• ‘মহামহোপাধ্যায়’ ও ‘শাস্ত্রী’ খ্যাত, পণ্ডিত মহামহোপাধ্যায় হরপ্রসাদ শাস্ত্রী একজন বিখ্যাত সংস্কৃত বিশারদ, সংরক্ষণবিদ, ভাষাতাত্ত্বিক, সাহিত্যগবেষক, বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস রচয়িতা, ঔপন্যাসিক, সাহিত্যসন্ধানী, বাংলা সাহিত্যের আদি নিদর্শন ‘চর্যাপদ’র আবিষ্কারক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘বাংলা’ ও ‘সংস্কৃত’ বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা, প্রাবন্ধিক, খ্যাতনামা হিস্টোরিওগ্রাফার ও বাঙালি ভারততত্ত্ববিদ ৷ তিনি ১৮৫৩ খ্রিস্টাব্দের ৬ই ডিসেম্বর খুলনা জেলার কুমিরা গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন । তবে তাদের আদি নিবাস ছিল উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার নৈহাটিতে ৷ তাঁর পারিবারিক নাম হরপ্রসাদ ভট্টাচার্য ।

    গ্রামের স্কুলে প্রাথমিক শিক্ষা অর্জনের পর হরপ্রসাদ কলকাতার সংস্কৃত কলেজিয়েট স্কুল ও প্রেসিডেন্সি কলেজে পড়াশোনা করেন । কলকাতায় তিনি তাঁর বড়দা নন্দকুমার ন্যায়চঞ্চুর বন্ধু তথা বিশিষ্ট সমাজ সংস্কারক ও পণ্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের সঙ্গে থাকতেন । ১৮৭১ খ্রিস্টাব্দে হরপ্রসাদ প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন । ১৮৭৩ খ্রিস্টাব্দে পাস করেন ফার্স্ট আর্টস পরীক্ষা । ১৮৭৬ খ্রিস্টাব্দ বি.এ. ডিগ্রি অর্জন করেন । ১৮৭৭ খ্রিস্টাব্দে সংস্কৃতে সাম্মানিক হন । পরে এম.এ. পরীক্ষায় পাস করে তিনি 'শাস্ত্রী' উপাধি লাভ করেন । উক্ত পরীক্ষায় হরপ্রসাদই ছিলেন প্রথম শ্রেণীতে উত্তীর্ণ একমাত্র ছাত্র ।

    হরপ্রসাদ শাস্ত্রীর প্রথম গবেষণাপত্রটি ‘ভারত মহিলা’ নামে বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় সম্পাদিত ‘বঙ্গদর্শন’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয় । সেই সময় তিনি ছিলেন ছাত্র । পরে হরপ্রসাদ এই পত্রিকার নিয়মিত লেখকে পরিণত হন এবং নানা বিষয় নিয়ে লেখালেখি শুরু করেন । হরপ্রসাদকে ভারততত্ত্ব বিষয়ে আগ্রহী করে তোলেন বিশিষ্ট ভারততত্ত্ববিদ রাজেন্দ্রলাল মিত্র । তিনি রাজেন্দ্রলালের ‘দ্য সংস্কৃত বুদ্ধিস্ট লিটারেচার অফ নেপাল’ গ্রন্থে সঙ্কলিত বৌদ্ধ পুরাণগুলির অনুবাদ শুরু করেন । এশিয়াটিক সোসাইটিতে তিনি রাজেন্দ্রলালের সহকারী ছিলেন ।

    রাজেন্দ্রলালের মৃত্যুর পর সোসাইটিতে সংস্কৃত পুঁথি অন্বেষণ বিভাগের পরিচালক হন । অল্প কয়েকজন সহকারী নিয়ে হরপ্রসাদ ‘এশিয়াটিক সোসাইটি’র দশ হাজার পুঁথির ক্যাটালগ প্রস্তুত করেন ৷ এই ক্যাটালগের যে দীর্ঘ মুখবন্ধটি তিনি রচনা করেছিলেন, তা সংস্কৃত সাহিত্যের একটি মূল্যবান ইতিহাস । সংস্কৃত পুঁথি নিয়ে চর্চা করতে করতেই হরপ্রসাদ বাংলা পুঁথির বিষয়েও আগ্রহী হয়ে ওঠেন । পুঁথির সন্ধানে তিনি অনেকবার নেপাল গিয়েছিলেন । সেখানেই ১৯০৭ খ্রিস্টাব্দে তিনি আবিষ্কার করেন চর্যাগীতি বা চর্যাপদের পুঁথি ৷ এই পুঁথিগুলি নিয়ে গবেষণার মাধ্যমে তিনি প্রমাণ করেন এগুলিই বাংলা সাহিত্যের আদিতম নিদর্শন ৷

    ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই সাবেক বাংলা সংস্কৃতি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ১৯০৭ খ্রিস্টাব্দে, নেপালের রয়েল লাইব্রেরী থেকে বাংলা সাহিত্যের একমাত্র আদি নিদর্শন ‘চর্যাপদ’ আবিষ্কার করেন ৷ ১৯১৬ খ্রিস্টাব্দে, চর্যাপদের পুঁথি নিয়ে রচিত তাঁর গবেষণাপত্র “হাজার বছরের পুরাণ বাঙ্গালা ভাষায় রচিত বৌদ্ধ গান ও দোঁহা” নামে প্রকাশিত হয় ।

    হরপ্রসাদ শাস্ত্রী অনেক প্রাচীন গ্রন্থ সংগ্রহ করে প্রকাশ করেছিলেন । তিনি সন্ধ্যাকর নন্দী রচিত ‘রামচরিতম্’ বা ‘রামচরিতমানস’ পুঁথির সংগ্রাহক ৷ তিনি বহু গবেষণাপত্রও রচনা করেন । তিনি ছিলেন এক খ্যাতনামা ‘হিস্টোরিওগ্রাফার’ ৷ স্বীয় কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ লাভ করেছিলেন বহু পুরস্কার ও সম্মান ৷

    তাঁর রচিত বিখ্যাত সাহিত্যসৃষ্টিকর্মগুলি হলো:
    ‘বাল্মীকির জয়’
    ‘মেঘদূত ব্যাখ্যা’
    ‘বেণের মেয়ে’ (উপন্যাস)
    ‘কাঞ্চনমালা’ (উপন্যাস)
    ‘সচিত্র রামায়ণ’
    ‘প্রাচীন বাংলার গৌরব’
    ‘বৌদ্ধধর্ম’
    ‘শ্রেষ্ঠ প্রবন্ধ’ প্রভৃতি ৷

    তাঁর উল্লেখযোগ্য ইংরেজি রচনাগুলি হল ‘মগধান লিটারেচার’, ‘সংস্কৃত কালচার ইন মডার্ন ইন্ডিয়া’ ও ‘ডিসকভারি অফ লিভিং বুদ্ধিজম ইন বেঙ্গল’ ইত্যাদি ৷

    মহামহোপাধ্যায় হরপ্রসাদ শাস্ত্রী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়’র বাংলা ও সংস্কৃত বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা এবং দীর্ঘকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেছেন ৷ অধ্যাপনা ও সরকারি কাজের পাশাপাশি হরপ্রসাদ শাস্ত্রী দু বছর ‘এশিয়াটিক সোসাইটি’র সভাপতি, বারো বছর ‘বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ’র সভাপতি এবং লন্ডনের ‘রয়্যাল এশিয়াটিক সোসাইটি’র সাম্মানিক সদস্য ছিলেন ৷ ১৯৩১ খ্রিস্টাব্দের ১৭ই নভেম্বর ৭৮ বছর বয়সে এই মনীষী প্রয়াণবরণ করেন ৷

