-
-
Explore Our Features
-
-
-
-
-
-
-
-
-
Ai and Tools
-
-
-
-
-
আমেরিকার এক কৃষক বাঁচাতে এক অভাবনীয় উদ্যোগ⚠️🔥

শুনলে অবাক লাগতে পারে, তবে যুক্তরাষ্ট্রের আকাশে কোটি কোটি মাছি ছড়ানো হবে খুব শিগগিরই। কিন্তু এটি কোনো বিপদ ডেকে আনার চেষ্টা নয়, বরং এক মারাত্মক কীটের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের অংশ! টেক্সাসসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের গবাদিপশুকে রক্ষা করতেই নেওয়া হয়েছে এই অভিনব উদ্যোগ।
সমস্যার মূলে রয়েছে এক ভয়ংকর মাংসখেকো মাছি, যার বৈজ্ঞানিক নাম Cochliomyia hominivorax। এর লার্ভা, যাকে বলা হয় ‘নিউ ওয়ার্ল্ড স্ক্রুওর্ম’, জীবন্ত প্রাণীর ক্ষতস্থানে ঢুকে মাংস খেতে শুরু করে। মাত্র এক–দুই সপ্তাহেই আক্রান্ত পশুটি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। এমনকি মানুষও এ থেকে মুক্ত নয়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, স্ত্রী মাছি ক্ষতস্থানে গিয়ে ২০০–৩০০ ডিম পাড়ে, যা ১২ থেকে ২৪ ঘণ্টায় লার্ভায় রূপ নেয়। এরপর শুরু হয় মাংস খাওয়ার ভয়ংকর অধ্যায়। এখন পর্যন্ত এর বিরুদ্ধে কোনো টিকা নেই, তাই পরিচর্যা, অ্যান্টিসেপটিক ও ক্ষত ঢেকে রাখাই একমাত্র উপায়।
২০২৩ সালে এই লার্ভার উপদ্রব শুরু হয় মধ্য আমেরিকায়, যা পরে মেক্সিকোতেও ছড়িয়ে পড়ে। এতে যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্ত অঞ্চলের পশুবাজার ও বন্দরগুলো পর্যন্ত সাময়িকভাবে বন্ধ রাখতে হয়।
তবে আশার কথা হলো, এ সমস্যার বিরুদ্ধে একসময় সফলভাবে লড়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ষাট ও সত্তরের দশকে তারা এক অভিনব পদ্ধতিতে প্রজননে অক্ষম পুরুষ মাছি ছড়িয়ে দিয়ে এই কীট দমন করেছিল। স্ত্রী মাছি একবারই মিলনে আগ্রহী হয়, আর যখন সে নিষ্ক্রিয় পুরুষের সঙ্গে মিলিত হয়, তখন নতুন প্রজন্ম জন্মায় না। ফলে বংশবিস্তার থেমে যায়।
সেই পুরনো কৌশল আবার ফিরিয়ে আনতে চাচ্ছে মার্কিন প্রশাসন। ২০২৪ সালের জুনে আইনপ্রণেতারা একটি চিঠির মাধ্যমে এই পদ্ধতির প্রয়োগের সুপারিশ করেন। এরপরই সিদ্ধান্ত হয়, টেক্সাসের হিডালগোতে একটি 'মাছি উৎপাদন কারখানা' গড়ে তোলা হবে। এই প্রকল্পে প্রতি সপ্তাহে ১০ কোটি অক্ষম মাছি ছড়ানো হবে আকাশপথে।
এই কাজটি পরিচালনা করছে COPEG, যা যুক্তরাষ্ট্র ও পানামার যৌথ কমিশন। প্রতি বছর এতে ব্যয় হতে পারে প্রায় ৮৫ লাখ ডলার, আর স্থাপনাটি তৈরি করতে লাগতে পারে প্রায় ৩০ কোটি ডলার। তবে গবাদিপশু শিল্পকে বাঁচাতে এই খরচ সার্থক বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
অধ্যাপক ফিলিপ কাফম্যানের মতে, স্ত্রী মাছিরা সাধারণত ২০ দিন বাঁচে এবং জীবনে একবারই মিলন করে। এই প্রকল্প সফল হলে, কয়েক মাসেই স্ক্রুওর্মের দমন সম্ভব।
মোট কথা, মাছি দিয়েই মাছির বিরুদ্ধে যুদ্ধ—এবারও যুক্তরাষ্ট্র তাকেই বেছে নিয়েছে। আর এই লড়াই শুধুই গবাদিপশু নয়, এক বিশাল অর্থনীতিকে বাঁচানোরও সংগ্রাম।

