মাত্র ২৩ বছর বয়সে মার্ক জাকারবার্গের ৩ বিলিয়ন ডলারের প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছিল স্ন্যাপচ্যাটের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ইভান স্পিগেল। মাত্র ২১ বছর বয়সে স্ট্যানফোর্ডের ডর্ম রুমে বসে তিনি এমন একটি অ্যাপ তৈরি করেছিলেন, যা তাকে মাত্র ২৫ বছর বয়সে বিশ্বের সর্বকনিষ্ঠ বিলিয়নিয়ার বানিয়েছিলো।
ইভান স্পিগেলের বেড়ে ওঠা ছিল একটু অন্যরকম। তার বাবা-মা তাকে কখনো টিভি দেখতে দেননি, যা তাকে বই পড়তে এবং নিজের কল্পনাশক্তি ব্যবহার করে নতুন কিছু তৈরি করতে উৎসাহিত করেছিল। তিনি নিজের কম্পিউটার নিজেই তৈরি করেছিলেন। এই অভিজ্ঞতা তাকে শিখিয়েছিল যে, বাইরে থেকে দেখতে জটিল মনে হলেও, যেকোনো জিনিসকে ভেঙে ছোট ছোট অংশে ভাগ করলে তা আর কঠিন থাকে না। স্কুলে তিনি প্রায়ই বুলিং-এর শিকার হতেন এবং নিজেকে গুটিয়ে রাখতেন। কিন্তু এই একাকীত্বই তাকে নিজের মতো করে চিন্তা করতে এবং প্রচলিত ধারণার বিরুদ্ধে প্রশ্ন করতে শিখিয়েছিল।
স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি প্রোডাক্ট ডিজাইন নিয়ে পড়াশোনা শুরু করেন, যার মূল দর্শন ছিল মানুষের সমস্যা শোনা, তার সাথে একাত্ম হওয়া এবং সেই সমস্যার সমাধানে নতুন কিছু তৈরি করা। স্ট্যানফোর্ডের সংস্কৃতি তাকে শিখিয়েছিল ছোটখাটো লাভের কথা না ভেবে, এমন আইডিয়া নিয়ে কাজ করতে যা বিলিয়ন মানুষের জীবনে প্রভাব ফেলতে পারে। কারণ একটি ব্যবসা শুরু করা এতটাই কঠিন যে, যদি এর পেছনের স্বপ্নটা বড় না হয়, তবে সেই কষ্ট বৃথা।
তার প্রথম স্টার্টআপ ফিউচার ফ্রেশম্যান ব্যর্থ হয়েছিল। এই ব্যর্থতা তাকে দুটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা দিয়েছিল:
১. যখন আপনি কোনো কাজের প্রতি ভালোবাসা হারিয়ে ফেলবেন, তখন বুঝতে হবে পথ বদলানোর সময় এসেছে।
২. লম্বা সময় ধরে একটি প্রোডাক্টকে নিখুঁত করার চেষ্টা না করে, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব একটি সাধারণ সংস্করণ মার্কেটে ছাড়ুন এবং ব্যবহারকারীদের কাছ থেকে সরাসরি ফিডব্যাক নিন।
স্ন্যাপচ্যাটের মূল ধারণাটি ছিল আসলেই খুব সহজ, এমন ছবি পাঠানো যা অল্প সময়ের মধ্যেই নিজে থেকে মুছে যাবে। কিন্তু এর পেছনের দর্শন ছিল গভীর।ফেসবুক বা ইনস্টাগ্রামের মতো প্ল্যাটফর্মগুলো যেখানে জীবনের নিখুঁত এবং স্থায়ী মুহূর্তগুলো তুলে ধরার জন্য তৈরি, স্ন্যাপচ্যাট ছিল জীবনের বাকি ৯৯% সাধারণ, অগোছালো এবং মজার মুহূর্তগুলোর জন্য। অ্যাপটা খোলার সাথে সাথেই যে ক্যামেরা অন হয়ে যেত, এটা ছিল সেই সময়ের জন্য একদম নতুন একটা ব্যাপার! অন্য সব অ্যাপের চেয়ে এটা স্ন্যাপচ্যাটকে অনেক আলাদা করে তুলেছিল। স্ন্যাপচ্যাটের আসল উদ্দেশ্য ছিল, ক্ষণিকের জন্য আসা সুন্দর মুহূর্তগুলো যেন আমাদের জীবন থেকে হারিয়ে যাওয়ার আগেই, আমরা সেগুলোকে ধরে রাখতে পারি।