    #bdcs #horprosadsastri #হরপ্রসাদশাস্ত্রী #banglaliterature #বাংলাসাহিত্য #সাহিত্য #itihaserkhojegiridhar #giridhardey #বাংলাদেশের_দুষ্প্রাপ্য_ছবি_সমগ্র #ইতিহাসেরখোঁজেগিরিধর
    ‘মহামহোপাধ্যায়’ ও ‘শাস্ত্রী’ খ্যাত, পণ্ডিত মহামহোপাধ্যায় হরপ্রসাদ শাস্ত্রী একজন বিখ্যাত সংস্কৃত বিশারদ, সংরক্ষণবিদ, ভাষাতাত্ত্বিক, সাহিত্যগবেষক, বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস রচয়িতা, ঔপন্যাসিক, সাহিত্যসন্ধানী, বাংলা সাহিত্যের আদি নিদর্শন ‘চর্যাপদ’র আবিষ্কারক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘বাংলা’ ও ‘সংস্কৃত’ বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা, প্রাবন্ধিক, খ্যাতনামা হিস্টোরিওগ্রাফার ও বাঙালি ভারততত্ত্ববিদ ৷ তিনি ১৮৫৩ খ্রিস্টাব্দের ৬ই ডিসেম্বর খুলনা জেলার কুমিরা গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন । তবে তাদের আদি নিবাস ছিল উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার নৈহাটিতে ৷ তাঁর পারিবারিক নাম হরপ্রসাদ ভট্টাচার্য । গ্রামের স্কুলে প্রাথমিক শিক্ষা অর্জনের পর হরপ্রসাদ কলকাতার সংস্কৃত কলেজিয়েট স্কুল ও প্রেসিডেন্সি কলেজে পড়াশোনা করেন । কলকাতায় তিনি তাঁর বড়দা নন্দকুমার ন্যায়চঞ্চুর বন্ধু তথা বিশিষ্ট সমাজ সংস্কারক ও পণ্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের সঙ্গে থাকতেন । ১৮৭১ খ্রিস্টাব্দে হরপ্রসাদ প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন । ১৮৭৩ খ্রিস্টাব্দে পাস করেন ফার্স্ট আর্টস পরীক্ষা । ১৮৭৬ খ্রিস্টাব্দ বি.এ. ডিগ্রি অর্জন করেন । ১৮৭৭ খ্রিস্টাব্দে সংস্কৃতে সাম্মানিক হন । পরে এম.এ. পরীক্ষায় পাস করে তিনি 'শাস্ত্রী' উপাধি লাভ করেন । উক্ত পরীক্ষায় হরপ্রসাদই ছিলেন প্রথম শ্রেণীতে উত্তীর্ণ একমাত্র ছাত্র । হরপ্রসাদ শাস্ত্রীর প্রথম গবেষণাপত্রটি ‘ভারত মহিলা’ নামে বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় সম্পাদিত ‘বঙ্গদর্শন’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয় । সেই সময় তিনি ছিলেন ছাত্র । পরে হরপ্রসাদ এই পত্রিকার নিয়মিত লেখকে পরিণত হন এবং নানা বিষয় নিয়ে লেখালেখি শুরু করেন । হরপ্রসাদকে ভারততত্ত্ব বিষয়ে আগ্রহী করে তোলেন বিশিষ্ট ভারততত্ত্ববিদ রাজেন্দ্রলাল মিত্র । তিনি রাজেন্দ্রলালের ‘দ্য সংস্কৃত বুদ্ধিস্ট লিটারেচার অফ নেপাল’ গ্রন্থে সঙ্কলিত বৌদ্ধ পুরাণগুলির অনুবাদ শুরু করেন । এশিয়াটিক সোসাইটিতে তিনি রাজেন্দ্রলালের সহকারী ছিলেন । রাজেন্দ্রলালের মৃত্যুর পর সোসাইটিতে সংস্কৃত পুঁথি অন্বেষণ বিভাগের পরিচালক হন । অল্প কয়েকজন সহকারী নিয়ে হরপ্রসাদ ‘এশিয়াটিক সোসাইটি’র দশ হাজার পুঁথির ক্যাটালগ প্রস্তুত করেন ৷ এই ক্যাটালগের যে দীর্ঘ মুখবন্ধটি তিনি রচনা করেছিলেন, তা সংস্কৃত সাহিত্যের একটি মূল্যবান ইতিহাস । সংস্কৃত পুঁথি নিয়ে চর্চা করতে করতেই হরপ্রসাদ বাংলা পুঁথির বিষয়েও আগ্রহী হয়ে ওঠেন । পুঁথির সন্ধানে তিনি অনেকবার নেপাল গিয়েছিলেন । সেখানেই ১৯০৭ খ্রিস্টাব্দে তিনি আবিষ্কার করেন চর্যাগীতি বা চর্যাপদের পুঁথি ৷ এই পুঁথিগুলি নিয়ে গবেষণার মাধ্যমে তিনি প্রমাণ করেন এগুলিই বাংলা সাহিত্যের আদিতম নিদর্শন ৷ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই সাবেক বাংলা সংস্কৃতি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ১৯০৭ খ্রিস্টাব্দে, নেপালের রয়েল লাইব্রেরী থেকে বাংলা সাহিত্যের একমাত্র আদি নিদর্শন ‘চর্যাপদ’ আবিষ্কার করেন ৷ ১৯১৬ খ্রিস্টাব্দে, চর্যাপদের পুঁথি নিয়ে রচিত তাঁর গবেষণাপত্র “হাজার বছরের পুরাণ বাঙ্গালা ভাষায় রচিত বৌদ্ধ গান ও দোঁহা” নামে প্রকাশিত হয় । হরপ্রসাদ শাস্ত্রী অনেক প্রাচীন গ্রন্থ সংগ্রহ করে প্রকাশ করেছিলেন । তিনি সন্ধ্যাকর নন্দী রচিত ‘রামচরিতম্’ বা ‘রামচরিতমানস’ পুঁথির সংগ্রাহক ৷ তিনি বহু গবেষণাপত্রও রচনা করেন । তিনি ছিলেন এক খ্যাতনামা ‘হিস্টোরিওগ্রাফার’ ৷ স্বীয় কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ লাভ করেছিলেন বহু পুরস্কার ও সম্মান ৷ তাঁর রচিত বিখ্যাত সাহিত্যসৃষ্টিকর্মগুলি হলো: ‘বাল্মীকির জয়’ ‘মেঘদূত ব্যাখ্যা’ ‘বেণের মেয়ে’ (উপন্যাস) ‘কাঞ্চনমালা’ (উপন্যাস) ‘সচিত্র রামায়ণ’ ‘প্রাচীন বাংলার গৌরব’ ‘বৌদ্ধধর্ম’ ‘শ্রেষ্ঠ প্রবন্ধ’ প্রভৃতি ৷ তাঁর উল্লেখযোগ্য ইংরেজি রচনাগুলি হল ‘মগধান লিটারেচার’, ‘সংস্কৃত কালচার ইন মডার্ন ইন্ডিয়া’ ও ‘ডিসকভারি অফ লিভিং বুদ্ধিজম ইন বেঙ্গল’ ইত্যাদি ৷ মহামহোপাধ্যায় হরপ্রসাদ শাস্ত্রী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়’র বাংলা ও সংস্কৃত বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা এবং দীর্ঘকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেছেন ৷ অধ্যাপনা ও সরকারি কাজের পাশাপাশি হরপ্রসাদ শাস্ত্রী দু বছর ‘এশিয়াটিক সোসাইটি’র সভাপতি, বারো বছর ‘বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ’র সভাপতি এবং লন্ডনের ‘রয়্যাল এশিয়াটিক সোসাইটি’র সাম্মানিক সদস্য ছিলেন ৷ ১৯৩১ খ্রিস্টাব্দের ১৭ই নভেম্বর ৭৮ বছর বয়সে এই মনীষী প্রয়াণবরণ করেন ৷ #bdcs #horprosadsastri #হরপ্রসাদশাস্ত্রী #banglaliterature #বাংলাসাহিত্য #সাহিত্য #itihaserkhojegiridhar #giridhardey #বাংলাদেশের_দুষ্প্রাপ্য_ছবি_সমগ্র #ইতিহাসেরখোঁজেগিরিধর
    0 Kommentare 0 Geteilt 240 Ansichten
  • ধোলাভিরা গুজরাট হরপ্পা সভ্যতার নিদর্শনএখানে আজও আছে ।
    সিন্ধু উপত্যকা সভ্যতা (প্রায় 3300-1700 খ্রিস্টপূর্বাব্দ), যা হরপ্পা সভ্যতা নামেও পরিচিত, এটি ছিল প্রাচীনতম নগর সভ্যতার মধ্যে একটি, যা মেসোপটেমিয়া, মিশর এবং চীনের সভ্যতার সাথে মোটামুটি সমসাময়িক। এটি বর্তমানে পাকিস্তান এবং উত্তর-পশ্চিম ভারতে সিন্ধু নদীর বন্যা সমভূমিতে অবস্থিত ছিল। ভারতীয় উপমহাদেশে আরেকটি নগর সভ্যতার উত্থানের জন্য হরপ্পা সভ্যতার পতনের পর হাজার বছর সময় লেগেছে এই সত্য থেকে হরপ্পানদের পরিশীলিততা এবং প্রযুক্তিগত অগ্রগতির প্রশংসা করা যায়। ধোলাভিরা হল একটি বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান, যা ভারতের গুজরাটের কচ্ছের রণে অবস্থিত। প্রত্নতত্ত্ববিদ জগৎপতি যোশী এটি আবিষ্কার করেন। ধোলাভিরাকে সিন্ধু সভ্যতার প্রাচীন স্থান হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছিল এবং 27 জুলাই 2021-এ ইউনেস্কো কর্তৃক বিশ্ব ঐতিহ্যের ট্যাগ দেওয়া ভারতের 40 তম সম্পদ হয়ে উঠেছে।
