• অনুষ্ঠান: সালাম স্টিল স্ট্রেইট কাট
    অতিথি: আশিক চৌধুরী, নির্বাহী চেয়ারম্যান, বিডা ও বেজা
    উপস্থাপনা: দীপ্তি চৌধুরী
    পরিচালনা: রেজাউল করিম কাজল।
    অনুষ্ঠান: সালাম স্টিল স্ট্রেইট কাট অতিথি: আশিক চৌধুরী, নির্বাহী চেয়ারম্যান, বিডা ও বেজা উপস্থাপনা: দীপ্তি চৌধুরী পরিচালনা: রেজাউল করিম কাজল।
    0 Comments 0 Shares 564 Views
  • বাড়ির ভিতর সাপ আশা কিসের লক্ষণ? জানলে চমকে যাবেন। মিজানুর রহমান আজহারী
    বাড়ির ভিতর সাপ আশা কিসের লক্ষণ? জানলে চমকে যাবেন। মিজানুর রহমান আজহারী
    0 Comments 0 Shares 163 Views
  • আপনি যদি ভেবে থাকেন বিমান সংরক্ষণ মানেই স্রেফ এটিকে কোথাও পার্ক করে রাখা, তাহলে আপনি একদম ভুল করছেন না, আবার একদম ঠিকও করছেন না। কারণ, বিমান হলো এমন এক বস্তু, যাকে ঠিক গ্যারাজে ঢুকিয়ে তালা ঝুলিয়ে রাখা যায় না। এতে থাকে ৬০ ফুট লম্বা ডানা, একেকটি ইঞ্জিনের ওজন প্রায় ৪,০০০ কেজি, আর প্রতিটি ছোটখাট বিমানেরও ন্যূনতম ১০ লাখের ওপরে যন্ত্রাংশ থাকে।

    এখানে আসল চ্যালেঞ্জটা হলো—এই বিমানের শরীর যেন মরিচা না ধরে, ইঞ্জিন যেন উল্টাপাল্টা না করে, আর ককপিটের নেভিগেশনগুলো যাতে ঠিকঠাক থাকে।। এজন্য প্রয়োজন হয় প্রচুর গাণিতিক হিসাব।

    প্রথমত, তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ। বিমানের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ যেন ঘামতে না শুরু করে, তার জন্য হ্যাঙ্গারে তাপমাত্রা রাখতে হয় ২১ থেকে ২৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে। যদি এটি এক ডিগ্রি বাড়ে, তাহলে বিমানের অভ্যন্তরীণ যন্ত্রাংশের সম্প্রসারণ ঘটে ০.০০০১২ মিটার প্রতি মিটার দৈর্ঘ্যে। এটা শুনে মনে হতে পারে তেমন কিছু না, কিন্তু একটা বোয়িং ৭৭৭-এর ডানার দৈর্ঘ্য ৬০.৯ মিটার। কাজেই এক ডিগ্রিতে সেটি প্রায় ০.০০৭৩ মিটার বা ৭.৩ মিলিমিটার বাড়ে—মানে প্রায় একটা জামার বোতামের সমান। আর একটা জামার বোতামের সমান উল্টাপাল্টা ঘটনা মানেই মাঝ আকাশে বিশাল বিপদ।

    এবার আসি আর্দ্রতার কথায়। বিমানের ভেতর যদি বেশি আর্দ্রতা থাকে, তাহলে ইলেকট্রনিক সার্কিট বোর্ডে পানির কণা জমে গিয়ে শর্ট সার্কিট হয়ে যেতে পারে। আর বিমানে শর্ট সার্কিট মানে অনেক সময় ‘আউচ!’ নয়, বরং ‘আউট!’ বলা। তাই আর্দ্রতা রাখতে হয় ৪৫% থেকে ৫০% এর মধ্যে। যদি ৫৫% হয়, তাহলে ককপিটের কাচে পানি জমে এবং পাইলটকে তখন নিজ হাতে উইন্ডশিল্ড ওয়াইপার দিয়ে পরিষ্কার করতে হয়—যা সাধারণত তাদের জিএমএস (গ্লোবাল মেস সেন্স) স্কোরের সাথে যায় না।

    আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো—টায়ারের সংরক্ষণ। বিমানের টায়ার দেখতে যতটা বড় এবং গম্ভীর, ততটাই সংবেদনশীল। একটি বিমানের টায়ার প্রতি স্কয়ার ইঞ্চিতে ২০০ PSI চাপ সহ্য করতে পারে, যা এক হাড়ভাঙা টেনিস বলের চাপের ১৪ গুণ বেশি। তাই দীর্ঘসময় দাঁড়িয়ে থাকলে টায়ার সমানভাবে চাপ না পেলে তা একপাশে বসে যেতে পারে। সমাধান? প্রতি ১৮ দিন অন্তর টায়ার ৯০ ডিগ্রি ঘুরিয়ে দিতে হয়, যেন সব অংশ সমানভাবে বসে। বিমানের টায়ার যেন “চেয়ার পটেটো” না হয়ে পড়ে!

    বিমানের ইঞ্জিন হলো এই গল্পের রাজা। ইঞ্জিন ঠিকভাবে সংরক্ষণ না করলে তা হয়ে উঠতে পারে একজন সর্দিলাগা রোগীর মত। আপনি জানেন কি, প্রতি ৬ দিন অন্তর ইঞ্জিন ঘোরানো না হলে তার টারবাইন ব্লেডে ধুলো জমে গিয়ে ৪.৫% কর্মক্ষমতা কমে যায়? এক গবেষণায় দেখা গেছে, যদি ৩০ দিন ইঞ্জিন বন্ধ থাকে, তাহলে তাতে খনিজ তেল জমে গিয়ে একধরনের “অ্যালগেব্রিক ক্লগিং” হয়, যেখানে তেলের ঘনত্বের মান চলে যায় ১.৩৮ cP থেকে ২.২৯ cP—মানে এটি ঘন হয়ে আঠার মতো হয়ে যায়। তেল দিয়ে বিমান চালানো যায়, আঠা দিয়ে নয়।

    অনেকেই ভাবেন, বিমানের পেইন্ট বা রং শুধু দেখতে ভালো লাগার জন্য। আসলে এটি হল একধরনের তাপ-নিয়ন্ত্রক শিল্ড। যদি আপনি একটি সাদা রঙের বিমানকে মরুভূমিতে ফেলে রাখেন, তাও সে অন্তত ৪.৮ ডিগ্রি কম গরম হবে কালো রঙের তুলনায়। আর এই গরমের পার্থক্য মানে বিমানের ফিউজেলাজে প্রতি বর্গমিটারে ১২.৬ নিউটন অতিরিক্ত বল পড়বে—যা একেকটা স্ক্রুর ওপর ১.৮ কেজির চাপ সৃষ্টি করতে পারে। আপনি যদি ভাবেন "বাহ! এটাও কি হিসাব করার জিনিস?"—তাহলে আপনি সম্ভবত বিমান প্রকৌশল নিয়ে পড়ালেখা করেননি, তাই আপনাকে দোষ দেওয়া যায় না।

    আর হ্যাঁ, পাখি! হ্যাঁ, ঠিকই শুনেছেন—পাখি। আপনি যতই বিমানকে হ্যাঙ্গারে রাখুন না কেন, পাখিরা পছন্দ করে এর গা বেয়ে উঠে বসে থাকতে। প্রতি বছর শুধু এই পাখির বিষ্ঠার কারণে বিমানের বাহ্যিক অংশ পরিষ্কার করতে ব্যয় হয় প্রায় $১.৭ মিলিয়ন। আর বিমানে যদি পাখি বাসা বাঁধে, তবে সেটা হয় একেবারে জ্বালানি পাম্পের পাশে। একবার এক বিমানে ১৪টি চড়ুইয়ের বাসা পাওয়া গিয়েছিল—একটি ইঞ্জিনের মধ্যে। এতে শুধু পরিষ্কারের খরচই যায় $২৩,০০০।

    এবার আসি অদ্ভুত এক গবেষণায়। গবেষণায় দেখা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে মাটিতে থাকা বিমানগুলোর ইন্টারনাল সেন্সররা ‌মানসিকভাবে‌ হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ে। একে বলে “instrument lag depression syndrome”—একধরনের অবস্থান যেখানে Altimeter বা উচ্চতা মাপার যন্ত্র ভুল তথ্য দিতে শুরু করে। ৩০ দিন পর দেখা যায়, প্রকৃত উচ্চতা ৩০০০ ফুট হলেও সেন্সর দেখায় ২৫০০ বা ৩৫০০।

    এই অবস্থায় কিছু বিমান সংস্থা তাদের বিমানগুলিকে "ঘুরতে" বের করে—মানে, সপ্তাহে একবার অন্তত ৩০ মিনিটের জন্য আকাশে ওড়ানো হয়। যাতে বিমানের যন্ত্রপাতি মনে করে তারা এখনও জীবিত, এবং তাদের চাকরি এখনও আছে। একে বলে “maintenance flight,” কিন্তু অভ্যন্তরীণভাবে এটিকে ডাকা হয় “mental health flight.”

    মজার কথা হলো, বেশ কিছু সংস্থা আবার বিমানের মধ্যে “আনান্দ উৎসব” করে বিমান চালু রাখে—মানে ইঞ্জিন স্টার্ট করে, এয়ার কন্ডিশন চালায়, আলো জ্বালে, এমনকি কিছু ক্ষেত্রে ভুয়া বোর্ডিং করিয়ে ছবি তোলে। এসব কিছুই শুধুমাত্র যন্ত্রগুলোকে বোঝাতে যে, তারা অবহেলিত নয়। আপনি যদি ভাবেন, “বাহ, বিমানেরও অনুভূতি আছে?”—তাহলে আপনি একধাপ এগিয়ে আছেন মানবিক প্রযুক্তির দৃষ্টিভঙ্গিতে।

    এখন প্রশ্ন আসে—এই বিমানের সব কিছুর হিসাব রাখে কে? উত্তর—এয়ারক্রাফট মেইন্টেন্যান্স লগ। এটি হলো একধরনের বিমান ডায়েরি, যেখানে লেখা থাকে—“আজ ডানার নিচে ২.১ মিলিমিটার চিপ দেখা গেছে। সম্ভবত লেজ ঘষা লেগেছে।” এটি প্রতি দিন, প্রতি ঘণ্টা, এমনকি প্রতি মিনিটে আপডেট করতে হয়। গড়পড়তা একটি বোয়িং ৭৮৭-এর মেইন্টেন্যান্স রিপোর্ট বছরে প্রায় ২,৩০০ পৃষ্ঠার হয়ে থাকে। এতো বড় বই লেখার জন্য একজন সাহিত্যের লোকের চেয়ে একজন অ্যারোনটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারের বেশি প্রয়োজন হয়।

