লালবাগ কেল্লার ইতিহাস

লালবাগ কেল্লা, ঢাকার ইতিহাসের একটি অমর অংশ। এটি বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী একটি স্থাপনা, যা ১৭শ শতাব্দীতে মোগল সাম্রাজ্যের শাসক নবাব আলিবর্দী খান দ্বারা নির্মিত হয়। তার পূর্বপুরুষদের যাত্রী বা রাজনৈতিক নেতাদের জন্য তা অপরিহার্য হয়েছিল।
এই দৃষ্টিতে লালবাগ কেল্লার গঠন করা হয়েছিল। এটি একটি দীর্ঘ ইতিহাস এবং সংগ্রামের সাক্ষী হিসাবে দাঁড়িয়ে আছে, যা ঢাকার সংগ্রামের জন্য একটি প্রতীকতাত্ত্বিক স্থান হিসেবে গণ্য হয়ে উঠেছে। প্রতিবছর দেশ-বিদেশের অসংখ্য মানুষ লালবাগ কেল্লা ভ্রমণে যেয়ে থাকে।
সম্রাট আওরঙ্গজেবের ৩য় পুত্র, মুঘল রাজপুত্র আজম শাহ বাংলার সুবেদার থাকাকালীন ১৬৭৮ সালে এটার নির্মাণকাজ শুরু করেন। তিনি বাংলায় ১৫ মাস ছিলেন। দুর্গের নির্মাণকাজ শেষ হবার আগেই মারাঠা বিদ্রোহ দমনের জন্য পিতা সম্রাট আওরঙ্গজেব তাকে দিল্লি ডেকে পাঠান। এসময় একটি মসজিদ ও দরবার হল নির্মাণের পর দুর্গ নির্মাণের কাজ থেমে যায়। সুবেদার শায়েস্তা খাঁ ১৬৮০ সালে পুনরায় বাংলার সুবেদার হিসেবে ঢাকায় এসে দুর্গের নির্মাণকাজ পুনরায় শুরু করেন। ১৬৮৪ সালে এখানে শায়েস্তা খাঁর কন্যা ইরান দুখত রাহমাত বানুর (পরী বিবি) মৃত্যু ঘটে। কন্যার মৃত্যুর পর শায়েস্তা খাঁ এ দুর্গটিকে অপয়া মনে করেন এবং ১৬৮৪ খ্রিষ্টাব্দে অসমাপ্ত অবস্থায় এর নির্মাণকাজ বন্ধ করে দেন।[২] লালবাগের কেল্লার তিনটি প্রধান স্থাপনার একটি হল পরী বিবির সমাধি। শায়েস্তা খাঁ ঢাকা ত্যাগ করার পর এটি এর জনপ্রিয়তা হারায়। ঢাকা থেকে মুর্শিদাবাদে রাজধানী স্থানান্তর করা হয়েছিল; এটিই ছিল প্রধান কারণ। রাজকীয় মুঘল আমল সমাপ্ত হওয়ার পর দুর্গটি পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়ে যায়। ১৮৪৪ সালে এলাকাটি "আওরঙ্গবাদ" নাম বদলে "লালবাগ" নাম পায় এবং দুর্গটি পরিণত হয় লালবাগ দুর্গে।[৩] সেই থেকে এখনো পর্যন্ত এটি লালবাগ কেল্লা নামে পরিচিত।