Comeback হবে??

মিস্টার অটো চয়েজ : মুস্তাফিজুর রহমান
২০২৩ বিশ্বকাপ থেকে এখন পর্যন্ত ১৯টি ওয়ানডে খেলেছেন মুস্তাফিজুর রহমান। এই ১৯ ম্যাচে তার উইকেট ১৯টি। এর চেয়ে কম ম্যাচ খেলে বেশি উইকেট তাসকিন আহমেদ (২৭) ও শরিফুল ইসলামের (২৩)। ১১ ম্যাচে ১৭ উইকেট নিয়ে তানজিম হাসান সাকিবও খুব কাছাকাছি।
এই নিরেট পরিসংখ্যানেই বলে দেওয়া যায়, গত দেড় দুই বছরে মুস্তাফিজ আর দলের সেরা পেসার নন। তবে এটুকুতে যে কেউ আবার পরিসংখ্যানের নানান ফাঁকফোকরের আলাপ তুলতে পারে। তাই ব্রেকডাউন করা যেতে পারে মুস্তাফিজের তুলনামূলক পারফরম্যন্স।
আলোচ্য সময়ের মধ্যে এই চার পেসারই শুধু ১০+ ম্যাচ খেলেছে। তাই তাদের পরিসংখ্যানই এখানে বিবেচনা করা হচ্ছে।
ওয়ানডে ম্যাচকে যদি তিন ফেজে ভাগ করা হয় তাহলে প্রথম ১০ ওভার নতুন বল, ১১ থেকে ৪০ ওভার মিডল ওভার আর ৪১ থেকে ৫০ ওভার ডেথ ওভার।
এই হিসেবে নতুন বলে ১৪ ইনিংসে ২৯ ওভার বল করে মুস্তাফিজের শিকার ৪ উইকেট। রান দিয়েছেন ওভারপ্রতি ৫.৪৫ করে। যার মানে উইকেট যেমন পাননি, রানের গতিও থামাতে পারেননি।
এই সময়ে তাসকিন ১৮ ইনিংসে ১১ উইকেট, ইকোনমি ৪.৩৫। তানজিম সাকিব ১১ ইনিংসে ৭ উইকেট, ইকোনমি ৫.৯০। শরিফুল ১৮ ইনিংসে ৭ উইকেট, ইকোনমি ৫.২৯।
অর্থাৎ সবার উইকেটই মুস্তাফিজের চেয়ে বেশি। ইকোনমিতে শুধু তানজিম তার পেছনে।
আলাপ আসতে পারে মুস্তাফিজ মূলত মিডল ওভারের বোলার। মিডল ওভারে নজর দিলে ১৯ ইনিংসে মুস্তাফিজে শিকার ১১ উইকেট, ওভারপ্রতি রান খরচ ৫.৩৯ করে, প্রতি উইকেটের জন্য লেগেছে ৫৫.৫ বল।
এই ১৯ ইনিংসের ১০টিতেই মিডল ওভারে কোনো উইকেট নিতে পারেননি মুস্তাফিজ। এই ১০ ম্যাচে ওভারে সাড়ে পাঁচের বেশি রান দিয়েছেন সাত ম্যাচে। অর্থাৎ উইকেট নেওয়ার কাজ যেমন করতে পারেননি, তেমনি দলের বিপদ বাড়িয়ে প্রতিপক্ষকে দিয়েছেন বড় রানের মঞ্চ গড়ার সুযোগ।
বাকি তিন পেসারের কী অবস্থা? এই জায়গায় মুস্তাফিজ বাকিদের চেয়ে এগিয়ে। তাসকিন ১৮ ইনিংসে ৬ উইকেট, ৫.৬৭ ইকোনমি। শরিফুল ১৮ ইনিংসে ৭ উইকেট, ৫.৭৩ ইকোনমি। তানজিম ১০ ইনিংসে ৫ উকেট, ৫.৭৯ ইকোনমি।
তবে মিডল ওভারে মুস্তাফিজ বোলিং করেছেন ১০১.৪ ওভার। বাকি তিন পেসারের কেউই মিডল ওভারে ৬৬ ওভারের বেশি বোলিং করেননি। কে জানে, এত বেশি বোলিংয়ের সুযোগ পেলে হয়তো আরও ভালো হতো তাদের সংখ্যা (অথবা আরও খারাপ)।
বাকি থাকে ডেথ ওভার! দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ডেথে জানিথ লিয়ানাগের উইকেট নেওয়ায় তার ওপর অনেকেই খুশি হয়েছিলেন। ২০২৫ সালে চার ম্যাচে ডেথে বোলিং করে মুস্তাফিজের উইকেট ওই একটিই।
২০২৩ বিশ্বকাপ থেকে বাংলাদেশের পেসারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ২৭.৪ ওভার বোলিং করে মুস্তাফিজের ঝুলিতে উইকেট মাত্র ৪টি। এই ৪ উইকেটই আবার ভিন্ন চার ম্যাচে। অর্থাৎ একসঙ্গে কয়েক উইকেট নিয়ে দলের কাজ সহজ করতে পারেননি তিনি।
১৩ ইনিংসে মুস্তাফিজের ইকোনমি ৭.০৫। তাসকিন ১৪ ইনিংসে ১০ উইকেট, ইকোনমি মাত্র ৬.০৮। শরিফুল ১১ ইনিংসে ৯ উইকেট, ইকোনমি ৭.১১। তানজিম ৭ ইনিংসে ৪ উইকেট, ইকোনমি ৭.৬১।
মুস্তাফিজকে ডেথ বোলার হিসেবে ধরা হলেও, সংখ্যার বিচারে তাসকিনই গত দেড় বছরের সেরা। শরিফুলও মুস্তাফিজের কাছাকাছি হারে রান খরচ করে উইকেট নিয়েছেন দ্বিগুণের বেশি। তানজিমকে নতুন এবং নতুন বলের বোলার হিসেবে এই জায়গায় গ্রেস মার্ক হয়তো দেওয়াই যায়।
যেই ১৯ ইনিংসের আলাপ করা হচ্ছে, সেখানে মুস্তাফিজের ইকোনমি ৫.৬৯, গড় ৪৭.৪২ ও স্ট্রাইক রেট ৫০.০। যা তার ক্যারিয়ার ইকোনমি (৫.১৮), গড় (২৬.৭৮ ও স্ট্রাইক রেটের (৩০.৯) চেয়ে অনেক বেশি।
সব মিলিয়ে, বিশ্বকাপ থেকে পারফরম্যান্সে নিম্নগামিতা স্পষ্ট Mustafizur Rahman, আপনি দেখতে কি পান?