    ধোলাভিরা হল দক্ষিণ এশিয়ার একটি নির্ভেজাল এবং সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য নগর বসতি।
    ধোলাভিরা 4500 বছর পুরানো বলে মনে করা হয়। প্রত্নতাত্ত্বিক জগৎ পতি যোশী এটি 1967 সালে একটি টিলার উপর আবিষ্কার করেন। তবে, 1990 সালে এটির পদ্ধতিগত খনন করা হয়েছিল।
    ধোলাভিরা বর্তমান কালের ধোলাভিরা গ্রামের কাছে কর্কটক্রান্তির উপর অবস্থিত (এটির নাম ধোলাভিরা গ্রাম থেকে এসেছে), যা খাদির বেট দ্বীপে অবস্থিত। গুজরাটের কচ্ছ জেলায় এই দ্বীপটি অবস্থিত।
    যদিও বেশিরভাগ হরপ্পান শহরগুলি নদী বা অন্যান্য জলের উত্সের কাছে পাওয়া গিয়েছিল, ধোলাভীরা একটি দ্বীপে অবস্থিত। এর পেছনের প্রধান কারণগুলো হলো-
    কৌশলগতভাবে কাঁচামাল এবং বিভিন্ন খনিজ (স্টেটাইট, তামার খোল, অ্যাগেট-কারনেলিয়ান, সীসা, ব্যান্ডেড চুনাপাথর ইত্যাদি) ব্যবহার করা।
    অঞ্চলের মধ্যে একটি মসৃণ বাণিজ্য সহজতর করার জন্য এবং মেসোপটেমিয়া অঞ্চল এবং মেগানের সাথে বাহ্যিকভাবে বাণিজ্য করার জন্য। ধোলাভিরা ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটগুলির মধ্যে একটি, প্রত্নতত্ত্ববিদ জগৎ পতি যোশী আবিষ্কৃত এবং এর স্থাপত্য ও প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারের জন্য বিখ্যাত। এর মধ্যে রয়েছে:
    বিভিন্ন নিদর্শন পাওয়া গেছে, যার মধ্যে রয়েছে- সোনা ও তামা, মাছের হুক, সিল, পুঁতি, পোড়ামাটির মৃৎপাত্র, কলস, পশুর মূর্তি ইত্যাদি।
    কাঠের জীবাশ্মগুলি প্রাচীন শহরের কাছে একটি ফসিল পার্কে সংরক্ষিত ছিল।
    প্রত্নতত্ত্ববিদরা 10টি বড় পাথরের শিলালিপি খুঁজে পেয়েছেন। এগুলি সিন্ধু উপত্যকা লিপিতে খোদাই করা বিশ্বের প্রাচীনতম সাইন বোর্ড বলে মনে করা হয়।
    সেখানে কোনো মৃতদেহ পাওয়া যায়নি।
    এই আবিষ্কারগুলি ছাড়াও, ধোলাভিরা তার বৈশিষ্ট্যগুলির জন্য বিখ্যাত যার মধ্যে রয়েছে
    বাইরের দুর্গ।
    9টি অনন্যভাবে ডিজাইন করা গেট।
    জলাধারের ক্যাসকেডিং সিরিজ।
    দুটি বহুমুখী স্থল।
    বহু-স্তরীয় প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা।
    অর্ধগোলাকার গঠন।
    #Harappa #indusvalleycivilization #indusvalley #gujarat
    ধোলাভিরা গুজরাট হরপ্পা সভ্যতার নিদর্শনএখানে আজও আছে । সিন্ধু উপত্যকা সভ্যতা (প্রায় 3300-1700 খ্রিস্টপূর্বাব্দ), যা হরপ্পা সভ্যতা নামেও পরিচিত, এটি ছিল প্রাচীনতম নগর সভ্যতার মধ্যে একটি, যা মেসোপটেমিয়া, মিশর এবং চীনের সভ্যতার সাথে মোটামুটি সমসাময়িক। এটি বর্তমানে পাকিস্তান এবং উত্তর-পশ্চিম ভারতে সিন্ধু নদীর বন্যা সমভূমিতে অবস্থিত ছিল। ভারতীয় উপমহাদেশে আরেকটি নগর সভ্যতার উত্থানের জন্য হরপ্পা সভ্যতার পতনের পর হাজার বছর সময় লেগেছে এই সত্য থেকে হরপ্পানদের পরিশীলিততা এবং প্রযুক্তিগত অগ্রগতির প্রশংসা করা যায়। ধোলাভিরা হল একটি বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান, যা ভারতের গুজরাটের কচ্ছের রণে অবস্থিত। প্রত্নতত্ত্ববিদ জগৎপতি যোশী এটি আবিষ্কার করেন। ধোলাভিরাকে সিন্ধু সভ্যতার প্রাচীন স্থান হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছিল এবং 27 জুলাই 2021-এ ইউনেস্কো কর্তৃক বিশ্ব ঐতিহ্যের ট্যাগ দেওয়া ভারতের 40 তম সম্পদ হয়ে উঠেছে। ধোলাভিরা হল দক্ষিণ এশিয়ার একটি নির্ভেজাল এবং সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য নগর বসতি। ধোলাভিরা 4500 বছর পুরানো বলে মনে করা হয়। প্রত্নতাত্ত্বিক জগৎ পতি যোশী এটি 1967 সালে একটি টিলার উপর আবিষ্কার করেন। তবে, 1990 সালে এটির পদ্ধতিগত খনন করা হয়েছিল। ধোলাভিরা বর্তমান কালের ধোলাভিরা গ্রামের কাছে কর্কটক্রান্তির উপর অবস্থিত (এটির নাম ধোলাভিরা গ্রাম থেকে এসেছে), যা খাদির বেট দ্বীপে অবস্থিত। গুজরাটের কচ্ছ জেলায় এই দ্বীপটি অবস্থিত। যদিও বেশিরভাগ হরপ্পান শহরগুলি নদী বা অন্যান্য জলের উত্সের কাছে পাওয়া গিয়েছিল, ধোলাভীরা একটি দ্বীপে অবস্থিত। এর পেছনের প্রধান কারণগুলো হলো- কৌশলগতভাবে কাঁচামাল এবং বিভিন্ন খনিজ (স্টেটাইট, তামার খোল, অ্যাগেট-কারনেলিয়ান, সীসা, ব্যান্ডেড চুনাপাথর ইত্যাদি) ব্যবহার করা। অঞ্চলের মধ্যে একটি মসৃণ বাণিজ্য সহজতর করার জন্য এবং মেসোপটেমিয়া অঞ্চল এবং মেগানের সাথে বাহ্যিকভাবে বাণিজ্য করার জন্য। ধোলাভিরা ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটগুলির মধ্যে একটি, প্রত্নতত্ত্ববিদ জগৎ পতি যোশী আবিষ্কৃত এবং এর স্থাপত্য ও প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারের জন্য বিখ্যাত। এর মধ্যে রয়েছে: বিভিন্ন নিদর্শন পাওয়া গেছে, যার মধ্যে রয়েছে- সোনা ও তামা, মাছের হুক, সিল, পুঁতি, পোড়ামাটির মৃৎপাত্র, কলস, পশুর মূর্তি ইত্যাদি। কাঠের জীবাশ্মগুলি প্রাচীন শহরের কাছে একটি ফসিল পার্কে সংরক্ষিত ছিল। প্রত্নতত্ত্ববিদরা 10টি বড় পাথরের শিলালিপি খুঁজে পেয়েছেন। এগুলি সিন্ধু উপত্যকা লিপিতে খোদাই করা বিশ্বের প্রাচীনতম সাইন বোর্ড বলে মনে করা হয়। সেখানে কোনো মৃতদেহ পাওয়া যায়নি। এই আবিষ্কারগুলি ছাড়াও, ধোলাভিরা তার বৈশিষ্ট্যগুলির জন্য বিখ্যাত যার মধ্যে রয়েছে বাইরের দুর্গ। 9টি অনন্যভাবে ডিজাইন করা গেট। জলাধারের ক্যাসকেডিং সিরিজ। দুটি বহুমুখী স্থল। বহু-স্তরীয় প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। অর্ধগোলাকার গঠন। #Harappa #indusvalleycivilization #indusvalley #gujarat
    0 Kommentare 0 Geteilt 285 Ansichten
  • বাংলা ভাষার প্রাচীনতম নিদর্শন চর্যাপদ দেখতে কেমন এবং চর্যাপদ এর ঐতিহাসিক গুরুত্ব।

