• বর্তমানে স্মার্টওয়াচ ও ফিটনেস ট্র্যাকার ব্যান্ড আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অংশ হয়ে উঠেছে। কিন্তু এই ব্যান্ডে ব্যবহৃত কিছু মেটেরিয়ালে রয়েছে PFAS অর্থাৎ Per- and Polyfluoroalkyl Substances ।

    এটি এক ধরনের বিষাক্ত চিরস্থায়ী রাসায়নিক, যা ত্বক থেকে শোষিত হয়ে শরীরে ক্যানসার, লিভার ও কিডনির রোগের ঝুঁকি তৈরি করতে পারে, এমনটাই বলছে যুক্তরাষ্ট্রের নটর ডেম বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণা।

    এই রাসায়নিক সাধারণত ব্যান্ড, কেসিং বা স্ক্রিন কোটিংয়ে ব্যবহৃত হয়, কারণ এটি পানি, তেল ও ঘাম প্রতিরোধ করে এবং পণ্যকে টেকসই ও মসৃণ রাখে। তবে PFAS খুবই স্থিতিশীল, সহজে ভাঙে না—বরং শরীরে ও পরিবেশে দীর্ঘদিন ধরে সক্রিয় থাকে। ঘাম এর শোষণ ক্ষমতা আরও বাড়িয়ে তোলে।

    গবেষণায় Nike, Apple, Fitbit, Google সহ ২২টি জনপ্রিয় ব্র্যান্ডের ব্যান্ড পরীক্ষা করে ১৫ টিতেই PFAS শনাক্ত হয়েছে, অনেক ক্ষেত্রেই মাত্রা ছিল বিপজ্জনকভাবে বেশি। যদিও কোন ব্যান্ডগুলোতে পাওয়া যায় সেটা উল্লেখ করা হয়নি।

    তাছাড়া গবেষণায় PFHxA-এর মতো কিছু রাসায়নিকও পাওয়া গেছে, যা সাধারণত কীটনাশক বা কার্পেটে ব্যবহৃত হয় এবং সরাসরি লিভার ক্ষতির সঙ্গে জড়িত। যুক্তরাষ্ট্রের পরিবেশ সংস্থা (EPA) বলেছে, এসব রাসায়নিকের কোনো মাত্রাই শরীরের জন্য নিরাপদ নয়। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ইতোমধ্যেই নিষেধাজ্ঞার পথে হাঁটছে।

    তাই স্মার্টওয়াচ বা ব্যান্ড কেনার সময় সচেতন হোন। PFAS-মুক্ত কি না, দেখে নিন। নিরাপদ বিকল্প হিসেবে সিলিকন ব্যান্ড বেছে নেওয়াই উত্তম।

    Compiled by: বিজ্ঞান্বেষী
    Source: American Chemical Society (ACS)
    #Bigganneshi
    বর্তমানে স্মার্টওয়াচ ও ফিটনেস ট্র্যাকার ব্যান্ড আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অংশ হয়ে উঠেছে। কিন্তু এই ব্যান্ডে ব্যবহৃত কিছু মেটেরিয়ালে রয়েছে PFAS অর্থাৎ Per- and Polyfluoroalkyl Substances । এটি এক ধরনের বিষাক্ত চিরস্থায়ী রাসায়নিক, যা ত্বক থেকে শোষিত হয়ে শরীরে ক্যানসার, লিভার ও কিডনির রোগের ঝুঁকি তৈরি করতে পারে, এমনটাই বলছে যুক্তরাষ্ট্রের নটর ডেম বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণা। এই রাসায়নিক সাধারণত ব্যান্ড, কেসিং বা স্ক্রিন কোটিংয়ে ব্যবহৃত হয়, কারণ এটি পানি, তেল ও ঘাম প্রতিরোধ করে এবং পণ্যকে টেকসই ও মসৃণ রাখে। তবে PFAS খুবই স্থিতিশীল, সহজে ভাঙে না—বরং শরীরে ও পরিবেশে দীর্ঘদিন ধরে সক্রিয় থাকে। ঘাম এর শোষণ ক্ষমতা আরও বাড়িয়ে তোলে। গবেষণায় Nike, Apple, Fitbit, Google সহ ২২টি জনপ্রিয় ব্র্যান্ডের ব্যান্ড পরীক্ষা করে ১৫ টিতেই PFAS শনাক্ত হয়েছে, অনেক ক্ষেত্রেই মাত্রা ছিল বিপজ্জনকভাবে বেশি। যদিও কোন ব্যান্ডগুলোতে পাওয়া যায় সেটা উল্লেখ করা হয়নি। তাছাড়া গবেষণায় PFHxA-এর মতো কিছু রাসায়নিকও পাওয়া গেছে, যা সাধারণত কীটনাশক বা কার্পেটে ব্যবহৃত হয় এবং সরাসরি লিভার ক্ষতির সঙ্গে জড়িত। যুক্তরাষ্ট্রের পরিবেশ সংস্থা (EPA) বলেছে, এসব রাসায়নিকের কোনো মাত্রাই শরীরের জন্য নিরাপদ নয়। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ইতোমধ্যেই নিষেধাজ্ঞার পথে হাঁটছে। তাই স্মার্টওয়াচ বা ব্যান্ড কেনার সময় সচেতন হোন। PFAS-মুক্ত কি না, দেখে নিন। নিরাপদ বিকল্প হিসেবে সিলিকন ব্যান্ড বেছে নেওয়াই উত্তম। Compiled by: বিজ্ঞান্বেষী Source: American Chemical Society (ACS) #Bigganneshi
    0 Comments 0 Shares 6 Views
  • ডিসেম্বর ২০২৪ সালের একটি গবেষণায় বলা হয়েছে, প্রতিদিন পাঁচ কাপের বেশি কফি পান করলে মস্তিষ্কের বয়স ৬.৭ বছর পর্যন্ত কমতে পারে।

    গবেষণায় অংশগ্রহণকারীরা যারা বেশি কফি পান করেন, তারা মনোযোগ, প্রসেসিং স্পিড, এবং ভিজুয়োমোটর কো-অর্ডিনেশন সম্পর্কিত বিভিন্ন পরীক্ষায় ভালো স্কোর করেছেন। এমনকি বয়স, লিঙ্গ এবং ধূমপানের বিষয়টি হিসাব করেও দেখা গেছে, তাদের শরীরে প্রদাহজনিত চিহ্ন তুলনামূলকভাবে কম।

    গবেষকরা মনে করছেন, এই উপকারের পেছনে রয়েছে কফিতে থাকা ক্যাফেইন, ম্যাগনেশিয়াম, ভিটামিন বি৩, এবং প্রদাহ হ্রাসকারী যৌগ। বিশেষ করে অ্যাট্রিয়াল ফিব্রিলেশন (AFib) রোগীদের জন্য কফি উপকারী হতে পারে, যারা মানসিক অবনতির ঝুঁকিতে থাকেন – কফি এই ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করতে পারে।

    আরও গবেষণায় দেখা গেছে, বেশি কফি পান করলে মস্তিষ্কে অ্যামিলয়েড-বিটা (Aβ) প্রোটিন জমা হওয়ার হার কমে, যা আলঝেইমার এবং ডিমেনশিয়া রোগের ঝুঁকি কমায়। যারা দিনে মাত্র এক বা দুই কাপ কফি পান করেন, তাদের মধ্যে এই রোগের প্রবণতা বেশি দেখা গেছে।

    কফি মস্তিষ্কে বিষাক্ত অ্যামিলয়েড প্ল্যাক তৈরি কমিয়ে দিতে পারে, কারণ এটি Aβ প্রোটিন তৈরি এবং এর বিষক্রিয়া কমিয়ে দেয়। কফির বিভিন্ন উপাদান ক্যাফেইনের সঙ্গে মিলিত হয়ে আরও কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।
    ডিসেম্বর ২০২৪ সালের একটি গবেষণায় বলা হয়েছে, প্রতিদিন পাঁচ কাপের বেশি কফি পান করলে মস্তিষ্কের বয়স ৬.৭ বছর পর্যন্ত কমতে পারে। গবেষণায় অংশগ্রহণকারীরা যারা বেশি কফি পান করেন, তারা মনোযোগ, প্রসেসিং স্পিড, এবং ভিজুয়োমোটর কো-অর্ডিনেশন সম্পর্কিত বিভিন্ন পরীক্ষায় ভালো স্কোর করেছেন। এমনকি বয়স, লিঙ্গ এবং ধূমপানের বিষয়টি হিসাব করেও দেখা গেছে, তাদের শরীরে প্রদাহজনিত চিহ্ন তুলনামূলকভাবে কম। গবেষকরা মনে করছেন, এই উপকারের পেছনে রয়েছে কফিতে থাকা ক্যাফেইন, ম্যাগনেশিয়াম, ভিটামিন বি৩, এবং প্রদাহ হ্রাসকারী যৌগ। বিশেষ করে অ্যাট্রিয়াল ফিব্রিলেশন (AFib) রোগীদের জন্য কফি উপকারী হতে পারে, যারা মানসিক অবনতির ঝুঁকিতে থাকেন – কফি এই ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করতে পারে। আরও গবেষণায় দেখা গেছে, বেশি কফি পান করলে মস্তিষ্কে অ্যামিলয়েড-বিটা (Aβ) প্রোটিন জমা হওয়ার হার কমে, যা আলঝেইমার এবং ডিমেনশিয়া রোগের ঝুঁকি কমায়। যারা দিনে মাত্র এক বা দুই কাপ কফি পান করেন, তাদের মধ্যে এই রোগের প্রবণতা বেশি দেখা গেছে। কফি মস্তিষ্কে বিষাক্ত অ্যামিলয়েড প্ল্যাক তৈরি কমিয়ে দিতে পারে, কারণ এটি Aβ প্রোটিন তৈরি এবং এর বিষক্রিয়া কমিয়ে দেয়। কফির বিভিন্ন উপাদান ক্যাফেইনের সঙ্গে মিলিত হয়ে আরও কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।
    0 Comments 0 Shares 5 Views
  • নিজের শেকড় ভুলে যাওয়া অধম!
    মানুষ যত দূরই এগিয়ে যাক না কেন, যত বড় নাম বা সাফল্যই অর্জন করুক না কেন, তার ভিতরে এক অদৃশ্য শক্তি থাকে—সেটি হলো তার শেকড়। জন্মস্থান, পরিবার, পূর্বপুরুষদের জীবনসংগ্রাম, ভাষা, সংস্কৃতি, বিশ্বাস—এসব মিলেই তৈরি হয় একেকটি মানুষের পরিচয় ও আত্মা।

    শুধু প্রবাসী নয়, শেকড়ে যুক্ত থাকা দরকার সবার!
    শুধু প্রবাসী নয়, দেশে থাকা মানুষও যখন নিজের শেকড়কে অবহেলা করে, তখন সে ধীরে ধীরে আত্মবিস্মৃত হয়। এমন অনেকে আছেন, যারা নিজের আদি নিবাস, পারিবারিক ইতিহাস, স্থানীয় সংস্কৃতি বা মাটির গন্ধকে তুচ্ছ ভাবে; নিজেদের অতীতকে “অপ্রয়োজনীয়” মনে করে সামনে এগিয়ে যেতে চায়। কিন্তু প্রশ্ন হলো—যে নিজের পেছনের ইতিহাস জানে না, সে সামনের পথ ঠিক কীভাবে চিনবে?

    শেকড়হীন মানুষ, গাছ থেকে ছেঁড়া পাতার মতো!
    একটি গাছ মাটি ছেড়ে বাঁচতে পারে না। শেকড় ছাড়া গাছ যেমন শুকিয়ে যায়, মানুষও তেমনি ভিতর থেকে শূন্য হয়ে পড়ে যদি সে নিজের শেকড় ভুলে যায়। আত্মপরিচয় শুধু বর্তমানের নয়—তা গঠিত হয় অতীতের ভাঙাগড়ার ভেতর দিয়ে।
    আধুনিকতা মানেই শেকড়বিচ্ছিন্নতা নয়
    বিশ্বায়ন, আধুনিকতা, নাগরিক জীবন—এসবের ভিড়ে অনেকেই ভাবে নিজের পুরোনো গল্প, ঐতিহ্য বা স্থানীয় সংস্কৃতির চর্চা "পিছিয়ে পড়া"র লক্ষণ। অথচ সত্যটা হলো, যারা শেকড় জানে না, তারা ভবিষ্যৎ গড়ার মাটি পায় না। যারা নিজেদের ছোটবেলার স্কুল, গ্রামীণ রীতি, পরিবারের গল্প ভুলে যায়, তারাই জীবনের গভীর সম্পর্কগুলো হারিয়ে ফেলে।
    শেকড় মানে কেবল জন্মস্থান নয়, আত্মার সংযোগ!
    নিজ শেকড় মানে শুধু কোথায় জন্মেছি তা নয়—মানে আমি কার ইতিহাস বহন করছি, কার ভাষায় প্রথম হাসতে শিখেছি, কোন গন্ধে মন নরম হয়েছে, কোন মায়ার মধ্যে বেড়ে উঠেছি। এই শেকড় জানলে মানুষ আত্মবিশ্বাসী হয়, মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে শেখে।
    মধুসূদনের পথ ভুলে, শেষতক শেকড়েই ফেরা!
    এই প্রসঙ্গে মাইকেল মধুসূদন দত্তের কথা না বললেই নয়।
    যিনি ইংরেজি সাহিত্যকে হৃদয়ে ধারণ করেছিলেন, ইউরোপীয় সংস্কৃতিতে মগ্ন ছিলেন, এবং ভাবতেন—"এ দেশ, এই ভাষা, এই সংস্কৃতি আমার নয়।" তিনি বিদেশে গিয়ে বুঝেছিলেন, নিজের মাতৃভাষা, মাটি আর মা—এদের ছাড়া মানুষ কেবল দেহ বয়ে বেড়ায়, আত্মা নয়। তাই তিনি ফিরে এলেন, বাংলায় লিখলেন, আর সেই শেকড়েই গেঁথে গেলেন চিরতরে।
    শেষজীবনে অভাব, অপমান, হতাশা সব সয়েও বলেছিলেন—"আহা, বাংলায় যদি লিখতে পারতাম আরও আগে!"

    শেকড় ভুলে যাওয়া মানে আত্মা হারিয়ে ফেলা!
    যে নিজের শেকড় ভুলে যায়, তার চেয়ে অধম আর কেউ নেই। নিজেকে জানতে হলে, ভালোবাসতে হলে, আগে জানতে হয়—আমি কে, কোথা থেকে এসেছি। শুধু ব্যক্তিগত নয়, জাতিগতভাবে, সাংস্কৃতিকভাবেও এই চেতনা মানুষকে বাঁচিয়ে রাখে।
    🌱 নিজের শেকড় ভুলে যাওয়া অধম! মানুষ যত দূরই এগিয়ে যাক না কেন, যত বড় নাম বা সাফল্যই অর্জন করুক না কেন, তার ভিতরে এক অদৃশ্য শক্তি থাকে—সেটি হলো তার শেকড়। জন্মস্থান, পরিবার, পূর্বপুরুষদের জীবনসংগ্রাম, ভাষা, সংস্কৃতি, বিশ্বাস—এসব মিলেই তৈরি হয় একেকটি মানুষের পরিচয় ও আত্মা। 🏠 শুধু প্রবাসী নয়, শেকড়ে যুক্ত থাকা দরকার সবার! শুধু প্রবাসী নয়, দেশে থাকা মানুষও যখন নিজের শেকড়কে অবহেলা করে, তখন সে ধীরে ধীরে আত্মবিস্মৃত হয়। এমন অনেকে আছেন, যারা নিজের আদি নিবাস, পারিবারিক ইতিহাস, স্থানীয় সংস্কৃতি বা মাটির গন্ধকে তুচ্ছ ভাবে; নিজেদের অতীতকে “অপ্রয়োজনীয়” মনে করে সামনে এগিয়ে যেতে চায়। কিন্তু প্রশ্ন হলো—যে নিজের পেছনের ইতিহাস জানে না, সে সামনের পথ ঠিক কীভাবে চিনবে? 🌳 শেকড়হীন মানুষ, গাছ থেকে ছেঁড়া পাতার মতো! একটি গাছ মাটি ছেড়ে বাঁচতে পারে না। শেকড় ছাড়া গাছ যেমন শুকিয়ে যায়, মানুষও তেমনি ভিতর থেকে শূন্য হয়ে পড়ে যদি সে নিজের শেকড় ভুলে যায়। আত্মপরিচয় শুধু বর্তমানের নয়—তা গঠিত হয় অতীতের ভাঙাগড়ার ভেতর দিয়ে। 🌍 আধুনিকতা মানেই শেকড়বিচ্ছিন্নতা নয় বিশ্বায়ন, আধুনিকতা, নাগরিক জীবন—এসবের ভিড়ে অনেকেই ভাবে নিজের পুরোনো গল্প, ঐতিহ্য বা স্থানীয় সংস্কৃতির চর্চা "পিছিয়ে পড়া"র লক্ষণ। অথচ সত্যটা হলো, যারা শেকড় জানে না, তারা ভবিষ্যৎ গড়ার মাটি পায় না। যারা নিজেদের ছোটবেলার স্কুল, গ্রামীণ রীতি, পরিবারের গল্প ভুলে যায়, তারাই জীবনের গভীর সম্পর্কগুলো হারিয়ে ফেলে। 🧬 শেকড় মানে কেবল জন্মস্থান নয়, আত্মার সংযোগ! নিজ শেকড় মানে শুধু কোথায় জন্মেছি তা নয়—মানে আমি কার ইতিহাস বহন করছি, কার ভাষায় প্রথম হাসতে শিখেছি, কোন গন্ধে মন নরম হয়েছে, কোন মায়ার মধ্যে বেড়ে উঠেছি। এই শেকড় জানলে মানুষ আত্মবিশ্বাসী হয়, মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে শেখে। 📖 মধুসূদনের পথ ভুলে, শেষতক শেকড়েই ফেরা! এই প্রসঙ্গে মাইকেল মধুসূদন দত্তের কথা না বললেই নয়। যিনি ইংরেজি সাহিত্যকে হৃদয়ে ধারণ করেছিলেন, ইউরোপীয় সংস্কৃতিতে মগ্ন ছিলেন, এবং ভাবতেন—"এ দেশ, এই ভাষা, এই সংস্কৃতি আমার নয়।" তিনি বিদেশে গিয়ে বুঝেছিলেন, নিজের মাতৃভাষা, মাটি আর মা—এদের ছাড়া মানুষ কেবল দেহ বয়ে বেড়ায়, আত্মা নয়। তাই তিনি ফিরে এলেন, বাংলায় লিখলেন, আর সেই শেকড়েই গেঁথে গেলেন চিরতরে। শেষজীবনে অভাব, অপমান, হতাশা সব সয়েও বলেছিলেন—"আহা, বাংলায় যদি লিখতে পারতাম আরও আগে!" 🕯️ শেকড় ভুলে যাওয়া মানে আত্মা হারিয়ে ফেলা! যে নিজের শেকড় ভুলে যায়, তার চেয়ে অধম আর কেউ নেই। নিজেকে জানতে হলে, ভালোবাসতে হলে, আগে জানতে হয়—আমি কে, কোথা থেকে এসেছি। শুধু ব্যক্তিগত নয়, জাতিগতভাবে, সাংস্কৃতিকভাবেও এই চেতনা মানুষকে বাঁচিয়ে রাখে। ❤️✍️
    0 Comments 0 Shares 5 Views
  • পুরান ঢাকার অলিগলি, শুধু ইতিহাস আর হালুয়া-রুটি নয়—এখানে বাস করে বহু প্রজন্ম ধরে বয়ে আসা কাহিনি, লোকবিশ্বাস আর গা ছমছমে মিথ। এর মধ্যে অন্যতম হলো—‘অন্ধকারে আসা মিষ্টির ক্রেতা’র গল্প।

