবং রূপার তৈরি সূক্ষ্ম চুলের ক্লিপও সেখানে ছিল। প্রত্নতত্ত্ববিদ ডাভিদে জোরি বলেন, ইট্রাসকান সভ্যতা জানার জন্য এটি একটি অত্যন্ত দুর্লভ আবিষ্কার। রোম পূর্ব সময়ে এই ইট্রাসকানরা কিভাবে তাদের জীবন যাপন করতো, কি ধরনের সংস্কৃতির ধারক বাহক তারা ছিল, কেমন ভাবে তাদের কবর দেওয়া হতো তার একটা চাক্ষুষ প্রমাণ তার কাছে ধরা পরলো। প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে ৪ জন মৃতব্যক্তি রয়েছে এই সমাধিতে। তাদের মধ্যে সম্ভবত দুজন নারী এবং পুরুষ জুটি ছিলেন। তবে গবেষণা চলছে। বিস্তারিত আরো তথ্য সামনে পাওয়া যাবে l https://www.livescience.com/archaeology/pristine-etruscan-tomb-discovered-in-italy-contains-more-than-100-untouched-artifacts Stay Curious SIS Siddique’s international school
    0 Comments 0 Shares 30 Views
  • আপনি না থাকলে আমরা পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ প্রতিশোধের কাহিনি পেতাম না, যে কাহিনি ভেঙে ভেঙে আজও সিনেমা-গল্পে রোজ নতুন করে বলা হচ্ছে। আপনি না থাকলে যমজ ভাইদের নিয়ে সাহিত্যে এতটা উৎসাহই তৈরি হত না বোধ হয়। আর ঢালতরোয়ালের ঝনঝনানির মতো গাদাবন্দুকের গুলিকেও রোমান্টিক করে তোলার ক্ষমতা আপনার মতো ছিল না স্যার ওয়াল্টার স্কটের। কিন্তু আপনি যে রবিন হুডের কাহিনিও লিখেছেন তা ভুলে যাই আমরা অনেক সময়েই। আবার ডার্ট্যানিয়ানকে নিয়ে গোয়েন্দাগল্পও লিখেছেন।

    একের পর এক তাক লাগানো নাটকীয় কাহিনি লিখেছেন, কিন্তু আপনার নিজের পারিবারিক ইতিহাসও তো কম গল্পের মতো ছিল না। পিতামহ ছিলেন ফরাসী অভিজাত পুরুষ, পিতামহী কৃষ্ণাঙ্গী ক্রীতদাসী। পিতা থমাস-আলেক্সান্দারের নিজের পিতৃ-পদবী ব্যবহারের অধিকার ছিল না। তিনি মায়ের পদবীকেই আঁকড়ে ধরেছিলেন। যে পদবীকে বিশ্ববিখ্যাত করবেন আপনি। পিতা কৃষ্ণাঙ্গ, অভিজাতের জারজ সন্তান হয়েও হয়ে উঠেছিলেন ফরাসী সেনাবাহিনীর ডাকসাইটে সেনাপতি। বিপ্লব-পরবর্তী ফ্রান্সের সেনাবাহিনীতে কৃষ্ণাঙ্গ হয়েও সেনাপতি হয়ে ওঠা সম্ভব ছিল, কিন্তু সম্মান পাওয়া ততখানি সম্ভব ছিল না। চিরকাল নেপোলিয়নের চক্ষুশূল হয়েই কাটাতে হয়েছিল তাঁকে। আর আপনি? ফরাসী সাহিত্যের রাজপুত্র। ফরাসী রোমান্টিসিজমের দিকপাল। ঐতিহাসিক উপন্যাসের নেপোলিয়ন। তুখোড় নাট্যকার, ঔপন্যাসিক, সমালোচক। উদ্দাম নারীসঙ্গ করার জন্যও বিখ্যাত।

    অথচ আপনাকে নিজের পরিচয় গড়ে তোলার জন্য সমাজের পাথরও কম কাটতে হয়নি। আপনার চামড়ার রং কালো, মাথার চুল কোঁকড়া, বাবা ঘোষিত ভাবেই দাসীর সন্তান। আপনি যখন খ্যাতির মধ্যগগনে তখনও ফরাসী অভিজাতদের কাছ থেকে 'নিগ্রো' বলে টিটকিরি শুনেছেন। কিন্তু ফরাসী নীল রক্তের সমাজ এটাও ভুলতে পারেনি যে আপনার ধমনীতে বয়ে চলেছিল যে 'নিগ্রো'-র লাল রক্ত, সেই মানুষটির তেজস্বিতার সামনে ফণা নামাতে হয়েছিল খোদ নেপোলিয়ন বোনাপার্টকেও। আলেক্সান্দ্রিয়া থেকে কায়রো অভিযানের পথে নিজের সৈন্যদের নাজেহাল অবস্থা দেখে ঠোঁটকাটা সেনাপতি থমাস-আলেক্সান্দার ঝগড়া বাধিয়ে বসেন স্বয়ং সর্বাধিনায়ক নেপোলিয়নের সঙ্গে। পরিণামে ক্রুদ্ধ নেপোলিয়ন দেশে পাঠিয়ে দিতে চেয়েছিলেন তাঁকে, নিতান্ত দৈববশে কিংবা ইংরেজ সেনাপতি নেলসনের দরুনই দেশে ফেরা হল না তাঁর। ফেরার পথে জাহাজ বানচাল হয়ে বীর সেনাপতির অনেকগুলো বছর কাটে শত্রু দেশের এক জেলখানায়, অসুস্থ দেহে-মনে। দেশে ফেরার পর বাকি জীবনে তিনি আর হারানো সম্মান ফিরে পাননি, আর আপনার লড়াইটাও তাই বেড়েও গিয়েছিল বহুগুণ। 'কাউন্ট অফ মন্টি ক্রিস্টো' লেখার সময় এই ঘটনার ছায়াও কি আপনার মনের উপর পড়েছিল? প্রবল ঝড়ের সামনেও মাথা না নোয়ানোর শিক্ষা বুঝি আপনি বাবার থেকেই পেয়েছিলেন। তাই বুঝি আপনার কিশোর নায়ক ডার্ট্যানিয়ান গ্যাস্কনি থেকে প্যারিসে রওনা দেওয়ার আগে তার বাবা উপদেশ দেন, 'বিন্দুমাত্র অসম্মান দেখলেই রুখে দাঁড়াবে। লড়াই করবে। সাহস না দেখালে এই সমাজে উন্নতি করতে পারবে না।'

    সমাজের উপরতলা থেকে নেমে আসা চরম বিশ্বাসঘাতকতা, আর তার প্রতিবাদে চরমতম প্রতিহিংসা নেওয়া তো আপনার সব কাহিনিতেই দেখতে পাই। এক অদ্ভুত দেশাত্মবোধ বুঝি তাই খেলা করে বেড়ায় আপনার লেখা জুড়ে। দেশের উপরে কেউ নয়, এমন কী দেশের সর্বোচ্চ শক্তি রাজাও নন। মন্টি ক্রিস্টোর বজ্র নেমে আসে সমাজের কর্তাব্যক্তিদের উপরে। অ্যাথোস-পোর্থস-অ্যারামিস-ডার্ট্যানিয়ান রাজা ত্রয়োদশ লুই আর কার্ডিনাল রিশলিউয়ের হাজারটা খুঁত খুঁজে বার করেও সেগুলো ঢাকাচাপা দিতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে কারণ তারা কর্তব্যে বাঁধা। আর বৃদ্ধ মাস্কেটিয়াররা খোদ রাজাকেই পালটে দিতে চায় নিঃশব্দে বিপ্লব ঘটিয়ে। এবং এ সবই আপনি দেখান--হচ্ছে ফ্রান্সের জন্য, দেশের স্বার্থে। এর পিছনেও কি আপনার বাবারই ছায়া, দেশের সর্বোচ্চ ক্ষমতাশালী মানুষটির দ্বারা বঞ্চিত হয়েও দেশের প্রতি যাঁর ভালোবাসা ছিল অটুট?

    আপনি আমার অনেক উপকার করেছেন। আমার নিজের একটা দিক এক্সপ্লোর করতে সাহায্য করেছেন। আমিও অবশ্য আপনাকে কিছুটা সাহায্য করেছি। অনেকটা সেই মঁসিয়ে অগুস্ত ম্যাকের মতো - সেই যে, সেই ইতিহাসের শিক্ষক যাঁর সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে আপনি আপনার বিখ্যাততম উপন্যাসগুলো লিখেছিলেন। যিনি সেগুলোর প্লট খুঁজে এনে পরিচ্ছেদ ভাগ করে স্টোরিলাইন সাজিয়ে দিতেন আর আপনি মাসিক পত্রিকার পাতার দাবী মেনে সেই পরিচ্ছেদগুলিকে বাড়িয়ে যেতেন। বাচ্চা মাস্কেটিয়ারের প্রেম, বুড়ো মাস্কেটিয়ারের আত্মসম্মান, অন্ধকার জগতের বেতাজ বাদশার প্রতিশোধ - এ সব দিয়ে যে কী রোমান্সের মায়াকাজল পরিয়ে দিলেন আপনি বিশ্বের চোখে! এখনও আপনি ফ্রান্সের সব চেয়ে বেশি অনূদিত লেখকদের একজন।

    বহুকাল ধরে বাঙালিও মজেছে আপনার লেখায়। গত কয়েক বছর ধরে আমার চেয়ে ভালো আর কে জানে সে কথা? আপনাকে কেটেকুটে মশলা মাখিয়ে রাঁধতে হয়েছে আমায়। লোকে বলে খোশবাই না কি বেরিয়েছিল বেশ। কিন্তু আমি নিজে জানি আমি কোথায় কতটা বোকার মতো দুঃসাহস দেখিয়ে ফেলেছি। খোদার উপর খোদকারি করতে গিয়ে স্পর্ধাজনিত রসাভাস ঘটিয়ে ফেলে থাকলে নিজগুণে এ ক্ষুদ্র ভক্তকে ক্ষমা করবেন হে মায়েস্ত্রো।

    ঐতিহাসিক রোমান্সের রাজা, রাজকল্পনার জাদুকর, আজ থেকে ঠিক ২২৩ বছর আগে আপনি অবতীর্ণ হয়েছিলেন ইতিহাস আর সাহিত্যের মেলবন্ধন ঘটাবেন বলে। জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানবেন মঁসিয়ে আলেক্সান্দার দুমা (২৪ জুলাই ১৮০২ - ৫ ডিসেম্বর ১৮৭০)। ভালো থাকবেন, আশীর্বাদ করবেন।