    শেষমেশ, একটি বিষয় বলা দরকার—বিমান সংরক্ষণ মানেই শুধু যন্ত্রপাতির যত্ন নয়, বরং এটি একধরনের পোষ্য পালনের মতো। আপনি যেমন আপনার বিড়ালকে খাওয়ান, তার গায়ে হাত বুলান, মাঝে মাঝে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যান—তেমনি বিমানকেও “খাওয়াতে” হয় (ফুয়েল দিয়ে), তার শরীর ঘষে পরিষ্কার করতে হয়, এবং মাঝে মাঝে ওড়াতে হয় যেন তার মন খারাপ না হয়।

    তাই পরিশেষে বলা যায়, বিমান সংরক্ষণ শুধু বিজ্ঞান নয়, এটি শিল্প। এটি এমন এক ললিতকলা যেখানে গণিতের সূত্র, পদার্থবিদ্যার নিয়ম এবং খানিকটা হৃদয়ের আবেগ মিশে তৈরি হয় এক সুপ্ত ও শক্তিশালী জীবনরক্ষা প্রক্রিয়া। যদি কখনো কোনো বিমানে উঠে বসেন, মনে রাখবেন—এই উড়ন্ত দৈত্যটা অনেক গুনতি, অনেক ঘাম এবং শ্রমের বিনিময়েই আপনাকে নিয়ে উড়াল দিতে যাচ্ছে।

    আপনি যখন জানালার বাইরে তাকিয়ে ভাববেন, “আহা! আকাশ কত নীল!”—ঠিক তখনই বিমানের সেন্সররা হিসাব কষছে, “আমি কি এখনও উচ্চতায় ৩২,০০০ ফুটে, নাকি পাইলট কফির সময় ভুলে গেছেন অটোপাইলট অন করতে?”

    © Tubelight Media 2025

    আরও সুন্দর সুন্দর গল্প পড়তে চাইলে এখনই Taking Over BD পেজে যোগ দিন!

    আমাদের পোস্টে শেয়ার করুন, লাইক দিন, আর কমেন্ট করে যুক্ত হয়ে যান।
    আশা করি আমাদের প্রতিটি গল্প আপনাদের মন ছুঁয়ে যাবে।

    চলুন, গল্পের জগতে হারিয়ে যাই!
    আপনি যদি ভেবে থাকেন বিমান সংরক্ষণ মানেই স্রেফ এটিকে কোথাও পার্ক করে রাখা, তাহলে আপনি একদম ভুল করছেন না, আবার একদম ঠিকও করছেন না। কারণ, বিমান হলো এমন এক বস্তু, যাকে ঠিক গ্যারাজে ঢুকিয়ে তালা ঝুলিয়ে রাখা যায় না। এতে থাকে ৬০ ফুট লম্বা ডানা, একেকটি ইঞ্জিনের ওজন প্রায় ৪,০০০ কেজি, আর প্রতিটি ছোটখাট বিমানেরও ন্যূনতম ১০ লাখের ওপরে যন্ত্রাংশ থাকে। এখানে আসল চ্যালেঞ্জটা হলো—এই বিমানের শরীর যেন মরিচা না ধরে, ইঞ্জিন যেন উল্টাপাল্টা না করে, আর ককপিটের নেভিগেশনগুলো যাতে ঠিকঠাক থাকে।। এজন্য প্রয়োজন হয় প্রচুর গাণিতিক হিসাব। প্রথমত, তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ। বিমানের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ যেন ঘামতে না শুরু করে, তার জন্য হ্যাঙ্গারে তাপমাত্রা রাখতে হয় ২১ থেকে ২৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে। যদি এটি এক ডিগ্রি বাড়ে, তাহলে বিমানের অভ্যন্তরীণ যন্ত্রাংশের সম্প্রসারণ ঘটে ০.০০০১২ মিটার প্রতি মিটার দৈর্ঘ্যে। এটা শুনে মনে হতে পারে তেমন কিছু না, কিন্তু একটা বোয়িং ৭৭৭-এর ডানার দৈর্ঘ্য ৬০.৯ মিটার। কাজেই এক ডিগ্রিতে সেটি প্রায় ০.০০৭৩ মিটার বা ৭.৩ মিলিমিটার বাড়ে—মানে প্রায় একটা জামার বোতামের সমান। আর একটা জামার বোতামের সমান উল্টাপাল্টা ঘটনা মানেই মাঝ আকাশে বিশাল বিপদ। এবার আসি আর্দ্রতার কথায়। বিমানের ভেতর যদি বেশি আর্দ্রতা থাকে, তাহলে ইলেকট্রনিক সার্কিট বোর্ডে পানির কণা জমে গিয়ে শর্ট সার্কিট হয়ে যেতে পারে। আর বিমানে শর্ট সার্কিট মানে অনেক সময় ‘আউচ!’ নয়, বরং ‘আউট!’ বলা। তাই আর্দ্রতা রাখতে হয় ৪৫% থেকে ৫০% এর মধ্যে। যদি ৫৫% হয়, তাহলে ককপিটের কাচে পানি জমে এবং পাইলটকে তখন নিজ হাতে উইন্ডশিল্ড ওয়াইপার দিয়ে পরিষ্কার করতে হয়—যা সাধারণত তাদের জিএমএস (গ্লোবাল মেস সেন্স) স্কোরের সাথে যায় না। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো—টায়ারের সংরক্ষণ। বিমানের টায়ার দেখতে যতটা বড় এবং গম্ভীর, ততটাই সংবেদনশীল। একটি বিমানের টায়ার প্রতি স্কয়ার ইঞ্চিতে ২০০ PSI চাপ সহ্য করতে পারে, যা এক হাড়ভাঙা টেনিস বলের চাপের ১৪ গুণ বেশি। তাই দীর্ঘসময় দাঁড়িয়ে থাকলে টায়ার সমানভাবে চাপ না পেলে তা একপাশে বসে যেতে পারে। সমাধান? প্রতি ১৮ দিন অন্তর টায়ার ৯০ ডিগ্রি ঘুরিয়ে দিতে হয়, যেন সব অংশ সমানভাবে বসে। বিমানের টায়ার যেন “চেয়ার পটেটো” না হয়ে পড়ে! বিমানের ইঞ্জিন হলো এই গল্পের রাজা। ইঞ্জিন ঠিকভাবে সংরক্ষণ না করলে তা হয়ে উঠতে পারে একজন সর্দিলাগা রোগীর মত। আপনি জানেন কি, প্রতি ৬ দিন অন্তর ইঞ্জিন ঘোরানো না হলে তার টারবাইন ব্লেডে ধুলো জমে গিয়ে ৪.৫% কর্মক্ষমতা কমে যায়? এক গবেষণায় দেখা গেছে, যদি ৩০ দিন ইঞ্জিন বন্ধ থাকে, তাহলে তাতে খনিজ তেল জমে গিয়ে একধরনের “অ্যালগেব্রিক ক্লগিং” হয়, যেখানে তেলের ঘনত্বের মান চলে যায় ১.৩৮ cP থেকে ২.২৯ cP—মানে এটি ঘন হয়ে আঠার মতো হয়ে যায়। তেল দিয়ে বিমান চালানো যায়, আঠা দিয়ে নয়। অনেকেই ভাবেন, বিমানের পেইন্ট বা রং শুধু দেখতে ভালো লাগার জন্য। আসলে এটি হল একধরনের তাপ-নিয়ন্ত্রক শিল্ড। যদি আপনি একটি সাদা রঙের বিমানকে মরুভূমিতে ফেলে রাখেন, তাও সে অন্তত ৪.৮ ডিগ্রি কম গরম হবে কালো রঙের তুলনায়। আর এই গরমের পার্থক্য মানে বিমানের ফিউজেলাজে প্রতি বর্গমিটারে ১২.৬ নিউটন অতিরিক্ত বল পড়বে—যা একেকটা স্ক্রুর ওপর ১.৮ কেজির চাপ সৃষ্টি করতে পারে। আপনি যদি ভাবেন "বাহ! এটাও কি হিসাব করার জিনিস?"—তাহলে আপনি সম্ভবত বিমান প্রকৌশল নিয়ে পড়ালেখা করেননি, তাই আপনাকে দোষ দেওয়া যায় না। আর হ্যাঁ, পাখি! হ্যাঁ, ঠিকই শুনেছেন—পাখি। আপনি যতই বিমানকে হ্যাঙ্গারে রাখুন না কেন, পাখিরা পছন্দ করে এর গা বেয়ে উঠে বসে থাকতে। প্রতি বছর শুধু এই পাখির বিষ্ঠার কারণে বিমানের বাহ্যিক অংশ পরিষ্কার করতে ব্যয় হয় প্রায় $১.৭ মিলিয়ন। আর বিমানে যদি পাখি বাসা বাঁধে, তবে সেটা হয় একেবারে জ্বালানি পাম্পের পাশে। একবার এক বিমানে ১৪টি চড়ুইয়ের বাসা পাওয়া গিয়েছিল—একটি ইঞ্জিনের মধ্যে। এতে শুধু পরিষ্কারের খরচই যায় $২৩,০০০। এবার আসি অদ্ভুত এক গবেষণায়। গবেষণায় দেখা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে মাটিতে থাকা বিমানগুলোর ইন্টারনাল সেন্সররা ‌মানসিকভাবে‌ হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ে। একে বলে “instrument lag depression syndrome”—একধরনের অবস্থান যেখানে Altimeter বা উচ্চতা মাপার যন্ত্র ভুল তথ্য দিতে শুরু করে। ৩০ দিন পর দেখা যায়, প্রকৃত উচ্চতা ৩০০০ ফুট হলেও সেন্সর দেখায় ২৫০০ বা ৩৫০০। এই অবস্থায় কিছু বিমান সংস্থা তাদের বিমানগুলিকে "ঘুরতে" বের করে—মানে, সপ্তাহে একবার অন্তত ৩০ মিনিটের জন্য আকাশে ওড়ানো হয়। যাতে বিমানের যন্ত্রপাতি মনে করে তারা এখনও জীবিত, এবং তাদের চাকরি এখনও আছে। একে বলে “maintenance flight,” কিন্তু অভ্যন্তরীণভাবে এটিকে ডাকা হয় “mental health flight.” মজার কথা হলো, বেশ কিছু সংস্থা আবার বিমানের মধ্যে “আনান্দ উৎসব” করে বিমান চালু রাখে—মানে ইঞ্জিন স্টার্ট করে, এয়ার কন্ডিশন চালায়, আলো জ্বালে, এমনকি কিছু ক্ষেত্রে ভুয়া বোর্ডিং করিয়ে ছবি তোলে। এসব কিছুই শুধুমাত্র যন্ত্রগুলোকে বোঝাতে যে, তারা অবহেলিত নয়। আপনি যদি ভাবেন, “বাহ, বিমানেরও অনুভূতি আছে?”—তাহলে আপনি একধাপ এগিয়ে আছেন মানবিক প্রযুক্তির দৃষ্টিভঙ্গিতে। এখন প্রশ্ন আসে—এই বিমানের সব কিছুর হিসাব রাখে কে? উত্তর—এয়ারক্রাফট মেইন্টেন্যান্স লগ। এটি হলো একধরনের বিমান ডায়েরি, যেখানে লেখা থাকে—“আজ ডানার নিচে ২.১ মিলিমিটার চিপ দেখা গেছে। সম্ভবত লেজ ঘষা লেগেছে।” এটি প্রতি দিন, প্রতি ঘণ্টা, এমনকি প্রতি মিনিটে আপডেট করতে হয়। গড়পড়তা একটি বোয়িং ৭৮৭-এর মেইন্টেন্যান্স রিপোর্ট বছরে প্রায় ২,৩০০ পৃষ্ঠার হয়ে থাকে। এতো বড় বই লেখার জন্য একজন সাহিত্যের লোকের চেয়ে একজন অ্যারোনটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারের বেশি প্রয়োজন হয়। শেষমেশ, একটি বিষয় বলা দরকার—বিমান সংরক্ষণ মানেই শুধু যন্ত্রপাতির যত্ন নয়, বরং এটি একধরনের পোষ্য পালনের মতো। আপনি যেমন আপনার বিড়ালকে খাওয়ান, তার গায়ে হাত বুলান, মাঝে মাঝে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যান—তেমনি বিমানকেও “খাওয়াতে” হয় (ফুয়েল দিয়ে), তার শরীর ঘষে পরিষ্কার করতে হয়, এবং মাঝে মাঝে ওড়াতে হয় যেন তার মন খারাপ না হয়। তাই পরিশেষে বলা যায়, বিমান সংরক্ষণ শুধু বিজ্ঞান নয়, এটি শিল্প। এটি এমন এক ললিতকলা যেখানে গণিতের সূত্র, পদার্থবিদ্যার নিয়ম এবং খানিকটা হৃদয়ের আবেগ মিশে তৈরি হয় এক সুপ্ত ও শক্তিশালী জীবনরক্ষা প্রক্রিয়া। যদি কখনো কোনো বিমানে উঠে বসেন, মনে রাখবেন—এই উড়ন্ত দৈত্যটা অনেক গুনতি, অনেক ঘাম এবং শ্রমের বিনিময়েই আপনাকে নিয়ে উড়াল দিতে যাচ্ছে। আপনি যখন জানালার বাইরে তাকিয়ে ভাববেন, “আহা! আকাশ কত নীল!”—ঠিক তখনই বিমানের সেন্সররা হিসাব কষছে, “আমি কি এখনও উচ্চতায় ৩২,০০০ ফুটে, নাকি পাইলট কফির সময় ভুলে গেছেন অটোপাইলট অন করতে?” © Tubelight Media 2025 ✨ আরও সুন্দর সুন্দর গল্প পড়তে চাইলে এখনই 👉 Taking Over BD 👈 পেজে যোগ দিন! আমাদের পোস্টে 🎈 শেয়ার করুন, 👍 লাইক দিন, আর 🗣️ কমেন্ট করে যুক্ত হয়ে যান। আশা করি ❤️ আমাদের প্রতিটি গল্প 🌙 আপনাদের মন ছুঁয়ে যাবে। 🔥 চলুন, গল্পের জগতে হারিয়ে যাই! ❤️
    Love
    1
    0 Comments 0 Shares 330 Views
  • এক গাছ, যার প্রতি বজ্রপাত যেন এক নিখুঁত লক্ষ্যভেদ! এই গাছটিকে বলা হয় "Lightning Tree" — এবং এটি অবস্থিত জিম্বাবুয়ের মনোয়ারা (Manoora), ভিক্টোরিয়া জলপ্রপাতের আশপাশে। এই গাছের প্রতি বছর ২০ বার বা তারও বেশি বজ্রপাত হয়, যা একে প্রকৃতির বিস্ময়কর এক উপাদানে পরিণত করেছে।