    চর্যাপদ ১৯১৬ সালে প্রকাশিত হাজার বছরের পুরাণ বাঙ্গালা ভাষায় রচিত বৌদ্ধ গান ও দোঁহা নামক গ্রন্থের সাড়ে ছেচল্লিশটি গান। চর্যাপদে বৌদ্ধধর্মের সাধনপ্রণালী ও দর্শনতত্ত্ব নানা প্রকার রূপকের মাধ্যমে আভাসে ইঙ্গিতে ব্যক্ত হয়েছে। বাংলা সাহিত্যের আদি নিদর্শন চর্যাপদ। তাই বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস চর্যাপদ থেকেই শুরু।

    মূলত ১৮৮২সালে রাজা রাজেন্দ্র লাল মিত্র নেপালে সংস্কৃত বৌদ্ধ সাহিত্য গ্রন্থে চর্যাপদের অস্তিত্বের কথা বলেন। ১৯০৭ সালে হরপ্রসাদ শাস্ত্রী তৃতীয়বার নেপাল ভ্রমণকালে চর্যাচর্যবিনিশ্চয় নামক একটি পুঁথি নেপাল রাজদরবারের অভিলিপিশালায় আবিষ্কার করেন। হরপ্রসাদ শাস্ত্রী মোট ৪৬টি পূর্ণাঙ্গ ও একটি খণ্ডিত পদ পেয়েছিলেন। পুঁথির কয়েকটি পাতা ছেঁড়া ছিল। মূলপুঁথির পদের সংখ্যা ৫১। এর নাম চর্যাগীতিকোষ যাতে ১০০টি পদ ছিল।

