ডেনমার্কের অ্যালবর্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের চারজন শিক্ষার্থী তাদের ব্যাচেলর থিসিস প্রজেক্টে এক বিস্ময়কর হাইব্রিড ড্রোন তৈরি করেছেন।

যা রোবোটিক্স জগতে নতুন দিগন্তের সূচনা করেছে। এটি এমন একটি রোবট যা আকাশে উড়তেও পারে এবং পানির নিচে সাঁতার কাটতেও সক্ষম। এই ড্রোনটির সবচেয়ে চমকপ্রদ বৈশিষ্ট্য হলো এর variable pitch propellers, যা প্রপেলারের ব্লেডকে ভিন্ন ভিন্ন কোণে ঘোরাতে পারে। আকাশে উড়ার সময় ব্লেডগুলো বেশি পিচে বা কম্পনের মাত্রায় ঘোরে, যাতে প্রচুর বায়ুপ্রবাহ তৈরি হয়; আর পানির নিচে গেলে সেই পিচ কমিয়ে ড্র্যাগ কমানো হয়, ফলে পানির বাধা পেরিয়ে দক্ষতার সঙ্গে চলতে পারে ড্রোনটি। এমনকি এই প্রপেলারগুলো negative thrust বা উল্টো দিকে বল প্রয়োগ পারে, যার ফলে পানির নিচে ড্রোনটির চলাফেরা হয় আরও সাবলীল ও নিয়ন্ত্রিত।
ড্রোনটি সম্পূর্ণ তৈরি হয়েছে থ্রিডি প্রিন্টার ও CNC (Computer Numerical Control) মেশিন ব্যবহার করে। এছাড়াও এটি প্রোগ্রাম করা হয়েছে কাস্টম সফটওয়্যারের মাধ্যমে যার ফলে এর পারফরম্যান্স হয়েছে নিখুঁত এবং বাস্তব পরীক্ষায় সফল।পুরো ডেভেলপমেন্ট প্রক্রিয়াটি ছড়িয়ে ছিল দুই সেমিস্টার জুড়ে। সম্প্রতি প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা যায়, ড্রোনটি একটি পুলের পাশ থেকে উড়ে উঠে সোজা পানিতে ডুব দেয়, কিছুক্ষণ পানির নিচে সাঁতরে বেড়ায়, তারপর হঠাৎ করেই ঠিক সুপারহিরোর মতো পানি ভেদ করে উঠে যায় আকাশে। এই দৃশ্য একাধিক অ্যাঙ্গেল থেকে তুলে ধরা হয়েছে, যা দেখলেই বোঝা যায় ছাত্রদের এই কাজ কোনো সাধারণ প্রজেক্ট নয়, বরং ভবিষ্যতের এক প্রযুক্তিগত বিপ্লবের সূচনা।
এই হাইব্রিড ড্রোনের ব্যবহারিক সম্ভাবনা বিশাল। অ্যাকাডেমিক পরীক্ষার গণ্ডি পেরিয়ে বাস্তব জীবনে বহু গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে এটি ব্যবহারযোগ্য। যেমন: সামরিক অভিযান, জলযান ও সাবমেরিন পরিদর্শন, দুর্যোগকালীন উদ্ধার অভিযান, সামুদ্রিক অনুসন্ধান- এসব ক্ষেত্রে এটি হতে পারে এক যুগান্তকারী সমাধান।