    কেন এই গাছে বারবার বজ্র পড়ে?
    Lightning Tree এতবার বজ্রপাতের শিকার হওয়ার পেছনে একাধিক বৈজ্ঞানিক কারণ রয়েছে:

    1. অবস্থান ও উচ্চতা:
    এই গাছটি এমন উঁচু ও খোলা জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে, যেখানে চারপাশে অন্য কোনো উঁচু অবজেক্ট নেই। ফলে বজ্রপাতের সময় এটি সহজেই “টার্গেট” হয়ে দাঁড়ায়।

    2. জলের উপস্থিতি ও পরিবাহিতা:
    এই গাছ হয়তো এমন প্রজাতির যা জল ধরে রাখতে পারে বা যার ছাল ও কাঠ বজ্রের তড়িৎ পরিবাহী।

    মাটি বা আশেপাশের অঞ্চলে আর্দ্রতা বজ্রপাতের প্রবাহ আরও বাড়িয়ে তোলে।

    3. ম্যাগনেটিক ফিল্ড এবং আয়ন:
    কিছু বিজ্ঞানী মনে করেন, এই গাছের চারপাশের আবহাওয়া, বিদ্যুৎচৌম্বকীয় ক্ষেত্র এবং আয়নকণার কারণে বজ্রপাত এখানে আকৃষ্ট হয়।

    গাছটি কি জীবিত?
    হ্যাঁ, আশ্চর্যজনকভাবে এত বজ্রপাতের পরেও গাছটি বেঁচে আছে! কারণ:

    বজ্রপাত সাধারণত গাছের বাইরের অংশে আঘাত করে।

    অনেক সময় গাছের ভিতরের পানি তাৎক্ষণিক বাষ্প হয়ে বিস্ফোরণ ঘটায়, তবে এই গাছ বারবার বেঁচে যায় — যা তাকে "Nature's Lightning Rod" নাম এনে দিয়েছে।

    দর্শনীয় আকর্ষণ:
    Lightning Tree এখন একটি পর্যটক আকর্ষণ, অনেকেই দেখতে যান এমন এক গাছ যা প্রকৃতির সবচেয়ে ভয়ানক শক্তিকে সহ্য করে দাঁড়িয়ে আছে।

    মজার তথ্য:
    তথ্য বিস্তারিত
    অবস্থান জিম্বাবুয়ে, ভিক্টোরিয়া ফলস অঞ্চল
    গড় বজ্রপাত প্রতি বছর ২০–৩০ বার পর্যন্ত
    বৈশিষ্ট্য বজ্র সহ্য করার অসাধারণ ক্ষমতা
    বর্তমান অবস্থা জীবিত, শক্তিশালী এবং বিখ্যাত
    এক গাছ, যার প্রতি বজ্রপাত যেন এক নিখুঁত লক্ষ্যভেদ! এই গাছটিকে বলা হয় "Lightning Tree" — এবং এটি অবস্থিত জিম্বাবুয়ের মনোয়ারা (Manoora), ভিক্টোরিয়া জলপ্রপাতের আশপাশে। এই গাছের প্রতি বছর ২০ বার বা তারও বেশি বজ্রপাত হয়, যা একে প্রকৃতির বিস্ময়কর এক উপাদানে পরিণত করেছে। কেন এই গাছে বারবার বজ্র পড়ে? Lightning Tree এতবার বজ্রপাতের শিকার হওয়ার পেছনে একাধিক বৈজ্ঞানিক কারণ রয়েছে: 1. অবস্থান ও উচ্চতা: এই গাছটি এমন উঁচু ও খোলা জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে, যেখানে চারপাশে অন্য কোনো উঁচু অবজেক্ট নেই। ফলে বজ্রপাতের সময় এটি সহজেই “টার্গেট” হয়ে দাঁড়ায়। 2. জলের উপস্থিতি ও পরিবাহিতা: এই গাছ হয়তো এমন প্রজাতির যা জল ধরে রাখতে পারে বা যার ছাল ও কাঠ বজ্রের তড়িৎ পরিবাহী। মাটি বা আশেপাশের অঞ্চলে আর্দ্রতা বজ্রপাতের প্রবাহ আরও বাড়িয়ে তোলে। 3. ম্যাগনেটিক ফিল্ড এবং আয়ন: কিছু বিজ্ঞানী মনে করেন, এই গাছের চারপাশের আবহাওয়া, বিদ্যুৎচৌম্বকীয় ক্ষেত্র এবং আয়নকণার কারণে বজ্রপাত এখানে আকৃষ্ট হয়। গাছটি কি জীবিত? হ্যাঁ, আশ্চর্যজনকভাবে এত বজ্রপাতের পরেও গাছটি বেঁচে আছে! কারণ: বজ্রপাত সাধারণত গাছের বাইরের অংশে আঘাত করে। অনেক সময় গাছের ভিতরের পানি তাৎক্ষণিক বাষ্প হয়ে বিস্ফোরণ ঘটায়, তবে এই গাছ বারবার বেঁচে যায় — যা তাকে "Nature's Lightning Rod" নাম এনে দিয়েছে। দর্শনীয় আকর্ষণ: Lightning Tree এখন একটি পর্যটক আকর্ষণ, অনেকেই দেখতে যান এমন এক গাছ যা প্রকৃতির সবচেয়ে ভয়ানক শক্তিকে সহ্য করে দাঁড়িয়ে আছে। মজার তথ্য: তথ্য বিস্তারিত অবস্থান জিম্বাবুয়ে, ভিক্টোরিয়া ফলস অঞ্চল গড় বজ্রপাত প্রতি বছর ২০–৩০ বার পর্যন্ত বৈশিষ্ট্য বজ্র সহ্য করার অসাধারণ ক্ষমতা বর্তমান অবস্থা জীবিত, শক্তিশালী এবং বিখ্যাত
    0 Comments 0 Shares 262 Views
  • ওয়াজ আনিসুর রহমান আশরাফী নতুন ওয়াজ
    ওয়াজ আনিসুর রহমান আশরাফী নতুন ওয়াজ
    0 Comments 0 Shares 99 Views
  • সম্প্রতি প্রকাশিত একটি বৈজ্ঞানিক গবেষণায় প্রথমবারের মতো জানা গেছে, হাসপাতাল-সম্পর্কিত মারাত্মক সংক্রমণের জন্য দায়ী ব্যাকটেরিয়া 'Pseudomonas aeruginosa' মেডিকেল প্লাস্টিক খেয়ে বেঁচে থাকতে পারে। গবেষণাটি ৭ মে,২০২৫ ‘Cell Reports’ নামক জার্নালে প্রকাশিত হয়।

