তাই বলে একসাথে চার পাঁচটা চাকরি? এত বুদ্ধি!

আমেরিকার সিলিকন ভ্যালি, এক স্বপ্নের শহর
তারা ভাবছিল, এক জিনিয়াস পেয়েছে।
আসলে তারা পেয়েছিল এক ছায়া।
একই সময়ে পাঁচটা কোম্পানির ফুলটাইম কর্মী।
লোকেশন? আমেরিকা।
বাসস্থান? ভারত
এই ছেলে ছিল এক ‘GHOST EMPLOYEE’,
নাম, সোহম পারেখ
গল্পটা গুজরাটের এক মধ্যবিত্ত বাড়ি থেকে শুরু। একটা ছোট ঘরে বসে একটা ছেলেটা কোড করত ঘণ্টার পর ঘণ্টা। শুধু কোড না, সে গড়ে তুলছিল এক প্ল্যান। একটা সিস্টেম, যেটা সিস্টেমকেই ফাঁকি দেবে
সে ছিল ক্লাসের প্রথম।
ইউনিভার্সিটির শীর্ষে
GitHub-এ তার প্রোজেক্ট দেখে আমেরিকার কোম্পানিগুলো মুগ্ধ,
Mixpanel, Playground AI, Synthesia, Alan AI সবাই তার CV দেখে ভাবল
“এমন ট্যালেন্ট আর কোথায় পাব!
তারা বুঝতেই পারেনি,
সোহম ঠিক এইটাই চেয়েছিল
সে প্রতিটি কোম্পানির চাকরি একে একে পকেটে পুরে নিতে থাকল। একই সময়ে পাঁচটা কোম্পানির ফুলটাইম চাকরি।
সপ্তাহে ১৪০ ঘণ্টার কাজ, একটা মানুষের পক্ষে সম্ভব
সোহম করে দেখাল
কিন্তু সে কোথায় ছিল?
সান ফ্রান্সিসকো নয়।
সে ছিল অন্য শহরে
আর তার অফিসিয়াল ল্যাপটপগুলো ছিল আমেরিকায় এক বন্ধুর ফ্ল্যাটে, সেই অফিসের ঠিকানার শহরে
ল্যাপটপগুলো সবসময় অন থাকত, যেন সিস্টেম ভাবতো
“এই তো, আমাদের লোক onsite এই আছে।
Zoom মিটিংয়ে সে কখনও ক্যামেরা অন করত না।
বলত, “ওয়েবক্যাম নষ্ট”, “নেট স্লো”, “আজ একটু অসুস্থ”
কারও কিছু বুঝে ওঠার আগেই সে প্রোজেক্ট জমা দিয়ে দিত।
ডেডলাইন? কখনো মিস করেনি।
কোড? একেবারে নিখুঁত
সবাই মনে করত, "সোহম শুধু আমাদের টিমেই কাজ করে।"
আসলে সে তখন একসাথে পাঁচটা টিমে, পাঁচটা কোম্পানির ফাঁসের মাঝে দৌড়চ্ছে, নিখুঁতভাবে
একবার ভাবুন,
তিনটে মিটিং চলছে একই দিনে, একই টাইমস্লটে।
তিনটা ভিন্ন প্রজেক্ট, তিনটা ভিন্ন টেকস্ট্যাক। সোহম সেগুলোকে সামলাচ্ছে এমনভাবে, যেন সবই তার একার খেলাঘর
আয়?
এক বছরে প্রায় ১০ কোটি টাকর ও কাছাকাছি
সব কিছু নিখুঁত চলছিল,
তবে প্রতিটি মাস্টারপ্ল্যানে একটা ‘লুপহোল’ থাকে
মিক্সপানেল এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা একদিন টুইট করেন,
“আমরা আমাদের ইঞ্জিনিয়ারের লোকেশন নিয়ে সন্দেহ করছি।
এই একটা লাইন ইন্টারনেটে আগুন লাগিয়ে দিল
বাকিরা কমেন্টে এসে বলল,
“Wait… আমরাও তো ওকে নিয়েছিলাম!”
“সে তো আমাদেরও ফুলটাইম!”
“আমরাও স্ক্রিনে মুখ দেখিনি কোনোদিন…
একেক করে খুলে গেল প্রতারণার ফাইল।
সব কোম্পানি বুঝতে পারল,
তারা সবাই এক ছেলেরই শিকার
তাকে বরখাস্ত করা হলো।
প্রতিটা দরজা বন্ধ হলো মুখের ওপর
সোহম নিজে বলল আমি গর্বিত নই আমার কাজে, কেউ 140 ঘন্টা কাজ করতে চায় না, কিন্তু আমি আর্থিক অবস্থার কথায় ভেবে কাজটা করছিলাম
সবাই ভাবল, শেষ।
এই ছেলের কেরিয়ার শেষ
কিন্তু না।
এই গল্পের ক্লাইম্যাক্স তখনও বাকি
কয়েক মাস পর আবার খবর ছড়াল,
সোহম পারেখ ফিরে এসেছে।
এইবার সে ঢুকেছে সান ফ্রান্সিসকোরই আরেক নামী AI স্টার্টআপে, Darwin Studios।
পদ? Founding Engineer।
CEO জানালেন, “সে ভুল করেছে। কিন্তু তার প্রতিভা অস্বীকার করা যায় না।”
এইবার ক্যামেরা অন।
এইবার আলোয় এসে দাঁড়াল সেই ছায়ামানব
কি কাহিনী তাই না? যখন মেধা এবং বুদ্ধি একই মানুষের মধ্যে এসে সম্মিলিত হয়, তখন যেন এমনটাই হয়ে দাঁড়ায়
সে শুধু কোডার নয়।
সে এক স্ট্র্যাটেজিস্ট, এক স্ক্রিপ্টরাইটার, এক গেমপ্লেয়ার।
সে এমন এক চরিত্র, যার মাথায় ছিল এমন এক স্ক্রিপ্ট,
যেটা লিখেছে কীবোর্ড দিয়ে, আর বানিয়েছে বিশ্বাস দিয়ে
যে ছেলেটা ভারতে বসে আমেরিকার পাঁচটা টেক জায়ান্টকে একইসাথে পরিচালনা করেছিল
একটাও ডেডলাইন মিস না করে, প্রতিটা কোড নিখুঁত রেখে
সে কি শুধুই প্রতারক? না, সে এক অলিম্পিয়ান বুদ্ধির কারিগর
একটা মেশিন যেমন একসাথে পাঁচটা টাস্ক করে,
সোহম ছিল সেই মেশিন, কিন্তু র*ক্ত মাংসের নির্মম দক্ষতায় গাঁথা
মানুষ তাকে হয়তো ক্ষমা করবে না, কিন্তু তার ভবিষ্যৎ উপেক্ষা করাও পারবে না
কারণ, এমন মাথা বারবার জন্মায় না।
আর একবার ফিরলে, হয়তো সে শুধু নিয়ম ভাঙবে না,
নতুন নিয়ম তৈরি করেও যেতে পারে।