    বলা হয়, পুরান ঢাকার কিছু নির্দিষ্ট মিষ্টির দোকানে প্রতি কয়েকদিন পরপর রাত ৮টার দিকে হাজির হন একদল অদ্ভুত মানুষ।
    তারা ঢোকার আগে দোকানের মালিককে বলেন—

    “লাইট নিভিয়ে দিন।”
    আর তারপর?
    দোকান অন্ধকার হয়ে যায়।
    আর সেই অন্ধকারেই তারা নিয়ে যান ১০–১২ কেজি মিষ্টি।
    নগদ টাকাও দেন, কিন্তু কেউ সে টাকা ভালো করে দেখতে পায় না।
    সবকিছু হয় যেন নিঃশব্দ, নিঃছায়া, নিখুঁত।

    এদের গড়ন খুব লম্বা, চলাফেরা নিরব ও অস্বাভাবিক।
    তারা মাথা নিচু করে হাঁটে, কারো সঙ্গে কথা বলে না, কারো চোখে চোখ রাখে না।
    দোকানদারেরা বলে—

    “এদের মুখ আজ পর্যন্ত কেউ ভালো করে দেখে নাই।”
    কিছু দোকানদার স্বীকার করেন—

    “হ্যাঁ, তারা আসে। কিন্তু আমরা কিছু জিজ্ঞেস করি না। সবকিছু ঠিকঠাক করে চলে যায়।”
    আবার কেউ কেউ সরাসরি অস্বীকার করেন—

    “এসব কিছুই না। মিষ্টির বিক্রির গল্প বানিয়ে গুজব ছড়ানো হচ্ছে।”
    তবে আশ্চর্যের বিষয় হলো, প্রায় সব পুরান ঢাকার মিষ্টির দোকানে এই গল্প কোনো না কোনোভাবে ঘুরে ফিরে আসে।
    পুরান ঢাকার অলিগলি, শুধু ইতিহাস আর হালুয়া-রুটি নয়—এখানে বাস করে বহু প্রজন্ম ধরে বয়ে আসা কাহিনি, লোকবিশ্বাস আর গা ছমছমে মিথ। এর মধ্যে অন্যতম হলো—‘অন্ধকারে আসা মিষ্টির ক্রেতা’র গল্প। বলা হয়, পুরান ঢাকার কিছু নির্দিষ্ট মিষ্টির দোকানে প্রতি কয়েকদিন পরপর রাত ৮টার দিকে হাজির হন একদল অদ্ভুত মানুষ। তারা ঢোকার আগে দোকানের মালিককে বলেন— “লাইট নিভিয়ে দিন।” আর তারপর? দোকান অন্ধকার হয়ে যায়। আর সেই অন্ধকারেই তারা নিয়ে যান ১০–১২ কেজি মিষ্টি। নগদ টাকাও দেন, কিন্তু কেউ সে টাকা ভালো করে দেখতে পায় না। সবকিছু হয় যেন নিঃশব্দ, নিঃছায়া, নিখুঁত। এদের গড়ন খুব লম্বা, চলাফেরা নিরব ও অস্বাভাবিক। তারা মাথা নিচু করে হাঁটে, কারো সঙ্গে কথা বলে না, কারো চোখে চোখ রাখে না। দোকানদারেরা বলে— “এদের মুখ আজ পর্যন্ত কেউ ভালো করে দেখে নাই।” কিছু দোকানদার স্বীকার করেন— “হ্যাঁ, তারা আসে। কিন্তু আমরা কিছু জিজ্ঞেস করি না। সবকিছু ঠিকঠাক করে চলে যায়।” আবার কেউ কেউ সরাসরি অস্বীকার করেন— “এসব কিছুই না। মিষ্টির বিক্রির গল্প বানিয়ে গুজব ছড়ানো হচ্ছে।” তবে আশ্চর্যের বিষয় হলো, প্রায় সব পুরান ঢাকার মিষ্টির দোকানে এই গল্প কোনো না কোনোভাবে ঘুরে ফিরে আসে।
    0 Comments 0 Shares 5 Views
  • পর্দার বাইরের এক মহানায়ক: পল নিউম্যান

    ১৯৮৫ সাল। শিকাগোতে চলছে “The Color of Money” ছবির শুটিং। প্রস্তুতি পূর্ণমাত্রায়—তারকা, আলো, ক্যামেরা, বিলাসবহুল হোটেল, ব্যক্তিগত রাঁধুনি, ওয়াইনের তালিকা… চুক্তি অনুযায়ী সবই সাজানো।
    কিন্তু শুটিং শুরুর আগের দিন পল নিউম্যান হঠাৎ নিজেই বলে বসলেন—এই সব সুবিধা তিনি নিচ্ছেন না। আর যেই বাজেট তার জন্য বরাদ্দ ছিল, সেটা পাঠিয়ে দিলেন কাছের এক শিশু হাসপাতালের তহবিলে।
    একটি কথাও বললেন না।
    টিম অবাক হয়ে শুধু দেখল—কেউ চাইলে কতোটা নিঃস্বার্থ হতে পারে।

    সবসময়ই করতেন!
    আশি দশকের প্রায় প্রতিটি ছবিতেই নিউম্যান করতেন একই কাজ— প্রযোজকদের কাছে বিলাসের দাবি জানাতেন, তারপর সব বাতিল করে পুরো টাকা দান করে দিতেন শিশু হাসপাতালগুলোতে।
    একবার এক প্রযোজক বিস্ময়ে বলেছিলেন— “পল বলেছিল, যদি কেউ আমার জন্য কিছু করতেই চায়, তাহলে সেটা যেন হয় এমন কারও জন্য—যার জীবনে কোনো ন্যায্য সুযোগই ছিল না।” ‘Harper & Son’ সিনেমার সময়ও নিউ ইয়র্কের এক হাসপাতালে চলে যায় এমনই এক ‘নামহীন’ অনুদান।
    কে দিয়েছে, কেউ জানত না।

    পল নিউম্যান নিজের এই দানধর্মের কোনো প্রচার করতেন না। না কোনো হাসপাতালের দেয়ালে তার নাম,
    না কোনো প্ল্যাকার্ড, না কোনো “Paul Newman Pediatric Ward”।
    সেই দান ছিল নিঃশব্দ, নিঃস্বার্থ, নিরাভরণ—
    একটা ভালোবাসা, যেটা কেবল অনুভবেই ধরা দেয়।

    'Harry & Son’ ছবির সেটে এক সহকারী লক্ষ করেন—
    নিউম্যান এসেছেন একটা ভাড়া করা সাধারণ গাড়িতে,
    যেখানে চুক্তিতে ছিল লিমুজিন! জিজ্ঞেস করলে নিউম্যান হেসে উত্তর দেন— “যদি কারও দেখাতে ইচ্ছে করে, করুক।
    আমি চাই, একটা বাচ্চা যেন হাসপাতালের বিছানাটা পায়।”
    এই কথতেই তার মানবিকতার পরিচয় তোলার জন্য যথেষ্ট ।

    তাঁর এই মহত্ত্ব ছিল লোকদেখানো নয়, একেবারে ভিতর থেকে আসা। ‘Blaze’ সিনেমার সেটে তিনি ব্যস্ত ছিলেন চিত্রনাট্য নয়, লোকাল ক্লিনিকের ম্যাপ ঘাঁটতে। ‘The Verdict’ ছবির সময় বলেছিলেন— “এই বছরের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি সিনেমা নয়, একটা শিশুর হাঁটতে শেখার খবর শুনে আমি কেঁদে ফেলেছিলাম।”
    এই লাইনটিই হয়তো তাঁর জীবনের সারাংশ।

    সব নায়ক আলোয় দাঁড়িয়ে থাকেন না।
    কিছু নায়ক ছায়ায় থাকেন— তাঁরা মঞ্চে ওঠেন না, বরং অন্যদের জন্য মঞ্চ তৈরি করেন।
    যেখানে অন্যরা হাততালির খোঁজে থাকেন, তিনি খুঁজে ফিরতেন কোনো শিশুর মুখে ছোট্ট একটুখানি হাসি।
    তিনি ছিলেন সত্যিকার অর্থে এক মহানায়ক।
    ---
    🎬 পর্দার বাইরের এক মহানায়ক: পল নিউম্যান ১৯৮৫ সাল। শিকাগোতে চলছে “The Color of Money” ছবির শুটিং। প্রস্তুতি পূর্ণমাত্রায়—তারকা, আলো, ক্যামেরা, বিলাসবহুল হোটেল, ব্যক্তিগত রাঁধুনি, ওয়াইনের তালিকা… চুক্তি অনুযায়ী সবই সাজানো। কিন্তু শুটিং শুরুর আগের দিন পল নিউম্যান হঠাৎ নিজেই বলে বসলেন—এই সব সুবিধা তিনি নিচ্ছেন না। আর যেই বাজেট তার জন্য বরাদ্দ ছিল, সেটা পাঠিয়ে দিলেন কাছের এক শিশু হাসপাতালের তহবিলে। একটি কথাও বললেন না। টিম অবাক হয়ে শুধু দেখল—কেউ চাইলে কতোটা নিঃস্বার্থ হতে পারে। 📜 সবসময়ই করতেন! আশি দশকের প্রায় প্রতিটি ছবিতেই নিউম্যান করতেন একই কাজ— প্রযোজকদের কাছে বিলাসের দাবি জানাতেন, তারপর সব বাতিল করে পুরো টাকা দান করে দিতেন শিশু হাসপাতালগুলোতে। একবার এক প্রযোজক বিস্ময়ে বলেছিলেন— “পল বলেছিল, যদি কেউ আমার জন্য কিছু করতেই চায়, তাহলে সেটা যেন হয় এমন কারও জন্য—যার জীবনে কোনো ন্যায্য সুযোগই ছিল না।” ‘Harper & Son’ সিনেমার সময়ও নিউ ইয়র্কের এক হাসপাতালে চলে যায় এমনই এক ‘নামহীন’ অনুদান। কে দিয়েছে, কেউ জানত না। 🔇 পল নিউম্যান নিজের এই দানধর্মের কোনো প্রচার করতেন না। না কোনো হাসপাতালের দেয়ালে তার নাম, না কোনো প্ল্যাকার্ড, না কোনো “Paul Newman Pediatric Ward”। সেই দান ছিল নিঃশব্দ, নিঃস্বার্থ, নিরাভরণ— একটা ভালোবাসা, যেটা কেবল অনুভবেই ধরা দেয়। 🚗 'Harry & Son’ ছবির সেটে এক সহকারী লক্ষ করেন— নিউম্যান এসেছেন একটা ভাড়া করা সাধারণ গাড়িতে, যেখানে চুক্তিতে ছিল লিমুজিন! জিজ্ঞেস করলে নিউম্যান হেসে উত্তর দেন— “যদি কারও দেখাতে ইচ্ছে করে, করুক। আমি চাই, একটা বাচ্চা যেন হাসপাতালের বিছানাটা পায়।” এই কথতেই তার মানবিকতার পরিচয় তোলার জন্য যথেষ্ট । 📚 তাঁর এই মহত্ত্ব ছিল লোকদেখানো নয়, একেবারে ভিতর থেকে আসা। ‘Blaze’ সিনেমার সেটে তিনি ব্যস্ত ছিলেন চিত্রনাট্য নয়, লোকাল ক্লিনিকের ম্যাপ ঘাঁটতে। ‘The Verdict’ ছবির সময় বলেছিলেন— “এই বছরের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি সিনেমা নয়, একটা শিশুর হাঁটতে শেখার খবর শুনে আমি কেঁদে ফেলেছিলাম।” এই লাইনটিই হয়তো তাঁর জীবনের সারাংশ। 🎞️ সব নায়ক আলোয় দাঁড়িয়ে থাকেন না। কিছু নায়ক ছায়ায় থাকেন— তাঁরা মঞ্চে ওঠেন না, বরং অন্যদের জন্য মঞ্চ তৈরি করেন। যেখানে অন্যরা হাততালির খোঁজে থাকেন, তিনি খুঁজে ফিরতেন কোনো শিশুর মুখে ছোট্ট একটুখানি হাসি। তিনি ছিলেন সত্যিকার অর্থে এক মহানায়ক। ❤️ ---
    0 Comments 0 Shares 4 Views
  • দক্ষিণ ভারতের লাল বালির মরুভূমি: থেরি কাড়ু....