    চর্যাপদের ভাষা প্রতীকী প্রকৃতির। অনেক ক্ষেত্রে কিছু শব্দের আভিধানিক অর্থের কোনো মানে হয় না। অনেকে বিশ্বাস করেন, এটি ছিল অপ্রশিক্ষিতদের কাছ থেকে পবিত্র জ্ঞান গোপন করার জন্য, অন্যরা মনে করে যে এটি ধর্মীয় নিপীড়ন এড়াতে করা হয়েছে। চর্যাপদের ভাষা নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছিল পরবর্তীকালে যার অবসান হয়েছে। চর্যাপদের রচয়িতাগণ সংস্কৃতে পারদর্শী হলেও তৎকালীন অপরিণত বাংলাতেই পদগুলি রচনা করেছিলেন। প্রাচীন কবিদের মতে এতে সন্ধ্যা বা আলোআঁধারি ভাষা ব্যবহার করা হয়।

    কাব্যকলা কালোত্তীর্ণ হলেও তা সমকালীন সমাজ ও জীবনের প্রতিচ্ছবি। সেই দৃষ্টিতে চর্যাপদ বাংলা সাহিত্যের প্রাচীনতম ঐতিহাসিক নিদর্শন। পাল ও সেন রাজাদের দীর্ঘ রাজনৈতিক উত্থান পতনের অস্থিরতায় বাংলার সমাজ জীবনে যে ভাঙা-গড়া, চর্যাপদে তারই প্রতিফলন ঘটেছে।