    "One for all, and all for one!" 🙏🏼

    #শুভজন্মদিন #স্মরণ #happybirthday #alexandredumas #ব্যক্তিগত #thecountofmontecristo #thethreemusketeers #TheManInTheIronMask
    আপনি না থাকলে আমরা পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ প্রতিশোধের কাহিনি পেতাম না, যে কাহিনি ভেঙে ভেঙে আজও সিনেমা-গল্পে রোজ নতুন করে বলা হচ্ছে। আপনি না থাকলে যমজ ভাইদের নিয়ে সাহিত্যে এতটা উৎসাহই তৈরি হত না বোধ হয়। আর ঢালতরোয়ালের ঝনঝনানির মতো গাদাবন্দুকের গুলিকেও রোমান্টিক করে তোলার ক্ষমতা আপনার মতো ছিল না স্যার ওয়াল্টার স্কটের। কিন্তু আপনি যে রবিন হুডের কাহিনিও লিখেছেন তা ভুলে যাই আমরা অনেক সময়েই। আবার ডার্ট্যানিয়ানকে নিয়ে গোয়েন্দাগল্পও লিখেছেন। একের পর এক তাক লাগানো নাটকীয় কাহিনি লিখেছেন, কিন্তু আপনার নিজের পারিবারিক ইতিহাসও তো কম গল্পের মতো ছিল না। পিতামহ ছিলেন ফরাসী অভিজাত পুরুষ, পিতামহী কৃষ্ণাঙ্গী ক্রীতদাসী। পিতা থমাস-আলেক্সান্দারের নিজের পিতৃ-পদবী ব্যবহারের অধিকার ছিল না। তিনি মায়ের পদবীকেই আঁকড়ে ধরেছিলেন। যে পদবীকে বিশ্ববিখ্যাত করবেন আপনি। পিতা কৃষ্ণাঙ্গ, অভিজাতের জারজ সন্তান হয়েও হয়ে উঠেছিলেন ফরাসী সেনাবাহিনীর ডাকসাইটে সেনাপতি। বিপ্লব-পরবর্তী ফ্রান্সের সেনাবাহিনীতে কৃষ্ণাঙ্গ হয়েও সেনাপতি হয়ে ওঠা সম্ভব ছিল, কিন্তু সম্মান পাওয়া ততখানি সম্ভব ছিল না। চিরকাল নেপোলিয়নের চক্ষুশূল হয়েই কাটাতে হয়েছিল তাঁকে। আর আপনি? ফরাসী সাহিত্যের রাজপুত্র। ফরাসী রোমান্টিসিজমের দিকপাল। ঐতিহাসিক উপন্যাসের নেপোলিয়ন। তুখোড় নাট্যকার, ঔপন্যাসিক, সমালোচক। উদ্দাম নারীসঙ্গ করার জন্যও বিখ্যাত। অথচ আপনাকে নিজের পরিচয় গড়ে তোলার জন্য সমাজের পাথরও কম কাটতে হয়নি। আপনার চামড়ার রং কালো, মাথার চুল কোঁকড়া, বাবা ঘোষিত ভাবেই দাসীর সন্তান। আপনি যখন খ্যাতির মধ্যগগনে তখনও ফরাসী অভিজাতদের কাছ থেকে 'নিগ্রো' বলে টিটকিরি শুনেছেন। কিন্তু ফরাসী নীল রক্তের সমাজ এটাও ভুলতে পারেনি যে আপনার ধমনীতে বয়ে চলেছিল যে 'নিগ্রো'-র লাল রক্ত, সেই মানুষটির তেজস্বিতার সামনে ফণা নামাতে হয়েছিল খোদ নেপোলিয়ন বোনাপার্টকেও। আলেক্সান্দ্রিয়া থেকে কায়রো অভিযানের পথে নিজের সৈন্যদের নাজেহাল অবস্থা দেখে ঠোঁটকাটা সেনাপতি থমাস-আলেক্সান্দার ঝগড়া বাধিয়ে বসেন স্বয়ং সর্বাধিনায়ক নেপোলিয়নের সঙ্গে। পরিণামে ক্রুদ্ধ নেপোলিয়ন দেশে পাঠিয়ে দিতে চেয়েছিলেন তাঁকে, নিতান্ত দৈববশে কিংবা ইংরেজ সেনাপতি নেলসনের দরুনই দেশে ফেরা হল না তাঁর। ফেরার পথে জাহাজ বানচাল হয়ে বীর সেনাপতির অনেকগুলো বছর কাটে শত্রু দেশের এক জেলখানায়, অসুস্থ দেহে-মনে। দেশে ফেরার পর বাকি জীবনে তিনি আর হারানো সম্মান ফিরে পাননি, আর আপনার লড়াইটাও তাই বেড়েও গিয়েছিল বহুগুণ। 'কাউন্ট অফ মন্টি ক্রিস্টো' লেখার সময় এই ঘটনার ছায়াও কি আপনার মনের উপর পড়েছিল? প্রবল ঝড়ের সামনেও মাথা না নোয়ানোর শিক্ষা বুঝি আপনি বাবার থেকেই পেয়েছিলেন। তাই বুঝি আপনার কিশোর নায়ক ডার্ট্যানিয়ান গ্যাস্কনি থেকে প্যারিসে রওনা দেওয়ার আগে তার বাবা উপদেশ দেন, 'বিন্দুমাত্র অসম্মান দেখলেই রুখে দাঁড়াবে। লড়াই করবে। সাহস না দেখালে এই সমাজে উন্নতি করতে পারবে না।' সমাজের উপরতলা থেকে নেমে আসা চরম বিশ্বাসঘাতকতা, আর তার প্রতিবাদে চরমতম প্রতিহিংসা নেওয়া তো আপনার সব কাহিনিতেই দেখতে পাই। এক অদ্ভুত দেশাত্মবোধ বুঝি তাই খেলা করে বেড়ায় আপনার লেখা জুড়ে। দেশের উপরে কেউ নয়, এমন কী দেশের সর্বোচ্চ শক্তি রাজাও নন। মন্টি ক্রিস্টোর বজ্র নেমে আসে সমাজের কর্তাব্যক্তিদের উপরে। অ্যাথোস-পোর্থস-অ্যারামিস-ডার্ট্যানিয়ান রাজা ত্রয়োদশ লুই আর কার্ডিনাল রিশলিউয়ের হাজারটা খুঁত খুঁজে বার করেও সেগুলো ঢাকাচাপা দিতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে কারণ তারা কর্তব্যে বাঁধা। আর বৃদ্ধ মাস্কেটিয়াররা খোদ রাজাকেই পালটে দিতে চায় নিঃশব্দে বিপ্লব ঘটিয়ে। এবং এ সবই আপনি দেখান--হচ্ছে ফ্রান্সের জন্য, দেশের স্বার্থে। এর পিছনেও কি আপনার বাবারই ছায়া, দেশের সর্বোচ্চ ক্ষমতাশালী মানুষটির দ্বারা বঞ্চিত হয়েও দেশের প্রতি যাঁর ভালোবাসা ছিল অটুট? আপনি আমার অনেক উপকার করেছেন। আমার নিজের একটা দিক এক্সপ্লোর করতে সাহায্য করেছেন। আমিও অবশ্য আপনাকে কিছুটা সাহায্য করেছি। অনেকটা সেই মঁসিয়ে অগুস্ত ম্যাকের মতো - সেই যে, সেই ইতিহাসের শিক্ষক যাঁর সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে আপনি আপনার বিখ্যাততম উপন্যাসগুলো লিখেছিলেন। যিনি সেগুলোর প্লট খুঁজে এনে পরিচ্ছেদ ভাগ করে স্টোরিলাইন সাজিয়ে দিতেন আর আপনি মাসিক পত্রিকার পাতার দাবী মেনে সেই পরিচ্ছেদগুলিকে বাড়িয়ে যেতেন। বাচ্চা মাস্কেটিয়ারের প্রেম, বুড়ো মাস্কেটিয়ারের আত্মসম্মান, অন্ধকার জগতের বেতাজ বাদশার প্রতিশোধ - এ সব দিয়ে যে কী রোমান্সের মায়াকাজল পরিয়ে দিলেন আপনি বিশ্বের চোখে! এখনও আপনি ফ্রান্সের সব চেয়ে বেশি অনূদিত লেখকদের একজন। বহুকাল ধরে বাঙালিও মজেছে আপনার লেখায়। গত কয়েক বছর ধরে আমার চেয়ে ভালো আর কে জানে সে কথা? আপনাকে কেটেকুটে মশলা মাখিয়ে রাঁধতে হয়েছে আমায়। লোকে বলে খোশবাই না কি বেরিয়েছিল বেশ। কিন্তু আমি নিজে জানি আমি কোথায় কতটা বোকার মতো দুঃসাহস দেখিয়ে ফেলেছি। খোদার উপর খোদকারি করতে গিয়ে স্পর্ধাজনিত রসাভাস ঘটিয়ে ফেলে থাকলে নিজগুণে এ ক্ষুদ্র ভক্তকে ক্ষমা করবেন হে মায়েস্ত্রো। ঐতিহাসিক রোমান্সের রাজা, রাজকল্পনার জাদুকর, আজ থেকে ঠিক ২২৩ বছর আগে আপনি অবতীর্ণ হয়েছিলেন ইতিহাস আর সাহিত্যের মেলবন্ধন ঘটাবেন বলে। জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানবেন মঁসিয়ে আলেক্সান্দার দুমা (২৪ জুলাই ১৮০২ - ৫ ডিসেম্বর ১৮৭০)। ভালো থাকবেন, আশীর্বাদ করবেন। "One for all, and all for one!" 💐🙏🏼❤️ #শুভজন্মদিন #স্মরণ #happybirthday #alexandredumas #ব্যক্তিগত #thecountofmontecristo #thethreemusketeers #TheManInTheIronMask
    0 Comments 0 Shares 26 Views
  • BadBox 2.0: ভয়ঙ্কর Android Malware – আপনার মোবাইল কি ইতিমধ্যেই আক্রান্ত?

    Badbox 2.0 হলো একধরনের ম্যালওয়্যার-ভিত্তিক বটনেট, যেটি মূলত সস্তা Android চালিত ডিভাইসগুলিতে (যেমন: টিভি বক্স, প্রোজেক্টর, ডিজিটাল ফটো ফ্রেম ইত্যাদি) প্রি-ইনস্টল করা অবস্থায় আসে এবং বিশ্বব্যাপী ১ কোটিরও বেশি ডিভাইস ইতিমধ্যে আক্রান্ত হয়েছে।

    কি করে Badbox 2.0?
    BadBox সংক্রামিত ডিভাইসকে বটনেটে পরিণত করে – অর্থাৎ হ্যাকারদের কমান্ডে চলে।
    এটি ব্যবহারকারীর অজান্তে অ্যাড ফ্রড, ডিভাইস ট্র্যাকিং, রেসিডেনশিয়াল প্রক্সি তৈরি ও অন্যান্য অসৎ কাজ করে।
    সংক্রামিত ডিভাইসগুলোতে দৃশ্যমান কিছুই হয় না, কিন্তু ব্যাকগ্রাউন্ডে সাইবার অপরাধে ব্যবহৃত হয়।

    কে তৈরি করেছে?
    মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের FBI এবং Google এর তদন্ত অনুযায়ী, Badbox 2.0 এর পিছনে রয়েছে চীনা সাইবার অপরাধী চক্র।
    এই অপরাধচক্রটি মূলত চীনের শেনজেন (Shenzhen) শহরের কিছু কোম্পানি দ্বারা পরিচালিত হয়েছে যারা সস্তা Android ডিভাইস তৈরি ও বিক্রি করে।

    কোন কোন ডিভাইস ঝুঁকিতে?
    অজানা কোম্পানির Android TV Box
    সস্তা স্মার্ট প্রোজেক্টর
    ডিজিটাল ফটো ফ্রেম
    অ্যান্ড্রয়েড ট্যাবলেট
    ফ্রি VPN বা ক্লোন অ্যাপ ইনস্টল করা ফোন

    এসব ডিভাইসে Malware প্রি-ইনস্টল করা থাকে, ব্যবহারকারী জানতেই পারে না।

    কেন ভয়ংকর?
    ব্যবহারকারীর বাসার IP ব্যবহার করে হ্যাকাররা অন্যকে হ্যাক করতে পারে!
    Google ও FBI বলেছে, এটি এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় Android botnet!
    ১ কোটি ডিভাইস এর মাধ্যমে Massive Ad Fraud এবং Proxy Network চালানো হচ্ছে!