    যখন আমরা ভারতের মরুভূমির কথা ভাবি, তখন চোখে ভেসে ওঠে রাজস্থানের সোনালি বালিয়াড়ি। কিন্তু ভারতের দক্ষিণ প্রান্তে তামিলনাড়ুর বুকেও রয়েছে এক আশ্চর্যজনক প্রাকৃতিক বিস্ময়—থেরি কাড়ু, এক লাল বালুর মরুভূমি, যা তার অনন্য রঙ, ভূতাত্ত্বিক ইতিহাস এবং চলমান গঠনের জন্য বিশেষভাবে পরিচিত।

    অবস্থান ও বিস্তৃতি:-

    থেরি কাড়ু অবস্থিত তামিলনাড়ুর তুতিকোরিন এবং তিরুনেলভেলি জেলায়। এটি প্রায় ৫০০ বর্গকিলোমিটার জায়গা জুড়ে বিস্তৃত এক বিস্ময়কর লাল বালির মরুভূমি, যা সাধারণ মরুভূমির তুলনায় সম্পূর্ণ আলাদা।

    বালুর রঙের রহস্য:-

    থেরি কাড়ুর বালু যে গভীর লাল রঙের, তার পেছনে রয়েছে ভূতাত্ত্বিক কারণ। এই বালিতে রয়েছে উচ্চমাত্রায় লৌহ অক্সাইড, যা সূর্যালোকে প্রতিফলিত হয়ে এক গাঢ় লাল আভা সৃষ্টি করে। এই রঙই একে ভারতের অন্যান্য মরুভূমি থেকে আলাদা করে তুলেছে।

    গঠনের ইতিহাস:-

    থেরি কাড়ুর উৎপত্তি হাজার হাজার বছর আগে, Quaternary যুগে, যখন পৃথিবীতে চলছিল শেষ বরফ যুগ বা Last Glacial Maximum। সে সময় সমুদ্রের জলস্তর ছিল অনেক নিচে, এবং উপকূল অঞ্চলের অনেকটাই ছিল উন্মুক্ত। এই উন্মুক্ত সমুদ্রপৃষ্ঠ এবং পশ্চিমঘাটের লৌহসমৃদ্ধ শিলা থেকে বাতাসের মাধ্যমে বালুকণাগুলি এখানে এসে জমা হতে থাকে। এই দীর্ঘমেয়াদি বায়ুপ্রবাহজনিত (aeolian) প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই গড়ে ওঠে থেরি কাড়ুর বর্তমান ভূচিত্র।

    ভূবিজ্ঞানীদের মতে, এই অঞ্চল একসময় সমুদ্রের নিচে ছিল। সময়ের প্রবাহে বালির স্তর জমে জমে এখানে সৃষ্টি হয়েছে এক অনন্য ভূমিরূপ, যা শুধু প্রাকৃতিক নয়, ভূতাত্ত্বিকভাবেও অমূল্য।

    চলমান বালির বিস্ময়:-

    থেরি কাড়ুর সবচেয়ে আকর্ষণীয় বৈশিষ্ট্য হল এর চলমান বালিয়াড়ি। এখানে বালু এক জায়গায় স্থির থাকে না, বরং প্রতিনিয়ত বাতাসের প্রভাবে স্থান পরিবর্তন করে। এই গুণ একে পরিণত করেছে এক জীবন্ত ভূপ্রাকৃতিক গবেষণাগারে, যা এখনও সম্পূর্ণরূপে ক্ষয়প্রাপ্ত নয়।

    ড. ক্রিস্টি নির্মলা মেরি, মাদুরাইয়ের কৃষি কলেজের মাটির ও পরিবেশ বিভাগের প্রধান বলেন, “থেরি কাড়ু কোনো ঐতিহ্যবাহী মরুভূমি নয়, বরং এটি একটি নতুন গঠিত, চলমান লাল বালুর ভূমি, যা আমাদের ভূগোল ও পরিবেশচর্চায় অমূল্য অবদান রাখছে।”

    প্রকৃতির লুকানো রত্ন:-

    যদিও তামিলনাড়ু মূলত পরিচিত সবুজ ধানক্ষেত, প্রাচীন মন্দির এবং উপকূলীয় সৌন্দর্যের জন্য, থেরি কাড়ু এই রাজ্যের এক ব্যতিক্রমী ও রহস্যময় ভূমি। এটি পর্যটক, গবেষক, ভূবিজ্ঞানী ও প্রকৃতিপ্রেমীদের জন্য এক অনন্য গন্তব্য।

    রাজস্থানের মরুভূমির রূপ আপনাকে মুগ্ধ করলেও, থেরি কাড়ুর লাল বালুর মরুভূমি আপনাকে ভাবাবে, বিস্মিত করবে এবং প্রকৃতির অসাধারণ ক্ষমতা সম্পর্কে নতুন করে জানাবে।

    এটি শুধুই একটি প্রাকৃতিক দৃশ্য নয়—এ এক প্রাকৃতিক ঐতিহ্য, ভূতাত্ত্বিক ইতিহাসের জীবন্ত দলিল। তাই দক্ষিণ ভারতে ভ্রমণের সময় এই লুকিয়ে থাকা লাল মরুভূমিকে বাদ দেবেন না—কারণ প্রকৃতি এখানে নিজেই লিখেছে এক অনন্য কবিতা, লাল বালুর অক্ষরে।

    এই ধরনের নতুন নতুন তথ্যপূর্ণ পোস্ট পেতে হলে আমাদের পেজটিকে ফলো করবেন।।।

    Geography zone- ভূগোল বলয় #everyonefollowers #everyoneシ#india #facts #follower #like #unknown #geography #ad #desert #Tamilnadu
    🏞️ দক্ষিণ ভারতের লাল বালির মরুভূমি: থেরি কাড়ু....😲😲😲 🔸যখন আমরা ভারতের মরুভূমির কথা ভাবি, তখন চোখে ভেসে ওঠে রাজস্থানের সোনালি বালিয়াড়ি। কিন্তু ভারতের দক্ষিণ প্রান্তে তামিলনাড়ুর বুকেও রয়েছে এক আশ্চর্যজনক প্রাকৃতিক বিস্ময়—থেরি কাড়ু, এক লাল বালুর মরুভূমি, যা তার অনন্য রঙ, ভূতাত্ত্বিক ইতিহাস এবং চলমান গঠনের জন্য বিশেষভাবে পরিচিত। 📍 অবস্থান ও বিস্তৃতি:- ▪️ থেরি কাড়ু অবস্থিত তামিলনাড়ুর তুতিকোরিন এবং তিরুনেলভেলি জেলায়। এটি প্রায় ৫০০ বর্গকিলোমিটার জায়গা জুড়ে বিস্তৃত এক বিস্ময়কর লাল বালির মরুভূমি, যা সাধারণ মরুভূমির তুলনায় সম্পূর্ণ আলাদা। 🔴 বালুর রঙের রহস্য:- ▪️ থেরি কাড়ুর বালু যে গভীর লাল রঙের, তার পেছনে রয়েছে ভূতাত্ত্বিক কারণ। এই বালিতে রয়েছে উচ্চমাত্রায় লৌহ অক্সাইড, যা সূর্যালোকে প্রতিফলিত হয়ে এক গাঢ় লাল আভা সৃষ্টি করে। এই রঙই একে ভারতের অন্যান্য মরুভূমি থেকে আলাদা করে তুলেছে। 🌍 গঠনের ইতিহাস:- ▪️ থেরি কাড়ুর উৎপত্তি হাজার হাজার বছর আগে, Quaternary যুগে, যখন পৃথিবীতে চলছিল শেষ বরফ যুগ বা Last Glacial Maximum। সে সময় সমুদ্রের জলস্তর ছিল অনেক নিচে, এবং উপকূল অঞ্চলের অনেকটাই ছিল উন্মুক্ত। এই উন্মুক্ত সমুদ্রপৃষ্ঠ এবং পশ্চিমঘাটের লৌহসমৃদ্ধ শিলা থেকে বাতাসের মাধ্যমে বালুকণাগুলি এখানে এসে জমা হতে থাকে। এই দীর্ঘমেয়াদি বায়ুপ্রবাহজনিত (aeolian) প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই গড়ে ওঠে থেরি কাড়ুর বর্তমান ভূচিত্র। ▪️ ভূবিজ্ঞানীদের মতে, এই অঞ্চল একসময় সমুদ্রের নিচে ছিল। সময়ের প্রবাহে বালির স্তর জমে জমে এখানে সৃষ্টি হয়েছে এক অনন্য ভূমিরূপ, যা শুধু প্রাকৃতিক নয়, ভূতাত্ত্বিকভাবেও অমূল্য। 🌬️ চলমান বালির বিস্ময়:- ▪️ থেরি কাড়ুর সবচেয়ে আকর্ষণীয় বৈশিষ্ট্য হল এর চলমান বালিয়াড়ি। এখানে বালু এক জায়গায় স্থির থাকে না, বরং প্রতিনিয়ত বাতাসের প্রভাবে স্থান পরিবর্তন করে। এই গুণ একে পরিণত করেছে এক জীবন্ত ভূপ্রাকৃতিক গবেষণাগারে, যা এখনও সম্পূর্ণরূপে ক্ষয়প্রাপ্ত নয়। ▪️ ড. ক্রিস্টি নির্মলা মেরি, মাদুরাইয়ের কৃষি কলেজের মাটির ও পরিবেশ বিভাগের প্রধান বলেন, “থেরি কাড়ু কোনো ঐতিহ্যবাহী মরুভূমি নয়, বরং এটি একটি নতুন গঠিত, চলমান লাল বালুর ভূমি, যা আমাদের ভূগোল ও পরিবেশচর্চায় অমূল্য অবদান রাখছে।” 🌿 প্রকৃতির লুকানো রত্ন:- ▪️ যদিও তামিলনাড়ু মূলত পরিচিত সবুজ ধানক্ষেত, প্রাচীন মন্দির এবং উপকূলীয় সৌন্দর্যের জন্য, থেরি কাড়ু এই রাজ্যের এক ব্যতিক্রমী ও রহস্যময় ভূমি। এটি পর্যটক, গবেষক, ভূবিজ্ঞানী ও প্রকৃতিপ্রেমীদের জন্য এক অনন্য গন্তব্য। 🔸 রাজস্থানের মরুভূমির রূপ আপনাকে মুগ্ধ করলেও, থেরি কাড়ুর লাল বালুর মরুভূমি আপনাকে ভাবাবে, বিস্মিত করবে এবং প্রকৃতির অসাধারণ ক্ষমতা সম্পর্কে নতুন করে জানাবে। 🔸 এটি শুধুই একটি প্রাকৃতিক দৃশ্য নয়—এ এক প্রাকৃতিক ঐতিহ্য, ভূতাত্ত্বিক ইতিহাসের জীবন্ত দলিল। তাই দক্ষিণ ভারতে ভ্রমণের সময় এই লুকিয়ে থাকা লাল মরুভূমিকে বাদ দেবেন না—কারণ প্রকৃতি এখানে নিজেই লিখেছে এক অনন্য কবিতা, লাল বালুর অক্ষরে। 💠 এই ধরনের নতুন নতুন তথ্যপূর্ণ পোস্ট পেতে হলে আমাদের পেজটিকে ফলো করবেন।।। Geography zone- ভূগোল বলয় #everyonefollowers #everyoneシ゚ #india #facts #follower #like #unknown #geography #ad #desert #Tamilnadu
    0 Comments 0 Shares 8 Views
  • TSMC (Taiwan Semiconductor Manufacturing Company) — নামটি শুনে সাধারণ অনেকেই ভাবেন, এটি বোধহয় আরেকটি প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান।
    কিন্তু বাস্তবে, এই কোম্পানিটি পুরো আধুনিক প্রযুক্তি বিশ্বের প্রাণকেন্দ্র।
    আপনি যেই স্মার্টফোনটা হাতে ধরেছেন, ল্যাপটপ, গাড়ি, ড্রোন, এআই চিপ—সবকিছুর মস্তিষ্ক অর্থাৎ ‘চিপ’ তৈরি করে এই প্রতিষ্ঠানই।
    TSMC ছাড়া আজকের প্রযুক্তির গতি যেন অক্সিজেন ছাড়াই দৌড়ানোর চেষ্টা।

    বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান?

    TSMC শুধুমাত্র তাইওয়ান নয়, বরং সারা বিশ্বের ৫০% এর বেশি অ্যাডভান্সড চিপ একা তৈরি করে।
    বিশেষ করে Apple, AMD, Nvidia, Qualcomm, Intel-এর মতো জায়ান্ট কোম্পানিগুলো তাদের চিপ ডিজাইন TSMC-কে দেয় এবং TSMC সেই ডিজাইন অনুযায়ী ন্যানো-স্কেলে চিপ বানায়।
    এটাই বলা হয়, “Apple হয়তো চিপ ডিজাইন করে, কিন্তু তা প্রাণ পায় TSMC-র স্পর্শে।”

    এআই যুগে TSMC-এর গুরুত্ব

    বর্তমানে AI (Artificial Intelligence) ভিত্তিক যেসব সুপার কম্পিউটার, ডেটা সেন্টার, এবং স্মার্ট ডিভাইস চলছে—তাদের চিপের ৭০% এর বেশি বানিয়েছে TSMC।
    বিশ্বজুড়ে AI-চালিত ভবিষ্যতের যত সম্ভাবনা, তার প্রায় সবই TSMC-এর সিলিকন জাদুর উপর নির্ভর করে।

    কেন পশ্চিমা বিশ্ব TSMC-এর নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত?

    TSMC-এর প্রধান কারখানাগুলো তাইওয়ানে অবস্থিত।
    আর তাইওয়ান-চীন উত্তেজনার কারণে বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে—যদি যুদ্ধ হয়, তাহলে পুরো পৃথিবীর চিপ সাপ্লাই থমকে যাবে।
    এই আশঙ্কায় আমেরিকা, জাপান, জার্মানি সহ বিভিন্ন দেশ TSMC-কে নিজেদের দেশে কারখানা তৈরির জন্য বিলিয়ন ডলারের প্রণোদনা দিচ্ছে।

    বাজারমূল্যে রেকর্ড

    TSMC-এর বাজারমূল্য প্রায় ৬০০ বিলিয়ন ডলার, যা একে পৃথিবীর সবচেয়ে মূল্যবান কিছু কোম্পানির কাতারে এনে দাঁড় করিয়েছে।
    এটি এমন একটি কোম্পানি, যা অদৃশ্যভাবে সারা বিশ্বের ডিজিটাল ভবিষ্যৎ নিয়ন্ত্রণ করছে।

    TSMC কোনো সাধারণ কোম্পানি নয়।
    এটি এমন একটি প্রতিষ্ঠান, যা আধুনিক বিশ্বের প্রতিটি ইলেকট্রনিক ডিভাইসের অন্তরালে নিরব but অপরিহার্য ভূমিকা রাখছে।
    যদি একদিন TSMC থেমে যায়, তাহলে থেমে যাবে আপনার ফোন, আপনার ল্যাপটপ, এমনকি আপনার গাড়িও!

    তাই বলা হয়—TSMC মানেই আধুনিক বিশ্বের ‘সিলিকন হৃদয়’।
    এটি কেবল একটি কোম্পানি নয়, বরং ভবিষ্যতের চালিকাশক্তি।

    লেখায়-ফ্লোরা
    TSMC (Taiwan Semiconductor Manufacturing Company) — নামটি শুনে সাধারণ অনেকেই ভাবেন, এটি বোধহয় আরেকটি প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান। কিন্তু বাস্তবে, এই কোম্পানিটি পুরো আধুনিক প্রযুক্তি বিশ্বের প্রাণকেন্দ্র। আপনি যেই স্মার্টফোনটা হাতে ধরেছেন, ল্যাপটপ, গাড়ি, ড্রোন, এআই চিপ—সবকিছুর মস্তিষ্ক অর্থাৎ ‘চিপ’ তৈরি করে এই প্রতিষ্ঠানই। TSMC ছাড়া আজকের প্রযুক্তির গতি যেন অক্সিজেন ছাড়াই দৌড়ানোর চেষ্টা। বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান? TSMC শুধুমাত্র তাইওয়ান নয়, বরং সারা বিশ্বের ৫০% এর বেশি অ্যাডভান্সড চিপ একা তৈরি করে। বিশেষ করে Apple, AMD, Nvidia, Qualcomm, Intel-এর মতো জায়ান্ট কোম্পানিগুলো তাদের চিপ ডিজাইন TSMC-কে দেয় এবং TSMC সেই ডিজাইন অনুযায়ী ন্যানো-স্কেলে চিপ বানায়। এটাই বলা হয়, “Apple হয়তো চিপ ডিজাইন করে, কিন্তু তা প্রাণ পায় TSMC-র স্পর্শে।” এআই যুগে TSMC-এর গুরুত্ব বর্তমানে AI (Artificial Intelligence) ভিত্তিক যেসব সুপার কম্পিউটার, ডেটা সেন্টার, এবং স্মার্ট ডিভাইস চলছে—তাদের চিপের ৭০% এর বেশি বানিয়েছে TSMC। বিশ্বজুড়ে AI-চালিত ভবিষ্যতের যত সম্ভাবনা, তার প্রায় সবই TSMC-এর সিলিকন জাদুর উপর নির্ভর করে। কেন পশ্চিমা বিশ্ব TSMC-এর নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত? TSMC-এর প্রধান কারখানাগুলো তাইওয়ানে অবস্থিত। আর তাইওয়ান-চীন উত্তেজনার কারণে বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে—যদি যুদ্ধ হয়, তাহলে পুরো পৃথিবীর চিপ সাপ্লাই থমকে যাবে। এই আশঙ্কায় আমেরিকা, জাপান, জার্মানি সহ বিভিন্ন দেশ TSMC-কে নিজেদের দেশে কারখানা তৈরির জন্য বিলিয়ন ডলারের প্রণোদনা দিচ্ছে। বাজারমূল্যে রেকর্ড TSMC-এর বাজারমূল্য প্রায় ৬০০ বিলিয়ন ডলার, যা একে পৃথিবীর সবচেয়ে মূল্যবান কিছু কোম্পানির কাতারে এনে দাঁড় করিয়েছে। এটি এমন একটি কোম্পানি, যা অদৃশ্যভাবে সারা বিশ্বের ডিজিটাল ভবিষ্যৎ নিয়ন্ত্রণ করছে। TSMC কোনো সাধারণ কোম্পানি নয়। এটি এমন একটি প্রতিষ্ঠান, যা আধুনিক বিশ্বের প্রতিটি ইলেকট্রনিক ডিভাইসের অন্তরালে নিরব but অপরিহার্য ভূমিকা রাখছে। যদি একদিন TSMC থেমে যায়, তাহলে থেমে যাবে আপনার ফোন, আপনার ল্যাপটপ, এমনকি আপনার গাড়িও! তাই বলা হয়—TSMC মানেই আধুনিক বিশ্বের ‘সিলিকন হৃদয়’। এটি কেবল একটি কোম্পানি নয়, বরং ভবিষ্যতের চালিকাশক্তি। লেখায়-ফ্লোরা
    0 Comments 0 Shares 2 Views
  • আইনস্টাইনের মেয়ের বিয়ে। সবাই চার্চে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে উনি মেয়েকে বললেন, তুমি চার্চের দিকে যাও আমি ল্যাব থেকে ১০ মিনিটের মধ্যে আসছি। উনি চার্চে ফিরে এলেন না। মেয়ের বিয়ে হয়ে গাড়িতে চড়ে হানিমুনে গেলেন। ৭ দিন পর মেয়ে ফিরে এসে মাকে জিজ্ঞাসা করলেন, বাবা কোথায়? তখন মা বললেন, ওই যে গেছেন আর আসেননি। তখন মেয়ে নিজে ল্যাবে গিয়ে দেখলেন, বাবা গভীর চিন্তায় মগ্ন। বাবা, কি ব্যাপার! উনি বললেন, মা তুমি চার্চে যাও, আমি কাজটা ১০ মিনিটের মধ্যেই শেষ করে আসছি। এরকমই গভীর ছিল তাঁর ধ্যান, অধ্যাবসায়।
    পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানি স্যার আলবার্ট আইনস্টাইনকে নিয়ে কিছু মজার গল্প। ১৯৩৫ সালে প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটিতে তাঁকে প্রশ্ন করা হয়েছিল,"গবেষণার জন্য আপনার কী কী দরকার?" আইনস্টাইন বললেন,"একটা ডেস্ক, কিছু কাগজ আর একটা পেনসিল। সঙ্গে দরকার বড় একটা ডাস্টবিন, যেখানে আমার সব ভুলে ভরা সব কাগজগুলো ফেলব।"

