BRAC University’s Centre for Climate Change and Environmental Research (C3ER), University of Dundee এবং Resilience Solutions-এর যৌথ প্রচেষ্টায়। এর টেকসইতা ও দুর্যোগ-সহনশীলতার জন্য এটি ২০১৯ সালে জাতিসংঘের “UN Risk Award” অর্জন করেছে।

0
320

বাংলাদেশের মতো জলবায়ু সংকটপ্রবণ দেশে যেখানে একদিকে তীব্র গরম, অন্যদিকে হঠাৎ বন্যা সেই বাস্তবতায় কেমন হতে পারে ভবিষ্যতের বাসস্থান?

 

এই প্রশ্নের উত্তরেই ঢাকায় একদল উদ্ভাবক এমন একটি "অ্যাম্ফিবিয়াস হাউস" বা ভাসমান ঘর তৈরি করেছেন যা জলবায়ু পরিবর্তনের ক্রমবর্ধমান হুমকিকে মোকাবেলা করতে সক্ষম। তীব্র তাপপ্রবাহ, ভয়ংকর বন্যা ও দমবন্ধ করা বায়ুদূষণের প্রেক্ষাপটে এই বাড়িটি আশার আলো হয়ে উঠেছে। এটি শুধু বন্যার সময় পানিতে ভেসে থাকতে পারে না বরং স্বাভাবিকভাবেই ঘরের তাপমাত্রা ঠান্ডা রাখে এবং প্রয়োজনীয় খাবার, পানি ও বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে সক্ষম।

 

এই ঘরটি তৈরি হয়েছে পরিবেশবান্ধব “লো-কার্বন আর্থ ব্লক” দিয়ে, যা ঘরের ভিতরের তাপমাত্রা সবসময় প্রায় ২৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে স্থিতিশীল রাখে। এই ব্লকগুলো প্রচলিত ইটের চেয়েও মজবুত এবং পরিবেশবান্ধব। সাধারণ ইটভাটাগুলোর কারণে বাংলাদেশে কার্বন-ডাই-অক্সাইড (CO₂) নিঃসরণের প্রায় ১৭% তৈরি হয়, যা জলবায়ু দূষণের অন্যতম উৎস। কিন্তু এই আর্থ ব্লকের ব্যবহারে ইটভাটা ব্যবহারের প্রয়োজনই পড়ে না, ফলে এটি নির্মাণ খাতকে অনেক বেশি পরিবেশবান্ধব করে তোলে। 

 

এই ঘরটিকে এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে যাতে এটি প্রাকৃতিক দূর্যোগ ও দীর্ঘ কোনো বিচ্ছিন্নতা (যেমন যোগাযোগ বিচ্ছিন্নতা) মোকাবেলা করতে পারে। ঘরের মধ্যে রয়েছে বৃষ্টির পানি সংগ্রহের ব্যবস্থা (rainwater harvesting), ইন্ডোর পারমাকালচার (permaculture), অ্যাকুয়াপনিক্স (aquaponics) ও সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যবস্থা যার ফলে ঘরটি নিজেই একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ বাসস্থান হয়ে ওঠে।

 

এই ঘর ডিজাইন করা হয়েছে এমন পরিবারগুলোর জন্য যারা প্রাকৃতিক দুর্যোগে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হন যেমন: চরাঞ্চলে বসবাসকারীরা, নদীভাঙনে ঘর হারানো পরিবার, জলবায়ু উদ্বাস্তু, শহরের নিম্নআয়ের মানুষ।

 

এই প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হয়েছে BRAC University’s Centre for Climate Change and Environmental Research (C3ER), University of Dundee এবং Resilience Solutions-এর যৌথ প্রচেষ্টায়। এর টেকসইতা ও দুর্যোগ-সহনশীলতার জন্য এটি ২০১৯ সালে জাতিসংঘের “UN Risk Award” অর্জন করেছে।

যদিও এই আর্থ ব্লকগুলোকে বড় পরিসরে উৎপাদনের ক্ষেত্রে এখনো কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে, তবুও এই ডিজাইনটি বাংলাদেশের শত শত বছরের পুরোনো “ঠান্ডা স্থাপত্য” ঐতিহ্যকে আধুনিক প্রযুক্তির সঙ্গে একত্রিত করে একটি যুগান্তকারী দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। এটি শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়, বরং সারা বিশ্বের জন্য একটি টেকসই ও জলবায়ু-সহনশীল আবাসনের রূপরেখা হয়ে উঠতে পারে।

Suche
Kategorien
Mehr lesen
Food
বিটরুটের উপকারিতা। কেন আপনি বিটরুট খাবেন ?
বিটরুট (Beetroot) একটি অত্যন্ত পুষ্টিকর সবজি, যার রয়েছে অসংখ্য স্বাস্থ্য উপকারিতা। নিচে বিটরুটের...
Von Nurul Hasan Maruf 2025-07-06 10:45:51 0 954
Andere
NIST) তৈরি করেছে এমন এক ঘড়ি, যা এটি বিশ্বের সবচেয়ে নির্ভুল অ্যাটমিক ক্লক, যা প্রতি সেকেন্ডের ১৯তম দশমিক স্থান পর্যন্ত সময় ধরতে সক্ষম। এত নিখুঁত যে, ৩০ বিলিয়ন বছরেও এর সময় গড়মিল হবে না এক সেকেন্ডও!
যুক্তরাষ্ট্রের National Institute of Standards and Technology (NIST) তৈরি করেছে এমন এক ঘড়ি, যা...
Von Sharif Uddin 2025-08-03 14:13:34 0 321
Tech
লোহা পানিতে ভাসে না কিন্তু লোহার জাহাজ ভাসে কেন?
এটি পদার্থবিজ্ঞানের একটি খুব মজাদার প্রশ্ন যা আর্কিমিডিসের নীতির সাথে জড়িত। সহজভাবে বলতে গেলে,...
Von Sharif Uddin 2025-07-28 04:24:58 0 286
Andere
China is building a 1 kilometer-wide solar Power station in Space.
China’s Giant Leap: A Solar Power Plant… in Space! 🚀 Imagine a solar station so...
Von Mirshad Sharif 2025-08-04 19:38:37 0 443
Tech
ফিঙ্গারপ্রিন্ট পদ্ধতির আসল জনক কে? জানলে চমকে যাবেন!"
"১৮৯২ সাল, ব্রিটিশ ভারতের কলকাতা। রাইটার্স বিল্ডিংয়ের ধূসর করিডোর তখন রহস্যে মোড়া। সেখানে একজন...
Von Sharif Uddin 2025-08-05 18:46:22 0 329
BlackBird Ai
https://bbai.shop