    আপনি কী করবেন?

    অজানা বা ব্র্যান্ডহীন Android ডিভাইস ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন
    শুধুমাত্র বিশ্বাসযোগ্য ব্র্যান্ডের ফোন/টিভি বক্স কিনুন
    ফোনে অজানা অ্যাপ ইনস্টল করবেন না
    সেটিংসে গিয়ে ADB Debugging বন্ধ রাখুন
    নিজের WiFi ট্রাফিক মনিটর করুন
    Follow Blackbd
    #BlackBD #Badbox2 #CyberAwareness #AndroidMalware #CyberSecurity #EthicalHacking #বাংলা_সাইবার_নিউজ
    🛑 BadBox 2.0: ভয়ঙ্কর Android Malware – আপনার মোবাইল কি ইতিমধ্যেই আক্রান্ত? 🔍 Badbox 2.0 হলো একধরনের ম্যালওয়্যার-ভিত্তিক বটনেট, যেটি মূলত সস্তা Android চালিত ডিভাইসগুলিতে (যেমন: টিভি বক্স, প্রোজেক্টর, ডিজিটাল ফটো ফ্রেম ইত্যাদি) প্রি-ইনস্টল করা অবস্থায় আসে এবং বিশ্বব্যাপী ১ কোটিরও বেশি ডিভাইস ইতিমধ্যে আক্রান্ত হয়েছে। 📌 কি করে Badbox 2.0? BadBox সংক্রামিত ডিভাইসকে বটনেটে পরিণত করে – অর্থাৎ হ্যাকারদের কমান্ডে চলে। এটি ব্যবহারকারীর অজান্তে অ্যাড ফ্রড, ডিভাইস ট্র্যাকিং, রেসিডেনশিয়াল প্রক্সি তৈরি ও অন্যান্য অসৎ কাজ করে। সংক্রামিত ডিভাইসগুলোতে দৃশ্যমান কিছুই হয় না, কিন্তু ব্যাকগ্রাউন্ডে সাইবার অপরাধে ব্যবহৃত হয়। 🧠 কে তৈরি করেছে? 👉 মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের FBI এবং Google এর তদন্ত অনুযায়ী, Badbox 2.0 এর পিছনে রয়েছে চীনা সাইবার অপরাধী চক্র। এই অপরাধচক্রটি মূলত চীনের শেনজেন (Shenzhen) শহরের কিছু কোম্পানি দ্বারা পরিচালিত হয়েছে যারা সস্তা Android ডিভাইস তৈরি ও বিক্রি করে। 📱 কোন কোন ডিভাইস ঝুঁকিতে? অজানা কোম্পানির Android TV Box সস্তা স্মার্ট প্রোজেক্টর ডিজিটাল ফটো ফ্রেম অ্যান্ড্রয়েড ট্যাবলেট ফ্রি VPN বা ক্লোন অ্যাপ ইনস্টল করা ফোন 🧪 এসব ডিভাইসে Malware প্রি-ইনস্টল করা থাকে, ব্যবহারকারী জানতেই পারে না। ⚠️ কেন ভয়ংকর? ব্যবহারকারীর বাসার IP ব্যবহার করে হ্যাকাররা অন্যকে হ্যাক করতে পারে! Google ও FBI বলেছে, এটি এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় Android botnet! ১ কোটি ডিভাইস এর মাধ্যমে Massive Ad Fraud এবং Proxy Network চালানো হচ্ছে! 🔐 আপনি কী করবেন? ✅ অজানা বা ব্র্যান্ডহীন Android ডিভাইস ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন ✅ শুধুমাত্র বিশ্বাসযোগ্য ব্র্যান্ডের ফোন/টিভি বক্স কিনুন ✅ ফোনে অজানা অ্যাপ ইনস্টল করবেন না ✅ সেটিংসে গিয়ে ADB Debugging বন্ধ রাখুন ✅ নিজের WiFi ট্রাফিক মনিটর করুন Follow Blackbd #BlackBD #Badbox2 #CyberAwareness #AndroidMalware #CyberSecurity #EthicalHacking #বাংলা_সাইবার_নিউজ
    Wow
    1
    0 Comments 0 Shares 91 Views
  • সবুজ আগাছায় ছেয়ে থাকা লালচে এ ভবনের নাম জলঘর। রাজবাড়ীর পাংশায় কালের সাক্ষী হয়ে আজও দাঁড়িয়ে আছে ব্রিটিশদের তৈরি এ পানির ঘর। পাংশার ইতিহাস থেকে জানা গেছে, ব্রিটিশ আমলে ১৮৬২ সালে প্রথম ভারতের কলকাতা থেকে বৃহত্তর কুষ্টিয়া জেলার জগতি পর্যন্ত যোগাযোগের জন্য রেলপথ নির্মাণ করা হয়।

    ১৮৭১ সালের ১ জানুয়ারি দেশের বৃহত্তর কুষ্টিয়া জেলার জগতি থেকে বর্তমানে রাজবাড়ীর (তৎকালীন বৃহত্তর ফরিদপুর জেলা) গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া (পদ্মা নদীর) ঘাট পর্যন্ত প্রায় ৮০ কিলোমিটার এক লাইনের রেলপথ বানানো হয়।

    তখনকার সময়ে রেলগাড়ি টানার জন্য কয়লাচালিত ইঞ্জিন ব্যবহার করা হতো। কয়লাচালিত ইঞ্জিন প্রচণ্ড গরম হয়ে যেত। গরম ইঞ্জিন শীতল করার জন্য কুষ্টিয়ার জগতি ও দৌলতদিয়া ঘাট রেলস্টেশনের মাঝামাঝি পাংশা রেলওয়ে স্টেশনের পাশে নির্মাণ করা হয় এ জলঘর।

    ১৮৬৯ সালে ইট, খোয়া ও চুনের সংমিশ্রণে গোলাকার ও লম্বা এ ভবন নির্মাণ করা হয়। ৩৫-৪০ ফুট উঁচু এ জলঘর। ঘরের দরজা রাখা হয় রেললাইনের দিকে। জলঘরের ওপরের দিকে ওঠা ও নিচে নামার জন্য লোহার পাত দিয়ে সিঁড়ি বানানো হয়।

    ব্রিটিশ শাসনামলে এ জলঘর ব্যবহার করা হয়। ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান শাসনামল শুরু হওয়ার পরপরই জলঘরটি থেকে রেলগাড়ির ইঞ্জিনে পানি দেওয়া বন্ধ হয়ে যায়। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত জলঘরের ব্যবহার বন্ধ রয়েছে।

    জলঘরটি কালের সাক্ষী হয়ে আছে পাংশার বুকে। এর লাল রং এখনো ঝকঝকে, দেয়ালের কোনো স্থান থেকেই এখন পর্যন্ত একটি ইট বা খোয়ার অংশবিশেষ খুলে পড়তে দেখা যায়নি।
    #itihaser_golpo #itihasergolpo #প্রত্নতত্ত্ব
    সবুজ আগাছায় ছেয়ে থাকা লালচে এ ভবনের নাম জলঘর। রাজবাড়ীর পাংশায় কালের সাক্ষী হয়ে আজও দাঁড়িয়ে আছে ব্রিটিশদের তৈরি এ পানির ঘর। পাংশার ইতিহাস থেকে জানা গেছে, ব্রিটিশ আমলে ১৮৬২ সালে প্রথম ভারতের কলকাতা থেকে বৃহত্তর কুষ্টিয়া জেলার জগতি পর্যন্ত যোগাযোগের জন্য রেলপথ নির্মাণ করা হয়। ১৮৭১ সালের ১ জানুয়ারি দেশের বৃহত্তর কুষ্টিয়া জেলার জগতি থেকে বর্তমানে রাজবাড়ীর (তৎকালীন বৃহত্তর ফরিদপুর জেলা) গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া (পদ্মা নদীর) ঘাট পর্যন্ত প্রায় ৮০ কিলোমিটার এক লাইনের রেলপথ বানানো হয়। তখনকার সময়ে রেলগাড়ি টানার জন্য কয়লাচালিত ইঞ্জিন ব্যবহার করা হতো। কয়লাচালিত ইঞ্জিন প্রচণ্ড গরম হয়ে যেত। গরম ইঞ্জিন শীতল করার জন্য কুষ্টিয়ার জগতি ও দৌলতদিয়া ঘাট রেলস্টেশনের মাঝামাঝি পাংশা রেলওয়ে স্টেশনের পাশে নির্মাণ করা হয় এ জলঘর। ১৮৬৯ সালে ইট, খোয়া ও চুনের সংমিশ্রণে গোলাকার ও লম্বা এ ভবন নির্মাণ করা হয়। ৩৫-৪০ ফুট উঁচু এ জলঘর। ঘরের দরজা রাখা হয় রেললাইনের দিকে। জলঘরের ওপরের দিকে ওঠা ও নিচে নামার জন্য লোহার পাত দিয়ে সিঁড়ি বানানো হয়। ব্রিটিশ শাসনামলে এ জলঘর ব্যবহার করা হয়। ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান শাসনামল শুরু হওয়ার পরপরই জলঘরটি থেকে রেলগাড়ির ইঞ্জিনে পানি দেওয়া বন্ধ হয়ে যায়। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত জলঘরের ব্যবহার বন্ধ রয়েছে। জলঘরটি কালের সাক্ষী হয়ে আছে পাংশার বুকে। এর লাল রং এখনো ঝকঝকে, দেয়ালের কোনো স্থান থেকেই এখন পর্যন্ত একটি ইট বা খোয়ার অংশবিশেষ খুলে পড়তে দেখা যায়নি। #itihaser_golpo #itihasergolpo #প্রত্নতত্ত্ব
    0 Comments 0 Shares 83 Views
  • আলোরনা দুর্গ:
    গোয়ার উত্তরের অর্পোরা নদীর ধারে, সবুজ বনবিথিকার মাঝে নির্জনে দাঁড়িয়ে আছে এক প্রাচীন স্থাপনা—আলোরনা দুর্গ। স্থানীয়ভাবে একে বলা হয় 'Alorna Fort', যাকে ঘিরে ছড়িয়ে আছে পর্তুগিজ উপনিবেশ, মারাঠা সেনাদল, স্থানীয় রাজবংশ এবং প্রাকৃতিক প্রতিরোধের এক দীর্ঘ ইতিহাস। সময়ের প্রবাহে যেখানে গোয়ার সমুদ্রতীর ভরে উঠেছে পর্যটনের গর্জনে, সেখানে আলোরনা দুর্গ দাঁড়িয়ে আছে নিঃশব্দে, যেন কেবল ইতিহাসই যার সঙ্গী।

