"আপনার সন্তান কি গোপনে মোবাইলে নিষিদ্ধ ভিডিও দেখছে?ভাবছেন যে, এতটুকু বয়সে সে তো এসব জানেই না?একটু শোনেন —"

"আমরা সন্তানকে মোবাইল দেই, চুপচাপ থাকার জন্য। খাওয়া খাওয়াতে, না ঘ্যানঘ্যান করতে – একটা ফোন হাতে ধরিয়ে দেই।
কিন্তু খেয়াল রাখি কি, সে কী দেখছে, কাদের সাথে কথা বলছে, বা তার ব্রাউজিং হিস্টোরিতে কী আছে?"
"বর্তমানে অ্যালগরিদম এমন, একবার ক্লিক করলেই আরেকবার দেখানোর ফাঁদে পড়ে যায়।
একটা শর্ট ভিডিও থেকে শুরু হয়ে যেতে পারে এক ভয়ঙ্কর অভ্যাসের শুরু।
৯-১৫ বছর বয়সী শিশুদের মধ্যে এখনই দেখা যাচ্ছে অশ্লীল কনটেন্টের প্রতি আসক্তি – যা তাদের মনোজগত, আচরণ, এমনকি ভবিষ্যৎ সম্পর্কের দৃষ্টিভঙ্গিও নষ্ট করছে।"
"১২ বছর বয়সী রাফি, মায়ের অজান্তে ইউটিউব থেকে শর্ট ভিডিও দেখতে গিয়ে একদিন একটা ক্লিক করলো ভুল জায়গায়।
সেখান থেকে শুরু — কয়েকদিন পর সে স্কুলে গিয়ে বন্ধুদের সঙ্গে এমন ভিডিও শেয়ার করা শুরু করল।
তার আচরণ বদলাতে শুরু করল, পড়াশোনায় মন বসছিল না, বিরক্তিভাব, গোপনীয়তা, আর রাত জেগে মোবাইল চালানো – সবকিছু মিলিয়ে মা-বাবা বুঝতেই পারলেন না কী ঘটছে।
জানলেন যখন, তখন অনেক দেরি…"
"একটা ভিডিও, একটা ক্লিক — একটা শিশুর শৈশব, মানসিকতা, আর ভবিষ্যৎ পুরো বদলে দিতে পারে।
আপনার সন্তানও কি সেই পথে হাঁটছে?"
📌 সচেতনতার পরামর্শ:
এখনই কিছু পদক্ষেপ নিন:
➤ সন্তানের মোবাইলে প্যারেন্টাল কন্ট্রোল অ্যাপ ব্যবহার করুন।
➤ প্রতিদিন অন্তত একবার মোবাইলের ব্রাউজিং হিস্টোরি ও স্ক্রিন টাইম চেক করুন।
➤ এবং সবচেয়ে জরুরি, ওর সঙ্গে সম্পর্ক গড়ুন। যেন সে আপনাকে ভয় না পায়, বরং বিশ্বাস করে।"
বিশেষ টুলস/অ্যাপসের নাম (বিশ্বস্ত):
Google Family Link – ফ্রি, গুগলের অফিসিয়াল অ্যাপ, সময় নির্ধারণ ও অ্যাপ ব্লক করা যায়।
Safe Lagoon – বাচ্চার মেসেজিং, লোকেশন, ইউজড অ্যাপস সব মনিটর করতে পারবেন।
Qustodio – ওয়েবসাইট ব্লক, স্ক্রিন টাইম, রিয়েল-টাইম লোকেশন – অল ইন ওয়ান সলিউশন।
YouTube Kids – ইউটিউবের ফিল্টার করা শিশু উপযোগী ভার্সন, খুবই দরকার।
"আপনার ১ মিনিট নজরদারি — আপনার সন্তানের ১০ বছর ভবিষ্যতের রক্ষাকবচ হতে পারে।
মোবাইল তাকে শিখাচ্ছে, কিন্তু আপনি না দেখলে সে শিখবে কী?"
"শুধু খাবার-পোশাক দিলে দায়িত্ব শেষ হয় না।
মানসিকভাবে সুস্থ সন্তান চান? তাহলে প্রযুক্তির সাথে সাথে তার মানসিক জগৎ কেমন হচ্ছে, সেটাও দেখা দরকার।
আপনার একটু সময়, একটু যত্ন—তার গোটা ভবিষ্যৎ বদলে দিতে পারে।"
লেখা- তাহমিনা আক্তার লিলি।
#জীবন_চক্র