    চর্যাযুগের বাংলাদেশে বিভিন্ন আদর্শ সমন্বয়ের আত্মব্যাপ্তি ও আত্মস্বাতন্ত্র রক্ষার প্রবল সচেতনা প্রচলিত ছিল। চর্যার ধর্মমতের মধ্যে ব্রাহ্মণ্যতান্ত্রিক দেহবাদের ধারা অনেকটাই প্রবেশ করেছিল। নীহাররঞ্জন রায়ের মতে এই মিলন পাল পর্বের শেষের দিকে শুরু হয়েছিল। বৌদ্ধ সাধনার সঙ্গে বাংলার এই তান্ত্রিক সহজ সাধনার যোগবন্ধন একটি ঐতিহাসিক ঘটনা।

    ভিন্ন ধর্মের সাধন পদ্ধতির সমন্বয় ঘটলেও আর্য ব্রাহ্মণ্য সংস্কৃতি স্বাতন্ত্রপ্রিয় বাংলায় সাদর অভ্যর্থনা লাভ করেনি। কিন্তু বৌদ্ধ তান্ত্রিক সাধনা খুব সহজেই স্বাতন্ত্রপ্রিয় বাঙালির হৃদয় জয় করেছিল।

    চর্যাপদ আবিষ্কারের পূর্বে বাংলা সাহিত্যের প্রাচীনতম যুগ সীমানা ছিল মনসামঙ্গল। কিন্তু চর্যাপদ আবিষ্কৃত হওয়ায় তা প্রায় আড়াইশো বছর অতীতে সম্প্রসারিত হয়। বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা।

    তৎকালীন বঙ্গালদেশ বা পূর্ববঙ্গেও বৌদ্ধ ধর্ম প্রচার লাভ করেছিল- এ ঐতিহাসিক ঘটনার সাক্ষ্য বহন করে - "আদি ভুসুক বঙ্গালি ভইলী" পদটি। তখনকার উচ্চ- নীচ, স্পৃশ্য, অস্পৃশ্য, ভেদাভেদ বিদীর্ণ সমাজের কলঙ্কিত মুখচ্ছবি প্রকাশিত হয়েছে চর্চার কোনো কোনো পদে। অস্পৃশ্য বলে একঘরে করে রাখার প্রথাও প্রচলিত ছিল। "টালতো ঘর মোর নাহি পড়বেষী"- পদটিতে তার প্রমাণ মেলে।

    সমকালীন জীবনচিত্রও ইতিহাসের একটি অংশ। নদীমাতৃক বাংলার খেয়া ও সাঁকো পারাপারের দৃশ্য, নৌকার বিভিন্ন অংশের বর্ণনা, মানুষের আমোদ-প্রমোদ, পোশাক-পরিচ্ছদ, নৃত্যগীত, অভাব-অনটন এমনকি শুঁড়িখানার মদ্যপানের চিত্রও অংকিত হয়েছে। এ সকল খণ্ডচিত্রে তৎকালীন যুগ, সমাজ ও জীবনচিত্র আমাদের সামনে উজ্জ্বল হয়ে ওঠে।