    দুর্গটির নির্মাণকাল আনুমানিক ষোড়শ শতাব্দীর মাঝামাঝি। তখন গোয়ায় ক্ষমতার পালা বদলের খেলা চলছে—কখনও মুসলিম শাসক, কখনও হিন্দু রাজা, আবার কখনও পর্তুগিজদের ছায়া বিস্তার করছে উপকূল থেকে অভ্যন্তরভাগে। আলোরনা দুর্গের নির্মাতা হিসেবে মূলত ভীম রাজবংশকে ধরা হয়—যারা নিজেদের প্রতিরক্ষার জন্যই এ দুর্গ নির্মাণ করেছিলেন। এটি ছিল একটি কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ স্থান—কোনো বহির্শত্রু পশ্চিম উপকূল দিয়ে আসলে, উত্তর থেকে এই দুর্গের মধ্য দিয়েই প্রবেশ করতে হতো।

    কিন্তু সময় বদলাল। সপ্তদশ শতকে পর্তুগিজরা গোয়ায় তাদের শাসনব্যবস্থা শক্তিশালী করে তোলে। 1746 সালে তারা আলোরনা দুর্গ দখল করে নেয়, আর তখন থেকে এটি হয়ে ওঠে পর্তুগিজ সামরিক ঘাঁটি। দুর্গের ভিতরে নির্মিত হয় স্নানঘর, অস্ত্রাগার, খাদ্য মজুদের কুঠুরি, এমনকি একটি ছোট্ট উপাসনালয়ও—যার ভগ্নাংশ এখনও দেখা যায়। পর্তুগিজ স্থাপত্যের অনন্য ছাপ পাওয়া যায় দুর্গের দেওয়ালে—মসৃণ প্রস্তরখণ্ড, মোটা ইটের বাঁধাই, এবং কাঠের বিমযুক্ত ছাদ, যা আজ ধ্বংসস্তূপে রূপান্তরিত।

    আলোরনা দুর্গের একটি অনন্য দিক হলো এর অবস্থান—পাহাড়ের ঢালে এবং নদীঘেঁষা উচ্চভূমিতে দাঁড়িয়ে থাকা এই দুর্গ থেকে চারপাশের বিস্তৃত এলাকা দেখা যেত। সৈনিকরা দূর থেকে শত্রুর আগমন দেখতে পেত এবং সেইমতো প্রস্তুতি নিতে পারত। এমনকি নদীপথে আগত জলযানেরও গতিপথ নজরে রাখা যেত।

    এখন, সেই প্রহরীদের নেই, নেই কোনো ঢাল-তলোয়ারের ঝংকার। রয়েছে কেবল শ্যাওলা ধরা দেয়াল, গাছগাছালির বিস্তার, আর বাতাসে ভেসে আসা নিস্তব্ধতার এক অপূর্ব সংগীত। ইতিহাসপ্রেমী ও অভিযাত্রীরা আজও মাঝে মাঝে এখানে এসে দাঁড়িয়ে পড়েন এই ধ্বংসাবশেষের পাশে—কখনও একাকী, কখনও কৌতূহলী চোখে। কেউ কেউ বলেন, সন্ধ্যায় নাকি দুর্গের ভিতরে বাতাস একটু অদ্ভুতভাবে বয়ে যায়—যেন প্রাচীন কোনো শ্বাস ফেলে গেছে তার গোপন বার্তা।

    আলোরনা দুর্গকে ঘিরে স্থানিক মানুষের মধ্যেও এক ধরণের মিথ বিরাজমান। কেউ বলেন এখানে গুপ্তধন লুকানো ছিল, কেউ বলেন এক যুদ্ধবন্দী রানীকে এখানেই বন্দি রাখা হয়েছিল। যদিও এসব কাহিনির ঐতিহাসিক সত্যতা প্রশ্নসাপেক্ষ, তবুও তারা স্থানীয় সংস্কৃতির অংশ হয়ে উঠেছে।

    সম্প্রতি গোয়া পর্যটন বিভাগ এই দুর্গটির সংরক্ষণ ও উন্নয়নের উদ্যোগ নিয়েছে। রাস্তাঘাট কিছুটা উন্নত হয়েছে, প্রাচীরের কিছু অংশ নতুন করে বাঁধাই করা হয়েছে, এবং একটি দর্শনার্থী করিডোর তৈরির পরিকল্পনাও গ্রহণ করা হয়েছে। কিন্তু তবু, এখনো অধিকাংশ মানুষ এই দুর্গের নাম শোনেনি—গোয়ার কোলাহলময় সৈকত, ক্যাসিনো আর উৎসবের পেছনে যেন চাপা পড়ে গেছে ইতিহাসের এই নিঃশব্দ অভিমান।

    আলোরনা দুর্গ আসলে একটি প্রাচীন কাব্যের মতো—যার প্রতিটি ইটের গায়ে লেখা রয়েছে এক একটি যুদ্ধ, বিশ্বাসঘাতকতা, প্রেম, এবং প্রতিরোধের অদৃশ্য পঙক্তি। এই দুর্গ কেবল অতীতের সঙ্গেই নয়, গোয়ার ঐতিহ্যিক আত্মার সঙ্গেও গভীরভাবে জড়িত।

    আমরা যদি একটিবারও থেমে দাঁড়াই, কোলাহলের বাইরে গিয়ে এই দুর্ভিক্ষগ্রস্ত অথচ গর্বিত প্রাচীরগুলোর দিকে তাকাই, তাহলে বুঝতে পারব—ইতিহাস কেবল রাজাদের নয়, ইট-পাথরেরও হয়। আলোরনা দুর্গ সেই ইতিহাসেরই এক নীরব অথচ অমোঘ অনুচ্চারণ।
    #itihaser_golpo #প্রত্নতত্ত্ব #itihasergolpo
    আলোরনা দুর্গ: গোয়ার উত্তরের অর্পোরা নদীর ধারে, সবুজ বনবিথিকার মাঝে নির্জনে দাঁড়িয়ে আছে এক প্রাচীন স্থাপনা—আলোরনা দুর্গ। স্থানীয়ভাবে একে বলা হয় 'Alorna Fort', যাকে ঘিরে ছড়িয়ে আছে পর্তুগিজ উপনিবেশ, মারাঠা সেনাদল, স্থানীয় রাজবংশ এবং প্রাকৃতিক প্রতিরোধের এক দীর্ঘ ইতিহাস। সময়ের প্রবাহে যেখানে গোয়ার সমুদ্রতীর ভরে উঠেছে পর্যটনের গর্জনে, সেখানে আলোরনা দুর্গ দাঁড়িয়ে আছে নিঃশব্দে, যেন কেবল ইতিহাসই যার সঙ্গী। দুর্গটির নির্মাণকাল আনুমানিক ষোড়শ শতাব্দীর মাঝামাঝি। তখন গোয়ায় ক্ষমতার পালা বদলের খেলা চলছে—কখনও মুসলিম শাসক, কখনও হিন্দু রাজা, আবার কখনও পর্তুগিজদের ছায়া বিস্তার করছে উপকূল থেকে অভ্যন্তরভাগে। আলোরনা দুর্গের নির্মাতা হিসেবে মূলত ভীম রাজবংশকে ধরা হয়—যারা নিজেদের প্রতিরক্ষার জন্যই এ দুর্গ নির্মাণ করেছিলেন। এটি ছিল একটি কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ স্থান—কোনো বহির্শত্রু পশ্চিম উপকূল দিয়ে আসলে, উত্তর থেকে এই দুর্গের মধ্য দিয়েই প্রবেশ করতে হতো। কিন্তু সময় বদলাল। সপ্তদশ শতকে পর্তুগিজরা গোয়ায় তাদের শাসনব্যবস্থা শক্তিশালী করে তোলে। 1746 সালে তারা আলোরনা দুর্গ দখল করে নেয়, আর তখন থেকে এটি হয়ে ওঠে পর্তুগিজ সামরিক ঘাঁটি। দুর্গের ভিতরে নির্মিত হয় স্নানঘর, অস্ত্রাগার, খাদ্য মজুদের কুঠুরি, এমনকি একটি ছোট্ট উপাসনালয়ও—যার ভগ্নাংশ এখনও দেখা যায়। পর্তুগিজ স্থাপত্যের অনন্য ছাপ পাওয়া যায় দুর্গের দেওয়ালে—মসৃণ প্রস্তরখণ্ড, মোটা ইটের বাঁধাই, এবং কাঠের বিমযুক্ত ছাদ, যা আজ ধ্বংসস্তূপে রূপান্তরিত। আলোরনা দুর্গের একটি অনন্য দিক হলো এর অবস্থান—পাহাড়ের ঢালে এবং নদীঘেঁষা উচ্চভূমিতে দাঁড়িয়ে থাকা এই দুর্গ থেকে চারপাশের বিস্তৃত এলাকা দেখা যেত। সৈনিকরা দূর থেকে শত্রুর আগমন দেখতে পেত এবং সেইমতো প্রস্তুতি নিতে পারত। এমনকি নদীপথে আগত জলযানেরও গতিপথ নজরে রাখা যেত। এখন, সেই প্রহরীদের নেই, নেই কোনো ঢাল-তলোয়ারের ঝংকার। রয়েছে কেবল শ্যাওলা ধরা দেয়াল, গাছগাছালির বিস্তার, আর বাতাসে ভেসে আসা নিস্তব্ধতার এক অপূর্ব সংগীত। ইতিহাসপ্রেমী ও অভিযাত্রীরা আজও মাঝে মাঝে এখানে এসে দাঁড়িয়ে পড়েন এই ধ্বংসাবশেষের পাশে—কখনও একাকী, কখনও কৌতূহলী চোখে। কেউ কেউ বলেন, সন্ধ্যায় নাকি দুর্গের ভিতরে বাতাস একটু অদ্ভুতভাবে বয়ে যায়—যেন প্রাচীন কোনো শ্বাস ফেলে গেছে তার গোপন বার্তা। আলোরনা দুর্গকে ঘিরে স্থানিক মানুষের মধ্যেও এক ধরণের মিথ বিরাজমান। কেউ বলেন এখানে গুপ্তধন লুকানো ছিল, কেউ বলেন এক যুদ্ধবন্দী রানীকে এখানেই বন্দি রাখা হয়েছিল। যদিও এসব কাহিনির ঐতিহাসিক সত্যতা প্রশ্নসাপেক্ষ, তবুও তারা স্থানীয় সংস্কৃতির অংশ হয়ে উঠেছে। সম্প্রতি গোয়া পর্যটন বিভাগ এই দুর্গটির সংরক্ষণ ও উন্নয়নের উদ্যোগ নিয়েছে। রাস্তাঘাট কিছুটা উন্নত হয়েছে, প্রাচীরের কিছু অংশ নতুন করে বাঁধাই করা হয়েছে, এবং একটি দর্শনার্থী করিডোর তৈরির পরিকল্পনাও গ্রহণ করা হয়েছে। কিন্তু তবু, এখনো অধিকাংশ মানুষ এই দুর্গের নাম শোনেনি—গোয়ার কোলাহলময় সৈকত, ক্যাসিনো আর উৎসবের পেছনে যেন চাপা পড়ে গেছে ইতিহাসের এই নিঃশব্দ অভিমান। আলোরনা দুর্গ আসলে একটি প্রাচীন কাব্যের মতো—যার প্রতিটি ইটের গায়ে লেখা রয়েছে এক একটি যুদ্ধ, বিশ্বাসঘাতকতা, প্রেম, এবং প্রতিরোধের অদৃশ্য পঙক্তি। এই দুর্গ কেবল অতীতের সঙ্গেই নয়, গোয়ার ঐতিহ্যিক আত্মার সঙ্গেও গভীরভাবে জড়িত। আমরা যদি একটিবারও থেমে দাঁড়াই, কোলাহলের বাইরে গিয়ে এই দুর্ভিক্ষগ্রস্ত অথচ গর্বিত প্রাচীরগুলোর দিকে তাকাই, তাহলে বুঝতে পারব—ইতিহাস কেবল রাজাদের নয়, ইট-পাথরেরও হয়। আলোরনা দুর্গ সেই ইতিহাসেরই এক নীরব অথচ অমোঘ অনুচ্চারণ। #itihaser_golpo #প্রত্নতত্ত্ব #itihasergolpo
    0 Comments 0 Shares 84 Views
  • টোলেন্স উপত্যকার নিঃশব্দ যুদ্ধ