    বেলজিয়ামের রানি আইনস্টাইনকে আমন্ত্রণ করেছেন। তাঁকে নিতে স্টেশনে হাজির হল গাড়ির বহর। কিন্তু স্টেশনে আইনস্টাইনকে খুঁজেই পাওয়া গেল না। কিছুক্ষণ পর সাদাসিধে পোশাকে বেহালা বাজাতে বাজাতে রাজপ্রাসাদে হাজির হলেন আইনস্টাইন। রানি লজ্জিত হলেন। জানালেন যে, তাঁকে আনতে গাড়ি রেলস্টেশনে গিয়েছিল। কিন্তু তাঁকে না পেয়ে ফিরে এসেছে। আইনস্টাইন বললেন,"আমি ইচ্ছে করেই গাড়ি বহরকে এড়িয়ে গেছি। পায়ে হেঁটে বেহালা বাজাতে বাজাতে এসেছি। যদি গাড়িতে আসতাম, তবে কি এভাবে বেহালা বাজাতে পারতাম? সাধারণ মানুষের মত শহরটাকে দেখতে পারতাম?" এমনই সহজ সরল আর সাধারণ ছিলেন তিনি।

    তবে সবচেয়ে মজার গল্পটা হল, আইনস্টাইন আপেক্ষিকতা তত্ত্ব(The Theory of Relativity) আবিষ্কারের জন্য পৃথিবীতে সর্বাধিক পরিচিত। মজার ব্যাপার তিনি কিন্তু তাঁর এই আবিষ্কারের জন্য নোবেল পুরষ্কার পাননি। বলা হয়ে থাকে পৃথিবীতে হাতে গোণা কয়েকজন মাত্র বিজ্ঞানী তাঁর এই তত্ত্বটি বুঝতে পারেন। আর তাই হয়ত রয়েল সুইডিশ একাডেমির জুরিবোর্ড আইন্সটাইনের তত্ত্বটির নিগূঢ় অর্থটি বুঝাতে পারেনি। তাই সে বছর নোবেল তাঁর কপালে না জুটলেও ১৯২১ সালে আলোক তড়িৎ ক্রিয়া(Photo Electric Effect) ব্যাখ্যা করে, তিনি পেলেন পদার্থ বিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার ।
    আইনস্টাইনের মেয়ের বিয়ে। সবাই চার্চে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে উনি মেয়েকে বললেন, তুমি চার্চের দিকে যাও আমি ল্যাব থেকে ১০ মিনিটের মধ্যে আসছি। উনি চার্চে ফিরে এলেন না। মেয়ের বিয়ে হয়ে গাড়িতে চড়ে হানিমুনে গেলেন। ৭ দিন পর মেয়ে ফিরে এসে মাকে জিজ্ঞাসা করলেন, বাবা কোথায়? তখন মা বললেন, ওই যে গেছেন আর আসেননি। তখন মেয়ে নিজে ল্যাবে গিয়ে দেখলেন, বাবা গভীর চিন্তায় মগ্ন। বাবা, কি ব্যাপার! উনি বললেন, মা তুমি চার্চে যাও, আমি কাজটা ১০ মিনিটের মধ্যেই শেষ করে আসছি। এরকমই গভীর ছিল তাঁর ধ্যান, অধ্যাবসায়। পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানি স্যার আলবার্ট আইনস্টাইনকে নিয়ে কিছু মজার গল্প। ১৯৩৫ সালে প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটিতে তাঁকে প্রশ্ন করা হয়েছিল,"গবেষণার জন্য আপনার কী কী দরকার?" আইনস্টাইন বললেন,"একটা ডেস্ক, কিছু কাগজ আর একটা পেনসিল। সঙ্গে দরকার বড় একটা ডাস্টবিন, যেখানে আমার সব ভুলে ভরা সব কাগজগুলো ফেলব।" বেলজিয়ামের রানি আইনস্টাইনকে আমন্ত্রণ করেছেন। তাঁকে নিতে স্টেশনে হাজির হল গাড়ির বহর। কিন্তু স্টেশনে আইনস্টাইনকে খুঁজেই পাওয়া গেল না। কিছুক্ষণ পর সাদাসিধে পোশাকে বেহালা বাজাতে বাজাতে রাজপ্রাসাদে হাজির হলেন আইনস্টাইন। রানি লজ্জিত হলেন। জানালেন যে, তাঁকে আনতে গাড়ি রেলস্টেশনে গিয়েছিল। কিন্তু তাঁকে না পেয়ে ফিরে এসেছে। আইনস্টাইন বললেন,"আমি ইচ্ছে করেই গাড়ি বহরকে এড়িয়ে গেছি। পায়ে হেঁটে বেহালা বাজাতে বাজাতে এসেছি। যদি গাড়িতে আসতাম, তবে কি এভাবে বেহালা বাজাতে পারতাম? সাধারণ মানুষের মত শহরটাকে দেখতে পারতাম?" এমনই সহজ সরল আর সাধারণ ছিলেন তিনি। তবে সবচেয়ে মজার গল্পটা হল, আইনস্টাইন আপেক্ষিকতা তত্ত্ব(The Theory of Relativity) আবিষ্কারের জন্য পৃথিবীতে সর্বাধিক পরিচিত। মজার ব্যাপার তিনি কিন্তু তাঁর এই আবিষ্কারের জন্য নোবেল পুরষ্কার পাননি। বলা হয়ে থাকে পৃথিবীতে হাতে গোণা কয়েকজন মাত্র বিজ্ঞানী তাঁর এই তত্ত্বটি বুঝতে পারেন। আর তাই হয়ত রয়েল সুইডিশ একাডেমির জুরিবোর্ড আইন্সটাইনের তত্ত্বটির নিগূঢ় অর্থটি বুঝাতে পারেনি। তাই সে বছর নোবেল তাঁর কপালে না জুটলেও ১৯২১ সালে আলোক তড়িৎ ক্রিয়া(Photo Electric Effect) ব্যাখ্যা করে, তিনি পেলেন পদার্থ বিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার ।
    0 Comments 0 Shares 8 Views
  • মাছের মাথার ভেতর কোটি টাকার ব্যবসা.?

    এটা গল্প না, বাস্তব সত্য!

    বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ যখন মাছের মাথা ফেলে দেয়, কিন্তু বিশ্বব্যাপী এই অংশটা কিনে নেয় লাখ লাখ টাকায়।
    কারণ মাছের মাথার ভেতরেই আছে এক ছোট্ট কিন্তু অমূল্য সম্পদ- পিটুইটারি গ্লান্ড (Pituitary Gland).!!

    পিটুইটারি গ্লান্ড কী?

    এটা মাছের ব্রেইনের নিচের অংশে থাকা হরমোন নিঃসরণকারী একটি ছোট গ্রন্থি। এটি মাছের প্রজনন বা “induced breeding” এর জন্য অপরিহার্য।

    বিশ্বের অনেক হ্যাচারি ও গবেষণাগারে এই গ্লান্ড থেকে GtH (Gonadotropic Hormone) সংগ্রহ করে ব্যবহার করা হয়।

    কেন এত চাহিদা? কোথায় ব্যবহৃত হয়?

    এই গ্লান্ড সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়:

    Fish Hatchery Industry – কৃত্রিম প্রজনন করাতে
    Pharmaceutical Research – হরমোন গবেষণায়
    Aqua Tech Companies – প্রজনন বুস্টার ও ঔষধ প্রস্তুত করতে

    বিশ্বের যে দেশগুলোতে এর চাহিদা সবচেয়ে বেশঃ
    চীন
    ভিয়েতনাম
    থাইল্যান্ড
    ইন্দোনেশিয়া
    ফিলিপাইন

    এক কেজি পিটুইটারি গ্লান্ডের দাম কত?

    প্রতি কেজি গ্লান্ডের দাম আন্তর্জাতিক বাজারে হয়:
    ৩০,০০০ থেকে ৫০,০০০ মার্কিন ডলার (প্রায় ৩০–৫০ লাখ টাকা)

    একটি গ্লান্ডের ওজন হয় মাত্র ৫–১০ মিলিগ্রাম
    ১ কেজি = প্রায় ৪,০০০–৫,০০০ মাছের গ্লান্ড

    কোন মাছের গ্লান্ড সবচেয়ে বেশি চাহিদাসম্পন্ন?
    • রুই
    • কাতলা
    • মৃগেল
    • পাঙ্গাস
    • শিং
    • মাগুর
    • টেংরা, বোয়াল, বাইম

    এই মাছগুলোর গ্লান্ড সবচেয়ে কার্যকর ও মূল্যবান

    সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াকরণ

    গ্লান্ড সংগ্রহ করার পর এটি সংরক্ষণ করতে হয়:

    Deep Freeze (-40°C)
    অথবা Ethanol Solution-এ ডুবিয়ে
    পরে এটি কাঁচা বা প্রসেসড অবস্থায় রপ্তানি করা হয়

    রপ্তানি প্রক্রিয়া ও লাইসেন্স

    আপনি চাইলে বাংলাদেশ থেকেই এই গ্লান্ড রপ্তানি করতে পারেন, তবে আপনাকে নিতে হবেঃ

    ট্রেড লাইসেন্স
    ব্যবসা রেজিস্ট্রেশন (BIN)
    VAT নম্বর
    রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (EPB) রেজিস্ট্রেশন
    মৎস্য অধিদপ্তর থেকে অনুমোদন
    ফিশ প্রসেসিং ও এক্সপোর্ট লাইসেন্স

    কীভাবে বায়ার খুঁজবেন?

    বিদেশি হ্যাচারি কোম্পানি ও রিসার্চ ল্যাব
    Alibaba, Made-in-China, Tradekey-এর মতো B2B সাইট
    চীনের ডিলার বা এজেন্ট
    আন্তর্জাতিক ফিশারিজ ট্রেড ফেয়ার
    সোশ্যাল মিডিয়া ও ওয়েবসাইটের মাধ্যমে প্রমোশন

    কত টাকা ইনভেস্টমেন্ট লাগবে?
    • ছোট স্কেলে (ঘরে বসে গ্লান্ড কালেকশন): ৪০-৫০ হাজার টাকা
    • মিড স্কেল (সংরক্ষণ + নমুনা প্রেরণ): ১–২ লাখ টাকা
    • বড় স্কেলে প্রসেসিং ল্যাব ও এক্সপোর্ট সেটআপ: ৫–১০ লাখ টাকা

    বাংলাদেশে কোথায় বেশি সম্ভাবনা?
    • ময়মনসিংহ
    • রাজশাহী
    • খুলনা
    • বরিশাল
    • কুমিল্লা
    • সিলেট

    এই অঞ্চলে প্রতিদিন হাজার হাজার টন মাছ কাটাকাটি হয় — কিন্তু এই মূল্যবান গ্লান্ড অনেক সময় ফেলে দেওয়া হয় জাস্ট “অজ্ঞানতায়”।

    কেন এটা বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ?
    • দেশের রপ্তানি আয় বাড়বে
    • মাছের সব অংশের ভ্যালু পাওয়া যাবে
    • উদ্যোক্তাদের নতুন লাভজনক খাত
    • বৈধভাবে রেমিটেন্স আনার সুযোগ
    • সরকারি সহায়তা থাকলে বছরে ৫০+ মিলিয়ন ডলার আয় সম্ভব

    আপনার জন্য পরামর্শ:

    মাছের গ্লান্ড নিয়ে রিসার্চ করুন
    স্থানীয় মৎস্য অফিসে যোগাযোগ করুন
    প্রশিক্ষণ নিন, তারপর লাইসেন্স নিন
    ১০০% বৈধভাবে এই ব্যবসা শুরু করুন
    আন্তর্জাতিক বায়ারদের সাথে কানেক্ট করুন

    #রপ্তানি
    #ইম্পোর্ট
    #startabusiness
    #importexport
    #এক্সপোর্ট
    #export
    #business
    #entrepreneur
    #মাছ_রপ্তানি
    #কোটি
    #পিটুইটারি
    মাছের মাথার ভেতর কোটি টাকার ব্যবসা.? 😲 এটা গল্প না, বাস্তব সত্য! বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ যখন মাছের মাথা ফেলে দেয়, কিন্তু বিশ্বব্যাপী এই অংশটা কিনে নেয় লাখ লাখ টাকায়। কারণ মাছের মাথার ভেতরেই আছে এক ছোট্ট কিন্তু অমূল্য সম্পদ- পিটুইটারি গ্লান্ড (Pituitary Gland).!! 🧠 পিটুইটারি গ্লান্ড কী? এটা মাছের ব্রেইনের নিচের অংশে থাকা হরমোন নিঃসরণকারী একটি ছোট গ্রন্থি। এটি মাছের প্রজনন বা “induced breeding” এর জন্য অপরিহার্য। বিশ্বের অনেক হ্যাচারি ও গবেষণাগারে এই গ্লান্ড থেকে GtH (Gonadotropic Hormone) সংগ্রহ করে ব্যবহার করা হয়। 🌍 কেন এত চাহিদা? কোথায় ব্যবহৃত হয়? এই গ্লান্ড সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়: ✅ Fish Hatchery Industry – কৃত্রিম প্রজনন করাতে ✅ Pharmaceutical Research – হরমোন গবেষণায় ✅ Aqua Tech Companies – প্রজনন বুস্টার ও ঔষধ প্রস্তুত করতে বিশ্বের যে দেশগুলোতে এর চাহিদা সবচেয়ে বেশঃ 🇨🇳 চীন 🇻🇳 ভিয়েতনাম 🇹🇭 থাইল্যান্ড 🇮🇩 ইন্দোনেশিয়া 🇵🇭 ফিলিপাইন 💸 এক কেজি পিটুইটারি গ্লান্ডের দাম কত? প্রতি কেজি গ্লান্ডের দাম আন্তর্জাতিক বাজারে হয়: ৩০,০০০ থেকে ৫০,০০০ মার্কিন ডলার (প্রায় ৩০–৫০ লাখ টাকা) 😲 একটি গ্লান্ডের ওজন হয় মাত্র ৫–১০ মিলিগ্রাম ১ কেজি = প্রায় ৪,০০০–৫,০০০ মাছের গ্লান্ড 🐟 কোন মাছের গ্লান্ড সবচেয়ে বেশি চাহিদাসম্পন্ন? • রুই • কাতলা • মৃগেল • পাঙ্গাস • শিং • মাগুর • টেংরা, বোয়াল, বাইম এই মাছগুলোর গ্লান্ড সবচেয়ে কার্যকর ও মূল্যবান 🧊 সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াকরণ গ্লান্ড সংগ্রহ করার পর এটি সংরক্ষণ করতে হয়: ✅ Deep Freeze (-40°C) ✅ অথবা Ethanol Solution-এ ডুবিয়ে পরে এটি কাঁচা বা প্রসেসড অবস্থায় রপ্তানি করা হয় 📦 রপ্তানি প্রক্রিয়া ও লাইসেন্স আপনি চাইলে বাংলাদেশ থেকেই এই গ্লান্ড রপ্তানি করতে পারেন, তবে আপনাকে নিতে হবেঃ 🔹 ট্রেড লাইসেন্স 🔹 ব্যবসা রেজিস্ট্রেশন (BIN) 🔹 VAT নম্বর 🔹 রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (EPB) রেজিস্ট্রেশন 🔹 মৎস্য অধিদপ্তর থেকে অনুমোদন 🔹 ফিশ প্রসেসিং ও এক্সপোর্ট লাইসেন্স 📈 কীভাবে বায়ার খুঁজবেন? ✅ বিদেশি হ্যাচারি কোম্পানি ও রিসার্চ ল্যাব ✅ Alibaba, Made-in-China, Tradekey-এর মতো B2B সাইট ✅ চীনের ডিলার বা এজেন্ট ✅ আন্তর্জাতিক ফিশারিজ ট্রেড ফেয়ার ✅ সোশ্যাল মিডিয়া ও ওয়েবসাইটের মাধ্যমে প্রমোশন 💼 কত টাকা ইনভেস্টমেন্ট লাগবে? • ছোট স্কেলে (ঘরে বসে গ্লান্ড কালেকশন): ৪০-৫০ হাজার টাকা • মিড স্কেল (সংরক্ষণ + নমুনা প্রেরণ): ১–২ লাখ টাকা • বড় স্কেলে প্রসেসিং ল্যাব ও এক্সপোর্ট সেটআপ: ৫–১০ লাখ টাকা 📍 বাংলাদেশে কোথায় বেশি সম্ভাবনা? • ময়মনসিংহ • রাজশাহী • খুলনা • বরিশাল • কুমিল্লা • সিলেট এই অঞ্চলে প্রতিদিন হাজার হাজার টন মাছ কাটাকাটি হয় — কিন্তু এই মূল্যবান গ্লান্ড অনেক সময় ফেলে দেওয়া হয় জাস্ট “অজ্ঞানতায়”। ✅ কেন এটা বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ? • দেশের রপ্তানি আয় বাড়বে • মাছের সব অংশের ভ্যালু পাওয়া যাবে • উদ্যোক্তাদের নতুন লাভজনক খাত • বৈধভাবে রেমিটেন্স আনার সুযোগ • সরকারি সহায়তা থাকলে বছরে ৫০+ মিলিয়ন ডলার আয় সম্ভব 🔥 আপনার জন্য পরামর্শ: ✅ মাছের গ্লান্ড নিয়ে রিসার্চ করুন ✅ স্থানীয় মৎস্য অফিসে যোগাযোগ করুন ✅ প্রশিক্ষণ নিন, তারপর লাইসেন্স নিন ✅ ১০০% বৈধভাবে এই ব্যবসা শুরু করুন ✅ আন্তর্জাতিক বায়ারদের সাথে কানেক্ট করুন #রপ্তানি #ইম্পোর্ট #startabusiness #importexport #এক্সপোর্ট #export #business #entrepreneur #মাছ_রপ্তানি #কোটি #পিটুইটারি
    0 Comments 0 Shares 10 Views
  • আগুনে পুড়ে যাওয়ার প্রাথমিক চিকিৎসা (১০ টিপস)

