ম্যানটিস শ্রিম্প: যার ঘুষি ভাঙে কাঁচ, আর চোখ হার মানায় রোবটকেও

0
216

 

সমুদ্রের নীচে, যেখানে আলো ম্লান, শব্দ নিঃশব্দ আর বেঁচে থাকার জন্য যা দরকার তা হলো চতুরতা! সেখানেই বাস করে একটা রহস্যময় প্রাণী। খুব ছোট দেখতে, একটা চিংড়ির মতো। নাম Mantis Shrimp। কিন্তু এই নামের মধ্যে লুকিয়ে আছে যে শক্তি, যে রহস্য, তা শুনলে আপনার চোখ কপালে উঠবে।

 

এর ঘুষি এতটাই জোরালো, যে তা দিয়ে অ্যাকুরিয়ামের কাঁচ ফেটে যায়। আর চোখ? আপনি, আমি, ক্যামেরা, এমনকি কিছু রোবট সেন্সর কেউই এদের চোখের সঙ্গে টেক্কা দিতে পারে না।

এরা ঘুষি মারে ৮০ কিমি/ঘণ্টা গতিতে! Mantis Shrimp-এর সামনে থাকে দুইটা শক্তিশালী ক্লাব যেন পাথরের হাতুড়ি! শিকার দেখলেই সে এত জোরে আঘাত করে, যে পানির নিচে সেই ঘুষির গতিতে একপ্রকার ছোট্ট শকওয়েভ তৈরি হয়। এটাই বলা হয় Cavitation Bubble। এই বুদবুদের বিস্ফোরণ এত তীব্র যে, যদি ঘুষি থেকে কেউ বেঁচেও যায়, এই শকওয়েভেই সে শেষ!

এরা ঘুষি মারার সময় মাত্র ৩ মিলিসেকেন্ডে (এক চোখের পলকের চেয়েও কম) শক্তি ছুড়ে মারে, যার গতি বুলেটের সমান। পানির নিচে এত জোরে কেউ কিভাবে আঘাত করতে পারে এটাই বিজ্ঞানীদের এক বিশাল বিস্ময়!

চোখে যে জিনিস এরা দেখে, আমরা তা কল্পনাও করতে পারি না! আপনার চোখে আছে মাত্র ৩ ধরনের রঙ শনাক্তকারী কোষ লাল, সবুজ আর নীল। কিন্তু ম্যানটিস শ্রিম্পের চোখে আছে ১৬টি!

 

এরা শুধু আলাদা রঙ না, অতিবেগুনি রশ্মি (UV) এমনকি পোলারাইজড আলোও দেখতে পারে যা মানুষের পক্ষে একেবারেই অদৃশ্য!

যার মানে, এই প্রাণীটা আমাদের চেনা দুনিয়ার বাইরেও কিছু দেখে! যেন সে সমুদ্রের নিচে এক বিকল্প বাস্তবতা দেখতে পায়। এটাই এমন একটা স্তর, যা বিজ্ঞানের সবচেয়ে উন্নত ক্যামেরাও পুরোপুরি অনুকরণ করতে পারেনি।

 

এদের প্রতিটি চোখ ঘোরে আলাদাভাবে এবং প্রতিটি চোখেই এমন গঠন আছে যা দিয়ে তারা depth, movement, এমনকি পোলারিটি আলাদাভাবে চিনতে পারে। প্রতিটা চোখে যেন একটা করে ছোট কম্পিউটার বসানো!

সবচেয়ে অবাক করার মতো বিষয় হলো, এরা চোখেই অনেক কিছু প্রক্রিয়া করে ফেলে সেটা মস্তিষ্কে না পাঠিয়েই! অর্থাৎ চোখ-ই এদের অর্ধেক বুদ্ধির জায়গা!

 

মানুষ ভাবে সে-ই সবকিছু জানে, কিন্তু প্রকৃতি চুপচাপ এমন সব অস্ত্র লুকিয়ে রেখেছে একটা ছোট্ট প্রাণীর ভেতরে, যা পুরো বিজ্ঞানের চেহারাই বদলে দিতে পারে। একটা চিংড়ির মতো ছোট্ট প্রাণী, কিন্তু তার চোখ আর ঘুষি নিয়ে আজ গবেষণা চলছে পৃথিবীর সবচেয়ে আধুনিক ল্যাবগুলোতে।

সে যেন সমুদ্রের নিচের এক নীরব সুপারহিরো যে, না আওয়াজ করে আর না আলো চায়! শুধু নিজের নিয়মে বেঁচে থাকে, আর ছায়ার মতো শক্তি বহন করে চলে!

البحث
الأقسام
إقرأ المزيد
Literature
ইনিই হলেন ভারতবর্ষের সবচেয়ে শিক্ষিত ব্যক্তি ; যাকে হয়ত আপনি, আমি চিনি না⚠️
পয়সার গরম তো জীবনে অনেক দেখলেন । কিন্ত বিদ্যার এমন গরম দেখেছেন না শুনেছেন কখনও ? সবটা শুনলে মাথা...
بواسطة Zihadur Rahman 2025-07-11 17:31:01 0 523
Tech
বৃদ্ধাশ্রম জন্ম নেয় যেখান থেকে
  একদিন ফজরের নামাজ পড়ার জন্য বাসা থেকে বের হতেই দেখি মা বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে আছে। অবাক হয়ে...
بواسطة Yeara Meherish 2025-07-27 10:11:11 0 196
Tech
চ্যাটজিপিটি নিয়ে এলো 'স্টাডি মোড', সরাসরি উত্তর না দিয়ে শেখাতে সাহায্য করবে শিক্ষার্থীদের
  ওপেনএআই চ্যাটজিপিটি-র জন্য একটি নতুন 'স্টাডি মোড' চালু করেছে, যার উদ্দেশ্য শিক্ষার্থীদের...
بواسطة Yeara Meherish 2025-07-31 18:02:08 0 203
Literature
৮৯ বছর বয়সে পিএইচডি করা⚠️🔥
৮৯ বছর বয়সে পিএইচডি করা কোন স্বাভাবিক মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়। তাও আবার কোয়ান্টাম...
بواسطة Zihadur Rahman 2025-07-16 21:45:43 0 374
أخرى
বন্ধুত্ব শুধু মানুষে সীমাবদ্ধ নয়
অস্ট্রেলিয়ার মৎস্য শিকারী আর্নল্ড পয়েন্টার ২০২৩ সালে তাসমান সাগরে একটি সাদা মাদি হাঙরকে শিকারীর...
بواسطة Zihadur Rahman 2025-07-11 18:01:25 1 539
BlackBird Ai
https://bbai.shop