    জার্মানির টোলেন্স উপত্যকা। আজ শান্ত আর সবুজে ঘেরা, কিন্তু প্রায় ৩২৫০ বছর আগে এই জায়গাটিই ছিল এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের ময়দান।

    ১৯৯৬ সালে স্থানীয় কয়েকজন নদীর পাড়ে হেঁটে যাওয়ার সময় হঠাৎ দেখতে পান একটি মানুষের হাড়। পরে সেখানে খনন শুরু হলে বেরিয়ে আসে এক চমকে দেওয়া ইতিহাস।

    পাওয়া যায় ১২,৫০০টি হাড়, ৩০০টিরও বেশি ব্রোঞ্জের অস্ত্র—তীর, তলোয়ার, ধনুক। আশ্চর্যের ব্যাপার, অনেক অস্ত্র এখনো কঙ্কালের মাথার খুলির মধ্যে আটকে আছে। স্পষ্ট বোঝা যায়, সেগুলোর আঘাতেই মৃত্যু হয়েছিল সেইসব যোদ্ধাদের।

    গবেষকদের ধারণা, খ্রিস্টপূর্ব ১২৫০ সালের দিকে এখানে বড় ধরনের একটি সংঘর্ষ হয়েছিল, সম্ভবত কোনো অঞ্চল বা নদী দখলের লড়াই।

    আজ টোলেন্স উপত্যকা নীরব। কিন্তু সেই নিঃশব্দতার নিচে লুকিয়ে আছে এক হারিয়ে যাওয়া যুদ্ধের অমোচনীয় ছাপ।

    Note এই ৩,০০০ বছরের পুরনো তীরগুলি 'ইউরোপের প্রাচীনতম যুদ্ধক্ষেত্রের' রহস্যের গুরুত্বপূর্ণ সূত্র। এ বিষয়ে যদিও কোনও লিখিত রেকর্ড নেই, তবে এই খুলি বা তীরগুলি নতুন গবেষণার জন্য খ্রিস্টপূর্ব ১৩ শতকে উত্তর জার্মানিতে সংঘটিত যুদ্ধের মূল পথনির্দেশক l
    https://www.smithsonianmag.com/smart-news/these-3000-year-old-arrowheads-are-pivotal-clues-in-the-mystery-of-europes-oldest-known-battlefield-180985142/
    Rabab Ahmed
    Stay Curious SIS
    টোলেন্স উপত্যকার নিঃশব্দ যুদ্ধ 🔷 জার্মানির টোলেন্স উপত্যকা। আজ শান্ত আর সবুজে ঘেরা, কিন্তু প্রায় ৩২৫০ বছর আগে এই জায়গাটিই ছিল এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের ময়দান। ১৯৯৬ সালে স্থানীয় কয়েকজন নদীর পাড়ে হেঁটে যাওয়ার সময় হঠাৎ দেখতে পান একটি মানুষের হাড়। পরে সেখানে খনন শুরু হলে বেরিয়ে আসে এক চমকে দেওয়া ইতিহাস। পাওয়া যায় ১২,৫০০টি হাড়, ৩০০টিরও বেশি ব্রোঞ্জের অস্ত্র—তীর, তলোয়ার, ধনুক। আশ্চর্যের ব্যাপার, অনেক অস্ত্র এখনো কঙ্কালের মাথার খুলির মধ্যে আটকে আছে। স্পষ্ট বোঝা যায়, সেগুলোর আঘাতেই মৃত্যু হয়েছিল সেইসব যোদ্ধাদের। গবেষকদের ধারণা, খ্রিস্টপূর্ব ১২৫০ সালের দিকে এখানে বড় ধরনের একটি সংঘর্ষ হয়েছিল, সম্ভবত কোনো অঞ্চল বা নদী দখলের লড়াই। আজ টোলেন্স উপত্যকা নীরব। কিন্তু সেই নিঃশব্দতার নিচে লুকিয়ে আছে এক হারিয়ে যাওয়া যুদ্ধের অমোচনীয় ছাপ। Note 🔷এই ৩,০০০ বছরের পুরনো তীরগুলি 'ইউরোপের প্রাচীনতম যুদ্ধক্ষেত্রের' রহস্যের গুরুত্বপূর্ণ সূত্র। এ বিষয়ে যদিও কোনও লিখিত রেকর্ড নেই, তবে এই খুলি বা তীরগুলি নতুন গবেষণার জন্য খ্রিস্টপূর্ব ১৩ শতকে উত্তর জার্মানিতে সংঘটিত যুদ্ধের মূল পথনির্দেশক l 🌷🟥 https://www.smithsonianmag.com/smart-news/these-3000-year-old-arrowheads-are-pivotal-clues-in-the-mystery-of-europes-oldest-known-battlefield-180985142/ Rabab Ahmed Stay Curious SIS
    0 Comments 0 Shares 98 Views
  • এবার স্টকহোমের রাস্তাঘাট কিংবা সুইডেনের বন্যা প্রতিরোধ ব্যারিয়ার সবখানেই এখন পরীক্ষামূলকভাবে ব্যবহার হচ্ছে এক ধরনের অত্যাধুনিক কংক্রিট, যেটি কিনা নিজে থেকেই নিজের ফাটল সারিয়ে নিতে পারে। মানে কংক্রিটে কোথাও ফাটল হলে নিজে নিজেই বন্ধ হয়ে যায় সেই ফাটল ! ব্যাকটেরিয়া দিয়ে তৈরি এই ‘হিলিং কংক্রিট’ যেন ভবিষ্যতের অবকাঠামোগত বিপ্লবের এক জীবন্ত নমুনা।

    এই কংক্রিটে সুপ্ত অবস্থায় মিশিয়ে রাখা হয় Bacillus pseudofirmus নামের এক প্রকার ব্যাকটেরিয়া, যেগুলো উচ্চ pH-এর পরিবেশে বেঁচে থাকতে পারে। যখন কংক্রিটে ফাটল ধরে এবং তার ভিতর পানি প্রবেশ করে, তখন ব্যাকটেরিয়াগুলো সক্রিয় হয়ে ওঠে। তারা কংক্রিটে থাকা ক্যালসিয়াম ল্যাকটেট খেয়ে উৎপন্ন করে চুনাপাথর (লিমেস্টোন), যা ফাটলের ভিতর জমা হয়ে অটোমেটিক্যালি ফাটল বন্ধ করে দেয়। এখন হয়তো আপনার মনে হতে পারে এই চুনাপাথর হয়তো অতটা মজবুত না । তবে আসলে এটি এতটাই মজবুত যে আমাদের বাংলাদেশের অধিকাংশ আপনার থেকে অনেক গুণ বেশি শক্তিশালী ও মজবুত ।

    পরীক্ষায় দেখা গেছে, এই জীবন্ত কংক্রিট মাত্র তিন সপ্তাহের মধ্যে ০.৮ মিলিমিটার পর্যন্ত ফাটল পুরোপুরি বন্ধ করতে সক্ষম তাও আবার পানিরোধকভাবে। সাধারণ কংক্রিট যেখানে বারবার রক্ষণাবেক্ষণ ও লেপন প্রয়োজন, সেখানে এই নতুন কংক্রিট প্রাকৃতিকভাবে নিজেই নিজেকে সারিয়ে তোলে।

    এই প্রযুক্তির সবচেয়ে বড় লাভ হলো স্থায়িত্ব। প্রকৌশলীরা বলছেন, এই কংক্রিট ব্যবহার করে নির্মিত ভবনগুলো ২০০ বছর বা তারও বেশি স্থায়ী হতে পারে। যার অর্থ কম মেরামত, কম খরচ, কম বর্জ্য।

    ইতোমধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়ন বিভিন্ন দেশে এই প্রযুক্তির জন্য অর্থায়ন করছে এবং ভবিষ্যতে ব্যবহারের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে ।
    এবার স্টকহোমের রাস্তাঘাট কিংবা সুইডেনের বন্যা প্রতিরোধ ব্যারিয়ার সবখানেই এখন পরীক্ষামূলকভাবে ব্যবহার হচ্ছে এক ধরনের অত্যাধুনিক কংক্রিট, যেটি কিনা নিজে থেকেই নিজের ফাটল সারিয়ে নিতে পারে। মানে কংক্রিটে কোথাও ফাটল হলে নিজে নিজেই বন্ধ হয়ে যায় সেই ফাটল ! ব্যাকটেরিয়া দিয়ে তৈরি এই ‘হিলিং কংক্রিট’ যেন ভবিষ্যতের অবকাঠামোগত বিপ্লবের এক জীবন্ত নমুনা। এই কংক্রিটে সুপ্ত অবস্থায় মিশিয়ে রাখা হয় Bacillus pseudofirmus নামের এক প্রকার ব্যাকটেরিয়া, যেগুলো উচ্চ pH-এর পরিবেশে বেঁচে থাকতে পারে। যখন কংক্রিটে ফাটল ধরে এবং তার ভিতর পানি প্রবেশ করে, তখন ব্যাকটেরিয়াগুলো সক্রিয় হয়ে ওঠে। তারা কংক্রিটে থাকা ক্যালসিয়াম ল্যাকটেট খেয়ে উৎপন্ন করে চুনাপাথর (লিমেস্টোন), যা ফাটলের ভিতর জমা হয়ে অটোমেটিক্যালি ফাটল বন্ধ করে দেয়। এখন হয়তো আপনার মনে হতে পারে এই চুনাপাথর হয়তো অতটা মজবুত না । তবে আসলে এটি এতটাই মজবুত যে আমাদের বাংলাদেশের অধিকাংশ আপনার থেকে অনেক গুণ বেশি শক্তিশালী ও মজবুত । পরীক্ষায় দেখা গেছে, এই জীবন্ত কংক্রিট মাত্র তিন সপ্তাহের মধ্যে ০.৮ মিলিমিটার পর্যন্ত ফাটল পুরোপুরি বন্ধ করতে সক্ষম তাও আবার পানিরোধকভাবে। সাধারণ কংক্রিট যেখানে বারবার রক্ষণাবেক্ষণ ও লেপন প্রয়োজন, সেখানে এই নতুন কংক্রিট প্রাকৃতিকভাবে নিজেই নিজেকে সারিয়ে তোলে। এই প্রযুক্তির সবচেয়ে বড় লাভ হলো স্থায়িত্ব। প্রকৌশলীরা বলছেন, এই কংক্রিট ব্যবহার করে নির্মিত ভবনগুলো ২০০ বছর বা তারও বেশি স্থায়ী হতে পারে। যার অর্থ কম মেরামত, কম খরচ, কম বর্জ্য। ইতোমধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়ন বিভিন্ন দেশে এই প্রযুক্তির জন্য অর্থায়ন করছে এবং ভবিষ্যতে ব্যবহারের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে ।
    0 Comments 0 Shares 77 Views
  • অণুবীক্ষণ যন্ত্র আবিষ্কার করেন এক ঝাড়ুদার, কে জানেন?