দয়া, মেধা এবং সৃজনশীলতা এটিই স্ন্যাপচ্যাটের মূল তিনটি ভ্যালু। তিনি বিশ্বাস করেন, একটি দয়ালু এবং নিরাপদ পরিবেশ ছাড়া সৃজনশীলতার বিকাশ সম্ভব নয়।
তার সহ-প্রতিষ্ঠাতা ববি মারফির একটা বিখ্যাত কথা আছে। তিনি বলতেন, একজন মানুষ একই সাথে ব্রিলিয়ান্ট এবং খারাপ ব্যবহারের হতে পারে না। তার মতে, যার মধ্যে আসল মেধা থাকে, তার মধ্যে দয়া ও বিনয়ও থাকবেই।
মাত্র ২৩ বছর বয়সে মার্ক জাকারবার্গের ৩ বিলিয়ন ডলারের প্রস্তাব ফিরিয়ে দেওয়াটা ছিল এক অবিশ্বাস্য সিদ্ধান্ত। কিন্তু এর পেছনে ছিল তাদের নিজস্ব দর্শনের প্রতি গভীর বিশ্বাস। ফেসবুকের ব্যবসায়িক মডেল এবং সংস্কৃতির সাথে স্ন্যাপচ্যাটের দর্শনের কোনো মিল ছিল না। তারা জানতেন, ফেসবুকের অংশ হয়ে গেলে তাদের পক্ষে নিজেদের স্বপ্নকে বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব হবে না।
এর আগেই তারা কোম্পানির কিছু শেয়ার বিক্রি করে প্রত্যেকে ১০ মিলিয়ন ডলার করে পেয়েছিলেন, যা তাদের আর্থিকভাবে চিন্তামুক্ত করেছিল এবং বড় ঝুঁকি নেওয়ার সাহস জুগিয়েছিল।
ইনস্টাগ্রাম যখন স্ন্যাপচ্যাটের স্টোরিজ ফিচারটি হুবহু নকল করে, তখন অনেকেই ভেবেছিল স্ন্যাপচ্যাট শেষ। কিন্তু ইভান এটিকে একটি ইতিবাচক চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখেছিলেন। যখন বিশ্বের সবচেয়ে বড় কোম্পানিগুলো আপনাকে নকল করে, তার মানে হলো আপনি সঠিক পথেই আছেন।
এই অভিজ্ঞতা তাকে শিখিয়েছে যে, এমন কিছু তৈরি করতে হবে যা প্রযুক্তিগতভাবে এতটাই জটিল এবং একটি ইকোসিস্টেমের উপর নির্ভরশীল যে, তা নকল করা প্রায় অসম্ভব। যেমন, তাদের অগমেন্টেড রিয়ালিটি (AR) লেন্স।
ইভান স্বীকার করেন যে, একটি পাবলিক কোম্পানি চালানো বেশ চাপের। তবে তিনি কাজকে খুব বেশি চাপ হিসেবে দেখেন না, কারণ বছরের পর বছর ধরে নানা রকম কঠিন পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে করতে এটি তার জন্য স্বাভাবিক হয়ে গেছে।
তিনি সব সময় তার স্ত্রীর অবদানের কথা বলেন, যিনি তাকে মানসিকভাবে শান্ত থাকতে সবচেয়ে বেশি সাহায্য করেন। তাদের নিয়ম হলো, রবিবার মানেই ফ্যামিলি ডে, যেদিন কোনো কাজ নয়, শুধু পরিবারের সাথে সময় কাটানো।
তিনি মনে করেন, AI শিক্ষার জগতে এক বিপ্লব নিয়ে আসবে। এটি হবে একজন ব্যক্তিগত শিক্ষকের মতো, যা প্রতিটি ছাত্রকে তার নিজের গতিতে শিখতে সাহায্য করবে।
AI মানুষের সৃজনশীলতাকে কেড়ে নেবে না, বরং এটি হবে সৃজনশীল মানুষদের হাতে একটি শক্তিশালী হাতিয়ার, যা তাদের ভাবনাকে আরও সহজে বাস্তবে রূপ দিতে সাহায্য করবে।
