-
-
Explore Our Features
-
-
-
-
-
-
-
-
-
Ai and Tools
-
-
-
-
-
বিশ্বের অর্থনৈতিক মানচিত্রে এক বিপ্লবী নাম—বিটকয়েন।

আর এই বিপ্লবের জন্মদাতা এক রহস্যময় ছায়ামানব—সাতোশি নাকামোতো। যাকে কেউ কখনও দেখেনি, শোনেনি, এমনকি এখনও নিশ্চিতভাবে জানেও না তিনি একজন মানুষ, নাকি একটি গ্রুপ, না কি কোনো এআই সিস্টেম!
তবে এতটুকু নিশ্চিত—তিনি (বা তাঁরা) ২০০৯ সালে বিশ্বে এনেছেন প্রথম সফল বিকেন্দ্রীকৃত ডিজিটাল মুদ্রা, যার উপর নেই কোনো সরকার, কেন্দ্রীয় ব্যাংক কিংবা কর্পোরেট নিয়ন্ত্রণ।
সাতোশি নাকামোতো কে?
২০০৮ সালের অক্টোবর মাসে “Bitcoin: A Peer-to-Peer Electronic Cash System” শিরোনামে এক গবেষণা প্রবন্ধ (white paper) প্রকাশিত হয়। প্রেরকের নাম—সাতোশি নাকামোতো। ঠিক এক বছরের মধ্যেই এই প্রস্তাবিত সিস্টেম বাস্তবে রূপ নেয়। শুরু হয় লেনদেন, খনন (মাইনিং), এবং এক নতুন অর্থনৈতিক যুগ।
কিন্তু এরপর সাতোশি ধীরে ধীরে অন্তরালে চলে যান। ২০১1 সালের পর থেকে তাঁর কোনো ই-মেইল, ব্লগ পোস্ট, কিংবা ফোরামে উপস্থিতি আর দেখা যায়নি।
‘সাতোশি’ মানে কত টাকা?
বিটকয়েনের সবচেয়ে ছোট একককে বলা হয় “সাতোশি”।
১ বিটকয়েন = ১০ কোটি সাতোশি।
মানে, একটি সাতোশি হচ্ছে এক সেন্টের চেয়েও ছোট, কিন্তু এর পেছনের নামটি গোটা অর্থনীতির ইতিহাস বদলে দিয়েছে।
বিটকয়েনের মূল্য এত বাড়ল কেন?
বিটকয়েনের মূল্য বেড়েছে কারণ:
1. সরকার বা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ নেই
2. জোগানের সীমা রয়েছে (সর্বোচ্চ ২১ মিলিয়ন)
3. আন্তর্জাতিক লেনদেনে সহজ, দ্রুত ও নিরাপদ
4. ব্লকচেইন প্রযুক্তি—যা হ্যাক-প্রুফ এবং স্বচ্ছ
5. বিনিয়োগকারীদের আস্থা ও চাহিদা
২০১০ সালে এক বিটকয়েনের দাম ছিল মাত্র ৩ টাকা, আর ২০২1 সালের শেষে তা গিয়ে ঠেকে প্রায় ৭০ লক্ষ টাকায়!
সাতোশি নাকামোতোর কাছে কত বিটকয়েন?
বিশ্লেষকরা বলছেন, সাতোশির কাছে রয়েছে প্রায় ১০ লক্ষ বিটকয়েন, যেগুলো তিনি মাইনিং করে জমিয়েছেন শুরুতেই। এই পরিমাণ বিটকয়েনের বর্তমান বাজারমূল্য ৫৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এরও বেশি!
অর্থাৎ, তিনি যদি এখন বিক্রি করেন—তবে তিনি হতে পারেন বিশ্বের শীর্ষ ধনী ব্যক্তিদের একজন, এমনকি ইলন মাস্ককেও ছাড়িয়ে যেতে পারেন।
কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হলো, সাতোশি তাঁর একটিও বিটকয়েন বিক্রি করেননি! এগুলো রয়ে গেছে অনড়ভাবে সেই একই ওয়ালেটে।
সাতোশি কি আসলে একজন মানুষ?
সাতোশির আসল পরিচয় ঘিরে রয়েছে বহু তত্ত্ব—
কেউ বলেন, তিনি জাপানি কম্পিউটার বিজ্ঞানী।
কেউ বলেন, এটি একটি পশ্চিমা দল, যারা নিরাপত্তার স্বার্থে নাম গোপন রেখেছে।
আবার কেউ বলেন, এটি হয়তো গোটা এক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) প্রজেক্ট!
জানার সুযোগ থাকলেও, সাতোশির নিঃশব্দ বিদায় এবং তাঁর ওয়ালেটের নিস্ক্রিয়তা—এই রহস্যকে আরও ঘনীভূত করে তোলে।
কেন বিটকয়েন বিপ্লব?
অর্থনীতি হলো নিয়ন্ত্রণের খেলা। সাতোশি সেই খেলার রুলটাই বদলে দিলেন।
ব্যাংক ছাড়াও অর্থ পাঠানো যায়? হ্যাঁ, বিটকয়েন দিয়ে সেটা সম্ভব।
এক ব্যক্তির হাতে পুরো অর্থনৈতিক নিয়ন্ত্রণ থাকতে পারে না—এটাই সাতোশির বার্তা
সাতোশি নাকামোতো শুধু একজন উদ্ভাবকের নাম নয়—তিনি এক দর্শন।
একটি ধারণা, যে ধারণা বলে—"ক্ষমতা বিকেন্দ্রীকরণই ভবিষ্যতের সেরা নিরাপত্তা।"যে যুগে আমরা সবকিছুতে ‘কেন্দ্রীয় অনুমোদন’ খুঁজি, সেখানে সাতোশির মত কেউ এসে বলে—
“বিশ্বাস নয়, প্রযুক্তিতে ভরসা রাখো।”