    সপ্তদশ শতাব্দীর চল্লিশের দশক। নেদারল্যান্ডের ডেলফট শহরে এক চশমার দোকানে ঠাঁই দাঁড়িয়ে থাকে এক কিশোর। দোকানের কর্মচারিরা কাচ ঘসে চশমা তৈরি করে। সেটাই মন দিয়ে দেখে ছেলেটা। কী মজা পায়, কে জানে?

    ছেলেটার বাবা মারা গেছে কয়েক বছর আগে। আর্থিক অবস্থা খুব খারাপ। তাই স্কুলের পাঠ শেষ না করেই চাকরি নেয় এক মুদির দোকানে। মাইনে সামান্যই। এরই মধ্যে পৌরসভার একটা চাকরি জুটে যায়। বড় চাকরি নয়, ঝাড়ুদারের কাজ। পেট চালাতে হলে এ ছাড়া উপায়ই বা কী?

    ছেলেটা চশমার দোকানে কাঁচ কাটা দেখে একটা ব্যাপার বুঝেছে। এক টুকরো কাচ ঘষে মাঝখানটা উঁচু করতে পারলে সেটা লেন্সে পরিণত হয়। তার ভেতর দিয়ে তাকালে ছোট জিনিস বড় দেখায়। সে ছেলেটা নিজেই এই জিনিস তৈরির কথা ভাবে এক সময়। বোঝে, কাচ আরও সুন্দর করে ঘষে, আর নিখুঁত করে তুলতে পারলে সেটা আরও ভালো লেন্সে পরিণত হবে।

    বাড়ি ফিরে সত্যি সত্যিই কাঁচ ঘষে লেন্স তৈরি করে ছেলেটা। চশমার দোকানের চেয়েও ভালো লেন্স। সেই লেন্সের ভেতর দিয়ে তাকালে যে জিনি দু-তিন শ গুণ বড় দেখায়। ছেলেটার উৎসাহ বাড়ে। আরও ভালো লেন্স তৈরি করে সে। তামার পাত দিয়ে তৈরি একটা ফাঁপা নলের মাথায় লাগিয়ে দেয় লেন্স। তৈরি হয় অণুবীক্ষণ যন্ত্র। আর ছেলেটার সামনে হাট করে খুলে যায় খুদে প্রাণীদের এক অবিশ্বাস্য জগৎ।

    প্রথম দিকে সামনে যা পেত, তা-ই অণুবীক্ষণ যন্ত্রের নিচে রেখে দেখত।

    ছেলেটার বয়স বাড়তে থাকে। কিন্তু অণুবীক্ষণ যন্ত্রের নেশা তাঁকে ছাড়ে না। তিনি কাচ ঘসে ঘসে লেন্স বানান। আর একে একে প্রায় চার শটির মতো অণুবীক্ষণ যন্ত্র বানিয়ে ফেলেন। একদিন কী মনে করে অণুবীক্ষণ যন্ত্রের নিচে ফোটা পানি ফেলে পরীক্ষা শুরু করলেন। আর অমনি আরেকটা আশ্চর্য প্রাণীজগতের দুয়ার খুলে গেল। বিকট, ভয়ঙ্কর দর্শন সব জীব ঘুরে বেড়াচ্ছে ওই এক ফোঁটা জলের ভেতর। তাঁর অজান্তেই ঘটে গেল চিকিৎসাবিজ্ঞানের এক মহাবিপ্লব। পরে এডওয়ার্ড জেনার ও লুইপাস্তুরের হাতে সেই জগৎ আরও বড় হতে থাকে।

    লোকটা খুদে জিনিস-পত্র পর্যবেক্ষণ করেন, আর সেগুলো খাতায় টুকে রাখেন। ভবিষ্যতে কোনো কাজে লাগবে ভেবে এটা করেননি। হয়তো নিজের পর্যবেক্ষেণেরই সুবিধা হবে। তিনি তখনো ঝাড়ুদারি করেন। তাই এটা যে বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার, সেটাই হয়তো বোঝেননি।

    এর মধ্যে কেউ একজন জানায়, এই ব্যাপারটা যদি লন্ডনের রয়্যাল সোসাইটির লোকজনকে জানায়, তাহলে হয়তো তাঁরা এর মর্ম বুঝবেন। কিন্তু তিনি একজন ঝাড়ুদার। এক দেশ থেকে আরেক দেশে যাওয়ার মতো পয়সা তাঁর ছিল না। তাই রয়্যাল সোসাইটির ঠিকানা জোগাড় করে সেখানকার বিজ্ঞানীদের চিঠি লিখে জানালেন। রয়্যাল সোসাইটির বিজ্ঞানীরা এটাকে আমল দিতেই চাননি। কিন্তু সবাই তো একরকম নন। কেউ কেউ গুরুত্ব দিয়েছিলেন। এরই মধ্যে লিউয়েনহুক ছাব্বিশটা অণুবীক্ষণ যন্ত্র পাঠিয়ে দিলেন রয়্যাল সোসাইটির বিজ্ঞানীদের ঠিকানায়।

    রয়্যাল সোসাইটি তখন বিজ্ঞান জগতের হর্তাকর্তা। তাঁদের থেকে কোনো আবিষ্কারের স্বীকৃতি না পেলে বিজ্ঞান জগতে সেটার টিকে থাকা মুশকিল। এবার অণুবীক্ষণ যন্ত্র হাতে পেয়েছেন র‌য়্যাল সোসাইটির বিজ্ঞানীরা। পরীক্ষা করে দেখতে তো দোষ নেই! কোনো কোনো বিজ্ঞানী সেই যন্ত্রের নলে চোখ লাগিয়ে দেখলেন, এতদিন ঝাড়ুদার লোকটা যা জানিয়েছেন তার সবই সত্যি।

    সুতরাং তাঁকে রয়্যাল সোসাইটির সদস্য করে নেওয়া হলো। বিশ্বের তাবড়-তাবড় বিজ্ঞানীরাই কেবল এই সোসাইটির সদস্য হতে পারেন। সুতরাং ঝাড়ুদারের সম্মান বাড়ল অনেকখানি। তাঁর সঙ্গে দেখা করার জন্য খোদ রাশিয়ার রাজা এবং ইংল্যান্ডের রানি পর্যন্ত ডেলটফ নামের সেই ছোট্ট শহরে গিয়েছিলেন। পা ফেলেছিলেন দিয়েছিলেন তার জীর্ণ কূটিরে।

    সেই ঝাড়ুদার লোকটার নাম হলো অ্যান্থনি ফিলিপ ভন লিউয়েন হুক। যিনি অনুবীক্ষণ যন্ত্রের আবিষ্কারক হিসেবে ইতিহাসে ঠাঁই করে নিয়েছেনে।
    অণুবীক্ষণ যন্ত্র আবিষ্কার করেন এক ঝাড়ুদার, কে জানেন? সপ্তদশ শতাব্দীর চল্লিশের দশক। নেদারল্যান্ডের ডেলফট শহরে এক চশমার দোকানে ঠাঁই দাঁড়িয়ে থাকে এক কিশোর। দোকানের কর্মচারিরা কাচ ঘসে চশমা তৈরি করে। সেটাই মন দিয়ে দেখে ছেলেটা। কী মজা পায়, কে জানে? ছেলেটার বাবা মারা গেছে কয়েক বছর আগে। আর্থিক অবস্থা খুব খারাপ। তাই স্কুলের পাঠ শেষ না করেই চাকরি নেয় এক মুদির দোকানে। মাইনে সামান্যই। এরই মধ্যে পৌরসভার একটা চাকরি জুটে যায়। বড় চাকরি নয়, ঝাড়ুদারের কাজ। পেট চালাতে হলে এ ছাড়া উপায়ই বা কী? ছেলেটা চশমার দোকানে কাঁচ কাটা দেখে একটা ব্যাপার বুঝেছে। এক টুকরো কাচ ঘষে মাঝখানটা উঁচু করতে পারলে সেটা লেন্সে পরিণত হয়। তার ভেতর দিয়ে তাকালে ছোট জিনিস বড় দেখায়। সে ছেলেটা নিজেই এই জিনিস তৈরির কথা ভাবে এক সময়। বোঝে, কাচ আরও সুন্দর করে ঘষে, আর নিখুঁত করে তুলতে পারলে সেটা আরও ভালো লেন্সে পরিণত হবে। বাড়ি ফিরে সত্যি সত্যিই কাঁচ ঘষে লেন্স তৈরি করে ছেলেটা। চশমার দোকানের চেয়েও ভালো লেন্স। সেই লেন্সের ভেতর দিয়ে তাকালে যে জিনি দু-তিন শ গুণ বড় দেখায়। ছেলেটার উৎসাহ বাড়ে। আরও ভালো লেন্স তৈরি করে সে। তামার পাত দিয়ে তৈরি একটা ফাঁপা নলের মাথায় লাগিয়ে দেয় লেন্স। তৈরি হয় অণুবীক্ষণ যন্ত্র। আর ছেলেটার সামনে হাট করে খুলে যায় খুদে প্রাণীদের এক অবিশ্বাস্য জগৎ। প্রথম দিকে সামনে যা পেত, তা-ই অণুবীক্ষণ যন্ত্রের নিচে রেখে দেখত। ছেলেটার বয়স বাড়তে থাকে। কিন্তু অণুবীক্ষণ যন্ত্রের নেশা তাঁকে ছাড়ে না। তিনি কাচ ঘসে ঘসে লেন্স বানান। আর একে একে প্রায় চার শটির মতো অণুবীক্ষণ যন্ত্র বানিয়ে ফেলেন। একদিন কী মনে করে অণুবীক্ষণ যন্ত্রের নিচে ফোটা পানি ফেলে পরীক্ষা শুরু করলেন। আর অমনি আরেকটা আশ্চর্য প্রাণীজগতের দুয়ার খুলে গেল। বিকট, ভয়ঙ্কর দর্শন সব জীব ঘুরে বেড়াচ্ছে ওই এক ফোঁটা জলের ভেতর। তাঁর অজান্তেই ঘটে গেল চিকিৎসাবিজ্ঞানের এক মহাবিপ্লব। পরে এডওয়ার্ড জেনার ও লুইপাস্তুরের হাতে সেই জগৎ আরও বড় হতে থাকে। লোকটা খুদে জিনিস-পত্র পর্যবেক্ষণ করেন, আর সেগুলো খাতায় টুকে রাখেন। ভবিষ্যতে কোনো কাজে লাগবে ভেবে এটা করেননি। হয়তো নিজের পর্যবেক্ষেণেরই সুবিধা হবে। তিনি তখনো ঝাড়ুদারি করেন। তাই এটা যে বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার, সেটাই হয়তো বোঝেননি। এর মধ্যে কেউ একজন জানায়, এই ব্যাপারটা যদি লন্ডনের রয়্যাল সোসাইটির লোকজনকে জানায়, তাহলে হয়তো তাঁরা এর মর্ম বুঝবেন। কিন্তু তিনি একজন ঝাড়ুদার। এক দেশ থেকে আরেক দেশে যাওয়ার মতো পয়সা তাঁর ছিল না। তাই রয়্যাল সোসাইটির ঠিকানা জোগাড় করে সেখানকার বিজ্ঞানীদের চিঠি লিখে জানালেন। রয়্যাল সোসাইটির বিজ্ঞানীরা এটাকে আমল দিতেই চাননি। কিন্তু সবাই তো একরকম নন। কেউ কেউ গুরুত্ব দিয়েছিলেন। এরই মধ্যে লিউয়েনহুক ছাব্বিশটা অণুবীক্ষণ যন্ত্র পাঠিয়ে দিলেন রয়্যাল সোসাইটির বিজ্ঞানীদের ঠিকানায়। রয়্যাল সোসাইটি তখন বিজ্ঞান জগতের হর্তাকর্তা। তাঁদের থেকে কোনো আবিষ্কারের স্বীকৃতি না পেলে বিজ্ঞান জগতে সেটার টিকে থাকা মুশকিল। এবার অণুবীক্ষণ যন্ত্র হাতে পেয়েছেন র‌য়্যাল সোসাইটির বিজ্ঞানীরা। পরীক্ষা করে দেখতে তো দোষ নেই! কোনো কোনো বিজ্ঞানী সেই যন্ত্রের নলে চোখ লাগিয়ে দেখলেন, এতদিন ঝাড়ুদার লোকটা যা জানিয়েছেন তার সবই সত্যি। সুতরাং তাঁকে রয়্যাল সোসাইটির সদস্য করে নেওয়া হলো। বিশ্বের তাবড়-তাবড় বিজ্ঞানীরাই কেবল এই সোসাইটির সদস্য হতে পারেন। সুতরাং ঝাড়ুদারের সম্মান বাড়ল অনেকখানি। তাঁর সঙ্গে দেখা করার জন্য খোদ রাশিয়ার রাজা এবং ইংল্যান্ডের রানি পর্যন্ত ডেলটফ নামের সেই ছোট্ট শহরে গিয়েছিলেন। পা ফেলেছিলেন দিয়েছিলেন তার জীর্ণ কূটিরে। সেই ঝাড়ুদার লোকটার নাম হলো অ্যান্থনি ফিলিপ ভন লিউয়েন হুক। যিনি অনুবীক্ষণ যন্ত্রের আবিষ্কারক হিসেবে ইতিহাসে ঠাঁই করে নিয়েছেনে।
    0 Comments 0 Shares 37 Views
  • বর্তমানে স্মার্টওয়াচ ও ফিটনেস ট্র্যাকার ব্যান্ড আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অংশ হয়ে উঠেছে। কিন্তু এই ব্যান্ডে ব্যবহৃত কিছু মেটেরিয়ালে রয়েছে PFAS অর্থাৎ Per- and Polyfluoroalkyl Substances ।

