তাগ-ই বস্তান : পাথরে খোদাই রাজকীয় ইতিহাস

ইরানের কেরমানশাহ প্রদেশে অবস্থিত এক ঐতিহাসিক পাহাড়ের নাম তাগ-ই বস্তান (Tagh-e Bostan)। এই পাহাড়েই খোদাই করা রয়েছে এক বিশাল শিলাচিত্র, যা নির্মিত হয়েছিল সাসানীয় সাম্রাজ্যের শাসনামলে, চতুর্থ শতকে খ্রিস্টাব্দে। পাথরের গায়ে স্থায়ী হয়ে আছে সম্রাট আরদাশির দ্বিতীয় (Ardashir II) এবং খসরু দ্বিতীয় (Khosrow II)-এর রাজমহিমা—এক বিশাল খিলানের নিচে, ইতিহাসের স্তব্ধ আবরণে ঘেরা।
এই শিলাচিত্রে অসাধারণ সূক্ষ্ম কারুকাজের মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে রাজাদের মহিমা। দেখা যায়, রাজারা যেন ঈশ্বরীয় কোনো সত্তার হাত থেকে মুকুট গ্রহণ করছেন। পারস্যের বিখ্যাত শক্তিশালী ঘোড়ার পিঠে সজ্জিত সৈন্যরা দাঁড়িয়ে আছে গর্বভরে। ডানা মেলা দেবদূতদের মতো চিত্রিত ফিগারগুলো রাজাকে আশীর্বাদ করছে বলে মনে হয়। শিলাচিত্র ঘিরে রয়েছে লতার নকশা, রাজসিক প্রতীক এবং শক্তির চিহ্ন—যা একদিকে পবিত্র মন্দিরের অনুভূতি দেয়, আবার অন্যদিকে যেন কোনো দৃশ্যনাট্যের অভিনয়মঞ্চ হয়ে ওঠে।
শতাব্দীর পর শতাব্দী রোদ, বৃষ্টি, ধুলো এবং সময়ের স্পর্শ এই পাথর ছুঁয়ে গেছে। তবু আজও এই প্রাচীন ভাস্কর্যে ধ্বনিত হয় রাজশক্তির গৌরব, ধর্মীয় বিশ্বাস এবং এক অতীত সাম্রাজ্যের শাসনের গল্প। এখনো কি সেই পাথরের ভাষায় শুনতে পাওয়া যায় কোনো প্রাচীন কণ্ঠস্বর? দেবতা আর রাজার যুগল ছায়ায় খোদাই হওয়া এই উপকথা কি আজও কথা বলে?
Stay Curious SIS
ছবির উৎস https://www.eavartravel.com/blog/2024/1/30/140800/taq-bostan/