-
-
Explore Our Features
-
-
-
-
-
-
-
-
-
Ai and Tools
-
-
-
-
-
আমরা যতটা না সাহিত্যের হুমায়ূনকে চিনি রসায়নের হুমায়ূনকে কজনই বা চিনি?

রসায়ন-পড়ুয়া মানুষের রসবোধ নেই এমন সর্বজনবিদীত অপবাদকে ম্লান করে কৃষ্ণপক্ষের চাঁদের মতো এক প্রবাদপুরুষ রসের ফোয়ারা ছুটিয়েছিলেন বাংলা সাহিত্যের সরোবরে। তাঁর ছোঁয়ায় হিমু, শুভ্র, মিসির আলির মতো একেকটি কাল্পনিক চরিত্র হয়ে উঠেছিল প্রাণবন্ত।
দিনের আলোয় কোয়ান্টাম কেমিস্ট্রি পড়ানো, রাতের আঁধারে শব্দের জাদু দেখানো এই জাদুকরের জীবনের সাঁঝবাতি নিভে গিয়েছিল আজকের এই দিনে। কিন্তু তিনি আছেন; তিনি মিশে আছেন মিশ্র গন্ধের ল্যাবরেটরিতে, উদ্যমী এক যুবকের হাতে ফ্লেইম টেস্টে দপ করে জ্বলে ওঠা রঙিন শিখার মতোই উজ্জ্বল হয়ে ।
চোখে মোটা ফ্রেমের চশমা, স্বভাবে লাজুক- রহস্যময় লোকটি রসায়নের সবচেয়ে কঠিন বিষয় কোয়ান্টাম কেমিস্ট্রি পড়াতেন। গল্পের ছলে কঠিন কঠিন বিষয় তিনি সহজেই বোঝাতে পারতেন। তিনি কোয়ান্টাম মেকানিক্সের একটি বইও লিখেছিলেন- সেটাও গল্পের ছলে। তার সাথে প্রবল সেন্স অব হিউমার আর বিজ্ঞানের অগাধ জ্ঞান তাঁকে করে তুলেছিল জনপ্রিয় শিক্ষক।
নর্থ ডাকোটার কোয়ান্টাম কেমিস্ট্রির সেই মস্তান লোকটির কথা মনে আছে? "মার্ক গর্ডন" । তাঁর সাথে হুমায়ূন আহমেদের একটা পাবলিকেশন ও আছে। লোকটা হুমায়ূন আহমেদের মেধা আর সৃজনশীলতা টের পেয়েছিলেন । যুক্তরাষ্ট্রে থেকে যাওয়ার প্রস্তাবও দিয়েছিলেন। কিন্তু হুমায়ূনের তাড়া ছিল, নাড়ির টান ছিল। ঠিকই দেশে এসে ছেলেদের কাঠখোট্টা কোয়ান্টাম কেমিস্ট্রি পড়াতে লাগলেন।
আজ তিনি নেই , অজানার পথে হেঁটে চলে গেছেন দশ বছর আগে, উনিশে জুলাই এর এক শ্রাবণে। যাত্রাবিরতিতে এই শহরের বুকে, বইমেলায়, কার্জনের ঘাসে, রবীন্দ্রনাথ -সুনীল- মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়দের বাগানে পদধূলি দিয়ে গেছেন। হে অগ্রজ, যেখানেই থাকবেন, ভালো থাকবেন। পারলে কোনো এক বর্ষায় হিমুর মতো নগ্ন পায়ে কদম হাতে একদিন আমাদের আতিথ্য স্বীকার করবেন।
আলোকচিত্র: নর্থ ডাকোটা ইউনিভার্সিটিতে গবেষণারত হুমায়ুন আহমেদ।