চীনের বিশাল বাঁধ আর রাজনীতি ⚠️

চীন তিব্বতে মূলত জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য কয়েকটি বিশাল বাঁধ নির্মাণ করছে। এই প্রকল্পগুলো বিশেষ করে ইয়ারলুং সাংপো (ভারতে যা ব্রহ্মপুত্র নদ নামে পরিচিত) নদীর ওপর কেন্দ্রীভূত।
সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, চীন তিব্বতের নিয়াংচি শহরে ইয়ারলুং সাংপো নদীর নিম্নপ্রবাহে একটি মেগা-ড্যাম প্রকল্প শুরু করেছে। এটি বিশ্বের বৃহত্তম জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এই প্রকল্পে পাঁচটি ক্যাসকেডে জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র থাকবে এবং এতে প্রায় $167 বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করা হবে।
প্রকল্পটি সম্পন্ন হলে এটি বছরে ৩০০ বিলিয়ন কিলোওয়াট ঘণ্টা বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারবে, যা চীনের বৃহত্তম থ্রি গর্জেস ড্যামের চেয়ে তিন গুণ বেশি।
এই বাঁধ নির্মাণ প্রকল্পের প্রধান উদ্দেশ্য হল:
* বিশাল পরিমাণে জলবিদ্যুৎ উৎপাদন: চীনের ক্রমবর্ধমান বিদ্যুৎ চাহিদা মেটাতে এবং কার্বন নিরপেক্ষতার লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে এই প্রকল্পগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
* তিব্বতের অর্থনৈতিক উন্নয়ন: প্রকল্পের মাধ্যমে তিব্বতে কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং সংশ্লিষ্ট শিল্পের প্রসার ঘটানো।
তবে, এই বিশাল বাঁধ নির্মাণ প্রকল্প ভারত ও বাংলাদেশের মতো ভাটির দেশগুলোতে ব্যাপক উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। তাদের আশঙ্কা:
* পানি প্রবাহে প্রভাব: বাঁধের কারণে নদীর পানি প্রবাহে পরিবর্তন আসতে পারে, যা কৃষি ও জীবনযাত্রার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
* পরিবেশগত ক্ষতি: তিব্বতের সংবেদনশীল পরিবেশে বাঁধের নির্মাণকাজ বড় ধরনের পরিবেশগত বিপর্যয় ঘটাতে পারে।
* ভূমিকম্পের ঝুঁকি: তিব্বত একটি ভূমিকম্প-প্রবণ এলাকা হওয়ায় এত বড় বাঁধের নিরাপত্তা নিয়েও উদ্বেগ রয়েছে।
* কৌশলগত ব্যবহার: ভারত ও বাংলাদেশ আশঙ্কা করছে যে চীন এই বাঁধকে 'পানির মাধ্যমে চাপ সৃষ্টির কৌশল' হিসেবে ব্যবহার করে ইচ্ছাকৃতভাবে বন্যা বা খরা সৃষ্টি করতে পারে।
চীন অবশ্য দাবি করছে যে প্রকল্পটি বৈজ্ঞানিকভাবে সুপরিকল্পিত এবং ভাটির দেশগুলোর পরিবেশ, ভূ-প্রকৃতি বা পানির অধিকার ক্ষতিগ্রস্ত করবে না।