    Pseudomonas aeruginosa প্রতি বছর বিশ্বজুড়ে প্রায় ৫.৬ লক্ষ মৃত্যুর জন্য দায়ী। এটি ফুসফুস, মূত্রনালী ও রক্তে সংক্রমণ ঘটাতে পারে এবং সাধারণত হাসপাতালের মতো জীবাণুমুক্ত পরিবেশেই বেশি দেখা যায়। এই জীবাণুটি খুব সহজে বিভিন্ন ওষুধের প্রতিরোধ গড়ে তোলে, ফলে একে সুপারবাগ বলা হয়।গবেষকরা এক রোগীর ক্ষত থেকে সংগৃহীত এই ব্যাকটেরিয়ার একটি স্ট্রেইন বিশ্লেষণ করে দেখেছেন, এটি জৈবভাবে ভেঙে পড়া প্লাস্টিক (biodegradable plastic) যেমন স্যুচার (সেলাইয়ের সুতা), স্টেন্ট ও ইমপ্ল্যান্টস-এর মতো মেডিকেল সামগ্রী খেয়ে বেঁচে থাকতে সক্ষম। এটি শুধুমাত্র এর টিকে থাকার ক্ষমতা বাড়ায় না, বরং রোগীর শরীরে বা অস্ত্রোপচারের পর বসানো ডিভাইসের উপর দীর্ঘসময় সক্রিয় থেকে মারাত্মক সংক্রমণ ঘটাতে পারে।

    এই আবিষ্কার চিকিৎসা বিজ্ঞানে নতুন প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে – আমরা যেসব মেডিকেল উপকরণকে নিরাপদ মনে করি, সেগুলোর উপরে ব্যাকটেরিয়া বেঁচে থাকতে পারলে সংক্রমণের ঝুঁকি বহুগুণে বেড়ে যেতে পারে। ফলে ভবিষ্যতে মেডিকেল ডিভাইস নির্মাতাদের আরও নিরাপদ ও ব্যাকটেরিয়ারোধী উপকরণ ব্যবহারের চিন্তা করতে হতে পারে।এই গবেষণা আমাদের ভীত করে দেয় যে জীবাণুর অভিযোজন ক্ষমতা কতটা আশ্চর্যজনক এবং বিপজ্জনক হতে পারে। হাসপাতালের সংক্রমণ রোধে এখন আরও সতর্ক পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি হয়ে পড়েছে।
    সম্প্রতি প্রকাশিত একটি বৈজ্ঞানিক গবেষণায় প্রথমবারের মতো জানা গেছে, হাসপাতাল-সম্পর্কিত মারাত্মক সংক্রমণের জন্য দায়ী ব্যাকটেরিয়া 'Pseudomonas aeruginosa' মেডিকেল প্লাস্টিক খেয়ে বেঁচে থাকতে পারে। গবেষণাটি ৭ মে,২০২৫ ‘Cell Reports’ নামক জার্নালে প্রকাশিত হয়। Pseudomonas aeruginosa প্রতি বছর বিশ্বজুড়ে প্রায় ৫.৬ লক্ষ মৃত্যুর জন্য দায়ী। এটি ফুসফুস, মূত্রনালী ও রক্তে সংক্রমণ ঘটাতে পারে এবং সাধারণত হাসপাতালের মতো জীবাণুমুক্ত পরিবেশেই বেশি দেখা যায়। এই জীবাণুটি খুব সহজে বিভিন্ন ওষুধের প্রতিরোধ গড়ে তোলে, ফলে একে সুপারবাগ বলা হয়।গবেষকরা এক রোগীর ক্ষত থেকে সংগৃহীত এই ব্যাকটেরিয়ার একটি স্ট্রেইন বিশ্লেষণ করে দেখেছেন, এটি জৈবভাবে ভেঙে পড়া প্লাস্টিক (biodegradable plastic) যেমন স্যুচার (সেলাইয়ের সুতা), স্টেন্ট ও ইমপ্ল্যান্টস-এর মতো মেডিকেল সামগ্রী খেয়ে বেঁচে থাকতে সক্ষম। এটি শুধুমাত্র এর টিকে থাকার ক্ষমতা বাড়ায় না, বরং রোগীর শরীরে বা অস্ত্রোপচারের পর বসানো ডিভাইসের উপর দীর্ঘসময় সক্রিয় থেকে মারাত্মক সংক্রমণ ঘটাতে পারে। এই আবিষ্কার চিকিৎসা বিজ্ঞানে নতুন প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে – আমরা যেসব মেডিকেল উপকরণকে নিরাপদ মনে করি, সেগুলোর উপরে ব্যাকটেরিয়া বেঁচে থাকতে পারলে সংক্রমণের ঝুঁকি বহুগুণে বেড়ে যেতে পারে। ফলে ভবিষ্যতে মেডিকেল ডিভাইস নির্মাতাদের আরও নিরাপদ ও ব্যাকটেরিয়ারোধী উপকরণ ব্যবহারের চিন্তা করতে হতে পারে।এই গবেষণা আমাদের ভীত করে দেয় যে জীবাণুর অভিযোজন ক্ষমতা কতটা আশ্চর্যজনক এবং বিপজ্জনক হতে পারে। হাসপাতালের সংক্রমণ রোধে এখন আরও সতর্ক পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি হয়ে পড়েছে।
    0 Comments 0 Shares 160 Views
  • ইরানে জার্মান প্রত্নতত্ত্ববিদ আবিষ্কার করেছেন প্রায় ৩,০০০ বছরের এক আশ্চর্য কাজল। মিশরের প্রাচীন কাজলের মতো এতে কোনো প্রাকৃতিক জৈব উপাদান ছিল না। বরং এই কাজল তৈরি করা হয়েছে গ্রাফাইট ও ম্যাঙ্গানিজ অক্সাইডের নিখুঁত মিশ্রণে l সেই যুগের তুলনায় একেবারে অচিন্তনীয় ও যুগান্তকারী। এর ফলে অনেকটাই আধুনিক কাজলের মতো চোখে ঝিলমিল আভা দেখা যেতো l নিশ্চই ঝকঝকে রূপালি দীপ্তি ওয়ালা এই চোখের সাজ নারীকে অপরূপ করে তুলতো।

    তথ্য ও ছবি -https://greekreporter.com/2025/06/11/makeup-iran-earliest-use-graphite-kohl/
    ইরানে জার্মান প্রত্নতত্ত্ববিদ আবিষ্কার করেছেন প্রায় ৩,০০০ বছরের এক আশ্চর্য কাজল। মিশরের প্রাচীন কাজলের মতো এতে কোনো প্রাকৃতিক জৈব উপাদান ছিল না। বরং এই কাজল তৈরি করা হয়েছে গ্রাফাইট ও ম্যাঙ্গানিজ অক্সাইডের নিখুঁত মিশ্রণে l সেই যুগের তুলনায় একেবারে অচিন্তনীয় ও যুগান্তকারী। এর ফলে অনেকটাই আধুনিক কাজলের মতো চোখে ঝিলমিল আভা দেখা যেতো l নিশ্চই ঝকঝকে রূপালি দীপ্তি ওয়ালা এই চোখের সাজ নারীকে অপরূপ করে তুলতো। তথ্য ও ছবি -https://greekreporter.com/2025/06/11/makeup-iran-earliest-use-graphite-kohl/
    0 Comments 0 Shares 49 Views
  • আপনার গবেষণা পদ্ধতির সাতকাহন: লিনিয়ার রিগ্রেশন
    (Linear Regression in Research methodology)

    ধরুন, আপনি অনেকগুলো কাঁচামাল জোগাড় করেছেন। এখন সেই কাঁচামাল দিয়ে কী বানাবেন, কীভাবে বানাবেন, সেটাই হলো বিশ্লেষণের কাজ। আর এই বিশ্লেষণের দুনিয়ায় একটা দারুণ 'ম্যাজিক টুল' আছে, যার নাম লিনিয়ার রিগ্রেশন। এর নামটা একটু জটিল শোনালেও, এর কাজটা কিন্তু খুবই সহজ আর কাজের। চলুন, আজ আমরা এই লিনিয়ার রিগ্রেশনের আদ্যোপান্ত জেনে নিই, একদম A2Z!

    লিনিয়ার রিগ্রেশন আসলে কী? (What is Linear Regression?)
    আচ্ছা, আপনি কি কখনো ভেবে দেখেছেন, একজন শিক্ষার্থী যত বেশি সময় পড়াশোনা করে, তার পরীক্ষার নম্বর তত বাড়ে কেন? অথবা, একটি পণ্যের দাম বাড়লে তার বিক্রি কমে যায় কেন? এই 'কেন' আর 'কীভাবে'র সম্পর্কটা খুঁজে বের করার জন্যই লিনিয়ার রিগ্রেশনকে আমরা ব্যবহার করি।

    সহজ করে বললে, লিনিয়ার রিগ্রেশন হলো এমন একটি পরিসংখ্যানগত কৌশল, যা দুটি বা তার বেশি বিষয়ের মধ্যে একটা সরলরেখার মতো সম্পর্ক খুঁজে বের করতে সাহায্য করে। এটি অনেকটা একটা অদৃশ্য সুতো খুঁজে বের করার মতো, যা দুটি জিনিসকে একসঙ্গে বেঁধে রাখে। যেমন, পড়াশোনার সময় আর পরীক্ষার নম্বরের মধ্যে একটা সম্পর্ক আছে, তাই না? লিনিয়ার রিগ্রেশন সেই সম্পর্কটাকে একটা সরলরেখা দিয়ে প্রকাশ করে।

    এখানে দুটো গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় আছে, যাদেরকে আমরা 'চলক' (Variables) বলি:

    ১। স্বাধীন চলক (Independent Variable): এই হলো সেই 'কারণ' বা 'ইনপুট'। একে আপনি পরিবর্তন করতে পারেন, বা এটি নিজে নিজেই পরিবর্তিত হয় এবং অন্য কোনো কিছুকে প্রভাবিত করে। যেমন, পড়াশোনার সময়, বিজ্ঞাপনের খরচ, বা একটি বাড়ির আকার। ভাবুন তো, পড়াশোনার সময় বাড়লে বা কমলে পরীক্ষার নম্বরের ওপর একটা প্রভাব পড়ে, তাই না?

