আপনার সন্তানের জন্য সারাজীবন ধরে জমানো টাকা আর সম্পদ কি তাদের উপকার করছে, নাকি ভবিষ্যৎ পঙ্গু করে দিচ্ছে? পৃথিবীর অন্যতম ধনী ব্যক্তি বিল গেটস মনে করেন দ্বিতীয়টিই সত্যি। তার মতে, সন্তানদেরকে পাহাড়সমান সম্পদ দিয়ে যাওয়া তাদের জন্য কোনো আনুকূল্য নয়, বরং একটি অভিশাপ।

উত্তরাধিকার এবং সন্তানদের ভবিষ্যৎ
আমাদের সমাজে যেখানে বাবা-মায়েরা তাদের সর্বস্ব সন্তানদের জন্য রেখে যাওয়াকে প্রধান দায়িত্ব মনে করেন, সেখানে বিল গেটস তার ৯৯% এরও বেশি সম্পদ দান করে দিচ্ছেন। কারণ?

আত্মনির্ভরশীলতা: তিনি চান তার সন্তানরা নিজেদের পরিচয় এবং সাফল্য নিজেরাই তৈরি করুক। তার মতে, বিশাল উত্তরাধিকার সন্তানদের নিজস্ব অর্জনকে ম্লান করে দেয়।

তিনি কোনো রাজবংশ তৈরি করতে চান না, যেখানে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে শুধু সম্পদই হস্তান্তর হয়।

তিনি বিশ্বাস করেন যে, এই বিপুল পরিমাণ অর্থ বিশ্বের সবচেয়ে দরিদ্র মানুষের জীবন বাঁচানোর কাজে লাগানোই এর সর্বোচ্চ ব্যবহার।

আজকের তরুণরা যখন 'work-life balance' এর কথা বলে, তখন বিল গেটস তার 20s কথা স্মরণ করে বলেন, সেই সময়টাতে আমি একজন পাগল বা ম্যানিয়াক ছিলাম এবং সেটাই আমার জন্য সঠিক ছিল।
কেন? কারণ সেই বয়সে তার কোনো স্ত্রী বা সন্তান ছিল না, অর্থাৎ কাঁধে দায়িত্ব কম ছিল। এটাই ছিল জীবনের একমাত্র সময়, যখন তিনি সবকিছু ভুলে গিয়ে শুধু একটি লক্ষ্যের পিছনে দৌড়াতে পেরেছিলেন।

বিল গেটসের পরামর্শ: যদি আপনি জীবনে বড় কোনো প্রতিযোগিতায় নামতে চান, তাহলে আপনার 20s হলো সর্বোচ্চ ঝুঁকি এবং পরিশ্রম করার সেরা সময়।

মানুষ তাকে নিয়ে সবচেয়ে বড় কী ভুল ধারণা পোষণ করে?
বিল গেটসের মতে, মানুষ প্রায়ই ভাবে যে বিপুল পরিমাণ অর্থ এবং ক্ষমতার অধিকারী ব্যক্তিদের মূল্যবোধ সাধারণ মানুষের চেয়ে আলাদা এবং তাদের নিজস্ব গোপন এজেন্ডা রয়েছে। কিন্তু তিনি মনে করেন, যারা তাকে কাছ থেকে চেনেন, তারা জানেন যে তার মূল চালিকাশক্তি হলো ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে মানুষের জীবন পরিবর্তন করা, কোনো গোপন এজেন্ডা নয়।

বিল গেটসের জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল
তিনি অকপটে স্বীকার করেন যে, তার সবচেয়ে বড় ভুলগুলোর মধ্যে একটি ছিল মোবাইল অপারেটিং সিস্টেমের জগতে অ্যান্ড্রয়েডের কাছে হেরে যাওয়া। মাইক্রোসফট যখন ফোনের অপারেটিং সিস্টেম নিয়ে কাজ করছিল, তখন তারা অ্যান্ড্রয়েডের উত্থানকে সঠিকভাবে মূল্যায়ন করতে পারেনি। এই ব্যর্থতা তাকে শিখিয়েছে যে, যেকোনো মুহূর্তে অসতর্ক হলেই বাজার থেকে হারিয়ে যাওয়া সম্ভব।