সম্পূর্ণ পডকাস্ট The Diary Of A CEO ইউটিউব চ্যানেলে দেখতে পারবেন।
ইভান স্পিগেলের বেড়ে ওঠা ছিল একটু অন্যরকম। তার বাবা-মা তাকে কখনো টিভি দেখতে দেননি, যা তাকে বই পড়তে এবং নিজের কল্পনাশক্তি ব্যবহার করে নতুন কিছু তৈরি করতে উৎসাহিত করেছিল। তিনি নিজের কম্পিউটার নিজেই তৈরি করেছিলেন। এই অভিজ্ঞতা তাকে শিখিয়েছিল যে, বাইরে থেকে দেখতে জটিল মনে হলেও, যেকোনো জিনিসকে ভেঙে ছোট ছোট অংশে ভাগ করলে তা আর কঠিন থাকে না। স্কুলে তিনি প্রায়ই বুলিং-এর শিকার হতেন এবং নিজেকে গুটিয়ে রাখতেন। কিন্তু এই একাকীত্বই তাকে নিজের মতো করে চিন্তা করতে এবং প্রচলিত ধারণার বিরুদ্ধে প্রশ্ন করতে শিখিয়েছিল।
স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি প্রোডাক্ট ডিজাইন নিয়ে পড়াশোনা শুরু করেন, যার মূল দর্শন ছিল মানুষের সমস্যা শোনা, তার সাথে একাত্ম হওয়া এবং সেই সমস্যার সমাধানে নতুন কিছু তৈরি করা। স্ট্যানফোর্ডের সংস্কৃতি তাকে শিখিয়েছিল ছোটখাটো লাভের কথা না ভেবে, এমন আইডিয়া নিয়ে কাজ করতে যা বিলিয়ন মানুষের জীবনে প্রভাব ফেলতে পারে। কারণ একটি ব্যবসা শুরু করা এতটাই কঠিন যে, যদি এর পেছনের স্বপ্নটা বড় না হয়, তবে সেই কষ্ট বৃথা।
তার প্রথম স্টার্টআপ ফিউচার ফ্রেশম্যান ব্যর্থ হয়েছিল। এই ব্যর্থতা তাকে দুটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা দিয়েছিল:
১. যখন আপনি কোনো কাজের প্রতি ভালোবাসা হারিয়ে ফেলবেন, তখন বুঝতে হবে পথ বদলানোর সময় এসেছে।
২. লম্বা সময় ধরে একটি প্রোডাক্টকে নিখুঁত করার চেষ্টা না করে, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব একটি সাধারণ সংস্করণ মার্কেটে ছাড়ুন এবং ব্যবহারকারীদের কাছ থেকে সরাসরি ফিডব্যাক নিন।
স্ন্যাপচ্যাটের মূল ধারণাটি ছিল আসলেই খুব সহজ, এমন ছবি পাঠানো যা অল্প সময়ের মধ্যেই নিজে থেকে মুছে যাবে। কিন্তু এর পেছনের দর্শন ছিল গভীর।ফেসবুক বা ইনস্টাগ্রামের মতো প্ল্যাটফর্মগুলো যেখানে জীবনের নিখুঁত এবং স্থায়ী মুহূর্তগুলো তুলে ধরার জন্য তৈরি, স্ন্যাপচ্যাট ছিল জীবনের বাকি ৯৯% সাধারণ, অগোছালো এবং মজার মুহূর্তগুলোর জন্য। অ্যাপটা খোলার সাথে সাথেই যে ক্যামেরা অন হয়ে যেত, এটা ছিল সেই সময়ের জন্য একদম নতুন একটা ব্যাপার! অন্য সব অ্যাপের চেয়ে এটা স্ন্যাপচ্যাটকে অনেক আলাদা করে তুলেছিল। স্ন্যাপচ্যাটের আসল উদ্দেশ্য ছিল, ক্ষণিকের জন্য আসা সুন্দর মুহূর্তগুলো যেন আমাদের জীবন থেকে হারিয়ে যাওয়ার আগেই, আমরা সেগুলোকে ধরে রাখতে পারি।
দয়া, মেধা এবং সৃজনশীলতা এটিই স্ন্যাপচ্যাটের মূল তিনটি ভ্যালু। তিনি বিশ্বাস করেন, একটি দয়ালু এবং নিরাপদ পরিবেশ ছাড়া সৃজনশীলতার বিকাশ সম্ভব নয়।