    ২। নির্ভরশীল চলক (Dependent Variable): আর এই হলো সেই 'ফলাফল' বা 'আউটপুট', যা স্বাধীন চলকের পরিবর্তনের কারণে প্রভাবিত হয়। যেমন, পরীক্ষার নম্বর, পণ্যের বিক্রি, বা বাড়ির দাম। এই চলকটি স্বাধীন চলকের উপর 'নির্ভর' করে।

    লিনিয়ার রিগ্রেশনের মূল লক্ষ্য হলো এই স্বাধীন ও নির্ভরশীল চলকের মধ্যে একটা গাণিতিক সম্পর্ক খুঁজে বের করা, যা দেখতে একটা সরলরেখার মতো। এই রেখার একটা সমীকরণ থাকে: Y=a+bX

    এখানে: Y হলো নির্ভরশীল চলক (ফলাফল): অর্থাৎ, আপনি যে জিনিসটা অনুমান করতে চান বা যার পরিবর্তন মাপতে চান।

    X হলো স্বাধীন চলক (কারণ): অর্থাৎ, যে জিনিসটা পরিবর্তনের কারণ হিসেবে কাজ করছে।

    a হলো ইন্টারসেপ্ট (Intercept): এটি অনেকটা গ্রাফের Y-অক্ষকে রেখাটি যেখানে ছেদ করে সেই বিন্দু। সহজ ভাষায়, যখন স্বাধীন চলক (X) এর মান শূন্য হয়, তখন নির্ভরশীল চলক (Y) এর আনুমানিক মান কত হবে, সেটাই a। যেমন, যদি আপনি একদমই পড়াশোনা না করেন (X=0), তাহলে আপনার পরীক্ষার নম্বর কত হতে পারে, তার একটা আনুমানিক ধারণা।

    b হলো স্লপ (Slope): এটি রেখার ঢাল বা খাড়া হওয়ার পরিমাণ নির্দেশ করে। এটি দেখায়, স্বাধীন চলক (X) এর মান যখন এক ইউনিট বাড়ে, তখন নির্ভরশীল চলক (Y) এর মান কতটুকু পরিবর্তন হয়। যেমন, যদি b এর মান ২ হয়, তার মানে পড়াশোনার সময় এক ঘণ্টা বাড়ালে পরীক্ষার নম্বর আনুমানিক ২ বাড়বে।

    কেন আমরা লিনিয়ার রিগ্রেশন ব্যবহার করি? (Why Use It?)

    এর প্রধান কাজ দুটো, যা গবেষণায় দারুণ কাজে আসে:
    A) সম্পর্ক বোঝা (Understanding Relationships): এটি আপনাকে বলে দেবে, আপনার চলকগুলোর মধ্যে আদৌ কোনো সম্পর্ক আছে কি না, এবং সেই সম্পর্কটা কতটা শক্তিশালী। ধরুন, আপনি জানতে চান, বিজ্ঞাপনে খরচ বাড়ালে পণ্যের বিক্রি কি সত্যিই বাড়ে? যদি বাড়ে, তাহলে কতটা বাড়ে? লিনিয়ার রিগ্রেশন আপনাকে এই 'কতটা'র একটা সংখ্যাগত পরিমাপ দেবে।

    B) ভবিষ্যৎ অনুমান করা (Making Predictions): একবার সম্পর্কটা বুঝে গেলে, আমরা ভবিষ্যৎ সম্পর্কে কিছু অনুমান করতে পারি। ধরুন, আপনি দেখলেন যে, তাপমাত্রা বাড়লে আইসক্রিমের বিক্রি বাড়ে। লিনিয়ার রিগ্রেশন আপনাকে একটি মডেল দেবে, যার মাধ্যমে আপনি হয়তো বলতে পারবেন, আগামী সপ্তাহে তাপমাত্রা যদি আরও বাড়ে, তাহলে আইসক্রিমের বিক্রি কেমন হতে পারে। এটি অনেকটা আবহাওয়ার পূর্বাভাস দেওয়ার মতো, যেখানে আমরা অতীতের ডেটা ব্যবহার করে ভবিষ্যতের একটা ধারণা পাই।

    লিনিয়ার রিগ্রেশন কীভাবে কাজ করে? (How Does It Work?)
    লিনিয়ার রিগ্রেশন কাজ করে একটা সরলরেখা ব্যবহার করে। ভাবুন, আপনার কাছে কিছু ডেটা পয়েন্ট আছে, যেমন গ্রাফ পেপারে ছড়ানো কিছু বিন্দু। লিনিয়ার রিগ্রেশনের কাজ হলো এই বিন্দুগুলোর মাঝখান দিয়ে এমন একটা সরলরেখা আঁকা, যা সব বিন্দু থেকে 'গড়ে' সবচেয়ে কম দূরত্বে থাকে। এই 'সবচেয়ে কম দূরত্ব' খুঁজে বের করার জন্য কিছু গাণিতিক হিসাব-নিকাশ করা হয়, যাকে আমরা 'এরর মিনিমাইজেশন' বা 'অবশিষ্ট কমানো' বলি। অর্থাৎ, ডেটা পয়েন্টগুলো থেকে রেখার যে দূরত্ব, সেই দূরত্বগুলোকে যতটা সম্ভব ছোট করা হয়, যাতে রেখাটি ডেটার 'প্রবণতা' বা 'ট্রেন্ড'কে সবচেয়ে ভালোভাবে দেখাতে পারে। এই রেখাটিই হলো আপনার রিগ্রেশন লাইন, যা আপনার ডেটার গল্পটা বলে।

    লিনিয়ার রিগ্রেশনের প্রকারভেদ (Types of Linear Regression)
    লিনিয়ার রিগ্রেশন মূলত দুটি প্রধান ধরনে বিভক্ত, নির্ভর করে আপনি কতগুলো স্বাধীন চলক ব্যবহার করছেন তার উপর:

    সাধারণ লিনিয়ার রিগ্রেশন (Simple Linear Regression): এখানে শুধু একটি স্বাধীন চলক এবং একটি নির্ভরশীল চলক থাকে।

    উদাহরণ: একজন ছাত্রের পড়াশোনার সময়ের (স্বাধীন চলক) সাথে তার পরীক্ষার নম্বরের (নির্ভরশীল চলক) সম্পর্ক। এখানে আপনি শুধু একটি কারণ (পড়াশোনার সময়) দিয়ে একটি ফলাফল (পরীক্ষার নম্বর) বোঝার চেষ্টা করছেন।

    মাল্টিপল লিনিয়ার রিগ্রেশন (Multiple Linear Regression): এখানে একাধিক স্বাধীন চলক এবং একটি নির্ভরশীল চলক থাকে।

    উদাহরণ: একটি বাড়ির দাম (নির্ভরশীল চলক) শুধু তার আকারের উপর নির্ভর করে না, বরং এলাকার অবস্থান, বাড়ির বয়স, রুমের সংখ্যা, বাথরুমের সংখ্যা – এই সবকিছুর উপর নির্ভর করে। মাল্টিপল রিগ্রেশন এই সব কারণ একসঙ্গে বিশ্লেষণ করে দেখায় যে, কোন কারণটি বাড়ির দামের উপর কতটা প্রভাব ফেলছে। এটি অনেকটা অনেকগুলো কারণ একসঙ্গে একটি ফলাফলের উপর কীভাবে প্রভাব ফেলে, তা দেখার মতো।

    কিছু জরুরি কথা (Key Concepts): অবশিষ্ট (Residuals): রিগ্রেশন রেখাটি সব ডেটা পয়েন্টের উপর দিয়ে যায় না, কিছু পয়েন্ট রেখার উপরে বা নিচে থাকে। এই ডেটা পয়েন্ট এবং রেখার মধ্যে যে দূরত্ব, সেটিই হলো অবশিষ্ট বা এরর (error)। এটি দেখায়, আমাদের মডেল কতটা নিখুঁতভাবে অনুমান করতে পারছে। যত কম অবশিষ্ট, মডেল তত ভালো।

    সহসম্পর্ক (Correlation): এটি লিনিয়ার রিগ্রেশনের সাথে জড়িত একটি ধারণা। সহসম্পর্ক (যেমন পিয়ারসন কোরিলেশন কোএফিশিয়েন্ট) দুটি চলকের মধ্যে সম্পর্কের শক্তি এবং দিক (ইতিবাচক বা নেতিবাচক) পরিমাপ করে। লিনিয়ার রিগ্রেশন এই সম্পর্ককে একটি মডেলের মাধ্যমে ব্যাখ্যা করে। সহসম্পর্ক আপনাকে বলবে সম্পর্ক আছে কিনা, আর রিগ্রেশন আপনাকে বলবে সেই সম্পর্কটা কেমন এবং কীভাবে কাজ করে।

    অনুমান (Assumptions): লিনিয়ার রিগ্রেশন কিছু নির্দিষ্ট শর্তের উপর ভিত্তি করে কাজ করে। যেমন, চলকগুলোর মধ্যে সম্পর্কটা যেন সত্যিই সরলরৈখিক হয়, ডেটা পয়েন্টগুলো যেন খুব বেশি ছড়ানো-ছিটানো না থাকে (আউটলায়ার না থাকে), এবং এররগুলো যেন এলোমেলোভাবে ছড়ানো থাকে। এই শর্তগুলো পূরণ হলে মডেলের ফলাফল আরও নির্ভরযোগ্য হয়।

    কখন ব্যবহার করবেন, কখন করবেন না? (When to Use, When Not to Use?)

    কখন ব্যবহার করবেন?: যখন আপনি দুটি বা তার বেশি চলকের মধ্যে একটি সরলরৈখিক সম্পর্ক আছে বলে মনে করেন এবং সেই সম্পর্কটা বুঝতে চান। যখন আপনি একটি চলকের মান ব্যবহার করে অন্য একটি চলকের মান অনুমান করতে চান।

    যখন আপনি জানতে চান, কোন কারণগুলো (স্বাধীন চলক) একটি নির্দিষ্ট ফলাফলের (নির্ভরশীল চলক) উপর সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলছে। যখন আপনি কোনো ধারাবাহিক ফলাফল (continuous outcome) যেমন, তাপমাত্রা, বিক্রি, নম্বর ইত্যাদি অনুমান করতে চান।

    কখন করবেন না?
    যদি চলকগুলোর মধ্যে কোনো সরলরৈখিক সম্পর্ক না থাকে (যেমন, সম্পর্কটি বক্ররেখার মতো বা এলোমেলো)। এক্ষেত্রে অন্য ধরনের রিগ্রেশন মডেল ব্যবহার করতে হতে পারে। যদি আপনার ডেটায় অনেক বেশি অস্বাভাবিক বা ভুল ডেটা (outliers) থাকে, যা রেখাটিকে ভুলভাবে প্রভাবিত করতে পারে। এই 'আউটলায়ার'গুলো ফলাফলকে ভুল পথে চালিত করতে পারে।

    যদি আপনার স্বাধীন চলকগুলো একে অপরের সাথে খুব বেশি সম্পর্কিত হয় (multicollinearity), তাহলে মাল্টিপল রিগ্রেশন ব্যবহার করা কঠিন হতে পারে। এটি অনেকটা এমন যে, দুটি কারণ একই রকম প্রভাব ফেলছে, তখন বোঝা কঠিন হয়ে যায় কোনটি আসল প্রভাবক।

    লিনিয়ার রিগ্রেশন হলো ডেটা বিশ্লেষণের এক দারুণ হাতিয়ার, যা আপনাকে ডেটার ভেতরের লুকানো গল্পগুলো খুঁজে বের করতে সাহায্য করবে। এটি শুধু সংখ্যা নয়, বরং সংখ্যার পেছনের কারণ ও প্রভাবকে বুঝতে শেখায়। আশা করি, এই বিস্তারিত আলোচনা আপনার লিনিয়ার রিগ্রেশন সম্পর্কে ধারণা আরও পরিষ্কার করেছে। আপনার যদি আরও কিছু জানার থাকে, তাহলে আমাকে জানাতে পারেন!

