-
-
Explore Our Features
-
-
-
-
-
-
-
-
-
Ai and Tools
-
-
-
-
-
এক আবিষ্কার আর বিশ্বের পট পরিবর্তন ☢️

আজ থেকে ঠিক ৮০ বছর আগে, ১৯৪৫ সালের ১৬ জুলাই ভোর ৫ টা ২৯ মিনিটে আমেরিকার নিউ মেক্সিকোতে এক ভয়াবহ ইতিহাস লেখা হয়েছিল। সেই শান্ত ভোরটাকে চুরমার করে দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী পরীক্ষা চালিয়েছিল পৃথিবীর প্রথম পার'মা'ণবিক বোমা। নাম দেওয়া হয়েছিল 'ট্রিনিটি টেস্ট'। যা বদলে দিয়েছিল যু'দ্ধে'র ধরন, বিশ্ব রাজনীতির মানচিত্র।
বি'স্ফো'রণের নির্গত শক্তি ছিল ২১ কিলোটন টিএনটির সমান। মুহূর্তেই বাষ্প হয়ে গিয়েছিল ৩০ মিটার টাওয়ার আর আশেপাশের মাইলজুড়ে ছড়ানো তামার তার। ভয়ংকর উত্তাপে বালু, তামা আর রাস্তার পিচ মিলে তৈরি হয় একধরনের সবুজ কাঁচ। যার নাম দেওয়া হয় ‘ট্রিনিটাইট’।
এর কয়েক দশক পর বিজ্ঞানীরা এই ট্রিনিটাইটের মধ্যে খুঁজে পান এক আশ্চর্য বস্তু—‘কোয়াসিক্রিস্টাল’। সাধারণ ক্রিস্টাল বা স্ফটিকের অণুগুলো একটি নির্দিষ্ট প্যাটার্নে সাজানো থাকে, যেমন: লবণ, বরফ বা হীরা। কিন্তু কোয়াসিক্রিস্টালের অণুগুলো এমনভাবে সাজানো থাকে যে তাদের প্যাটার্ন কখনোই পুনরাবৃত্তি করে না (ইউনিক) !
প্রথম ১৯৮৪ সালে বিজ্ঞানীরা কোয়াসিক্রিস্টালের ধারণা দেন। কিন্তু তখন অনেকেই ভেবেছিলেন প্রকৃতিতে এমন জিনিস থাকা অসম্ভব। পরবর্তীতে ল্যাবে বিজ্ঞানীরা নিজেরাই তৈরি করে ফেলেন কোয়াসিক্রিস্টাল। তারপর মহাকাশ থেকে আসা উল্কাপিণ্ডেও মেলে এদের অস্তিত্ব।
তখন বিজ্ঞানীরা বুঝতে পারলেন কোয়াসিক্রিস্টাল তৈরি হতে হলে অতিজোড়ালো চাপ, তাপ এবং শক দরকার হয় যা সাধারণত পার'মা'ণবিক বিস্ফোরণ, উল্কাপাত বা বজ্রপাতের সময়ই সম্ভব।
এর পর বিজ্ঞানীরা আরো দুর্লভ লাল ট্রিনিটাইট নিয়ে গবেষণা করেন। এই লাল ট্রিনিটাইটের মধ্যে তারা একটি ছোট দানায় কোয়াসিক্রিস্টাল খুঁজে পান, যা তৈরি হয়েছিল সিলিকন, তামা, ক্যালসিয়াম এবং লোহার মিশ্রণে। এই কোয়াসিক্রিস্টালের আকৃতি ছিল ২০-পার্শ্বযুক্ত, যা সাধারণ ক্রিস্টালের বৈশিষ্ট্যের সম্পূর্ণ বিপরীত!
এই কোয়াসিক্রিস্টাল কীভাবে তৈরি হয় তা যদি বিজ্ঞানীরা ভালোভাবে বুঝে উঠতে পারেন, তাহলে ভবিষ্যতে পার'মাণ'বিক বিস্ফোরণের প্রভাব বিশ্লেষণে এটি হতে পারে একটি কার্যকর সূচক। এমনকি কোনো দেশ গোপনে পার'মা'ণবিক পরীক্ষা চালালে, সেই অঞ্চলের মাটি বা শিলার মধ্যে কোয়াসিক্রিস্টালের উপস্থিতি বিশ্লেষণ করে ওই বি'স্ফোর'ণের সময় ও তীব্রতা সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যেতে পারে।
সূত্র: Proceedings of the National Academy of Sciences (PNAS), 2021
#science #crystals