যে সমস্যা টাকা দিয়ে সমাধান করা যায় না
এত সম্পদ এবং প্রভাব থাকা সত্ত্বেও বিল গেটস মনে করেন, মানুষের আচরণ পরিবর্তন করা সবচেয়ে কঠিন কাজ। যেমন, স্থূলতা বা ওবেসিটির মতো সমস্যা সমাধানের জন্য শুধুমাত্র সচেতনতা বা অর্থই যথেষ্ট নয়, এর জন্য প্রয়োজন গভীর আচরণগত পরিবর্তন, যা অর্জন করা অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং।

যে একটি অভ্যাস সবার গ্রহণ করা উচিত
তার সাফল্যের মূল চাবিকাঠি হলো: সারাজীবন ছাত্র থাকা। তিনি সবসময় নতুন কিছু শেখার চেষ্টা করেন এবং নিজের জ্ঞানের সীমাবদ্ধতা নিয়ে নিজেকে ক্রমাগত প্রশ্ন করেন। তার মতে, নিরন্তর শেখার এই আগ্রহই তাকে প্রাসঙ্গিক থাকতে এবং নতুন উদ্ভাবন করতে সাহায্য করেছে।

উচ্চতা, আগুন বা বিমান কোনো কিছুতেই তার ভয় নেই। তার সবচেয়ে বড় ভয় হলো, একদিন তার মস্তিষ্ক আগের মতো কাজ করবে না। শেখার এবং চিন্তা করার ক্ষমতা কমে যাওয়াটাই তাকে সবচেয়ে বেশি হতাশ করে। এই ভয় তাকে প্রতিদিন নতুন কিছু শেখার জন্য অনুপ্রাণিত করে।

তিনি চান না যে মানুষ তাকে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি হিসেবে মনে রাখুক। তার স্বপ্ন হলো, ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যখন পোলিও বা ম্যালেরিয়ার মতো রোগের কথা শুনবে, তখন তারা অবাক হয়ে ভাববে, এই রোগগুলো আবার কী ছিল? তিনি চান, তাকে যেন সেই সমস্যাগুলোর সমাধানের একটি অংশ হিসেবে মনে রাখা হয়, যা একসময় মানবজাতির জন্য হুমকি ছিল।