    Md. Rony Masud
    BBA, MBA (DU), MS (Japan)
    আপনার গবেষণা পদ্ধতির সাতকাহন: লিনিয়ার রিগ্রেশন (Linear Regression in Research methodology) ধরুন, আপনি অনেকগুলো কাঁচামাল জোগাড় করেছেন। এখন সেই কাঁচামাল দিয়ে কী বানাবেন, কীভাবে বানাবেন, সেটাই হলো বিশ্লেষণের কাজ। আর এই বিশ্লেষণের দুনিয়ায় একটা দারুণ 'ম্যাজিক টুল' আছে, যার নাম লিনিয়ার রিগ্রেশন। এর নামটা একটু জটিল শোনালেও, এর কাজটা কিন্তু খুবই সহজ আর কাজের। চলুন, আজ আমরা এই লিনিয়ার রিগ্রেশনের আদ্যোপান্ত জেনে নিই, একদম A2Z! লিনিয়ার রিগ্রেশন আসলে কী? (What is Linear Regression?) আচ্ছা, আপনি কি কখনো ভেবে দেখেছেন, একজন শিক্ষার্থী যত বেশি সময় পড়াশোনা করে, তার পরীক্ষার নম্বর তত বাড়ে কেন? অথবা, একটি পণ্যের দাম বাড়লে তার বিক্রি কমে যায় কেন? এই 'কেন' আর 'কীভাবে'র সম্পর্কটা খুঁজে বের করার জন্যই লিনিয়ার রিগ্রেশনকে আমরা ব্যবহার করি। সহজ করে বললে, লিনিয়ার রিগ্রেশন হলো এমন একটি পরিসংখ্যানগত কৌশল, যা দুটি বা তার বেশি বিষয়ের মধ্যে একটা সরলরেখার মতো সম্পর্ক খুঁজে বের করতে সাহায্য করে। এটি অনেকটা একটা অদৃশ্য সুতো খুঁজে বের করার মতো, যা দুটি জিনিসকে একসঙ্গে বেঁধে রাখে। যেমন, পড়াশোনার সময় আর পরীক্ষার নম্বরের মধ্যে একটা সম্পর্ক আছে, তাই না? লিনিয়ার রিগ্রেশন সেই সম্পর্কটাকে একটা সরলরেখা দিয়ে প্রকাশ করে। এখানে দুটো গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় আছে, যাদেরকে আমরা 'চলক' (Variables) বলি: ১। স্বাধীন চলক (Independent Variable): এই হলো সেই 'কারণ' বা 'ইনপুট'। একে আপনি পরিবর্তন করতে পারেন, বা এটি নিজে নিজেই পরিবর্তিত হয় এবং অন্য কোনো কিছুকে প্রভাবিত করে। যেমন, পড়াশোনার সময়, বিজ্ঞাপনের খরচ, বা একটি বাড়ির আকার। ভাবুন তো, পড়াশোনার সময় বাড়লে বা কমলে পরীক্ষার নম্বরের ওপর একটা প্রভাব পড়ে, তাই না? ২। নির্ভরশীল চলক (Dependent Variable): আর এই হলো সেই 'ফলাফল' বা 'আউটপুট', যা স্বাধীন চলকের পরিবর্তনের কারণে প্রভাবিত হয়। যেমন, পরীক্ষার নম্বর, পণ্যের বিক্রি, বা বাড়ির দাম। এই চলকটি স্বাধীন চলকের উপর 'নির্ভর' করে। লিনিয়ার রিগ্রেশনের মূল লক্ষ্য হলো এই স্বাধীন ও নির্ভরশীল চলকের মধ্যে একটা গাণিতিক সম্পর্ক খুঁজে বের করা, যা দেখতে একটা সরলরেখার মতো। এই রেখার একটা সমীকরণ থাকে: Y=a+bX এখানে: Y হলো নির্ভরশীল চলক (ফলাফল): অর্থাৎ, আপনি যে জিনিসটা অনুমান করতে চান বা যার পরিবর্তন মাপতে চান। X হলো স্বাধীন চলক (কারণ): অর্থাৎ, যে জিনিসটা পরিবর্তনের কারণ হিসেবে কাজ করছে। a হলো ইন্টারসেপ্ট (Intercept): এটি অনেকটা গ্রাফের Y-অক্ষকে রেখাটি যেখানে ছেদ করে সেই বিন্দু। সহজ ভাষায়, যখন স্বাধীন চলক (X) এর মান শূন্য হয়, তখন নির্ভরশীল চলক (Y) এর আনুমানিক মান কত হবে, সেটাই a। যেমন, যদি আপনি একদমই পড়াশোনা না করেন (X=0), তাহলে আপনার পরীক্ষার নম্বর কত হতে পারে, তার একটা আনুমানিক ধারণা। b হলো স্লপ (Slope): এটি রেখার ঢাল বা খাড়া হওয়ার পরিমাণ নির্দেশ করে। এটি দেখায়, স্বাধীন চলক (X) এর মান যখন এক ইউনিট বাড়ে, তখন নির্ভরশীল চলক (Y) এর মান কতটুকু পরিবর্তন হয়। যেমন, যদি b এর মান ২ হয়, তার মানে পড়াশোনার সময় এক ঘণ্টা বাড়ালে পরীক্ষার নম্বর আনুমানিক ২ বাড়বে। কেন আমরা লিনিয়ার রিগ্রেশন ব্যবহার করি? (Why Use It?) এর প্রধান কাজ দুটো, যা গবেষণায় দারুণ কাজে আসে: A) সম্পর্ক বোঝা (Understanding Relationships): এটি আপনাকে বলে দেবে, আপনার চলকগুলোর মধ্যে আদৌ কোনো সম্পর্ক আছে কি না, এবং সেই সম্পর্কটা কতটা শক্তিশালী। ধরুন, আপনি জানতে চান, বিজ্ঞাপনে খরচ বাড়ালে পণ্যের বিক্রি কি সত্যিই বাড়ে? যদি বাড়ে, তাহলে কতটা বাড়ে? লিনিয়ার রিগ্রেশন আপনাকে এই 'কতটা'র একটা সংখ্যাগত পরিমাপ দেবে। B) ভবিষ্যৎ অনুমান করা (Making Predictions): একবার সম্পর্কটা বুঝে গেলে, আমরা ভবিষ্যৎ সম্পর্কে কিছু অনুমান করতে পারি। ধরুন, আপনি দেখলেন যে, তাপমাত্রা বাড়লে আইসক্রিমের বিক্রি বাড়ে। লিনিয়ার রিগ্রেশন আপনাকে একটি মডেল দেবে, যার মাধ্যমে আপনি হয়তো বলতে পারবেন, আগামী সপ্তাহে তাপমাত্রা যদি আরও বাড়ে, তাহলে আইসক্রিমের বিক্রি কেমন হতে পারে। এটি অনেকটা আবহাওয়ার পূর্বাভাস দেওয়ার মতো, যেখানে আমরা অতীতের ডেটা ব্যবহার করে ভবিষ্যতের একটা ধারণা পাই। লিনিয়ার রিগ্রেশন কীভাবে কাজ করে? (How Does It Work?) লিনিয়ার রিগ্রেশন কাজ করে একটা সরলরেখা ব্যবহার করে। ভাবুন, আপনার কাছে কিছু ডেটা পয়েন্ট আছে, যেমন গ্রাফ পেপারে ছড়ানো কিছু বিন্দু। লিনিয়ার রিগ্রেশনের কাজ হলো এই বিন্দুগুলোর মাঝখান দিয়ে এমন একটা সরলরেখা আঁকা, যা সব বিন্দু থেকে 'গড়ে' সবচেয়ে কম দূরত্বে থাকে। এই 'সবচেয়ে কম দূরত্ব' খুঁজে বের করার জন্য কিছু গাণিতিক হিসাব-নিকাশ করা হয়, যাকে আমরা 'এরর মিনিমাইজেশন' বা 'অবশিষ্ট কমানো' বলি। অর্থাৎ, ডেটা পয়েন্টগুলো থেকে রেখার যে দূরত্ব, সেই দূরত্বগুলোকে যতটা সম্ভব ছোট করা হয়, যাতে রেখাটি ডেটার 'প্রবণতা' বা 'ট্রেন্ড'কে সবচেয়ে ভালোভাবে দেখাতে পারে। এই রেখাটিই হলো আপনার রিগ্রেশন লাইন, যা আপনার ডেটার গল্পটা বলে। লিনিয়ার রিগ্রেশনের প্রকারভেদ (Types of Linear Regression) লিনিয়ার রিগ্রেশন মূলত দুটি প্রধান ধরনে বিভক্ত, নির্ভর করে আপনি কতগুলো স্বাধীন চলক ব্যবহার করছেন তার উপর: সাধারণ লিনিয়ার রিগ্রেশন (Simple Linear Regression): এখানে শুধু একটি স্বাধীন চলক এবং একটি নির্ভরশীল চলক থাকে। উদাহরণ: একজন ছাত্রের পড়াশোনার সময়ের (স্বাধীন চলক) সাথে তার পরীক্ষার নম্বরের (নির্ভরশীল চলক) সম্পর্ক। এখানে আপনি শুধু একটি কারণ (পড়াশোনার সময়) দিয়ে একটি ফলাফল (পরীক্ষার নম্বর) বোঝার চেষ্টা করছেন। মাল্টিপল লিনিয়ার রিগ্রেশন (Multiple Linear Regression): এখানে একাধিক স্বাধীন চলক এবং একটি নির্ভরশীল চলক থাকে। উদাহরণ: একটি বাড়ির দাম (নির্ভরশীল চলক) শুধু তার আকারের উপর নির্ভর করে না, বরং এলাকার অবস্থান, বাড়ির বয়স, রুমের সংখ্যা, বাথরুমের সংখ্যা – এই সবকিছুর উপর নির্ভর করে। মাল্টিপল রিগ্রেশন এই সব কারণ একসঙ্গে বিশ্লেষণ করে দেখায় যে, কোন কারণটি বাড়ির দামের উপর কতটা প্রভাব ফেলছে। এটি অনেকটা অনেকগুলো কারণ একসঙ্গে একটি ফলাফলের উপর কীভাবে প্রভাব ফেলে, তা দেখার মতো। কিছু জরুরি কথা (Key Concepts): অবশিষ্ট (Residuals): রিগ্রেশন রেখাটি সব ডেটা পয়েন্টের উপর দিয়ে যায় না, কিছু পয়েন্ট রেখার উপরে বা নিচে থাকে। এই ডেটা পয়েন্ট এবং রেখার মধ্যে যে দূরত্ব, সেটিই হলো অবশিষ্ট বা এরর (error)। এটি দেখায়, আমাদের মডেল কতটা নিখুঁতভাবে অনুমান করতে পারছে। যত কম অবশিষ্ট, মডেল তত ভালো। সহসম্পর্ক (Correlation): এটি লিনিয়ার রিগ্রেশনের সাথে জড়িত একটি ধারণা। সহসম্পর্ক (যেমন পিয়ারসন কোরিলেশন কোএফিশিয়েন্ট) দুটি চলকের মধ্যে সম্পর্কের শক্তি এবং দিক (ইতিবাচক বা নেতিবাচক) পরিমাপ করে। লিনিয়ার রিগ্রেশন এই সম্পর্ককে একটি মডেলের মাধ্যমে ব্যাখ্যা করে। সহসম্পর্ক আপনাকে বলবে সম্পর্ক আছে কিনা, আর রিগ্রেশন আপনাকে বলবে সেই সম্পর্কটা কেমন এবং কীভাবে কাজ করে। অনুমান (Assumptions): লিনিয়ার রিগ্রেশন কিছু নির্দিষ্ট শর্তের উপর ভিত্তি করে কাজ করে। যেমন, চলকগুলোর মধ্যে সম্পর্কটা যেন সত্যিই সরলরৈখিক হয়, ডেটা পয়েন্টগুলো যেন খুব বেশি ছড়ানো-ছিটানো না থাকে (আউটলায়ার না থাকে), এবং এররগুলো যেন এলোমেলোভাবে ছড়ানো থাকে। এই শর্তগুলো পূরণ হলে মডেলের ফলাফল আরও নির্ভরযোগ্য হয়। কখন ব্যবহার করবেন, কখন করবেন না? (When to Use, When Not to Use?) কখন ব্যবহার করবেন?: যখন আপনি দুটি বা তার বেশি চলকের মধ্যে একটি সরলরৈখিক সম্পর্ক আছে বলে মনে করেন এবং সেই সম্পর্কটা বুঝতে চান। যখন আপনি একটি চলকের মান ব্যবহার করে অন্য একটি চলকের মান অনুমান করতে চান। যখন আপনি জানতে চান, কোন কারণগুলো (স্বাধীন চলক) একটি নির্দিষ্ট ফলাফলের (নির্ভরশীল চলক) উপর সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলছে। যখন আপনি কোনো ধারাবাহিক ফলাফল (continuous outcome) যেমন, তাপমাত্রা, বিক্রি, নম্বর ইত্যাদি অনুমান করতে চান। কখন করবেন না? যদি চলকগুলোর মধ্যে কোনো সরলরৈখিক সম্পর্ক না থাকে (যেমন, সম্পর্কটি বক্ররেখার মতো বা এলোমেলো)। এক্ষেত্রে অন্য ধরনের রিগ্রেশন মডেল ব্যবহার করতে হতে পারে। যদি আপনার ডেটায় অনেক বেশি অস্বাভাবিক বা ভুল ডেটা (outliers) থাকে, যা রেখাটিকে ভুলভাবে প্রভাবিত করতে পারে। এই 'আউটলায়ার'গুলো ফলাফলকে ভুল পথে চালিত করতে পারে। যদি আপনার স্বাধীন চলকগুলো একে অপরের সাথে খুব বেশি সম্পর্কিত হয় (multicollinearity), তাহলে মাল্টিপল রিগ্রেশন ব্যবহার করা কঠিন হতে পারে। এটি অনেকটা এমন যে, দুটি কারণ একই রকম প্রভাব ফেলছে, তখন বোঝা কঠিন হয়ে যায় কোনটি আসল প্রভাবক। লিনিয়ার রিগ্রেশন হলো ডেটা বিশ্লেষণের এক দারুণ হাতিয়ার, যা আপনাকে ডেটার ভেতরের লুকানো গল্পগুলো খুঁজে বের করতে সাহায্য করবে। এটি শুধু সংখ্যা নয়, বরং সংখ্যার পেছনের কারণ ও প্রভাবকে বুঝতে শেখায়। আশা করি, এই বিস্তারিত আলোচনা আপনার লিনিয়ার রিগ্রেশন সম্পর্কে ধারণা আরও পরিষ্কার করেছে। আপনার যদি আরও কিছু জানার থাকে, তাহলে আমাকে জানাতে পারেন! Md. Rony Masud BBA, MBA (DU), MS (Japan)
    0 Comments 0 Shares 274 Views
  • নিউজিল্যান্ডে পাখিরা উড়তে শেখেনি — কারণ সেখানে কোনো শিকারি ছিল না!

    বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে? কিন্তু এটাই সত্যি! নিউজিল্যান্ডের কিছু পাখি নাকি উড়তেই পারে না! ভাবছেন কেন?

    লক্ষ লক্ষ বছর ধরে নিউজিল্যান্ড ছিল এক বিচ্ছিন্ন দ্বীপ। সেখানে ছিল না কোনো সাপ, বা বড় কোনো শিকারি প্রাণী। ফলে সেখানকার কিছু পাখিদের শিকারিদের হাত থেকে বাঁচার জন্য উড়তে শেখার প্রয়োজনই পড়েনি!

    আর এ কারণেই, ধীরে ধীরে তারা উড়ার ক্ষমতাই হারিয়ে ফেলেছে!

    যেমন:

    কিউই পাখি (Kiwi): নিউজিল্যান্ডের জাতীয় প্রতীক হলেও, এই পাখি একদম উড়তে পারে না!

    কাকাপো (Kakapo): পৃথিবীর একমাত্র নিশাচর এবং উড়তে না পারা তোতাপাখি!

    এটা প্রমাণ করে, প্রকৃতি যদি নিরাপদ আশ্রয় দেয়, তাহলে প্রজাতির আচরণও বদলে যায়! সত্যিই দারুণ এক তথ্য, তাই না?
    নিউজিল্যান্ডে পাখিরা উড়তে শেখেনি — কারণ সেখানে কোনো শিকারি ছিল না! বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে? কিন্তু এটাই সত্যি! নিউজিল্যান্ডের কিছু পাখি নাকি উড়তেই পারে না! ভাবছেন কেন? লক্ষ লক্ষ বছর ধরে নিউজিল্যান্ড ছিল এক বিচ্ছিন্ন দ্বীপ। সেখানে ছিল না কোনো সাপ, বা বড় কোনো শিকারি প্রাণী। ফলে সেখানকার কিছু পাখিদের শিকারিদের হাত থেকে বাঁচার জন্য উড়তে শেখার প্রয়োজনই পড়েনি! আর এ কারণেই, ধীরে ধীরে তারা উড়ার ক্ষমতাই হারিয়ে ফেলেছে! যেমন: কিউই পাখি (Kiwi): নিউজিল্যান্ডের জাতীয় প্রতীক হলেও, এই পাখি একদম উড়তে পারে না! কাকাপো (Kakapo): পৃথিবীর একমাত্র নিশাচর এবং উড়তে না পারা তোতাপাখি! এটা প্রমাণ করে, প্রকৃতি যদি নিরাপদ আশ্রয় দেয়, তাহলে প্রজাতির আচরণও বদলে যায়! সত্যিই দারুণ এক তথ্য, তাই না?
    0 Comments 0 Shares 117 Views
  • ১৬ বছর একা, সঙ্গী নেই, তবু ডিম পাড়ল কুমির!

    ২০১৮ সালে এক আশ্চর্য ঘটনা চমকে দেয় বিজ্ঞানী সমাজকে। একটি স্ত্রী আমেরিকান কুমির, দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে সম্পূর্ণ একা থেকেছে সে, কোনো পুরুষ কুমিরের সংস্পর্শ ছাড়াই ডিম পাড়ে!

    প্রথমে মনে হয়েছিল- এটা হয়তো নিছক কাকতালীয়। কিন্তু যখন ডিমগুলোর জিনগত পরীক্ষা করা হয়, তখন বেরিয়ে আসে এক বিস্ময়কর সত্য- একটি ডিমে সম্পূর্ণ সুগঠিত ভ্রূণ ছিল, যার জিনগত গঠন প্রায় ১০০% তার মায়ের মতো ছিল।

    এটা হলো পার্থেনোজেনেসিস, অর্থাৎ 'ভার্জিন বার্থ' বা কুমারী থেকেই সন্তান জন্ম দেওয়ার ঘটনা।

    পার্থেনোজেনেসিস আগে পাখি, সাপ এবং কিছু মাছের মধ্যে দেখা গেছে, কিন্তু কখনোই কুমিরের মতো প্রাচীন এবং শীর্ষস্তরের শিকারী প্রাণীর মধ্যে দেখা যায়নি।

    যদিও সেই কুমিরের বাচ্চাকে মৃত অবস্থায় পাওয়া গিয়েছে, এবং ডিমগুলোও ফোটেনি, তবু এই আবিষ্কার প্রমাণ করে যে প্রতিকূল পরিবেশে কুমিরের মতো প্রাণীও একা থাকলে জিনগতভাবে নিজেকে পুনরুৎপাদন করতে পারে।