    এটি এক ধরনের বিষাক্ত চিরস্থায়ী রাসায়নিক, যা ত্বক থেকে শোষিত হয়ে শরীরে ক্যানসার, লিভার ও কিডনির রোগের ঝুঁকি তৈরি করতে পারে, এমনটাই বলছে যুক্তরাষ্ট্রের নটর ডেম বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণা।

    এই রাসায়নিক সাধারণত ব্যান্ড, কেসিং বা স্ক্রিন কোটিংয়ে ব্যবহৃত হয়, কারণ এটি পানি, তেল ও ঘাম প্রতিরোধ করে এবং পণ্যকে টেকসই ও মসৃণ রাখে। তবে PFAS খুবই স্থিতিশীল, সহজে ভাঙে না—বরং শরীরে ও পরিবেশে দীর্ঘদিন ধরে সক্রিয় থাকে। ঘাম এর শোষণ ক্ষমতা আরও বাড়িয়ে তোলে।

    গবেষণায় Nike, Apple, Fitbit, Google সহ ২২টি জনপ্রিয় ব্র্যান্ডের ব্যান্ড পরীক্ষা করে ১৫ টিতেই PFAS শনাক্ত হয়েছে, অনেক ক্ষেত্রেই মাত্রা ছিল বিপজ্জনকভাবে বেশি। যদিও কোন ব্যান্ডগুলোতে পাওয়া যায় সেটা উল্লেখ করা হয়নি।

    তাছাড়া গবেষণায় PFHxA-এর মতো কিছু রাসায়নিকও পাওয়া গেছে, যা সাধারণত কীটনাশক বা কার্পেটে ব্যবহৃত হয় এবং সরাসরি লিভার ক্ষতির সঙ্গে জড়িত। যুক্তরাষ্ট্রের পরিবেশ সংস্থা (EPA) বলেছে, এসব রাসায়নিকের কোনো মাত্রাই শরীরের জন্য নিরাপদ নয়। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ইতোমধ্যেই নিষেধাজ্ঞার পথে হাঁটছে।

    তাই স্মার্টওয়াচ বা ব্যান্ড কেনার সময় সচেতন হোন। PFAS-মুক্ত কি না, দেখে নিন। নিরাপদ বিকল্প হিসেবে সিলিকন ব্যান্ড বেছে নেওয়াই উত্তম।

    Compiled by: বিজ্ঞান্বেষী
    Source: American Chemical Society (ACS)
    #Bigganneshi
    বর্তমানে স্মার্টওয়াচ ও ফিটনেস ট্র্যাকার ব্যান্ড আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অংশ হয়ে উঠেছে। কিন্তু এই ব্যান্ডে ব্যবহৃত কিছু মেটেরিয়ালে রয়েছে PFAS অর্থাৎ Per- and Polyfluoroalkyl Substances । এটি এক ধরনের বিষাক্ত চিরস্থায়ী রাসায়নিক, যা ত্বক থেকে শোষিত হয়ে শরীরে ক্যানসার, লিভার ও কিডনির রোগের ঝুঁকি তৈরি করতে পারে, এমনটাই বলছে যুক্তরাষ্ট্রের নটর ডেম বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণা। এই রাসায়নিক সাধারণত ব্যান্ড, কেসিং বা স্ক্রিন কোটিংয়ে ব্যবহৃত হয়, কারণ এটি পানি, তেল ও ঘাম প্রতিরোধ করে এবং পণ্যকে টেকসই ও মসৃণ রাখে। তবে PFAS খুবই স্থিতিশীল, সহজে ভাঙে না—বরং শরীরে ও পরিবেশে দীর্ঘদিন ধরে সক্রিয় থাকে। ঘাম এর শোষণ ক্ষমতা আরও বাড়িয়ে তোলে। গবেষণায় Nike, Apple, Fitbit, Google সহ ২২টি জনপ্রিয় ব্র্যান্ডের ব্যান্ড পরীক্ষা করে ১৫ টিতেই PFAS শনাক্ত হয়েছে, অনেক ক্ষেত্রেই মাত্রা ছিল বিপজ্জনকভাবে বেশি। যদিও কোন ব্যান্ডগুলোতে পাওয়া যায় সেটা উল্লেখ করা হয়নি। তাছাড়া গবেষণায় PFHxA-এর মতো কিছু রাসায়নিকও পাওয়া গেছে, যা সাধারণত কীটনাশক বা কার্পেটে ব্যবহৃত হয় এবং সরাসরি লিভার ক্ষতির সঙ্গে জড়িত। যুক্তরাষ্ট্রের পরিবেশ সংস্থা (EPA) বলেছে, এসব রাসায়নিকের কোনো মাত্রাই শরীরের জন্য নিরাপদ নয়। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ইতোমধ্যেই নিষেধাজ্ঞার পথে হাঁটছে। তাই স্মার্টওয়াচ বা ব্যান্ড কেনার সময় সচেতন হোন। PFAS-মুক্ত কি না, দেখে নিন। নিরাপদ বিকল্প হিসেবে সিলিকন ব্যান্ড বেছে নেওয়াই উত্তম। Compiled by: বিজ্ঞান্বেষী Source: American Chemical Society (ACS) #Bigganneshi
    Love
    1
    0 Comments 0 Shares 60 Views
  • নিজের শেকড় ভুলে যাওয়া অধম!
    মানুষ যত দূরই এগিয়ে যাক না কেন, যত বড় নাম বা সাফল্যই অর্জন করুক না কেন, তার ভিতরে এক অদৃশ্য শক্তি থাকে—সেটি হলো তার শেকড়। জন্মস্থান, পরিবার, পূর্বপুরুষদের জীবনসংগ্রাম, ভাষা, সংস্কৃতি, বিশ্বাস—এসব মিলেই তৈরি হয় একেকটি মানুষের পরিচয় ও আত্মা।

    শুধু প্রবাসী নয়, শেকড়ে যুক্ত থাকা দরকার সবার!
    শুধু প্রবাসী নয়, দেশে থাকা মানুষও যখন নিজের শেকড়কে অবহেলা করে, তখন সে ধীরে ধীরে আত্মবিস্মৃত হয়। এমন অনেকে আছেন, যারা নিজের আদি নিবাস, পারিবারিক ইতিহাস, স্থানীয় সংস্কৃতি বা মাটির গন্ধকে তুচ্ছ ভাবে; নিজেদের অতীতকে “অপ্রয়োজনীয়” মনে করে সামনে এগিয়ে যেতে চায়। কিন্তু প্রশ্ন হলো—যে নিজের পেছনের ইতিহাস জানে না, সে সামনের পথ ঠিক কীভাবে চিনবে?

    শেকড়হীন মানুষ, গাছ থেকে ছেঁড়া পাতার মতো!
    একটি গাছ মাটি ছেড়ে বাঁচতে পারে না। শেকড় ছাড়া গাছ যেমন শুকিয়ে যায়, মানুষও তেমনি ভিতর থেকে শূন্য হয়ে পড়ে যদি সে নিজের শেকড় ভুলে যায়। আত্মপরিচয় শুধু বর্তমানের নয়—তা গঠিত হয় অতীতের ভাঙাগড়ার ভেতর দিয়ে।
    আধুনিকতা মানেই শেকড়বিচ্ছিন্নতা নয়
    বিশ্বায়ন, আধুনিকতা, নাগরিক জীবন—এসবের ভিড়ে অনেকেই ভাবে নিজের পুরোনো গল্প, ঐতিহ্য বা স্থানীয় সংস্কৃতির চর্চা "পিছিয়ে পড়া"র লক্ষণ। অথচ সত্যটা হলো, যারা শেকড় জানে না, তারা ভবিষ্যৎ গড়ার মাটি পায় না। যারা নিজেদের ছোটবেলার স্কুল, গ্রামীণ রীতি, পরিবারের গল্প ভুলে যায়, তারাই জীবনের গভীর সম্পর্কগুলো হারিয়ে ফেলে।
    শেকড় মানে কেবল জন্মস্থান নয়, আত্মার সংযোগ!
    নিজ শেকড় মানে শুধু কোথায় জন্মেছি তা নয়—মানে আমি কার ইতিহাস বহন করছি, কার ভাষায় প্রথম হাসতে শিখেছি, কোন গন্ধে মন নরম হয়েছে, কোন মায়ার মধ্যে বেড়ে উঠেছি। এই শেকড় জানলে মানুষ আত্মবিশ্বাসী হয়, মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে শেখে।
    মধুসূদনের পথ ভুলে, শেষতক শেকড়েই ফেরা!
    এই প্রসঙ্গে মাইকেল মধুসূদন দত্তের কথা না বললেই নয়।
    যিনি ইংরেজি সাহিত্যকে হৃদয়ে ধারণ করেছিলেন, ইউরোপীয় সংস্কৃতিতে মগ্ন ছিলেন, এবং ভাবতেন—"এ দেশ, এই ভাষা, এই সংস্কৃতি আমার নয়।" তিনি বিদেশে গিয়ে বুঝেছিলেন, নিজের মাতৃভাষা, মাটি আর মা—এদের ছাড়া মানুষ কেবল দেহ বয়ে বেড়ায়, আত্মা নয়। তাই তিনি ফিরে এলেন, বাংলায় লিখলেন, আর সেই শেকড়েই গেঁথে গেলেন চিরতরে।
    শেষজীবনে অভাব, অপমান, হতাশা সব সয়েও বলেছিলেন—"আহা, বাংলায় যদি লিখতে পারতাম আরও আগে!"