তার সহ-প্রতিষ্ঠাতা ববি মারফির একটা বিখ্যাত কথা আছে। তিনি বলতেন, একজন মানুষ একই সাথে ব্রিলিয়ান্ট এবং খারাপ ব্যবহারের হতে পারে না। তার মতে, যার মধ্যে আসল মেধা থাকে, তার মধ্যে দয়া ও বিনয়ও থাকবেই।
মাত্র ২৩ বছর বয়সে মার্ক জাকারবার্গের ৩ বিলিয়ন ডলারের প্রস্তাব ফিরিয়ে দেওয়াটা ছিল এক অবিশ্বাস্য সিদ্ধান্ত। কিন্তু এর পেছনে ছিল তাদের নিজস্ব দর্শনের প্রতি গভীর বিশ্বাস। ফেসবুকের ব্যবসায়িক মডেল এবং সংস্কৃতির সাথে স্ন্যাপচ্যাটের দর্শনের কোনো মিল ছিল না। তারা জানতেন, ফেসবুকের অংশ হয়ে গেলে তাদের পক্ষে নিজেদের স্বপ্নকে বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব হবে না।
এর আগেই তারা কোম্পানির কিছু শেয়ার বিক্রি করে প্রত্যেকে ১০ মিলিয়ন ডলার করে পেয়েছিলেন, যা তাদের আর্থিকভাবে চিন্তামুক্ত করেছিল এবং বড় ঝুঁকি নেওয়ার সাহস জুগিয়েছিল।
ইনস্টাগ্রাম যখন স্ন্যাপচ্যাটের স্টোরিজ ফিচারটি হুবহু নকল করে, তখন অনেকেই ভেবেছিল স্ন্যাপচ্যাট শেষ। কিন্তু ইভান এটিকে একটি ইতিবাচক চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখেছিলেন। যখন বিশ্বের সবচেয়ে বড় কোম্পানিগুলো আপনাকে নকল করে, তার মানে হলো আপনি সঠিক পথেই আছেন।
এই অভিজ্ঞতা তাকে শিখিয়েছে যে, এমন কিছু তৈরি করতে হবে যা প্রযুক্তিগতভাবে এতটাই জটিল এবং একটি ইকোসিস্টেমের উপর নির্ভরশীল যে, তা নকল করা প্রায় অসম্ভব। যেমন, তাদের অগমেন্টেড রিয়ালিটি (AR) লেন্স।
ইভান স্বীকার করেন যে, একটি পাবলিক কোম্পানি চালানো বেশ চাপের। তবে তিনি কাজকে খুব বেশি চাপ হিসেবে দেখেন না, কারণ বছরের পর বছর ধরে নানা রকম কঠিন পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে করতে এটি তার জন্য স্বাভাবিক হয়ে গেছে।
তিনি সব সময় তার স্ত্রীর অবদানের কথা বলেন, যিনি তাকে মানসিকভাবে শান্ত থাকতে সবচেয়ে বেশি সাহায্য করেন। তাদের নিয়ম হলো, রবিবার মানেই ফ্যামিলি ডে, যেদিন কোনো কাজ নয়, শুধু পরিবারের সাথে সময় কাটানো।
তিনি মনে করেন, AI শিক্ষার জগতে এক বিপ্লব নিয়ে আসবে। এটি হবে একজন ব্যক্তিগত শিক্ষকের মতো, যা প্রতিটি ছাত্রকে তার নিজের গতিতে শিখতে সাহায্য করবে।
AI মানুষের সৃজনশীলতাকে কেড়ে নেবে না, বরং এটি হবে সৃজনশীল মানুষদের হাতে একটি শক্তিশালী হাতিয়ার, যা তাদের ভাবনাকে আরও সহজে বাস্তবে রূপ দিতে সাহায্য করবে।
সম্পূর্ণ পডকাস্ট The Diary Of A CEO ইউটিউব চ্যানেলে দেখতে পারবেন।