    আরও রোমাঞ্চকর বিষয় হলো- বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই ক্ষমতা হয়তো এসেছে কোটি কোটি বছর আগের ডাইনোসরের যুগ থেকে। কুমির, পাখি, এমনকি ডাইনোসরের পূর্বপুরুষদের মধ্যে এই আত্মপ্রজননের সক্ষমতা ছিল।
    .
    .
    #itihaser_golpo #itihasergolpo
    ১৬ বছর একা, সঙ্গী নেই, তবু ডিম পাড়ল কুমির! ২০১৮ সালে এক আশ্চর্য ঘটনা চমকে দেয় বিজ্ঞানী সমাজকে। একটি স্ত্রী আমেরিকান কুমির, দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে সম্পূর্ণ একা থেকেছে সে, কোনো পুরুষ কুমিরের সংস্পর্শ ছাড়াই ডিম পাড়ে! প্রথমে মনে হয়েছিল- এটা হয়তো নিছক কাকতালীয়। কিন্তু যখন ডিমগুলোর জিনগত পরীক্ষা করা হয়, তখন বেরিয়ে আসে এক বিস্ময়কর সত্য- একটি ডিমে সম্পূর্ণ সুগঠিত ভ্রূণ ছিল, যার জিনগত গঠন প্রায় ১০০% তার মায়ের মতো ছিল। এটা হলো পার্থেনোজেনেসিস, অর্থাৎ 'ভার্জিন বার্থ' বা কুমারী থেকেই সন্তান জন্ম দেওয়ার ঘটনা। পার্থেনোজেনেসিস আগে পাখি, সাপ এবং কিছু মাছের মধ্যে দেখা গেছে, কিন্তু কখনোই কুমিরের মতো প্রাচীন এবং শীর্ষস্তরের শিকারী প্রাণীর মধ্যে দেখা যায়নি। যদিও সেই কুমিরের বাচ্চাকে মৃত অবস্থায় পাওয়া গিয়েছে, এবং ডিমগুলোও ফোটেনি, তবু এই আবিষ্কার প্রমাণ করে যে প্রতিকূল পরিবেশে কুমিরের মতো প্রাণীও একা থাকলে জিনগতভাবে নিজেকে পুনরুৎপাদন করতে পারে। আরও রোমাঞ্চকর বিষয় হলো- বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই ক্ষমতা হয়তো এসেছে কোটি কোটি বছর আগের ডাইনোসরের যুগ থেকে। কুমির, পাখি, এমনকি ডাইনোসরের পূর্বপুরুষদের মধ্যে এই আত্মপ্রজননের সক্ষমতা ছিল। . . #itihaser_golpo #itihasergolpo
    0 Comments 0 Shares 197 Views
  • সাল ১৮৬৭। ভারতের উত্তর প্রদেশের এক জঙ্গলে সন্ধান পাওয়া যায় এক শিশুর। বয়স ছয় হবে। সে নেকড়ের পালের সাথে ছুটছিল। চার পায়ে। উদ্ধার করে তাকে পাঠানো হয় মিশনারির এক আশ্রমে। সেখানেই তার নাম রাখা হয় দিনা শনিচর।

    নেকড়েই লালন পালন করছিল দিনাকে। নেকড়ের পালের সাথে থাকতো এক গুহায়। তাকে মানুষের আদব কায়দা শেখানো কঠিন হয়ে পড়ে। মাংস ছাড়া কিছুই খেত না। সোজা হয়েও দাঁড়াতে পারেনি সে। অবশেষে ৩৪ বছর বয়সে মারা যায় দিনা। মৃত্যুর কারণ যক্ষা।

    এর ২৭ বছর পর প্রকাশিত হয় 'দ্য জাঙ্গল বুক' গল্পগুচ্ছ। অনেকেই ধারণা করেন, গল্পগুলো দিনাকে কেন্দ্র করেই লেখা। যদিও লেখক কখনও বিষয়টি নিশ্চিত করেননি। অথচ গল্পে মোগলির বসার ভঙ্গি, চলাফেরা, আচরণ অনেকটা দিনার সাথে মিলে যায়। তাছাড়া গল্পে লেখক ভারতীয় বন্য পরিবেশ, সংস্কৃতি ও কুসংস্কার ফুটিয়ে তুলেছেন।
    সাল ১৮৬৭। ভারতের উত্তর প্রদেশের এক জঙ্গলে সন্ধান পাওয়া যায় এক শিশুর। বয়স ছয় হবে। সে নেকড়ের পালের সাথে ছুটছিল। চার পায়ে। উদ্ধার করে তাকে পাঠানো হয় মিশনারির এক আশ্রমে। সেখানেই তার নাম রাখা হয় দিনা শনিচর। নেকড়েই লালন পালন করছিল দিনাকে। নেকড়ের পালের সাথে থাকতো এক গুহায়। তাকে মানুষের আদব কায়দা শেখানো কঠিন হয়ে পড়ে। মাংস ছাড়া কিছুই খেত না। সোজা হয়েও দাঁড়াতে পারেনি সে। অবশেষে ৩৪ বছর বয়সে মারা যায় দিনা। মৃত্যুর কারণ যক্ষা। এর ২৭ বছর পর প্রকাশিত হয় 'দ্য জাঙ্গল বুক' গল্পগুচ্ছ। অনেকেই ধারণা করেন, গল্পগুলো দিনাকে কেন্দ্র করেই লেখা। যদিও লেখক কখনও বিষয়টি নিশ্চিত করেননি। অথচ গল্পে মোগলির বসার ভঙ্গি, চলাফেরা, আচরণ অনেকটা দিনার সাথে মিলে যায়। তাছাড়া গল্পে লেখক ভারতীয় বন্য পরিবেশ, সংস্কৃতি ও কুসংস্কার ফুটিয়ে তুলেছেন।
    0 Comments 0 Shares 129 Views
  • আচ্ছা হঠাৎ করে যদি একদিন আপনার জীবনে সব বদলে যায়, কেমন লাগবে? অনু আগারওয়াল, আশিকী সিনেমার নায়িকা। ৯০ দশকে নায়ক রাহুল রায়ের সাথে মিলে তিনি সুপারডুপার এই সিনেমা উপহার দেন। করতে থাকেন নানা বিজ্ঞাপন আরো অনেক কাজ।

    বলিউডের মিষ্টি মেয়ে খ্যাত অনু পড়াশোনায়ও টপ ছিলেন। দিল্লী বিশ্বিবদ্যালয় থেকে স্নাতকে স্বর্ণপদক পান। পরপর ১৫ টির বেশী সিনেমা সাইন করে ফেলেন। আর ঠিক তখনি একদিন ভয়াবহ গাড়ি দুর্ঘটনায় আহত হন তিনি। মুখের ভেতর অসংখ্য কাঁচ ঢুকে যায়। টানা ২৯ দিন তিনি কোমায় থাকেন।

    বাঁচার আশা এরকম ছেড়ে দেয় ডাক্তাররা। কিন্তু অনু আগারওয়াল ফিরে আসেন কোমা থেকে। তবে হারিয়ে ফেলেন স্মৃতিশক্তি। চেহারায়ও অনেক পরিবর্তন। কাঁটাছেড়া, কেমন জানি ভয়াবহ অবস্থা।

    নিজেকে এবং পরিবারকে চিনতে পারেন না। অনুর মা তাকে তার অভিনীত সিনেমার ভিডিও দেখাতেন। এভাবে বছর চলে যায়।ধীরে ধীরে সব কাজ থেকে তাকে বাদ দেয়া হয়।অনেক সময় লাগে অনু আগারওয়াল এর স্মৃতি ফিরে পেতে।

    কিন্তু এরপর তিনি আর বলিউডে ফেরেননি। আধ্যাত্মিক জীবন বেছে নেন। বস্তির শিশুদের পড়ান আর যোগ ব্যায়াম শেখান। সাধারণ জীবন যাপন শুরু করেন। বিয়ে না করে থেকে যান একা। চলে যান চেনা পরিসরের বাইরে।

    কি অদ্ভুত মানুষের জীবন তাই না? এক লহমায় ভেঙ্গে যেতে পারে সকল অর্জন, সাফল্য, গৌরব কিংবা সাজানো সব কিছু। অথচ আমরা সেটা ভাবি না। আমরা বড়াই করি, অহংকার দেখাই। আদৌ কি সেটা উচিত। জীবন ভীষণ অনিশ্চিত। আপনি আমি কেউ জানি আগামীকাল কি হতে যাচ্ছে।

    So be polite, be simple

    © Papry Routh
    আচ্ছা হঠাৎ করে যদি একদিন আপনার জীবনে সব বদলে যায়, কেমন লাগবে? অনু আগারওয়াল, আশিকী সিনেমার নায়িকা। ৯০ দশকে নায়ক রাহুল রায়ের সাথে মিলে তিনি সুপারডুপার এই সিনেমা উপহার দেন। করতে থাকেন নানা বিজ্ঞাপন আরো অনেক কাজ। বলিউডের মিষ্টি মেয়ে খ্যাত অনু পড়াশোনায়ও টপ ছিলেন। দিল্লী বিশ্বিবদ্যালয় থেকে স্নাতকে স্বর্ণপদক পান। পরপর ১৫ টির বেশী সিনেমা সাইন করে ফেলেন। আর ঠিক তখনি একদিন ভয়াবহ গাড়ি দুর্ঘটনায় আহত হন তিনি। মুখের ভেতর অসংখ্য কাঁচ ঢুকে যায়। টানা ২৯ দিন তিনি কোমায় থাকেন। বাঁচার আশা এরকম ছেড়ে দেয় ডাক্তাররা। কিন্তু অনু আগারওয়াল ফিরে আসেন কোমা থেকে। তবে হারিয়ে ফেলেন স্মৃতিশক্তি। চেহারায়ও অনেক পরিবর্তন। কাঁটাছেড়া, কেমন জানি ভয়াবহ অবস্থা। নিজেকে এবং পরিবারকে চিনতে পারেন না। অনুর মা তাকে তার অভিনীত সিনেমার ভিডিও দেখাতেন। এভাবে বছর চলে যায়।ধীরে ধীরে সব কাজ থেকে তাকে বাদ দেয়া হয়।অনেক সময় লাগে অনু আগারওয়াল এর স্মৃতি ফিরে পেতে। কিন্তু এরপর তিনি আর বলিউডে ফেরেননি। আধ্যাত্মিক জীবন বেছে নেন। বস্তির শিশুদের পড়ান আর যোগ ব্যায়াম শেখান। সাধারণ জীবন যাপন শুরু করেন। বিয়ে না করে থেকে যান একা। চলে যান চেনা পরিসরের বাইরে। কি অদ্ভুত মানুষের জীবন তাই না? এক লহমায় ভেঙ্গে যেতে পারে সকল অর্জন, সাফল্য, গৌরব কিংবা সাজানো সব কিছু। অথচ আমরা সেটা ভাবি না। আমরা বড়াই করি, অহংকার দেখাই। আদৌ কি সেটা উচিত। জীবন ভীষণ অনিশ্চিত। আপনি আমি কেউ জানি আগামীকাল কি হতে যাচ্ছে। So be polite, be simple © Papry Routh
    0 Comments 0 Shares 127 Views
More Results
BlackBird Ai
https://bbai.shop