    শেকড় ভুলে যাওয়া মানে আত্মা হারিয়ে ফেলা!
    যে নিজের শেকড় ভুলে যায়, তার চেয়ে অধম আর কেউ নেই। নিজেকে জানতে হলে, ভালোবাসতে হলে, আগে জানতে হয়—আমি কে, কোথা থেকে এসেছি। শুধু ব্যক্তিগত নয়, জাতিগতভাবে, সাংস্কৃতিকভাবেও এই চেতনা মানুষকে বাঁচিয়ে রাখে।
    🌱 নিজের শেকড় ভুলে যাওয়া অধম! মানুষ যত দূরই এগিয়ে যাক না কেন, যত বড় নাম বা সাফল্যই অর্জন করুক না কেন, তার ভিতরে এক অদৃশ্য শক্তি থাকে—সেটি হলো তার শেকড়। জন্মস্থান, পরিবার, পূর্বপুরুষদের জীবনসংগ্রাম, ভাষা, সংস্কৃতি, বিশ্বাস—এসব মিলেই তৈরি হয় একেকটি মানুষের পরিচয় ও আত্মা। 🏠 শুধু প্রবাসী নয়, শেকড়ে যুক্ত থাকা দরকার সবার! শুধু প্রবাসী নয়, দেশে থাকা মানুষও যখন নিজের শেকড়কে অবহেলা করে, তখন সে ধীরে ধীরে আত্মবিস্মৃত হয়। এমন অনেকে আছেন, যারা নিজের আদি নিবাস, পারিবারিক ইতিহাস, স্থানীয় সংস্কৃতি বা মাটির গন্ধকে তুচ্ছ ভাবে; নিজেদের অতীতকে “অপ্রয়োজনীয়” মনে করে সামনে এগিয়ে যেতে চায়। কিন্তু প্রশ্ন হলো—যে নিজের পেছনের ইতিহাস জানে না, সে সামনের পথ ঠিক কীভাবে চিনবে? 🌳 শেকড়হীন মানুষ, গাছ থেকে ছেঁড়া পাতার মতো! একটি গাছ মাটি ছেড়ে বাঁচতে পারে না। শেকড় ছাড়া গাছ যেমন শুকিয়ে যায়, মানুষও তেমনি ভিতর থেকে শূন্য হয়ে পড়ে যদি সে নিজের শেকড় ভুলে যায়। আত্মপরিচয় শুধু বর্তমানের নয়—তা গঠিত হয় অতীতের ভাঙাগড়ার ভেতর দিয়ে। 🌍 আধুনিকতা মানেই শেকড়বিচ্ছিন্নতা নয় বিশ্বায়ন, আধুনিকতা, নাগরিক জীবন—এসবের ভিড়ে অনেকেই ভাবে নিজের পুরোনো গল্প, ঐতিহ্য বা স্থানীয় সংস্কৃতির চর্চা "পিছিয়ে পড়া"র লক্ষণ। অথচ সত্যটা হলো, যারা শেকড় জানে না, তারা ভবিষ্যৎ গড়ার মাটি পায় না। যারা নিজেদের ছোটবেলার স্কুল, গ্রামীণ রীতি, পরিবারের গল্প ভুলে যায়, তারাই জীবনের গভীর সম্পর্কগুলো হারিয়ে ফেলে। 🧬 শেকড় মানে কেবল জন্মস্থান নয়, আত্মার সংযোগ! নিজ শেকড় মানে শুধু কোথায় জন্মেছি তা নয়—মানে আমি কার ইতিহাস বহন করছি, কার ভাষায় প্রথম হাসতে শিখেছি, কোন গন্ধে মন নরম হয়েছে, কোন মায়ার মধ্যে বেড়ে উঠেছি। এই শেকড় জানলে মানুষ আত্মবিশ্বাসী হয়, মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে শেখে। 📖 মধুসূদনের পথ ভুলে, শেষতক শেকড়েই ফেরা! এই প্রসঙ্গে মাইকেল মধুসূদন দত্তের কথা না বললেই নয়। যিনি ইংরেজি সাহিত্যকে হৃদয়ে ধারণ করেছিলেন, ইউরোপীয় সংস্কৃতিতে মগ্ন ছিলেন, এবং ভাবতেন—"এ দেশ, এই ভাষা, এই সংস্কৃতি আমার নয়।" তিনি বিদেশে গিয়ে বুঝেছিলেন, নিজের মাতৃভাষা, মাটি আর মা—এদের ছাড়া মানুষ কেবল দেহ বয়ে বেড়ায়, আত্মা নয়। তাই তিনি ফিরে এলেন, বাংলায় লিখলেন, আর সেই শেকড়েই গেঁথে গেলেন চিরতরে। শেষজীবনে অভাব, অপমান, হতাশা সব সয়েও বলেছিলেন—"আহা, বাংলায় যদি লিখতে পারতাম আরও আগে!" 🕯️ শেকড় ভুলে যাওয়া মানে আত্মা হারিয়ে ফেলা! যে নিজের শেকড় ভুলে যায়, তার চেয়ে অধম আর কেউ নেই। নিজেকে জানতে হলে, ভালোবাসতে হলে, আগে জানতে হয়—আমি কে, কোথা থেকে এসেছি। শুধু ব্যক্তিগত নয়, জাতিগতভাবে, সাংস্কৃতিকভাবেও এই চেতনা মানুষকে বাঁচিয়ে রাখে। ❤️✍️
    Sad
    1
    0 Comments 0 Shares 35 Views
  • পুরান ঢাকার অলিগলি, শুধু ইতিহাস আর হালুয়া-রুটি নয়—এখানে বাস করে বহু প্রজন্ম ধরে বয়ে আসা কাহিনি, লোকবিশ্বাস আর গা ছমছমে মিথ। এর মধ্যে অন্যতম হলো—‘অন্ধকারে আসা মিষ্টির ক্রেতা’র গল্প।

    বলা হয়, পুরান ঢাকার কিছু নির্দিষ্ট মিষ্টির দোকানে প্রতি কয়েকদিন পরপর রাত ৮টার দিকে হাজির হন একদল অদ্ভুত মানুষ।
    তারা ঢোকার আগে দোকানের মালিককে বলেন—

    “লাইট নিভিয়ে দিন।”
    আর তারপর?
    দোকান অন্ধকার হয়ে যায়।
    আর সেই অন্ধকারেই তারা নিয়ে যান ১০–১২ কেজি মিষ্টি।
    নগদ টাকাও দেন, কিন্তু কেউ সে টাকা ভালো করে দেখতে পায় না।
    সবকিছু হয় যেন নিঃশব্দ, নিঃছায়া, নিখুঁত।

    এদের গড়ন খুব লম্বা, চলাফেরা নিরব ও অস্বাভাবিক।
    তারা মাথা নিচু করে হাঁটে, কারো সঙ্গে কথা বলে না, কারো চোখে চোখ রাখে না।
    দোকানদারেরা বলে—

    “এদের মুখ আজ পর্যন্ত কেউ ভালো করে দেখে নাই।”
    কিছু দোকানদার স্বীকার করেন—

    “হ্যাঁ, তারা আসে। কিন্তু আমরা কিছু জিজ্ঞেস করি না। সবকিছু ঠিকঠাক করে চলে যায়।”
    আবার কেউ কেউ সরাসরি অস্বীকার করেন—

    “এসব কিছুই না। মিষ্টির বিক্রির গল্প বানিয়ে গুজব ছড়ানো হচ্ছে।”
    তবে আশ্চর্যের বিষয় হলো, প্রায় সব পুরান ঢাকার মিষ্টির দোকানে এই গল্প কোনো না কোনোভাবে ঘুরে ফিরে আসে।
    পুরান ঢাকার অলিগলি, শুধু ইতিহাস আর হালুয়া-রুটি নয়—এখানে বাস করে বহু প্রজন্ম ধরে বয়ে আসা কাহিনি, লোকবিশ্বাস আর গা ছমছমে মিথ। এর মধ্যে অন্যতম হলো—‘অন্ধকারে আসা মিষ্টির ক্রেতা’র গল্প। বলা হয়, পুরান ঢাকার কিছু নির্দিষ্ট মিষ্টির দোকানে প্রতি কয়েকদিন পরপর রাত ৮টার দিকে হাজির হন একদল অদ্ভুত মানুষ। তারা ঢোকার আগে দোকানের মালিককে বলেন— “লাইট নিভিয়ে দিন।” আর তারপর? দোকান অন্ধকার হয়ে যায়। আর সেই অন্ধকারেই তারা নিয়ে যান ১০–১২ কেজি মিষ্টি। নগদ টাকাও দেন, কিন্তু কেউ সে টাকা ভালো করে দেখতে পায় না। সবকিছু হয় যেন নিঃশব্দ, নিঃছায়া, নিখুঁত। এদের গড়ন খুব লম্বা, চলাফেরা নিরব ও অস্বাভাবিক। তারা মাথা নিচু করে হাঁটে, কারো সঙ্গে কথা বলে না, কারো চোখে চোখ রাখে না। দোকানদারেরা বলে— “এদের মুখ আজ পর্যন্ত কেউ ভালো করে দেখে নাই।” কিছু দোকানদার স্বীকার করেন— “হ্যাঁ, তারা আসে। কিন্তু আমরা কিছু জিজ্ঞেস করি না। সবকিছু ঠিকঠাক করে চলে যায়।” আবার কেউ কেউ সরাসরি অস্বীকার করেন— “এসব কিছুই না। মিষ্টির বিক্রির গল্প বানিয়ে গুজব ছড়ানো হচ্ছে।” তবে আশ্চর্যের বিষয় হলো, প্রায় সব পুরান ঢাকার মিষ্টির দোকানে এই গল্প কোনো না কোনোভাবে ঘুরে ফিরে আসে।
    Wow
    1
    0 Comments 0 Shares 43 Views
More Results
BlackBird Ai
https://bbai.shop