মাত্র ২৩ বছর বয়সে মার্ক জাকারবার্গের ৩ বিলিয়ন ডলারের প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছিল স্ন্যাপচ্যাটের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ইভান স্পিগেল। মাত্র ২১ বছর বয়সে স্ট্যানফোর্ডের ডর্ম রুমে বসে তিনি এমন একটি অ্যাপ তৈরি করেছিলেন, যা তাকে মাত্র ২৫ বছর বয়সে বিশ্বের সর্বকনিষ্ঠ বিলিয়নিয়ার বানিয়েছিলো।
ইভান স্পিগেলের বেড়ে ওঠা ছিল একটু অন্যরকম। তার বাবা-মা তাকে কখনো টিভি দেখতে দেননি, যা তাকে বই পড়তে এবং নিজের কল্পনাশক্তি ব্যবহার করে নতুন কিছু তৈরি করতে উৎসাহিত করেছিল। তিনি নিজের কম্পিউটার নিজেই তৈরি করেছিলেন। এই অভিজ্ঞতা তাকে শিখিয়েছিল যে, বাইরে থেকে দেখতে জটিল মনে হলেও, যেকোনো জিনিসকে ভেঙে ছোট ছোট অংশে ভাগ করলে তা আর কঠিন থাকে না। স্কুলে তিনি প্রায়ই বুলিং-এর শিকার হতেন এবং নিজেকে গুটিয়ে রাখতেন। কিন্তু এই একাকীত্বই তাকে নিজের মতো করে চিন্তা করতে এবং প্রচলিত ধারণার বিরুদ্ধে প্রশ্ন করতে শিখিয়েছিল।
স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি প্রোডাক্ট ডিজাইন নিয়ে পড়াশোনা শুরু করেন, যার মূল দর্শন ছিল মানুষের সমস্যা শোনা, তার সাথে একাত্ম হওয়া এবং সেই সমস্যার সমাধানে নতুন কিছু তৈরি করা। স্ট্যানফোর্ডের সংস্কৃতি তাকে শিখিয়েছিল ছোটখাটো লাভের কথা না ভেবে, এমন আইডিয়া নিয়ে কাজ করতে যা বিলিয়ন মানুষের জীবনে প্রভাব ফেলতে পারে। কারণ একটি ব্যবসা শুরু করা এতটাই কঠিন যে, যদি এর পেছনের স্বপ্নটা বড় না হয়, তবে সেই কষ্ট বৃথা।
তার প্রথম স্টার্টআপ ফিউচার ফ্রেশম্যান ব্যর্থ হয়েছিল। এই ব্যর্থতা তাকে দুটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা দিয়েছিল:
১. যখন আপনি কোনো কাজের প্রতি ভালোবাসা হারিয়ে ফেলবেন, তখন বুঝতে হবে পথ বদলানোর সময় এসেছে।
২. লম্বা সময় ধরে একটি প্রোডাক্টকে নিখুঁত করার চেষ্টা না করে, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব একটি সাধারণ সংস্করণ মার্কেটে ছাড়ুন এবং ব্যবহারকারীদের কাছ থেকে সরাসরি ফিডব্যাক নিন।
স্ন্যাপচ্যাটের মূল ধারণাটি ছিল আসলেই খুব সহজ, এমন ছবি পাঠানো যা অল্প সময়ের মধ্যেই নিজে থেকে মুছে যাবে। কিন্তু এর পেছনের দর্শন ছিল গভীর।ফেসবুক বা ইনস্টাগ্রামের মতো প্ল্যাটফর্মগুলো যেখানে জীবনের নিখুঁত এবং স্থায়ী মুহূর্তগুলো তুলে ধরার জন্য তৈরি, স্ন্যাপচ্যাট ছিল জীবনের বাকি ৯৯% সাধারণ, অগোছালো এবং মজার মুহূর্তগুলোর জন্য। অ্যাপটা খোলার সাথে সাথেই যে ক্যামেরা অন হয়ে যেত, এটা ছিল সেই সময়ের জন্য একদম নতুন একটা ব্যাপার! অন্য সব অ্যাপের চেয়ে এটা স্ন্যাপচ্যাটকে অনেক আলাদা করে তুলেছিল। স্ন্যাপচ্যাটের আসল উদ্দেশ্য ছিল, ক্ষণিকের জন্য আসা সুন্দর মুহূর্তগুলো যেন আমাদের জীবন থেকে হারিয়ে যাওয়ার আগেই, আমরা সেগুলোকে ধরে রাখতে পারি।