    1. তাপের উৎস থেকে সরান: সঙ্গে সঙ্গে আক্রান্ত ব্যক্তিকে আগুন/গরম বস্তু থেকে দূরে সরান। নিজে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখুন ।
    2. আগুন নিভান: মাটিতে গড়াগড়ি দিন, ভারী কম্বল জড়িয়ে বা পানি ঢেলে আগুন নিভান। জ্বলন্ত কাপড় খুলে ফেলুন ।
    3. ২০ মিনিট পানি ঢালুন : ক্ষতস্থানে সাধারণ ঠান্ডা পানি(বরফ নয়) প্রবাহিত করুন। এতে ব্যথা কমবে ও ক্ষতির গভীরতা কমবে ।
    4. কাপড়-গয়না খুলুন: পোড়া স্থানের আঁটসাঁট কাপড়, গয়না খুলে ফেলুন। চামড়ার সাথে লেগে গেলে টানবেন না ।
    5. ক্ষত ঢাকুন: জীবাণুমুক্ত গজ/পরিষ্কার কাপড় দিয়ে ঢাকুন। পলিথিনও ব্যবহার করা যেতে পারে ।
    6. ব্যথা কমান : প্যারাসিটামল বা আইবুপ্রোফেন খান (ডাক্তারের পরামর্শে) ।
    7. শরীর উষ্ণ রাখুন : আক্রান্তকে পরিষ্কার কম্বল/চাদর দিয়ে মুড়ে দিন ।
    8. অবস্থান সামঞ্জস্য করুন:
    - মুখ/চোখ পুড়লে: বসিয়ে রাখুন (ফোলা কমবে) ।
    - পা পুড়লে: শুইয়ে পা উঁচু করুন ।
    9. হাইড্রেশন দিন : জ্ঞান থাকলে পর্যাপ্ত পানি/লবণ-চিনির শরবত খাওয়ান ।
    10. জরুরি সহায়তা নিন:
    - বড় ক্ষত(হাতের তালুর চেয়ে বড়)
    - মুখ, হাত, যৌনাঙ্গ পুড়লে
    - বিদ্যুৎ/রাসায়নিক পোড়া।

    দাগ কমানোর ঘরোয়া উপায় (১০ টিপস)

    1. অ্যালোভেরা জেল: ক্ষত শুকালে দিনে ২-৩ বার লাগান। অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি ও ত্বক রিপেয়ার করে ।
    2. মধু: জীবাণুনাশক হিসাবে ব্যবহার করুন। ক্ষত শুকানোর পর দাগে মাখুন ।
    3. পেঁয়াজের রস : দাগে রোজ ২ বার মালিশ করুন। অ্যান্টি-স্কারিং প্রপার্টি আছে ।
    4. ভিটামিন ই তেল : ক্যাপসুল ছিদ্র করে তেল দাগে মালিশ করুন ।
    5. আলুর রস: পাতলা আলুর ফালা দাগে ঘষুন। "ক্যাটেকোলেইস" এনজাইম দাগ হালকা করে ।
    6. টমেটো রস : দিনে ২ বার লাগান। ভিটামিন সি দাগ কমায় ।
    7. মেথি পেস্ট: ভেজানো মেথি বেটে পেস্ট করুন, ৩০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন ।
    8. ক্যামোমাইল চা : ঠান্ডা চা দাগে লাগান। অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ত্বক রিজুভিনেট করে ।
    9. সিলিকন জেল: বার্ন বিশেষজ্ঞরা **জারজেল/লেভিসিকা ক্রিম** দাগ কমাতে পরামর্শ দেন
    10. সানস্ক্রিন: দাগ যুক্ত ত্বক রোদে ঢাকুন (SPF 30+)। UV রশ্মি দাগ গাঢ় করে ।

    কি কি করা যাবে না? (১০ সতর্কতা)

    1. বরফ/অতিরিক্ত ঠান্ডা পানি : ব্যবহার করবেন না। ত্বকের টিস্যু আরও ক্ষতিগ্রস্ত হয় ।
    2. টুথপেস্ট/ডিম/তেল : লাগাবেন না। সংক্রমণ বাড়ায় ও চিকিৎসায় ব্যাঘাত ঘটায় ।
    3. ফোসকা ফাটানো: নিজে ফাটালে ইনফেকশন হতে পারে। ডাক্তার দেখান ।
    4. আঠালো ব্যান্ডেজ : সরাসরি ক্ষতে লাগাবেন না। তুলা/টিস্যুও নয় ।
    5. দীর্ঘ সময় পানি ঢালা : ২০-৩০ মিনিটের বেশি নয়। শরীরের তাপমাত্রা বিপজ্জনকভাবে কমে যেতে পারে ।
    6. অ্যান্টিবায়োটিক ছাড়া ক্রিম: চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া বার্নল/মিল্কক্রিম ছাড়া অন্য কিছু ব্যবহার করবেন না ।
    7. ঘরোয়া চিকিৎসায় ভরসা: শুধুমাত্র হালকা পোড়া (১ম ডিগ্রি) ঘরে চিকিৎসা করুন। গভীর ক্ষত হাসপাতালে নিন ।
    8. গর্ভবতীদের সতর্কতা: কোনও মলম ব্যবহার না করে সরাসরি ডাক্তার দেখান ।
    9. অনিরাপদ ড্রেসিং: অপরিষ্কার কাপড়/হাত দিয়ে ক্ষত স্পর্শ করবেন না ।
    10. শ্বাসকষ্ট উপেক্ষা😮‍💨: আগুনের ধোঁয়া শ্বাসনালিতে গেলে জরুরি ভিত্তিতে হাসপাতালে যান।

    > প্রতিরোধের টিপস:

    > - রান্নার সময় ঢিলেঢালা পোশাক এড়িয়ে চলুন, কিচেন অ্যাপ্রন ব্যবহার করুন ।
    > - শিশুদের গরম তেল/পানির নাগালের বাইরে রাখুন ।
    > - অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র রান্নাঘরে রাখুন ।
    সারসংক্ষেপ:
    - প্রাথমিক চিকিৎসা = পানি + ক্ষত কভার + ব্যথানাশক।
    - দাগ = অ্যালোভেরা/সিলিকন জেল + সানপ্রোটেকশন।
    - এড়িয়ে চলুন = বরফ/ঘরোয়া পেস্ট/ফোসকা ফাটানো।


    গুরুতর পোড়ার লক্ষণ (থার্ড ডিগ্রি):
    - ত্বক কালো/সাদা, শক্ত, ব্যথাহীন ➜অবিলম্বে হাসপাতালে নিন ।
    🔥 আগুনে পুড়ে যাওয়ার প্রাথমিক চিকিৎসা (১০ টিপস) 1. তাপের উৎস থেকে সরান👉: সঙ্গে সঙ্গে আক্রান্ত ব্যক্তিকে আগুন/গরম বস্তু থেকে দূরে সরান। নিজে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখুন । 2. আগুন নিভান🧯: মাটিতে গড়াগড়ি দিন, ভারী কম্বল জড়িয়ে বা পানি ঢেলে আগুন নিভান। জ্বলন্ত কাপড় খুলে ফেলুন । 3. ২০ মিনিট পানি ঢালুন 💧: ক্ষতস্থানে সাধারণ ঠান্ডা পানি(বরফ নয়) প্রবাহিত করুন। এতে ব্যথা কমবে ও ক্ষতির গভীরতা কমবে । 4. কাপড়-গয়না খুলুন💍: পোড়া স্থানের আঁটসাঁট কাপড়, গয়না খুলে ফেলুন। চামড়ার সাথে লেগে গেলে টানবেন না । 5. ক্ষত ঢাকুন🩹: জীবাণুমুক্ত গজ/পরিষ্কার কাপড় দিয়ে ঢাকুন। পলিথিনও ব্যবহার করা যেতে পারে । 6. ব্যথা কমান 💊: প্যারাসিটামল বা আইবুপ্রোফেন খান (ডাক্তারের পরামর্শে) । 7. শরীর উষ্ণ রাখুন 🛌: আক্রান্তকে পরিষ্কার কম্বল/চাদর দিয়ে মুড়ে দিন । 8. অবস্থান সামঞ্জস্য করুন🪑: - মুখ/চোখ পুড়লে: বসিয়ে রাখুন (ফোলা কমবে) । - পা পুড়লে: শুইয়ে পা উঁচু করুন । 9. হাইড্রেশন দিন 💧: জ্ঞান থাকলে পর্যাপ্ত পানি/লবণ-চিনির শরবত খাওয়ান । 10. জরুরি সহায়তা নিন🚑: - বড় ক্ষত(হাতের তালুর চেয়ে বড়) - মুখ, হাত, যৌনাঙ্গ পুড়লে - বিদ্যুৎ/রাসায়নিক পোড়া। 🌿 দাগ কমানোর ঘরোয়া উপায় (১০ টিপস) 1. অ্যালোভেরা জেল🌵: ক্ষত শুকালে দিনে ২-৩ বার লাগান। অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি ও ত্বক রিপেয়ার করে । 2. মধু🍯: জীবাণুনাশক হিসাবে ব্যবহার করুন। ক্ষত শুকানোর পর দাগে মাখুন । 3. পেঁয়াজের রস 🧅: দাগে রোজ ২ বার মালিশ করুন। অ্যান্টি-স্কারিং প্রপার্টি আছে । 4. ভিটামিন ই তেল 💊: ক্যাপসুল ছিদ্র করে তেল দাগে মালিশ করুন । 5. আলুর রস🥔: পাতলা আলুর ফালা দাগে ঘষুন। "ক্যাটেকোলেইস" এনজাইম দাগ হালকা করে । 6. টমেটো রস 🍅: দিনে ২ বার লাগান। ভিটামিন সি দাগ কমায় । 7. মেথি পেস্ট🌿: ভেজানো মেথি বেটে পেস্ট করুন, ৩০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন । 8. ক্যামোমাইল চা ☕: ঠান্ডা চা দাগে লাগান। অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ত্বক রিজুভিনেট করে । 9. সিলিকন জেল💧: বার্ন বিশেষজ্ঞরা **জারজেল/লেভিসিকা ক্রিম** দাগ কমাতে পরামর্শ দেন 10. সানস্ক্রিন☀️: দাগ যুক্ত ত্বক রোদে ঢাকুন (SPF 30+)। UV রশ্মি দাগ গাঢ় করে । ⚠️ কি কি করা যাবে না? (১০ সতর্কতা) 1. বরফ/অতিরিক্ত ঠান্ডা পানি ❄️: ব্যবহার করবেন না। ত্বকের টিস্যু আরও ক্ষতিগ্রস্ত হয় । 2. টুথপেস্ট/ডিম/তেল 🥚: লাগাবেন না। সংক্রমণ বাড়ায় ও চিকিৎসায় ব্যাঘাত ঘটায় । 3. ফোসকা ফাটানো💢: নিজে ফাটালে ইনফেকশন হতে পারে। ডাক্তার দেখান । 4. আঠালো ব্যান্ডেজ 🩹: সরাসরি ক্ষতে লাগাবেন না। তুলা/টিস্যুও নয় । 5. দীর্ঘ সময় পানি ঢালা ⏳: ২০-৩০ মিনিটের বেশি নয়। শরীরের তাপমাত্রা বিপজ্জনকভাবে কমে যেতে পারে । 6. অ্যান্টিবায়োটিক ছাড়া ক্রিম💊: চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া বার্নল/মিল্কক্রিম ছাড়া অন্য কিছু ব্যবহার করবেন না । 7. ঘরোয়া চিকিৎসায় ভরসা🏠: শুধুমাত্র হালকা পোড়া (১ম ডিগ্রি) ঘরে চিকিৎসা করুন। গভীর ক্ষত হাসপাতালে নিন । 8. গর্ভবতীদের সতর্কতা🤰: কোনও মলম ব্যবহার না করে সরাসরি ডাক্তার দেখান । 9. অনিরাপদ ড্রেসিং🦠: অপরিষ্কার কাপড়/হাত দিয়ে ক্ষত স্পর্শ করবেন না । 10. শ্বাসকষ্ট উপেক্ষা😮‍💨: আগুনের ধোঁয়া শ্বাসনালিতে গেলে জরুরি ভিত্তিতে হাসপাতালে যান। > 💡 প্রতিরোধের টিপস: > - রান্নার সময় ঢিলেঢালা পোশাক এড়িয়ে চলুন, কিচেন অ্যাপ্রন ব্যবহার করুন । > - শিশুদের গরম তেল/পানির নাগালের বাইরে রাখুন । > - অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র রান্নাঘরে রাখুন । 📝 সারসংক্ষেপ: - প্রাথমিক চিকিৎসা = পানি + ক্ষত কভার + ব্যথানাশক। - দাগ = অ্যালোভেরা/সিলিকন জেল + সানপ্রোটেকশন। - এড়িয়ে চলুন = বরফ/ঘরোয়া পেস্ট/ফোসকা ফাটানো। ⚠️ গুরুতর পোড়ার লক্ষণ (থার্ড ডিগ্রি): - ত্বক কালো/সাদা, শক্ত, ব্যথাহীন ➜অবিলম্বে হাসপাতালে নিন ।
    0 Comments 0 Shares 7 Views
  • হরিতকি পাতার ও ফলের ৫০টি গুণাগুণ ও ব্যাখ্যা

    শরীরের ভিতরের যত্নে (Internal Health Benefits):

    1. কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে: হরিতকি গুঁড়া রাতে খেলে পেট পরিষ্কার হয়।

    2. হজমশক্তি বাড়ায়: খাওয়ার পরে হরিতকি খেলে খাবার সহজে হজম হয়।

    3. গ্যাস্ট্রিক ও অম্বল কমায়: পেটের এসিড ব্যালান্স করে।

    4. লিভার সুস্থ রাখে: লিভারের বিষাক্ত পদার্থ পরিষ্কার করে।

    5. রক্ত পরিশোধন করে: শরীরের টক্সিন দূর করে রক্ত বিশুদ্ধ করে।

    6. ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়ক: রক্তে শর্করার মাত্রা কমায়।

    7. কোলেস্টেরল কমায়: খারাপ কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে।

    8. ওজন কমাতে সাহায্য করে: বিপাকক্রিয়া বাড়ায়, ফলে মেদ ঝরে।

    9. বমি ভাব কমায়: পেট ঠান্ডা করে বমি বমি ভাব দূর করে।

    10. শরীরে শক্তি জোগায়: নিয়মিত খাওয়ার ফলে ক্লান্তি দূর হয়।

    রোগ প্রতিরোধে (Immunity & Infection):

    11. ইমিউনিটি বাড়ায়: সংক্রমণের বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষা গড়ে তোলে।

