মৃত্যুর (29.07.1891) পরেও যিনি করেছেন মানুষের উপকার

বিদ্যাসাগর তাঁর সারা জীবনে প্রচুর মানুষের উপকার করেছিলেন কিন্তু প্রতিদানে উপকৃতরা তাঁর শুধু সমালোচনাই করেছিলেন।
নীচের ছবিটি নিমতলা মহাশ্মশানে তার মরদেহের ছবি, যে ফটোগ্রাফার ছবিটি তুলেছিলেন তিনি তার ফটোগ্রাফী ব্যবসার সূচনায় দিল্লিতে একটি দোকান করেন। কিন্তু ব্যবসায় প্রভূত লোকসান হওয়ায় নিতান্ত বাধ্য হয়ে কলকাতায় ফিরে এসে যখন আবার নতুন করে ব্যবসা শুরু করেছেন..
সেসময় ওনার ডাক পড়ে নীচের ফটোটি তোলবার জন্য। ফটোটি তোলবার সময় তাঁর মুখটা দেখা যাচ্ছিল না, তাই শবযাত্রীবৃন্দ মৃতদেহকে ঠেলে কিছুটা উপরের দিকে তুলে দেন। ফটোটি কার জানেন আমার আপনার প্রানের প্রিয় ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের..
সেই ফটোগ্রাফারই বোধহয় একমাত্র যিনি বিদ্যাসাগর সমন্ধে বলেছিলেন --
“ তৎকালে ধনাঢ্য লোকের তো কথাই নাই, মধ্যবিত্ত গৃহস্থ পর্যন্ত এই ছবি কিনিয়া গৃহে রাখিয়া দিয়াছিলেন.. দিল্লিতে থাকিয়া যে লোকসান দিয়াছিলাম, কলিকাতায় আসিয়া বিদ্যাসাগর মহাশয়ের কৃপায় তাঁর চতুর্গুণ লাভ করিয়াছি। একটি কথা আপনাদিগকে প্রাণ ভরিয়া বলিতেছি, বিদ্যাসাগর মহাশয় জীবিত থাকিয়া অনেকের অনেক উপকার করিয়াছিলেন, কিন্তু মৃত্যুর পরেও তিনি আমার এই পরম উপকার করিলেন...!
তিনি কি শুধুই সমাজ সংস্কারক? বিদ্দ্বান? শিক্ষাবিদ? মাতৃভক্ত? বর্ণপরিচয়ের জনক? না, তিনি এসবের উর্ধে আরও বিরাট মাপের এক মানুষ যাকে স্বয়ং রামকৃষ্ণ দয়ার সাগর রূপে বর্ণনা করেছিলেন।
আসুন, আধুনিক ভারতের শিক্ষা ব্যবস্থাকে যিনি শক্ত ভিতের উপর দাঁড় করেছিলেন সেই বিদ্যাসাগরকে অন্তত কিছুটা সম্মান জানিয়ে তাঁর প্রতি আমাদের ঋণ কিছু মাত্র হলেও শোধ করি।