দয়া, মেধা এবং সৃজনশীলতা এটিই স্ন্যাপচ্যাটের মূল তিনটি ভ্যালু। তিনি বিশ্বাস করেন, একটি দয়ালু এবং নিরাপদ পরিবেশ ছাড়া সৃজনশীলতার বিকাশ সম্ভব নয়।
তার সহ-প্রতিষ্ঠাতা ববি মারফির একটা বিখ্যাত কথা আছে। তিনি বলতেন, একজন মানুষ একই সাথে ব্রিলিয়ান্ট এবং খারাপ ব্যবহারের হতে পারে না। তার মতে, যার মধ্যে আসল মেধা থাকে, তার মধ্যে দয়া ও বিনয়ও থাকবেই।
মাত্র ২৩ বছর বয়সে মার্ক জাকারবার্গের ৩ বিলিয়ন ডলারের প্রস্তাব ফিরিয়ে দেওয়াটা ছিল এক অবিশ্বাস্য সিদ্ধান্ত। কিন্তু এর পেছনে ছিল তাদের নিজস্ব দর্শনের প্রতি গভীর বিশ্বাস। ফেসবুকের ব্যবসায়িক মডেল এবং সংস্কৃতির সাথে স্ন্যাপচ্যাটের দর্শনের কোনো মিল ছিল না। তারা জানতেন, ফেসবুকের অংশ হয়ে গেলে তাদের পক্ষে নিজেদের স্বপ্নকে বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব হবে না।
এর আগেই তারা কোম্পানির কিছু শেয়ার বিক্রি করে প্রত্যেকে ১০ মিলিয়ন ডলার করে পেয়েছিলেন, যা তাদের আর্থিকভাবে চিন্তামুক্ত করেছিল এবং বড় ঝুঁকি নেওয়ার সাহস জুগিয়েছিল।
ইনস্টাগ্রাম যখন স্ন্যাপচ্যাটের স্টোরিজ ফিচারটি হুবহু নকল করে, তখন অনেকেই ভেবেছিল স্ন্যাপচ্যাট শেষ। কিন্তু ইভান এটিকে একটি ইতিবাচক চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখেছিলেন। যখন বিশ্বের সবচেয়ে বড় কোম্পানিগুলো আপনাকে নকল করে, তার মানে হলো আপনি সঠিক পথেই আছেন।
এই অভিজ্ঞতা তাকে শিখিয়েছে যে, এমন কিছু তৈরি করতে হবে যা প্রযুক্তিগতভাবে এতটাই জটিল এবং একটি ইকোসিস্টেমের উপর নির্ভরশীল যে, তা নকল করা প্রায় অসম্ভব। যেমন, তাদের অগমেন্টেড রিয়ালিটি (AR) লেন্স।
ইভান স্বীকার করেন যে, একটি পাবলিক কোম্পানি চালানো বেশ চাপের। তবে তিনি কাজকে খুব বেশি চাপ হিসেবে দেখেন না, কারণ বছরের পর বছর ধরে নানা রকম কঠিন পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে করতে এটি তার জন্য স্বাভাবিক হয়ে গেছে।
তিনি সব সময় তার স্ত্রীর অবদানের কথা বলেন, যিনি তাকে মানসিকভাবে শান্ত থাকতে সবচেয়ে বেশি সাহায্য করেন। তাদের নিয়ম হলো, রবিবার মানেই ফ্যামিলি ডে, যেদিন কোনো কাজ নয়, শুধু পরিবারের সাথে সময় কাটানো।
তিনি মনে করেন, AI শিক্ষার জগতে এক বিপ্লব নিয়ে আসবে। এটি হবে একজন ব্যক্তিগত শিক্ষকের মতো, যা প্রতিটি ছাত্রকে তার নিজের গতিতে শিখতে সাহায্য করবে।
AI মানুষের সৃজনশীলতাকে কেড়ে নেবে না, বরং এটি হবে সৃজনশীল মানুষদের হাতে একটি শক্তিশালী হাতিয়ার, যা তাদের ভাবনাকে আরও সহজে বাস্তবে রূপ দিতে সাহায্য করবে।
সম্পূর্ণ পডকাস্ট The Diary Of A CEO ইউটিউব চ্যানেলে দেখতে পারবেন।
0 Comments
0 Shares
141 Views