    12. কাশি ও সর্দি কমায়: গলায় কফ কমায় ও স্বস্তি দেয়।

    13. ঠান্ডা ও ইনফ্লুয়েঞ্জায় উপকারী: পাতার রস বা বাটা কণ্ঠনালীকে প্রশমিত করে।

    14. গলার ব্যথা উপশম করে: গরম জলে পাতার রস মিশিয়ে গার্গল করুন।

    15. জ্বর কমায়: শরীর ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে।

    16. অ্যালার্জি রোধ করে: অ্যালার্জির উপসর্গ হ্রাস করে।

    17. ফুসফুসের যত্ন নেয়: শ্বাসপ্রশ্বাস সহজ করে তোলে।

    18. হাঁপানিতে উপকারী: শ্বাসকষ্ট দূর করতে সহায়তা করে।

    19. পাইলস ও ফিস্টুলা উপকারী: বাওয়েল মুভমেন্ট সহজ করে।

    20. ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়ক: অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান রয়েছে।

    মানসিক স্বাস্থ্যে (Mind & Nerve):

    21. স্মৃতিশক্তি বাড়ায়: স্নায়ু সতেজ রাখে ও মনোযোগ বাড়ায়।

    22. ঘুমের সমস্যা দূর করে: রাতে খেলে ঘুম ভালো হয়।

    23. স্ট্রেস কমায়: মানসিক প্রশান্তি আনে।

    24. মস্তিষ্ক ঠান্ডা রাখে: অতিরিক্ত উত্তেজনা কমায়।

    25. মাইগ্রেন উপশমে কার্যকর: মাথা ব্যথা কমায় নিয়মিত খেলে।

    চুল ও ত্বকের যত্নে (Beauty & Hair):

    26. চুল পড়া কমায়: চুলের গোড়া মজবুত করে।

    27. খুশকি দূর করে: স্ক্যাল্প পরিষ্কার রাখে।

    28. চুল ঘন করে: প্যাক হিসেবে ব্যবহারে উপকার পাওয়া যায়।

    29. ব্রণ কমায়: অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল গুণ রয়েছে।

    30. ত্বকে উজ্জ্বলতা আনে: ফেসপ্যাকে ব্যবহার করলে ত্বক উজ্জ্বল হয়।

    31. চুলের আগা ফাটা কমায়: তেলে মিশিয়ে ব্যবহার করুন।

    32. ফোড়া ঘা শুকায়: পাতার পেস্ট ঘায়ের উপর লাগান।

    33. চুল কালো করে: নিয়মিত ব্যবহারে স্বাভাবিক রঙ বজায় থাকে।

    34. চুলে চকমক ভাব আনে: হরিতকি প্যাক দিয়ে মাথা ধুলে চুল ঝলমলে হয়।

    35. ত্বকের জ্বালা-পোড়া কমায়: আক্রান্ত স্থানে পাতা বাটা লাগান।

    মুখ ও দাঁতের যত্নে (Oral Care):

    36. মাড়ির রক্ত পড়া কমায়: হরিতকি গুঁড়া দিয়ে কুলকুচি করুন।

    37. দাঁতের ব্যথা উপশম করে: গুঁড়া দিয়ে ব্রাশ করুন হালকা করে।

    38. মুখের দুর্গন্ধ দূর করে: পাতা সিদ্ধ করে কুলকুচি করুন।

    39. ক্যানকার সোর কমায়: পাতার রস তুলোয় নিয়ে লাগান।

    40. দাঁতের ফাঁকে খাবার আটকে থাকা দূর করে: হরিতকি গুঁড়ার কুলকুচি সাহায্য করে।

    পেট ও হজমতন্ত্রের যত্নে (Digestive Health):

    41. বদহজম দূর করে: খাওয়ার পর অল্প হরিতকি খেলে উপকার মেলে।

    42. গ্যাস কমায়: পেট ফাঁপা হলে হরিতকি উপকারী।

    43. ডায়রিয়ায় উপকারী: পাতার রস সামান্য হালকা করে খাওয়ানো যেতে পারে।

    44. পেট ব্যথা উপশম করে: সেদ্ধ পানি পান করলে আরাম মেলে।

    45. অজীর্ণতা দূর করে: অতিরিক্ত খাওয়ার পর হরিতকি খেলে হজম সহজ হয়।

    বিভিন্ন সাধারণ উপকারিতা (General Benefits):

    46. বয়সের ছাপ কমায়: অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকার কারণে।

    47. রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে: পটাশিয়াম থাকার কারণে।

    48. জীবনীশক্তি বাড়ায়: দুর্বল শরীরে প্রাণশক্তি ফিরিয়ে আনে।

    49. মাংসপেশি শক্ত করে: শারীরিক কর্মক্ষমতা বাড়ায়।

    50. প্রাকৃতিক টনিক: প্রতিদিন খেলে পুরো শরীর সতেজ থাকে।

    ব্যবহার ও খাওয়ার ফর্মুলা (Usage Formula):

    পাতা:

    1. পাতার রস: ৫–৬টি পাতা ব্লেন্ড করে রস বের করে পানিতে মিশিয়ে খালি পেটে খান।

    2. পাতা সেদ্ধ: ঠান্ডা/গলা ব্যথায় পানির সঙ্গে সেদ্ধ করে গার্গল করুন।

    3. চর্মরোগে: পাতা বেটে আক্রান্ত স্থানে লাগান দিনে ২ বার।

    4. মুখের যত্নে: পাতার রস কুলকুচি হিসেবে ব্যবহার করুন।

    ফল/গুঁড়া:

    1. কোষ্ঠকাঠিন্য/পেট: ১ চা চামচ হরিতকি গুঁড়া রাতে গরম পানির সাথে।

    2. ডায়াবেটিস: সকালে খালি পেটে আধা চা চামচ হরিতকি গুঁড়া।

    3. ত্বকের জন্য: মধু + হরিতকি গুঁড়া + গোলাপ জল = ফেসপ্যাক

    4. চুলের যত্নে: নারকেল তেলে হরিতকি গুঁড়া মিশিয়ে স্ক্যাল্পে লাগান।

    Haritaki - Nature’s Secret for Total Wellness!
    প্রতিদিন ১ চামচ হরিতকি = পেট, চুল, ত্বক, মন ও শক্তির যত্ন একসাথে!
    এখনই শুরু করুন আপনার হেলদি লাইফের যাত্রা!

    #HaritakiBenefits #HerbalPower #NaturalWellness #HolisticHealing #DetoxNaturally #AyurvedicRemedy #HealthyFromWithin #PlantBasedHealing #AncientMedicine #RashidasRemedies #GreenHealthTips #DailyDetox #ImmunityBoost #SkincareNaturally #HairCareWithNature
    🌿 হরিতকি পাতার ও ফলের ৫০টি গুণাগুণ ও ব্যাখ্যা 🩺 শরীরের ভিতরের যত্নে (Internal Health Benefits): 1. কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে: হরিতকি গুঁড়া রাতে খেলে পেট পরিষ্কার হয়। 2. হজমশক্তি বাড়ায়: খাওয়ার পরে হরিতকি খেলে খাবার সহজে হজম হয়। 3. গ্যাস্ট্রিক ও অম্বল কমায়: পেটের এসিড ব্যালান্স করে। 4. লিভার সুস্থ রাখে: লিভারের বিষাক্ত পদার্থ পরিষ্কার করে। 5. রক্ত পরিশোধন করে: শরীরের টক্সিন দূর করে রক্ত বিশুদ্ধ করে। 6. ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়ক: রক্তে শর্করার মাত্রা কমায়। 7. কোলেস্টেরল কমায়: খারাপ কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। 8. ওজন কমাতে সাহায্য করে: বিপাকক্রিয়া বাড়ায়, ফলে মেদ ঝরে। 9. বমি ভাব কমায়: পেট ঠান্ডা করে বমি বমি ভাব দূর করে। 10. শরীরে শক্তি জোগায়: নিয়মিত খাওয়ার ফলে ক্লান্তি দূর হয়। 😷 রোগ প্রতিরোধে (Immunity & Infection): 11. ইমিউনিটি বাড়ায়: সংক্রমণের বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষা গড়ে তোলে। 12. কাশি ও সর্দি কমায়: গলায় কফ কমায় ও স্বস্তি দেয়। 13. ঠান্ডা ও ইনফ্লুয়েঞ্জায় উপকারী: পাতার রস বা বাটা কণ্ঠনালীকে প্রশমিত করে। 14. গলার ব্যথা উপশম করে: গরম জলে পাতার রস মিশিয়ে গার্গল করুন। 15. জ্বর কমায়: শরীর ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে। 16. অ্যালার্জি রোধ করে: অ্যালার্জির উপসর্গ হ্রাস করে। 17. ফুসফুসের যত্ন নেয়: শ্বাসপ্রশ্বাস সহজ করে তোলে। 18. হাঁপানিতে উপকারী: শ্বাসকষ্ট দূর করতে সহায়তা করে। 19. পাইলস ও ফিস্টুলা উপকারী: বাওয়েল মুভমেন্ট সহজ করে। 20. ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়ক: অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান রয়েছে। 🧠 মানসিক স্বাস্থ্যে (Mind & Nerve): 21. স্মৃতিশক্তি বাড়ায়: স্নায়ু সতেজ রাখে ও মনোযোগ বাড়ায়। 22. ঘুমের সমস্যা দূর করে: রাতে খেলে ঘুম ভালো হয়। 23. স্ট্রেস কমায়: মানসিক প্রশান্তি আনে। 24. মস্তিষ্ক ঠান্ডা রাখে: অতিরিক্ত উত্তেজনা কমায়। 25. মাইগ্রেন উপশমে কার্যকর: মাথা ব্যথা কমায় নিয়মিত খেলে। 💇‍♀️ চুল ও ত্বকের যত্নে (Beauty & Hair): 26. চুল পড়া কমায়: চুলের গোড়া মজবুত করে। 27. খুশকি দূর করে: স্ক্যাল্প পরিষ্কার রাখে। 28. চুল ঘন করে: প্যাক হিসেবে ব্যবহারে উপকার পাওয়া যায়। 29. ব্রণ কমায়: অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল গুণ রয়েছে। 30. ত্বকে উজ্জ্বলতা আনে: ফেসপ্যাকে ব্যবহার করলে ত্বক উজ্জ্বল হয়। 31. চুলের আগা ফাটা কমায়: তেলে মিশিয়ে ব্যবহার করুন। 32. ফোড়া ঘা শুকায়: পাতার পেস্ট ঘায়ের উপর লাগান। 33. চুল কালো করে: নিয়মিত ব্যবহারে স্বাভাবিক রঙ বজায় থাকে। 34. চুলে চকমক ভাব আনে: হরিতকি প্যাক দিয়ে মাথা ধুলে চুল ঝলমলে হয়। 35. ত্বকের জ্বালা-পোড়া কমায়: আক্রান্ত স্থানে পাতা বাটা লাগান। 🦷 মুখ ও দাঁতের যত্নে (Oral Care): 36. মাড়ির রক্ত পড়া কমায়: হরিতকি গুঁড়া দিয়ে কুলকুচি করুন। 37. দাঁতের ব্যথা উপশম করে: গুঁড়া দিয়ে ব্রাশ করুন হালকা করে। 38. মুখের দুর্গন্ধ দূর করে: পাতা সিদ্ধ করে কুলকুচি করুন। 39. ক্যানকার সোর কমায়: পাতার রস তুলোয় নিয়ে লাগান। 40. দাঁতের ফাঁকে খাবার আটকে থাকা দূর করে: হরিতকি গুঁড়ার কুলকুচি সাহায্য করে। 🍽️ পেট ও হজমতন্ত্রের যত্নে (Digestive Health): 41. বদহজম দূর করে: খাওয়ার পর অল্প হরিতকি খেলে উপকার মেলে। 42. গ্যাস কমায়: পেট ফাঁপা হলে হরিতকি উপকারী। 43. ডায়রিয়ায় উপকারী: পাতার রস সামান্য হালকা করে খাওয়ানো যেতে পারে। 44. পেট ব্যথা উপশম করে: সেদ্ধ পানি পান করলে আরাম মেলে। 45. অজীর্ণতা দূর করে: অতিরিক্ত খাওয়ার পর হরিতকি খেলে হজম সহজ হয়। 🌿 বিভিন্ন সাধারণ উপকারিতা (General Benefits): 46. বয়সের ছাপ কমায়: অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকার কারণে। 47. রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে: পটাশিয়াম থাকার কারণে। 48. জীবনীশক্তি বাড়ায়: দুর্বল শরীরে প্রাণশক্তি ফিরিয়ে আনে। 49. মাংসপেশি শক্ত করে: শারীরিক কর্মক্ষমতা বাড়ায়। 50. প্রাকৃতিক টনিক: প্রতিদিন খেলে পুরো শরীর সতেজ থাকে। 🥄 ব্যবহার ও খাওয়ার ফর্মুলা (Usage Formula): 🟩 পাতা: 1. পাতার রস: ৫–৬টি পাতা ব্লেন্ড করে রস বের করে পানিতে মিশিয়ে খালি পেটে খান। 2. পাতা সেদ্ধ: ঠান্ডা/গলা ব্যথায় পানির সঙ্গে সেদ্ধ করে গার্গল করুন। 3. চর্মরোগে: পাতা বেটে আক্রান্ত স্থানে লাগান দিনে ২ বার। 4. মুখের যত্নে: পাতার রস কুলকুচি হিসেবে ব্যবহার করুন। 🟨 ফল/গুঁড়া: 1. কোষ্ঠকাঠিন্য/পেট: ১ চা চামচ হরিতকি গুঁড়া রাতে গরম পানির সাথে। 2. ডায়াবেটিস: সকালে খালি পেটে আধা চা চামচ হরিতকি গুঁড়া। 3. ত্বকের জন্য: মধু + হরিতকি গুঁড়া + গোলাপ জল = ফেসপ্যাক 4. চুলের যত্নে: নারকেল তেলে হরিতকি গুঁড়া মিশিয়ে স্ক্যাল্পে লাগান। 🌿 Haritaki - Nature’s Secret for Total Wellness! প্রতিদিন ১ চামচ হরিতকি = পেট, চুল, ত্বক, মন ও শক্তির যত্ন একসাথে! 🧠💪 এখনই শুরু করুন আপনার হেলদি লাইফের যাত্রা! 🍀 #HaritakiBenefits #HerbalPower #NaturalWellness #HolisticHealing #DetoxNaturally #AyurvedicRemedy #HealthyFromWithin #PlantBasedHealing #AncientMedicine #RashidasRemedies #GreenHealthTips #DailyDetox #ImmunityBoost #SkincareNaturally #HairCareWithNature
    0 Comments 0 Shares 12 Views
  • দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ তখন তুঙ্গে। বার্মার ঘন জঙ্গলে চলাফেরার জন্য ভারতীয় সেনাদের ট্রেনিং দেওয়া হচ্ছে মধ্য ভারতের মাউয়ের সামরিক ছাউনিতে। সেই সেনাবিভাগে এক ভারতীয় রাজ্যের যুবরাজ ছিলেন। ছাউনির সবাই তাঁকে ‘প্রিন্স’ বলে ডাকত। প্রিন্স নিজে শিকারি, আর তা নিয়ে প্রায়ই মহা আস্ফালন করতেন। কিছু পেটোয়া চ্যালাচামুণ্ডা ছিল তাঁর। সবাইকে নিয়ে বিকেলে ক্লাবঘরে বসে নরক গুলজার হতো। বক্তা মূলত প্রিন্স, বাকিরা মুগ্ধ শ্রোতা। একদিন প্রসঙ্গ উঠল শিকারে অব্যর্থ হতে হলে কী দরকার? নিমেষে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা, তীক্ষ্ণ দৃষ্টি, নাকি অব্যর্থ নিশানা? এক একজন এক একরকম মত দিলেন। কেউ বললেন তিনটি অথবা দু’টির যোগফল। প্রিন্স নিজে বললেন, ‘ওসব বাজে গল্প। অব্যর্থ নিশানাই শেষ কথা নয়।’ ঠিক তখনই ছাউনির ভারপ্রাপ্ত ব্রিটিশ অফিসার বলে উঠলেন, ‘আরে! আজ দেখি আমাদের মধ্যে এক এক্সপার্ট রয়েছেন। শোনাই যাক না উনি কী বলেন?’

    সবাই তাকিয়ে দেখল এককোণে চুপচাপ বসে এতক্ষণ নির্বাক রোদে-পোড়া, শক্ত চেহারার বলিষ্ঠ এক প্রৌঢ় তাঁদের তর্ক শুনে মিটিমিটি হাসছেন। তাঁর উদ্দেশ্যেই প্রশ্ন করায় এককথায় উত্তর দিলেন, ‘অব্যর্থ নিশানা। আর কিচ্ছু না!’ এই প্রথম প্রিন্সের কথাকে কেউ চ্যালেঞ্জ করলেন। যথারীতি তিনি ভয়ানক রেগে গেলেন। কে এই বৃদ্ধ! এত সাহসই বা তাঁর হয় কী করে? কোনওমতে রাগ চেপে প্রিন্স বললেন ‘আপনি প্রমাণ করতে পারবেন?’