সম্পূর্ণ পডকাস্ট দেখতে পারবেন Raj Shamani ইউটিউব চ্যানেলে।
আপনার সন্তানের জন্য সারাজীবন ধরে জমানো টাকা আর সম্পদ কি তাদের উপকার করছে, নাকি ভবিষ্যৎ পঙ্গু করে দিচ্ছে? পৃথিবীর অন্যতম ধনী ব্যক্তি বিল গেটস মনে করেন দ্বিতীয়টিই সত্যি। তার মতে, সন্তানদেরকে পাহাড়সমান সম্পদ দিয়ে যাওয়া তাদের জন্য কোনো আনুকূল্য নয়, বরং একটি অভিশাপ। উত্তরাধিকার এবং সন্তানদের ভবিষ্যৎ আমাদের সমাজে যেখানে বাবা-মায়েরা তাদের সর্বস্ব সন্তানদের জন্য রেখে যাওয়াকে প্রধান দায়িত্ব মনে করেন, সেখানে বিল গেটস তার ৯৯% এরও বেশি সম্পদ দান করে দিচ্ছেন। কারণ? আত্মনির্ভরশীলতা: তিনি চান তার সন্তানরা নিজেদের পরিচয় এবং সাফল্য নিজেরাই তৈরি করুক। তার মতে, বিশাল উত্তরাধিকার সন্তানদের নিজস্ব অর্জনকে ম্লান করে দেয়। তিনি কোনো রাজবংশ তৈরি করতে চান না, যেখানে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে শুধু সম্পদই হস্তান্তর হয়। তিনি বিশ্বাস করেন যে, এই বিপুল পরিমাণ অর্থ বিশ্বের সবচেয়ে দরিদ্র মানুষের জীবন বাঁচানোর কাজে লাগানোই এর সর্বোচ্চ ব্যবহার। আজকের তরুণরা যখন 'work-life balance' এর কথা বলে, তখন বিল গেটস তার 20s কথা স্মরণ করে বলেন, সেই সময়টাতে আমি একজন পাগল বা ম্যানিয়াক ছিলাম এবং সেটাই আমার জন্য সঠিক ছিল। কেন? কারণ সেই বয়সে তার কোনো স্ত্রী বা সন্তান ছিল না, অর্থাৎ কাঁধে দায়িত্ব কম ছিল। এটাই ছিল জীবনের একমাত্র সময়, যখন তিনি সবকিছু ভুলে গিয়ে শুধু একটি লক্ষ্যের পিছনে দৌড়াতে পেরেছিলেন। বিল গেটসের পরামর্শ: যদি আপনি জীবনে বড় কোনো প্রতিযোগিতায় নামতে চান, তাহলে আপনার 20s হলো সর্বোচ্চ ঝুঁকি এবং পরিশ্রম করার সেরা সময়। মানুষ তাকে নিয়ে সবচেয়ে বড় কী ভুল ধারণা পোষণ করে? বিল গেটসের মতে, মানুষ প্রায়ই ভাবে যে বিপুল পরিমাণ অর্থ এবং ক্ষমতার অধিকারী ব্যক্তিদের মূল্যবোধ সাধারণ মানুষের চেয়ে আলাদা এবং তাদের নিজস্ব গোপন এজেন্ডা রয়েছে। কিন্তু তিনি মনে করেন, যারা তাকে কাছ থেকে চেনেন, তারা জানেন যে তার মূল চালিকাশক্তি হলো ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে মানুষের জীবন পরিবর্তন করা, কোনো গোপন এজেন্ডা নয়। বিল গেটসের জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল তিনি অকপটে স্বীকার করেন যে, তার সবচেয়ে বড় ভুলগুলোর মধ্যে একটি ছিল মোবাইল অপারেটিং সিস্টেমের জগতে অ্যান্ড্রয়েডের কাছে হেরে যাওয়া। মাইক্রোসফট যখন ফোনের অপারেটিং সিস্টেম নিয়ে কাজ করছিল, তখন তারা অ্যান্ড্রয়েডের উত্থানকে সঠিকভাবে মূল্যায়ন করতে পারেনি। এই ব্যর্থতা তাকে শিখিয়েছে যে, যেকোনো মুহূর্তে অসতর্ক হলেই বাজার থেকে হারিয়ে যাওয়া সম্ভব। যে সমস্যা টাকা দিয়ে সমাধান করা যায় না এত সম্পদ এবং প্রভাব থাকা সত্ত্বেও বিল গেটস মনে করেন, মানুষের আচরণ পরিবর্তন করা সবচেয়ে কঠিন কাজ। যেমন, স্থূলতা বা ওবেসিটির মতো সমস্যা সমাধানের জন্য শুধুমাত্র সচেতনতা বা অর্থই যথেষ্ট নয়, এর জন্য প্রয়োজন গভীর আচরণগত পরিবর্তন, যা অর্জন করা অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং। যে একটি অভ্যাস সবার গ্রহণ করা উচিত তার সাফল্যের মূল চাবিকাঠি হলো: সারাজীবন ছাত্র থাকা। তিনি সবসময় নতুন কিছু শেখার চেষ্টা করেন এবং নিজের জ্ঞানের সীমাবদ্ধতা নিয়ে নিজেকে ক্রমাগত প্রশ্ন করেন। তার মতে, নিরন্তর শেখার এই আগ্রহই তাকে প্রাসঙ্গিক থাকতে এবং নতুন উদ্ভাবন করতে সাহায্য করেছে। উচ্চতা, আগুন বা বিমান কোনো কিছুতেই তার ভয় নেই। তার সবচেয়ে বড় ভয় হলো, একদিন তার মস্তিষ্ক আগের মতো কাজ করবে না। শেখার এবং চিন্তা করার ক্ষমতা কমে যাওয়াটাই তাকে সবচেয়ে বেশি হতাশ করে। এই ভয় তাকে প্রতিদিন নতুন কিছু শেখার জন্য অনুপ্রাণিত করে। তিনি চান না যে মানুষ তাকে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি হিসেবে মনে রাখুক। তার স্বপ্ন হলো, ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যখন পোলিও বা ম্যালেরিয়ার মতো রোগের কথা শুনবে, তখন তারা অবাক হয়ে ভাববে, এই রোগগুলো আবার কী ছিল? তিনি চান, তাকে যেন সেই সমস্যাগুলোর সমাধানের একটি অংশ হিসেবে মনে রাখা হয়, যা একসময় মানবজাতির জন্য হুমকি ছিল। সম্পূর্ণ পডকাস্ট দেখতে পারবেন Raj Shamani ইউটিউব চ্যানেলে।
0 Comments 0 Shares 15 Views 0 Reviews
BlackBird Ai
https://bbai.shop