    চর্যাপদ যদিও বৌদ্ধ সাধন সঙ্গীত তা সত্বেও তা সমকালীন ইতিহাসের জীবন্ত দলিল।

    #viewers #highlight #virals #everyone #followers
    #প্রত্নতত্ত্ব #ইতিহাস #archaeology #সাহিত্য #virals
    বাংলা ভাষার প্রাচীনতম নিদর্শন চর্যাপদ দেখতে কেমন এবং চর্যাপদ এর ঐতিহাসিক গুরুত্ব। চর্যাপদ ১৯১৬ সালে প্রকাশিত হাজার বছরের পুরাণ বাঙ্গালা ভাষায় রচিত বৌদ্ধ গান ও দোঁহা নামক গ্রন্থের সাড়ে ছেচল্লিশটি গান। চর্যাপদে বৌদ্ধধর্মের সাধনপ্রণালী ও দর্শনতত্ত্ব নানা প্রকার রূপকের মাধ্যমে আভাসে ইঙ্গিতে ব্যক্ত হয়েছে। বাংলা সাহিত্যের আদি নিদর্শন চর্যাপদ। তাই বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস চর্যাপদ থেকেই শুরু। মূলত ১৮৮২সালে রাজা রাজেন্দ্র লাল মিত্র নেপালে সংস্কৃত বৌদ্ধ সাহিত্য গ্রন্থে চর্যাপদের অস্তিত্বের কথা বলেন। ১৯০৭ সালে হরপ্রসাদ শাস্ত্রী তৃতীয়বার নেপাল ভ্রমণকালে চর্যাচর্যবিনিশ্চয় নামক একটি পুঁথি নেপাল রাজদরবারের অভিলিপিশালায় আবিষ্কার করেন। হরপ্রসাদ শাস্ত্রী মোট ৪৬টি পূর্ণাঙ্গ ও একটি খণ্ডিত পদ পেয়েছিলেন। পুঁথির কয়েকটি পাতা ছেঁড়া ছিল। মূলপুঁথির পদের সংখ্যা ৫১। এর নাম চর্যাগীতিকোষ যাতে ১০০টি পদ ছিল। চর্যাপদের ভাষা প্রতীকী প্রকৃতির। অনেক ক্ষেত্রে কিছু শব্দের আভিধানিক অর্থের কোনো মানে হয় না। অনেকে বিশ্বাস করেন, এটি ছিল অপ্রশিক্ষিতদের কাছ থেকে পবিত্র জ্ঞান গোপন করার জন্য, অন্যরা মনে করে যে এটি ধর্মীয় নিপীড়ন এড়াতে করা হয়েছে। চর্যাপদের ভাষা নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছিল পরবর্তীকালে যার অবসান হয়েছে। চর্যাপদের রচয়িতাগণ সংস্কৃতে পারদর্শী হলেও তৎকালীন অপরিণত বাংলাতেই পদগুলি রচনা করেছিলেন। প্রাচীন কবিদের মতে এতে সন্ধ্যা বা আলোআঁধারি ভাষা ব্যবহার করা হয়। কাব্যকলা কালোত্তীর্ণ হলেও তা সমকালীন সমাজ ও জীবনের প্রতিচ্ছবি। সেই দৃষ্টিতে চর্যাপদ বাংলা সাহিত্যের প্রাচীনতম ঐতিহাসিক নিদর্শন। পাল ও সেন রাজাদের দীর্ঘ রাজনৈতিক উত্থান পতনের অস্থিরতায় বাংলার সমাজ জীবনে যে ভাঙা-গড়া, চর্যাপদে তারই প্রতিফলন ঘটেছে। চর্যাযুগের বাংলাদেশে বিভিন্ন আদর্শ সমন্বয়ের আত্মব্যাপ্তি ও আত্মস্বাতন্ত্র রক্ষার প্রবল সচেতনা প্রচলিত ছিল। চর্যার ধর্মমতের মধ্যে ব্রাহ্মণ্যতান্ত্রিক দেহবাদের ধারা অনেকটাই প্রবেশ করেছিল। নীহাররঞ্জন রায়ের মতে এই মিলন পাল পর্বের শেষের দিকে শুরু হয়েছিল। বৌদ্ধ সাধনার সঙ্গে বাংলার এই তান্ত্রিক সহজ সাধনার যোগবন্ধন একটি ঐতিহাসিক ঘটনা। ভিন্ন ধর্মের সাধন পদ্ধতির সমন্বয় ঘটলেও আর্য ব্রাহ্মণ্য সংস্কৃতি স্বাতন্ত্রপ্রিয় বাংলায় সাদর অভ্যর্থনা লাভ করেনি। কিন্তু বৌদ্ধ তান্ত্রিক সাধনা খুব সহজেই স্বাতন্ত্রপ্রিয় বাঙালির হৃদয় জয় করেছিল। চর্যাপদ আবিষ্কারের পূর্বে বাংলা সাহিত্যের প্রাচীনতম যুগ সীমানা ছিল মনসামঙ্গল। কিন্তু চর্যাপদ আবিষ্কৃত হওয়ায় তা প্রায় আড়াইশো বছর অতীতে সম্প্রসারিত হয়। বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। তৎকালীন বঙ্গালদেশ বা পূর্ববঙ্গেও বৌদ্ধ ধর্ম প্রচার লাভ করেছিল- এ ঐতিহাসিক ঘটনার সাক্ষ্য বহন করে - "আদি ভুসুক বঙ্গালি ভইলী" পদটি। তখনকার উচ্চ- নীচ, স্পৃশ্য, অস্পৃশ্য, ভেদাভেদ বিদীর্ণ সমাজের কলঙ্কিত মুখচ্ছবি প্রকাশিত হয়েছে চর্চার কোনো কোনো পদে। অস্পৃশ্য বলে একঘরে করে রাখার প্রথাও প্রচলিত ছিল। "টালতো ঘর মোর নাহি পড়বেষী"- পদটিতে তার প্রমাণ মেলে। সমকালীন জীবনচিত্রও ইতিহাসের একটি অংশ। নদীমাতৃক বাংলার খেয়া ও সাঁকো পারাপারের দৃশ্য, নৌকার বিভিন্ন অংশের বর্ণনা, মানুষের আমোদ-প্রমোদ, পোশাক-পরিচ্ছদ, নৃত্যগীত, অভাব-অনটন এমনকি শুঁড়িখানার মদ্যপানের চিত্রও অংকিত হয়েছে। এ সকল খণ্ডচিত্রে তৎকালীন যুগ, সমাজ ও জীবনচিত্র আমাদের সামনে উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। চর্যাপদ যদিও বৌদ্ধ সাধন সঙ্গীত তা সত্বেও তা সমকালীন ইতিহাসের জীবন্ত দলিল। #viewers #highlight #virals #everyone #followers #প্রত্নতত্ত্ব #ইতিহাস #archaeology #সাহিত্য #virals
    0 Kommentare 0 Geteilt 413 Ansichten
BlackBird Ai
https://bbai.shop