    প্রৌঢ় আঙুল তুলে দেখালেন, ‘আচ্ছা, ওই দূরের গাছটা দেখ। একটা ওয়াই Y আকারের সরু ডালের মাঝের খাঁজে ছোট্ট একখানা পাখি বসে আছে। ডাল ভাঙবে না, কিন্তু পাখিটাকে মারতে হবে। পারবে?’ বিকেলের আলো পড়ে আসছে। চারিদিক ধোঁয়াটে ধূসর। প্রিন্স বললেন, ‘অসম্ভব! এই আলোতে নজরই চলে না, পাখি মারব কি করে?’

    উত্তরে প্রৌঢ় হাত বাড়িয়ে গাড়োয়ালী অনুচরের কাছ থেকে হেলায় একটা রাইফেল নিলেন, তুললেন, গুলি ছুঁড়লেন, বললেন, ‘কেন, এমনি করে?’ সবাই ছুটে গেলেন সেখানে। গিয়ে দেখা গেল ডালটি অভগ্ন, পাখিটি মৃত। কারও মুখে কথাটি সরে না। শেষে প্রিন্স কোনমতে তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘এ কেমন করে সম্ভব?’ প্রৌঢ় মুচকি হেসে উত্তর দিলেন ‘শোন তবে, যখন রুদ্রপ্রয়াগের চিতাটাকে মারি..’ এইটুকু শুনেই প্রিন্স যা বোঝার বুঝে গিয়েছেন ‘বলেন কী!! আপনিই তবে...’

    ‘হ্যাঁ, এই অধমের নামই এডোয়ার্ড জেমস করবেট। সবাই ভালবেসে জিম নামে ডাকে।’

    জিম করবেট জন্মেছিলেন পাহাড়ঘেরা নৈনিতালে। আজ থেকে দেড়শো বছর আগে। এই জুলাই মাসেরই ২৫ তারিখ। বাবা নৈনিতালের পোস্টমাস্টার। হ্রদ, নৈনিদেবীর মন্দির আর তার চারপাশের বন জঙ্গলে ঘুরে ঘুরেই করবেটের প্রথম প্রকৃতি প্রেম। তিনি লিখছেন, ‘দেবীর মন্দিরের চার মাইল ব্যাসার্ধের মধ্যে অন্যান্য জীবজন্তু ছাড়াও আমি বাঘ, চিতা, ভালুক আর সম্বর হরিণ দেখেছি, এবং একশো আটাশ জাতের পাখি চিনতে পেরেছি।’ করবেট জাতে সাহেব হলেও ছিলেন নিম্নবিত্ত ঘরের। পড়া স্কুলেই শেষ। আর বাল্যকাল কেটেছে নৈনিতালের তরাই অঞ্চলের সাধারণ, দরিদ্র কুমায়ুনীদের সঙ্গে—যাদের জন্য শেষজীবন পর্যন্ত অন্তরের টান বজায় ছিল তাঁর ।

    ১৮৯৫ সালে মাত্র কুড়ি বছর বয়সে করবেট বেঙ্গল অ্যান্ড নর্থ ওয়েস্টার্ন রেলওয়েতে শর্তাধীন কাজে ঢুকে পড়েন। এই করবেট লাজুক, স্বল্পভাষী আর কঠোর পরিশ্রমী। সঙ্গে শিকারের অদম্য নেশা। যাকে বলে ইন্ট্রোভার্ট, তার আদর্শ উদাহরণ। ভবিষ্যতের যে করবেট শত শত মাইল হেঁটে রুদ্রপ্রয়াগের চিতাকে একটি গুলিতে মারেন, অথবা অরণ্য ও অরণ্যপ্রাণী বাঁচাতে প্রাণ দিয়ে চেষ্টা করেন, কিংবা গ্রামের বাংলোর বারান্দায় বসে গ্রামীণ মানুষদের ওষুধ-পথ্য-সুশ্রুষার ব্যবস্থা করেন কিন্তু বিন্দুমাত্র যশপ্রার্থী হন না, তাঁর শুরু কিন্তু এখান থেকেই।
    বিশ শতকের শুরুর দিকে চম্পাবতের এক বাঘিনি গোটা উত্তরাঞ্চলে ভয়ানক ত্রাসের সৃষ্টি করল। প্রায় এক দশক ধরে পুলিস, গুপ্ত শিকারি, এমনকী নেপালি গোর্খা রেজিমেন্ট পর্যন্ত সেটিকে ধাওয়া করেও ধরতে পারেনি। অনেকে বিশ্বাস করত এ কোন পশু নয়, কোন অতৃপ্ত আত্মা। ওই বাঘিনির আক্রমণে শুধুমাত্র নথিভূক্ত মৃতের সংখ্যা ৪৩৬। গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ড অনুযায়ী আজ অবধি সর্বোচ্চ। যখন সবাই হাল ছেড়ে দিয়েছেন তখন একেবারে নবিশ শিকারী তরুণ জিম করবেট চ্যালেঞ্জটা নিয়েই নিলেন। তাঁর হাতেই খতম হল চম্পাবতের মানুষখাকী। ‘কুমায়ুনের মানুষখেকো’ (ম্যান-ইটার্স অব কুমায়ুন) বইতে একেবারে ছবির মত বর্ণনা আছে সেই হাড়হিম করা ঘটনার।

    ‘নদীর কাছে এগলাম যখন, ঝোপ ছেড়ে বাঘিনীনিটি সেই উঁচানে পাথরের উপর, আমি যে দিকে আছি সে দিকে বেরিয়ে এল। যখন ও বিশ ফুটের মধ্যে, বন্দুকটি তুললাম এবং আতঙ্কে দেখলাম যে নল দু’টি এবং ব্রিচ-ব্লকের মাঝখানে এক ইঞ্চির আট-তৃতীয়াংশ এক ফাঁক আছে। যখন দু’টি নলে ফায়ার করা হয় তখন বন্দুক ফাটেনি, সম্ভবত এখনও ফাটবে না, কিন্তু পিছু ধাক্কা খেয়ে কানা হয়ে যাবার বিপদ আছে। যাই হক, সে ঝুঁকি নিতেই হচ্ছে এবং যে পেল্লায় পুঁতিটি সাইটের কাজ করছিল, সেটি বাঘিনির হাঁ-করা মুখের দিকে নিশানা করে বসিয়ে আমি গুলি ছুঁড়লাম। হয়তো আমি উপর-নীচে নড়ে গিয়েছিলাম কিংবা হয়তো বেলনাকার বুলেটটি বিশ ফুট নির্ভুল পাঠাবার ক্ষমতা বন্দুকটির ছিল না। যাই হোক গুলিটি বাঘিনির মুখ ফসকাল এবং বিঁধল ওর ডান থাবায়, সেখান থেকে পরে আমি আঙুলের নখ দিয়ে সেটি সরিয়েছিলাম। সৌভাগ্যক্রমে ও তখন শেষ অবস্থায় পৌঁছেছিল এবং পায়ের উপর আঘাতটি ওঁকে সমুখপানে টলিয়ে ফেলে দেবার কাজ যথেষ্টই করল। পাথরটার এক ধার দিয়ে মাথাটি ঝুঁকিয়ে ও মৃত্যুতে শান্ত হল।’

    রাতারাতি জিম করবেট এক কিংবদন্তিতে পরিণত হলেন। সেই শুরু। তারপর যেখানেই মানুষখেকো বাঘের অত্যাচার শুরু হতো, জিমকে ডেকে পাঠাতেন সেখানকার শাসক। কিংবা জিম নিজেই চলে যেতেন। ১৯০৭ থেকে ১৯৩৮’এর মধ্যে তিনি মোট ৩৩টি মানুষখেকোর শিকার করেন, যারা সব মিলিয়ে প্রায় ১২০০ মানুষ মেরেছিল। এদের মধ্যে দু’খানি মানুষখেকো চিতাবাঘ। রুদ্রপ্রয়াগের মানুষখেকো চিতাবাঘ ভারতের ইতিহাসে প্রায় অমর হয়ে গেছে।

    ১২৬ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করা চিতাটিকে নিয়ে করবেট নিজে লিখেছেন, ‘বাঘেরা যে-কারণে নরখাদক হয়, চিতারা সে-কারণে হয় না। আমাদের জঙ্গলের সকল জন্তুর মধ্যে চিতা সবচেয়ে সুন্দর, সাবলীল। জখম হলে, বা কোণঠাসা হলে সাহসে সে কারও চেয়ে কম যায় না। তবে এরা এমন মড়াখেকো, যে খিদের জ্বালায় জঙ্গলে যে মড়া পায়, তা-ই খায়। ঠিক আফ্রিকার জঙ্গলের সিংহদের মতো... ১৯১৮ সালে দেশ জুড়ে ইনফ্লুয়েঞ্জার মড়ক দেখা দেয়। ভারতে দশ লক্ষেরও বেশি মানুষ মারা পড়ে। এ মড়কের কঠিন মূল্য দিতে হয় গাড়োয়ালকে। মহামারীর শেষে গাড়োয়ালের নরখাদক আত্মপ্রকাশ করে। ১৯১৮ সালের ৯ই জুন, বৈঁজি গ্রামে রুদ্রপ্রয়াগের নরখাদক চিতা প্রথম মানুষ মারে, নথিতে লেখা আছে। সর্বশেষ যে মৃত্যুর জন্য নরখাদকটি দায়ী, তা ১৯২৬ সালের ১৪ই এপ্রিল ভৈঁসোয়ারা গ্রামে ঘটে। সরকারি নথিতে লেখা আছে। এই দু’টি তারিখের মধ্যে ১২৫ জন মানুষ মারা পড়ে।’

    মাইলের পর মাইল হেঁটে প্রায় হতাশ হয়ে যখন ভাবছেন শিকারই ছেড়ে দেবেন, প্রায় দৈবক্রমে তিনি চিতাটিকে শিকার করলেন। কিন্তু আশ্চর্যের ব্যাপার, ঠিক তারপরেই যা লিখলেন তা কোন দক্ষ শিকারীর দম্ভের আস্ফালন না, বরং পড়লে আজও মন ভিজে ওঠে।

    ‘এখানে পড়ে আছে একটি বুড়ো চিতা, অন্য চিতাদের সঙ্গে ওর এইমাত্র তফাত, যে ওর মুখটা ধূসর, ঠোঁটের উপর গোঁফ নেই। ভারতবর্ষে সবার চেয়ে ঘৃণ্য এবং সন্ত্রাসকারী জন্তু, যার একমাত্র অপরাধ—প্রকৃতির নিয়মের বিরুদ্ধে নয়, কিন্তু মানুষের নিয়মের বিরুদ্ধে—সে মানুষের রক্তপাত করেছে। মানুষকে আতঙ্কিত করার জন্য নয়, শুধু নিজের প্রাণ রক্ষার জন্য। সে এখন গর্তের ধারে থুতনি রেখে শুয়ে আছে, চোখদু’টি আধবোজা, তার শেষ ঘুমে শান্তি মগ্ন।’ অন্য আর দশটা শিকারীর থেকে এক মূহূর্তে জিম করবেট আলাদা হয়ে যান এখানেই। তাঁর শিকার নিতান্ত অভিযান, অ্যাডভেঞ্চার কিংবা স্পোর্টের জন্য নয়। মনেপ্রাণে তিনি বিশ্বাস করতেন, ‘বাঘ উদারহৃদয় ভদ্রলোক। সীমাহীন তার সাহস। যে দিন বাঘকে বিলোপ করে দেওয়া হবে, যদি বাঘের সপক্ষে জনমত গড়ে না ওঠে বাঘ লোপ পাবেই, তা হলে ভারতের শ্রেষ্ঠতম প্রাণীর বিলোপে ভারত দরিদ্রতরই হবে।’ একমাত্র যখনই কোন বাঘ সাধারণ, নিরপরাধ মানুষের জন্য বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে, একমাত্র তখনই ঝলসে উঠেছে তাঁর রাইফেল। ১৯৩৮ সালের ৩০ নভেম্বর থাক-এর মানুষখেকো বাঘিনিকে হত্যার পর অফিসিয়ালি শিকার ত্যাগ করলেন। তারপর মেতে উঠলেন বাঘেদের অভয়াশ্রম তৈরির কাজে। বহু ভারতীয়কে নিঃস্বার্থ ভাবে সাহায্য করেছেন শুধু এই বিশ্বাসে, ‘ভারতীয়রা বেইমানি করে না।’

    ১৯৪৪ সালে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস থেকে প্রকাশ পায় রেমন্ড শেপার্ডের ছবিতে সাজানো তাঁর লেখা বই ‘Man-Eaters of Kumaon’। প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গেই বেস্ট সেলার। এক বছরের মধ্যে হু-হু করে বিক্রি হয়ে যায় প্রায় লাখ পাঁচেক বই। এই বইয়েরই বাংলা অনুবাদের অদ্ভুত সুন্দর এক মলাট করেছিলেন সত্যজিৎ রায়। ১৯৫৩-এ প্রকাশিত প্রচ্ছদে দু’-মলাট জোড়া কালো আর হলদে বাঘের ছাল যেন ছড়িয়ে রাখা হয়েছে। নীচের দিকে গুলির গর্ত যা পিছনের দিকে ফুঁড়ে চলে গেছে। গুলি ঢোকার সময় ফুটো ছোটো হয়। ফুঁড়ে বেরোবার সময় চ্যাপ্টা ও বড়ো হয়। সেটাও প্রচ্ছদ তৈরির সময় মাথায় রেখেছেন সত্যজিৎ। লেখক হলেও বেস্ট সেলার হতেন জিম। কিন্তু বই লিখলেন মাত্র ছ’টি।

    ১৯৪৭ সালে ভারত স্বাধীন হল। নভেম্বরে বোন ম্যাগিকে সঙ্গে নিয়ে এস. এস. অ্যারোন্দা জাহাজে মোম্বাসা আর সেখান থেকে নাইরোবি হয়ে নায়েরি শহরে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করলেন জিম। ১৯৫৫ সালে আচমকা না ফেরার দেশে চলে যাওয়ার আগে পর্যন্ত ওখানেই ছিলেন। আসলে জিমের ভয় ছিল স্বাধীন ভারতে হয়তো তাঁর উপরে অত্যাচার নেমে আসবে । জন্মসূত্রে ইংরেজ হওয়ায় তিনি হয়তো সুবিচার পাবেন না। তাঁর প্রিয় ভারতভূমি ছেড়ে যাবার আগে নৈনিতালের বাড়ি বিক্রি করে বহুদিনের বিশ্বস্ত সঙ্গী রাইফেল ও বন্দুকগুলো গভীর জঙ্গলে ‘সমাধিস্থ’ করে এসেছিলেন ভারতের সেরা শিকারী, যিনি মনেপ্রাণে চিরকাল এক ভারতীয় হয়েই থেকে গিয়েছেন। তা না হলে কে এমন করে লিখতে পারে-
    ‘আমার ভারত, যে ভারতকে আমি জানি, সেই ভারতে যে চল্লিশ কোটি মানুষের বাস, তার মধ্যে শতকরা নব্বই জনই সরল, সৎ, সাহসী, আর কঠোর পরিশ্রমী। ... সত্যিই এরা বড় গরিব। এদের প্রায়শই ‘ভারতের বুভুক্ষু কোটি-কোটি মানুষ’ বলে বর্ণনা করা হয়ে থাকে। এদের মধ্যেই আমি বাস করেছি এবং এদের আমি ভালোবাসি। এই নরনারীদের কথাই এই বইয়ের পাতায় বলার চেষ্টা করেছি। আমার বন্ধু, ভারতের সেই গরিবদের উদ্দেশে আমি আমার এই বইখানি শ্রদ্ধাভরে উৎসর্গ করলাম।’

