হিমালয়ের কোলে এক অসাধারণ, আর কিছুটা ভয়জাগানো জায়গার নাম Skeleton Lake।

আপনি যদি ভারতের উত্তরাখণ্ড রাজ্যের রূপকুন্ড হ্রদের নাম শুনে থাকেন, তাহলে জেনে রাখুন, এটাই Skeleton Lake হিসেবে পরিচিত। প্রায় ১৬ হাজার ফুট উঁচুতে অবস্থিত এই হ্রদ বছরের বেশিরভাগ সময় বরফে ঢাকা থাকে। তবে গ্রীষ্মের কয়েকটি সপ্তাহে যখন বরফ গলে, তখন হ্রদের তলদেশে ভেসে ওঠে শত শত মানুষের কঙ্কাল। হ্যাঁ, আপনি ঠিকই পড়েছেন, একটা হ্রদের পানিতে দেখা যায় মানুষের খুলি, হাঁড়, হাড়ের অংশবিশেষ। স্বাভাবিকভাবেই এই দৃশ্য অনেক প্রশ্নের জন্ম দেয়। এত মানুষ একসাথে কীভাবে মা-রা গেল? তারা কারা ছিল? আর তাদের মৃ-ত্যু কি দুর্ঘটনা, নাকি এর পেছনে লুকিয়ে আছে অন্য কোনো গল্প?
এই রহস্য প্রথম নজরে আসে ১৯৪২ সালে। তখন ব্রিটিশ সেনারা দুর্গম পাহাড়ি পথে টহল দিতে গিয়ে হঠাৎ করেই আবিষ্কার করে হ্রদের তীরে পড়ে থাকা অসংখ্য কঙ্কাল। প্রথমে মনে করা হয়েছিল, হয়তো তারা জাপানি সেনা, যাঁরা দ্বিতীয় বিশ্ব-যু-দ্ধে-র সময় গোপনে ভারত সীমান্তে প্রবেশ করেছিল। কিন্তু দ্রুতই দেখা যায়, এটি দ্বিতীয় বিশ্ব-যু-দ্ধে-র কোনো কাহিনি নয়। এই কঙ্কালগুলো আরও অনেক পুরোনো।
তখন থেকেই বিজ্ঞানীরা এই হ্রদের কঙ্কাল নিয়ে গবেষণা শুরু করেন। ২০০৪ সালে একদল ভারতীয় ও আন্তর্জাতিক গবেষক প্রথমবারের মতো ডিএনএ বিশ্লেষণ করেন এই কঙ্কালগুলোর উপর। গবেষণায় দেখা যায়, কঙ্কালগুলো এক সময়ে মৃ-ত হয়নি। বরং এদের মৃ-ত্যু হয়েছে ভিন্ন ভিন্ন সময়ে, এমনকি ভিন্ন ভিন্ন শতকে। এদের মধ্যে কিছু মানুষ ছিলেন দক্ষিণ এশীয়, আবার কিছু মানুষের জিনগত বৈশিষ্ট্য দেখা গেছে পূর্ব ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলের সঙ্গে মিল রেখে, বিশেষ করে গ্রিস বা ক্রিট দ্বীপের বাসিন্দাদের মতো।
২০১৯ সালে প্রকাশিত আরেকটি গবেষণায় আরও চমকপ্রদ তথ্য উঠে আসে। সেখানে ৩৮টি কঙ্কালের জিন বিশ্লেষণ করে বিজ্ঞানীরা দেখেন, তারা অন্তত তিনটি আলাদা গোষ্ঠীর অংশ। একদল ছিল স্থানীয়, আরেকদল ছিল ভারতের অন্য অঞ্চল থেকে আগত, কিন্তু তৃতীয় দলটি এসেছিল ইউরোপ থেকে। প্রশ্ন হচ্ছে, ইউরোপের মানুষ কীভাবে এত উঁচু হিমালয় পেরিয়ে সেখানে এলেন? এ নিয়ে এখনো চূড়ান্ত ব্যাখ্যা মেলেনি। কেউ কেউ মনে করেন, এটি ছিল কোনো ধর্মীয় যাত্রা বা তীর্থযাত্রা, যেখানে পথ হারিয়ে বা প্রাকৃতিক দুর্যোগে এদের মৃ-ত্যু হয়।
আরেকটি তত্ত্ব বেশ