এক অন্যতম গবেষণা!

কার্বন ডাই-অক্সাইড বায়ুমণ্ডলে একটি অন্যতম প্রধান গ্রিনহাউস গ্যাস। জলবায়ু পরিবর্তনের পেছনে এর অবদান অস্বীকার করার উপায় নেই। আর এ গ্যাসকে আটকে রাখতে বিজ্ঞানীরা নানা পদ্ধতি নিয়ে গবেষণা করছেন।
সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করেছেন এক অভিনব প্রক্রিয়া যেখানে কিছু প্রজাতির ডুমুর গাছ কার্বন ডাই অক্সাইডকে পাথরের মতো কঠিন খনিজে রূপান্তর করছে। এই পদ্ধতি দীর্ঘমেয়াদে কার্বন সংরক্ষণের একটি অত্যন্ত কার্যকর ও টেকসই উপায় হতে পারে।
সাধারণভাবে আমরা জানি গাছ বাতাস থেকে কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্রহণ করে এবং সেটিকে সেলুলোজে রূপান্তর করে তাদের কাঠামো তৈরি করে। তবে কিছু গাছ এই কার্বনকে সরাসরি সেলুলোজে রূপান্তর না করে ক্যালসিয়াম অক্সালেট তৈরি করে।
পরবর্তীতে গাছের ঝরে পড়া অংশ বা মৃত অংশ মাটির ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাক দ্বারা ভেঙে গিয়ে ক্যালসিয়াম কার্বনেটে অর্থাৎ চুনাপাথরে পরিণত করে। এই খনিজ রূপে রূপান্তরিত কার্বন মাটিতে দীর্ঘ সময় ধরে সংরক্ষিত থাকে। একে বলে inorganic carbon sequestration। এটা আক্ষরিক অর্থেই খনিজ আকারে কার্বন আটকে রাখা।
গবেষকদের প্রাথমিক ধারণা ছিল, ক্যালসিয়াম কার্বনেট কেবল গাছের বাইরের ফাটল বা দুর্বল অংশে অল্প পরিমাণে তৈরি হয়। কিন্তু মৃদু হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড ব্যবহার করে এবং বিশেষ যন্ত্রের মাধ্যমে নিরীক্ষণ করে দেখা গেছে এই খনিজ গাছের কাঠের গভীর অংশেও গঠিত হচ্ছে।
এর আগে এই ধরনের প্রক্রিয়া দেখা গিয়েছিল আফ্রিকার গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চলের ইরোকা গাছে (Milicia excelsa)। কিন্তু সে গাছ কাঠের জন্য পরিচিত, ফল দেয় না। অন্যদিকে ডুমুর গাছ ফলদ বৃক্ষ হওয়ার পাশাপাশি কার্বন শোষণ করে। আর এই বিষয়টি একটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট।
তাই এটা জানা জরুরি যে এই গাছ কি পরিমাণ কার্বন সংরক্ষণ করতে পারে এবং কোন পরিবেশে এর কার্যকারিতা সর্বোচ্চ। ভবিষ্যতে এর ব্যবহারিক সম্ভাবনা নির্ধারণের জন্য আরও গবেষণা প্রয়োজন। তবে এটুকু নিশ্চিত যে পুনঃবনায়ন প্রকল্পে ডুমুর গাছ অন্তর্ভুক্ত করা এখন সময়ের দাবি।
#climatechange #FigTree