    জন্মের সার্ধশতবর্ষে এই মনীষীকে প্রণাম।

    জিম করবেট ১৫০। বর্তমান পত্রিকায় গত ২০ জুলাই প্রকাশিত।

    লেখক - কৌশিক মজুমদার
    দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ তখন তুঙ্গে। বার্মার ঘন জঙ্গলে চলাফেরার জন্য ভারতীয় সেনাদের ট্রেনিং দেওয়া হচ্ছে মধ্য ভারতের মাউয়ের সামরিক ছাউনিতে। সেই সেনাবিভাগে এক ভারতীয় রাজ্যের যুবরাজ ছিলেন। ছাউনির সবাই তাঁকে ‘প্রিন্স’ বলে ডাকত। প্রিন্স নিজে শিকারি, আর তা নিয়ে প্রায়ই মহা আস্ফালন করতেন। কিছু পেটোয়া চ্যালাচামুণ্ডা ছিল তাঁর। সবাইকে নিয়ে বিকেলে ক্লাবঘরে বসে নরক গুলজার হতো। বক্তা মূলত প্রিন্স, বাকিরা মুগ্ধ শ্রোতা। একদিন প্রসঙ্গ উঠল শিকারে অব্যর্থ হতে হলে কী দরকার? নিমেষে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা, তীক্ষ্ণ দৃষ্টি, নাকি অব্যর্থ নিশানা? এক একজন এক একরকম মত দিলেন। কেউ বললেন তিনটি অথবা দু’টির যোগফল। প্রিন্স নিজে বললেন, ‘ওসব বাজে গল্প। অব্যর্থ নিশানাই শেষ কথা নয়।’ ঠিক তখনই ছাউনির ভারপ্রাপ্ত ব্রিটিশ অফিসার বলে উঠলেন, ‘আরে! আজ দেখি আমাদের মধ্যে এক এক্সপার্ট রয়েছেন। শোনাই যাক না উনি কী বলেন?’ সবাই তাকিয়ে দেখল এককোণে চুপচাপ বসে এতক্ষণ নির্বাক রোদে-পোড়া, শক্ত চেহারার বলিষ্ঠ এক প্রৌঢ় তাঁদের তর্ক শুনে মিটিমিটি হাসছেন। তাঁর উদ্দেশ্যেই প্রশ্ন করায় এককথায় উত্তর দিলেন, ‘অব্যর্থ নিশানা। আর কিচ্ছু না!’ এই প্রথম প্রিন্সের কথাকে কেউ চ্যালেঞ্জ করলেন। যথারীতি তিনি ভয়ানক রেগে গেলেন। কে এই বৃদ্ধ! এত সাহসই বা তাঁর হয় কী করে? কোনওমতে রাগ চেপে প্রিন্স বললেন ‘আপনি প্রমাণ করতে পারবেন?’ প্রৌঢ় আঙুল তুলে দেখালেন, ‘আচ্ছা, ওই দূরের গাছটা দেখ। একটা ওয়াই Y আকারের সরু ডালের মাঝের খাঁজে ছোট্ট একখানা পাখি বসে আছে। ডাল ভাঙবে না, কিন্তু পাখিটাকে মারতে হবে। পারবে?’ বিকেলের আলো পড়ে আসছে। চারিদিক ধোঁয়াটে ধূসর। প্রিন্স বললেন, ‘অসম্ভব! এই আলোতে নজরই চলে না, পাখি মারব কি করে?’ উত্তরে প্রৌঢ় হাত বাড়িয়ে গাড়োয়ালী অনুচরের কাছ থেকে হেলায় একটা রাইফেল নিলেন, তুললেন, গুলি ছুঁড়লেন, বললেন, ‘কেন, এমনি করে?’ সবাই ছুটে গেলেন সেখানে। গিয়ে দেখা গেল ডালটি অভগ্ন, পাখিটি মৃত। কারও মুখে কথাটি সরে না। শেষে প্রিন্স কোনমতে তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘এ কেমন করে সম্ভব?’ প্রৌঢ় মুচকি হেসে উত্তর দিলেন ‘শোন তবে, যখন রুদ্রপ্রয়াগের চিতাটাকে মারি..’ এইটুকু শুনেই প্রিন্স যা বোঝার বুঝে গিয়েছেন ‘বলেন কী!! আপনিই তবে...’ ‘হ্যাঁ, এই অধমের নামই এডোয়ার্ড জেমস করবেট। সবাই ভালবেসে জিম নামে ডাকে।’ জিম করবেট জন্মেছিলেন পাহাড়ঘেরা নৈনিতালে। আজ থেকে দেড়শো বছর আগে। এই জুলাই মাসেরই ২৫ তারিখ। বাবা নৈনিতালের পোস্টমাস্টার। হ্রদ, নৈনিদেবীর মন্দির আর তার চারপাশের বন জঙ্গলে ঘুরে ঘুরেই করবেটের প্রথম প্রকৃতি প্রেম। তিনি লিখছেন, ‘দেবীর মন্দিরের চার মাইল ব্যাসার্ধের মধ্যে অন্যান্য জীবজন্তু ছাড়াও আমি বাঘ, চিতা, ভালুক আর সম্বর হরিণ দেখেছি, এবং একশো আটাশ জাতের পাখি চিনতে পেরেছি।’ করবেট জাতে সাহেব হলেও ছিলেন নিম্নবিত্ত ঘরের। পড়া স্কুলেই শেষ। আর বাল্যকাল কেটেছে নৈনিতালের তরাই অঞ্চলের সাধারণ, দরিদ্র কুমায়ুনীদের সঙ্গে—যাদের জন্য শেষজীবন পর্যন্ত অন্তরের টান বজায় ছিল তাঁর । ১৮৯৫ সালে মাত্র কুড়ি বছর বয়সে করবেট বেঙ্গল অ্যান্ড নর্থ ওয়েস্টার্ন রেলওয়েতে শর্তাধীন কাজে ঢুকে পড়েন। এই করবেট লাজুক, স্বল্পভাষী আর কঠোর পরিশ্রমী। সঙ্গে শিকারের অদম্য নেশা। যাকে বলে ইন্ট্রোভার্ট, তার আদর্শ উদাহরণ। ভবিষ্যতের যে করবেট শত শত মাইল হেঁটে রুদ্রপ্রয়াগের চিতাকে একটি গুলিতে মারেন, অথবা অরণ্য ও অরণ্যপ্রাণী বাঁচাতে প্রাণ দিয়ে চেষ্টা করেন, কিংবা গ্রামের বাংলোর বারান্দায় বসে গ্রামীণ মানুষদের ওষুধ-পথ্য-সুশ্রুষার ব্যবস্থা করেন কিন্তু বিন্দুমাত্র যশপ্রার্থী হন না, তাঁর শুরু কিন্তু এখান থেকেই। বিশ শতকের শুরুর দিকে চম্পাবতের এক বাঘিনি গোটা উত্তরাঞ্চলে ভয়ানক ত্রাসের সৃষ্টি করল। প্রায় এক দশক ধরে পুলিস, গুপ্ত শিকারি, এমনকী নেপালি গোর্খা রেজিমেন্ট পর্যন্ত সেটিকে ধাওয়া করেও ধরতে পারেনি। অনেকে বিশ্বাস করত এ কোন পশু নয়, কোন অতৃপ্ত আত্মা। ওই বাঘিনির আক্রমণে শুধুমাত্র নথিভূক্ত মৃতের সংখ্যা ৪৩৬। গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ড অনুযায়ী আজ অবধি সর্বোচ্চ। যখন সবাই হাল ছেড়ে দিয়েছেন তখন একেবারে নবিশ শিকারী তরুণ জিম করবেট চ্যালেঞ্জটা নিয়েই নিলেন। তাঁর হাতেই খতম হল চম্পাবতের মানুষখাকী। ‘কুমায়ুনের মানুষখেকো’ (ম্যান-ইটার্স অব কুমায়ুন) বইতে একেবারে ছবির মত বর্ণনা আছে সেই হাড়হিম করা ঘটনার। ‘নদীর কাছে এগলাম যখন, ঝোপ ছেড়ে বাঘিনীনিটি সেই উঁচানে পাথরের উপর, আমি যে দিকে আছি সে দিকে বেরিয়ে এল। যখন ও বিশ ফুটের মধ্যে, বন্দুকটি তুললাম এবং আতঙ্কে দেখলাম যে নল দু’টি এবং ব্রিচ-ব্লকের মাঝখানে এক ইঞ্চির আট-তৃতীয়াংশ এক ফাঁক আছে। যখন দু’টি নলে ফায়ার করা হয় তখন বন্দুক ফাটেনি, সম্ভবত এখনও ফাটবে না, কিন্তু পিছু ধাক্কা খেয়ে কানা হয়ে যাবার বিপদ আছে। যাই হক, সে ঝুঁকি নিতেই হচ্ছে এবং যে পেল্লায় পুঁতিটি সাইটের কাজ করছিল, সেটি বাঘিনির হাঁ-করা মুখের দিকে নিশানা করে বসিয়ে আমি গুলি ছুঁড়লাম। হয়তো আমি উপর-নীচে নড়ে গিয়েছিলাম কিংবা হয়তো বেলনাকার বুলেটটি বিশ ফুট নির্ভুল পাঠাবার ক্ষমতা বন্দুকটির ছিল না। যাই হোক গুলিটি বাঘিনির মুখ ফসকাল এবং বিঁধল ওর ডান থাবায়, সেখান থেকে পরে আমি আঙুলের নখ দিয়ে সেটি সরিয়েছিলাম। সৌভাগ্যক্রমে ও তখন শেষ অবস্থায় পৌঁছেছিল এবং পায়ের উপর আঘাতটি ওঁকে সমুখপানে টলিয়ে ফেলে দেবার কাজ যথেষ্টই করল। পাথরটার এক ধার দিয়ে মাথাটি ঝুঁকিয়ে ও মৃত্যুতে শান্ত হল।’ রাতারাতি জিম করবেট এক কিংবদন্তিতে পরিণত হলেন। সেই শুরু। তারপর যেখানেই মানুষখেকো বাঘের অত্যাচার শুরু হতো, জিমকে ডেকে পাঠাতেন সেখানকার শাসক। কিংবা জিম নিজেই চলে যেতেন। ১৯০৭ থেকে ১৯৩৮’এর মধ্যে তিনি মোট ৩৩টি মানুষখেকোর শিকার করেন, যারা সব মিলিয়ে প্রায় ১২০০ মানুষ মেরেছিল। এদের মধ্যে দু’খানি মানুষখেকো চিতাবাঘ। রুদ্রপ্রয়াগের মানুষখেকো চিতাবাঘ ভারতের ইতিহাসে প্রায় অমর হয়ে গেছে। ১২৬ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করা চিতাটিকে নিয়ে করবেট নিজে লিখেছেন, ‘বাঘেরা যে-কারণে নরখাদক হয়, চিতারা সে-কারণে হয় না। আমাদের জঙ্গলের সকল জন্তুর মধ্যে চিতা সবচেয়ে সুন্দর, সাবলীল। জখম হলে, বা কোণঠাসা হলে সাহসে সে কারও চেয়ে কম যায় না। তবে এরা এমন মড়াখেকো, যে খিদের জ্বালায় জঙ্গলে যে মড়া পায়, তা-ই খায়। ঠিক আফ্রিকার জঙ্গলের সিংহদের মতো... ১৯১৮ সালে দেশ জুড়ে ইনফ্লুয়েঞ্জার মড়ক দেখা দেয়। ভারতে দশ লক্ষেরও বেশি মানুষ মারা পড়ে। এ মড়কের কঠিন মূল্য দিতে হয় গাড়োয়ালকে। মহামারীর শেষে গাড়োয়ালের নরখাদক আত্মপ্রকাশ করে। ১৯১৮ সালের ৯ই জুন, বৈঁজি গ্রামে রুদ্রপ্রয়াগের নরখাদক চিতা প্রথম মানুষ মারে, নথিতে লেখা আছে। সর্বশেষ যে মৃত্যুর জন্য নরখাদকটি দায়ী, তা ১৯২৬ সালের ১৪ই এপ্রিল ভৈঁসোয়ারা গ্রামে ঘটে। সরকারি নথিতে লেখা আছে। এই দু’টি তারিখের মধ্যে ১২৫ জন মানুষ মারা পড়ে।’ মাইলের পর মাইল হেঁটে প্রায় হতাশ হয়ে যখন ভাবছেন শিকারই ছেড়ে দেবেন, প্রায় দৈবক্রমে তিনি চিতাটিকে শিকার করলেন। কিন্তু আশ্চর্যের ব্যাপার, ঠিক তারপরেই যা লিখলেন তা কোন দক্ষ শিকারীর দম্ভের আস্ফালন না, বরং পড়লে আজও মন ভিজে ওঠে। ‘এখানে পড়ে আছে একটি বুড়ো চিতা, অন্য চিতাদের সঙ্গে ওর এইমাত্র তফাত, যে ওর মুখটা ধূসর, ঠোঁটের উপর গোঁফ নেই। ভারতবর্ষে সবার চেয়ে ঘৃণ্য এবং সন্ত্রাসকারী জন্তু, যার একমাত্র অপরাধ—প্রকৃতির নিয়মের বিরুদ্ধে নয়, কিন্তু মানুষের নিয়মের বিরুদ্ধে—সে মানুষের রক্তপাত করেছে। মানুষকে আতঙ্কিত করার জন্য নয়, শুধু নিজের প্রাণ রক্ষার জন্য। সে এখন গর্তের ধারে থুতনি রেখে শুয়ে আছে, চোখদু’টি আধবোজা, তার শেষ ঘুমে শান্তি মগ্ন।’ অন্য আর দশটা শিকারীর থেকে এক মূহূর্তে জিম করবেট আলাদা হয়ে যান এখানেই। তাঁর শিকার নিতান্ত অভিযান, অ্যাডভেঞ্চার কিংবা স্পোর্টের জন্য নয়। মনেপ্রাণে তিনি বিশ্বাস করতেন, ‘বাঘ উদারহৃদয় ভদ্রলোক। সীমাহীন তার সাহস। যে দিন বাঘকে বিলোপ করে দেওয়া হবে, যদি বাঘের সপক্ষে জনমত গড়ে না ওঠে বাঘ লোপ পাবেই, তা হলে ভারতের শ্রেষ্ঠতম প্রাণীর বিলোপে ভারত দরিদ্রতরই হবে।’ একমাত্র যখনই কোন বাঘ সাধারণ, নিরপরাধ মানুষের জন্য বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে, একমাত্র তখনই ঝলসে উঠেছে তাঁর রাইফেল। ১৯৩৮ সালের ৩০ নভেম্বর থাক-এর মানুষখেকো বাঘিনিকে হত্যার পর অফিসিয়ালি শিকার ত্যাগ করলেন। তারপর মেতে উঠলেন বাঘেদের অভয়াশ্রম তৈরির কাজে। বহু ভারতীয়কে নিঃস্বার্থ ভাবে সাহায্য করেছেন শুধু এই বিশ্বাসে, ‘ভারতীয়রা বেইমানি করে না।’ ১৯৪৪ সালে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস থেকে প্রকাশ পায় রেমন্ড শেপার্ডের ছবিতে সাজানো তাঁর লেখা বই ‘Man-Eaters of Kumaon’। প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গেই বেস্ট সেলার। এক বছরের মধ্যে হু-হু করে বিক্রি হয়ে যায় প্রায় লাখ পাঁচেক বই। এই বইয়েরই বাংলা অনুবাদের অদ্ভুত সুন্দর এক মলাট করেছিলেন সত্যজিৎ রায়। ১৯৫৩-এ প্রকাশিত প্রচ্ছদে দু’-মলাট জোড়া কালো আর হলদে বাঘের ছাল যেন ছড়িয়ে রাখা হয়েছে। নীচের দিকে গুলির গর্ত যা পিছনের দিকে ফুঁড়ে চলে গেছে। গুলি ঢোকার সময় ফুটো ছোটো হয়। ফুঁড়ে বেরোবার সময় চ্যাপ্টা ও বড়ো হয়। সেটাও প্রচ্ছদ তৈরির সময় মাথায় রেখেছেন সত্যজিৎ। লেখক হলেও বেস্ট সেলার হতেন জিম। কিন্তু বই লিখলেন মাত্র ছ’টি। ১৯৪৭ সালে ভারত স্বাধীন হল। নভেম্বরে বোন ম্যাগিকে সঙ্গে নিয়ে এস. এস. অ্যারোন্দা জাহাজে মোম্বাসা আর সেখান থেকে নাইরোবি হয়ে নায়েরি শহরে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করলেন জিম। ১৯৫৫ সালে আচমকা না ফেরার দেশে চলে যাওয়ার আগে পর্যন্ত ওখানেই ছিলেন। আসলে জিমের ভয় ছিল স্বাধীন ভারতে হয়তো তাঁর উপরে অত্যাচার নেমে আসবে । জন্মসূত্রে ইংরেজ হওয়ায় তিনি হয়তো সুবিচার পাবেন না। তাঁর প্রিয় ভারতভূমি ছেড়ে যাবার আগে নৈনিতালের বাড়ি বিক্রি করে বহুদিনের বিশ্বস্ত সঙ্গী রাইফেল ও বন্দুকগুলো গভীর জঙ্গলে ‘সমাধিস্থ’ করে এসেছিলেন ভারতের সেরা শিকারী, যিনি মনেপ্রাণে চিরকাল এক ভারতীয় হয়েই থেকে গিয়েছেন। তা না হলে কে এমন করে লিখতে পারে- ‘আমার ভারত, যে ভারতকে আমি জানি, সেই ভারতে যে চল্লিশ কোটি মানুষের বাস, তার মধ্যে শতকরা নব্বই জনই সরল, সৎ, সাহসী, আর কঠোর পরিশ্রমী। ... সত্যিই এরা বড় গরিব। এদের প্রায়শই ‘ভারতের বুভুক্ষু কোটি-কোটি মানুষ’ বলে বর্ণনা করা হয়ে থাকে। এদের মধ্যেই আমি বাস করেছি এবং এদের আমি ভালোবাসি। এই নরনারীদের কথাই এই বইয়ের পাতায় বলার চেষ্টা করেছি। আমার বন্ধু, ভারতের সেই গরিবদের উদ্দেশে আমি আমার এই বইখানি শ্রদ্ধাভরে উৎসর্গ করলাম।’ জন্মের সার্ধশতবর্ষে এই মনীষীকে প্রণাম। জিম করবেট ১৫০। বর্তমান পত্রিকায় গত ২০ জুলাই প্রকাশিত। লেখক - কৌশিক মজুমদার
    0 Comments 0 Shares 8 Views
More Results
BlackBird Ai
https://bbai.shop